ঢাকা ২০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, মঙ্গলবার, ০৩ জুন ২০২৫
English
মঙ্গলবার, ০৩ জুন ২০২৫, ২০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

আর কত দিন সাপকে পানি দেব? বাংলাদেশ প্রসঙ্গে বিজেপির এমপি

প্রকাশ: ২৮ এপ্রিল ২০২৫, ০১:২৫ পিএম
আপডেট: ২৮ এপ্রিল ২০২৫, ০১:২৬ পিএম
আর কত দিন সাপকে পানি দেব? বাংলাদেশ প্রসঙ্গে বিজেপির এমপি
বিজেপি নেতা ও লোকসভার এমপি নিশিকান্ত দুবে। ছবি: সংগৃহীত

পাহালগামে সন্ত্রাসী হামলার জেরে পাকিস্তানের সঙ্গে সিন্ধু পানিচুক্তি স্থগিত করেছে ভারত। দিল্লির এই পদক্ষেপকে ‘যুদ্ধ ঘোষণার শামিল’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে ইসলামাবাদ। প্রতিবেশী দুই দেশের উত্তেজনার মধ্যেই এবার বাংলাদেশেও যৌথ নদীগুলোর পানিপ্রবাহ বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির এক সাংসদ।

সোমবার (২৮ এপ্রিল) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৯৯৬ সালে দুই দেশের মধ্যে সম্পাদিত গঙ্গা পানিবণ্টন চুক্তিকে ভুল হিসেবে আখ্যায়িত করে বাংলাদেশে পানি সরবরাহ বন্ধের জানান বিজেপি নেতা ও লোকসভার এমপি নিশিকান্ত দুবে।

নিশিকান্ত বলেন, ‘গঙ্গার পানি চুক্তি ভুল ছিল। এটি স্বাক্ষর করে ১৯৯৬ সালে কংগ্রেস সরকার একটি ভুল করে। যারা সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে যুক্ত বলে অভিযোগ আছে  তাদের সঙ্গে আর কত দিন পানি ভাগাভাগি করা হবে?’ তিনি আরও বলেন, ‘আর কত দিন সাপকে পানি দেব? সময় এসেছে এদের গুঁড়িয়ে দেওয়ার।’

ভারত ও বাংলাদেশের সীমান্তে নিরাপত্তা নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন দুবে। তিনি বলেন, ‘সন্ত্রাসী অনুপ্রবেশ বন্ধ করতে ভারত ও বাংলাদেশ দুই দেশের সীমান্ত সুরক্ষিত করা প্রয়োজন।’

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বের প্রশংসা করে দুবে বলেন, ‘১৪০ কোটি ভারতীয়ের সমর্থন প্রধানমন্ত্রীর প্রতি রয়েছে এবং সারা বিশ্ব তাকে শক্তিশালী নেতা হিসেবে দেখে। সন্ত্রাসীদের বিচারের আওতায় আনতে তার দৃঢ় সংকল্প স্পষ্ট।’

এছাড়া এসময় বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে পাহেলগাম হামলার নিন্দা করেন এবং এই ঘটনাকে দুর্ভাগ্যজনক বলে অভিহিত করেন। 

কাশ্মীরের পাহালগামে পর্যটকদের ওপর হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সম্পর্ক এখন একেবারেই তলানিতে এসে পৌঁছেছে। হামলার প্রতিক্রিয়ায় গত বুধবার (২৩ এপ্রিল) ভারত সার্ক ভিসা স্কিমের অধীনে পাকিস্তানিদের ভিসা দেওয়া বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়। 

সেই সঙ্গে এই ভিসার অধীনে ভারতে থাকা পাকিস্তানিদের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে চলে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। একই সঙ্গে প্রতিবেশী পাকিস্তানের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ আটারি স্থলসীমান্ত বন্ধের পাশাপাশি ঐতিহাসিক সিন্ধু পানিচুক্তি স্থগিতের ঘোষণা দেয় ভারত। পাশাপাশি দুই দেশের হাইকমিশনে কর্মকর্তা কমানো ও ফিরে যাওয়াসহ একাধিক নির্দেশনা দেওয়া হয়।

