
পাহালগামে সন্ত্রাসী হামলার জেরে পাকিস্তানের সঙ্গে সিন্ধু পানিচুক্তি স্থগিত করেছে ভারত। দিল্লির এই পদক্ষেপকে ‘যুদ্ধ ঘোষণার শামিল’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে ইসলামাবাদ। প্রতিবেশী দুই দেশের উত্তেজনার মধ্যেই এবার বাংলাদেশেও যৌথ নদীগুলোর পানিপ্রবাহ বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির এক সাংসদ।
সোমবার (২৮ এপ্রিল) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৯৯৬ সালে দুই দেশের মধ্যে সম্পাদিত গঙ্গা পানিবণ্টন চুক্তিকে ভুল হিসেবে আখ্যায়িত করে বাংলাদেশে পানি সরবরাহ বন্ধের জানান বিজেপি নেতা ও লোকসভার এমপি নিশিকান্ত দুবে।
নিশিকান্ত বলেন, ‘গঙ্গার পানি চুক্তি ভুল ছিল। এটি স্বাক্ষর করে ১৯৯৬ সালে কংগ্রেস সরকার একটি ভুল করে। যারা সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে যুক্ত বলে অভিযোগ আছে তাদের সঙ্গে আর কত দিন পানি ভাগাভাগি করা হবে?’ তিনি আরও বলেন, ‘আর কত দিন সাপকে পানি দেব? সময় এসেছে এদের গুঁড়িয়ে দেওয়ার।’
ভারত ও বাংলাদেশের সীমান্তে নিরাপত্তা নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন দুবে। তিনি বলেন, ‘সন্ত্রাসী অনুপ্রবেশ বন্ধ করতে ভারত ও বাংলাদেশ দুই দেশের সীমান্ত সুরক্ষিত করা প্রয়োজন।’
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বের প্রশংসা করে দুবে বলেন, ‘১৪০ কোটি ভারতীয়ের সমর্থন প্রধানমন্ত্রীর প্রতি রয়েছে এবং সারা বিশ্ব তাকে শক্তিশালী নেতা হিসেবে দেখে। সন্ত্রাসীদের বিচারের আওতায় আনতে তার দৃঢ় সংকল্প স্পষ্ট।’
এছাড়া এসময় বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে পাহেলগাম হামলার নিন্দা করেন এবং এই ঘটনাকে দুর্ভাগ্যজনক বলে অভিহিত করেন।
কাশ্মীরের পাহালগামে পর্যটকদের ওপর হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সম্পর্ক এখন একেবারেই তলানিতে এসে পৌঁছেছে। হামলার প্রতিক্রিয়ায় গত বুধবার (২৩ এপ্রিল) ভারত সার্ক ভিসা স্কিমের অধীনে পাকিস্তানিদের ভিসা দেওয়া বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়।
সেই সঙ্গে এই ভিসার অধীনে ভারতে থাকা পাকিস্তানিদের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে চলে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। একই সঙ্গে প্রতিবেশী পাকিস্তানের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ আটারি স্থলসীমান্ত বন্ধের পাশাপাশি ঐতিহাসিক সিন্ধু পানিচুক্তি স্থগিতের ঘোষণা দেয় ভারত। পাশাপাশি দুই দেশের হাইকমিশনে কর্মকর্তা কমানো ও ফিরে যাওয়াসহ একাধিক নির্দেশনা দেওয়া হয়।
এর পাল্টা হিসেবে গত বৃহস্পতিবার( ২৪ এপ্রিল) ১৯৭২ সালের সিমলা চুক্তি স্থগিত এবং ওয়াঘা সীমান্ত বন্ধের ঘোষণা দেয় ইসলামাবাদ। ভারতের সঙ্গে সব ধরনের বাণিজ্য স্থগিতের পাশাপাশি নয়াদিল্লিকে পাকিস্তানের মাটি ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশের সঙ্গে বাণিজ্য করতে না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় পাকিস্তান। ভারতীয় বিমানের জন্য আকাশসীমা বন্ধেরও ঘোষণা এসেছে। সূত্র: এএনআই এবং ইন্ডিয়া টুডে
দিনা/