এর পাল্টা হিসেবে গত বৃহস্পতিবার( ২৪ এপ্রিল) ১৯৭২ সালের সিমলা চুক্তি স্থগিত এবং ওয়াঘা সীমান্ত বন্ধের ঘোষণা দেয় ইসলামাবাদ। ভারতের সঙ্গে সব ধরনের বাণিজ্য স্থগিতের পাশাপাশি নয়াদিল্লিকে পাকিস্তানের মাটি ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশের সঙ্গে বাণিজ্য করতে না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় পাকিস্তান। ভারতীয় বিমানের জন্য আকাশসীমা বন্ধেরও ঘোষণা এসেছে। সূত্র: এএনআই এবং ইন্ডিয়া টুডে

দিনা/

নেদারল্যান্ডসের প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ

প্রকাশ: ০৩ জুন ২০২৫, ০৮:৩৭ পিএম
আপডেট: ০৩ জুন ২০২৫, ০৮:৩৮ পিএম
নেদারল্যান্ডসের প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ
ছবি: সংগৃহীত

নেদারল্যান্ডসের ক্ষমতাসীন ডানপন্থী জোট সরকারে ভাঙনের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী ডিক স্কুফ।

মঙ্গলবার (৩ জুন) ক্ষমতাসীন জোটের বৃহত্তম দল পিভিভির নেতা ও ইসলামবিরোধী রাজনীতিক গির্ট উইল্ডারস জোট থেকে সরে দাঁড়ানোর পর পদত্যাগের এই ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।

এদিকে স্কুফের পদত্যাগের সিদ্ধান্ত ডাচ রাজনীতিতে নতুন করে অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ ছাড়া দেশটিতে আগাম নির্বাচন অনুষ্ঠানের সম্ভাবনাও রয়েছে। তবে ঐতিহাসিকভাবে ভঙ্গুর ডাচ রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে সরকার গঠনের প্রক্রিয়ায় সাধারণত কয়েক মাস সময়ের দরকার হয়।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, 'প্রধানমন্ত্রী ডিক স্কুফ পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন। গির্ট উইল্ডারসের পিভিভি দলীয় মন্ত্রীরা মন্ত্রিসভা থেকে সরে দাঁড়াবেন। তবে বাকি মন্ত্রীরা আপাতত তত্ত্বাবধায়ক সরকার হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। জোট সরকারে ভাঙন দেখা দেওয়ায় এই মুহূর্তে জোটের বাকি দলগুলো সংখ্যালঘু সরকার গঠন করে সামনে এগিয়ে যেতে পারে। যদিও বাস্তবে তা হওয়ার সম্ভাবনা কম। দেশটির বিরোধী দলগুলো ইতোমধ্যে নতুন নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে।' সূত্র: রয়টার্স

মেহেদী/

নিজের ২০০ বিলিয়ন ডলার সম্পদের বেশিরভাগ আফ্রিকায় দান করবেন বিল গেটস

প্রকাশ: ০৩ জুন ২০২৫, ০৩:০১ পিএম
আপডেট: ০৩ জুন ২০২৫, ০৩:০৩ পিএম
নিজের ২০০ বিলিয়ন ডলার সম্পদের বেশিরভাগ আফ্রিকায় দান করবেন বিল গেটস
মাইক্রোসফটের সহপ্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস। ছবি: সংগৃহীত

মাইক্রোসফটের সহপ্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস আগামী ২০ বছরের মধ্যে তার প্রায় ২০০ বিলিয়ন ডলারের সম্পদের বেশির ভাগই আফ্রিকায় স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়নে ব্যয় করবেন।

ইথিওপিয়ার রাজধানী আদ্দিস আবাবায় আফ্রিকান ইউনিয়নের সদর দপ্তরে এক বক্তব্যে তিনি এই ঘোষণা দিয়েছেন। এসময় তিনি বলেন, ‘স্বাস্থ্য ও শিক্ষার মাধ্যমে মানব সম্ভাবনা মুক্ত করলেই আফ্রিকার প্রতিটি দেশ উন্নতির পথে এগোতে পারবে।’ 

একই সঙ্গে তিনি আফ্রিকার তরুণ উদ্ভাবকদের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহারের মাধ্যমে স্বাস্থ্য খাতে পরিবর্তন আনার আহ্বান জানান।

সম্প্রতি গেটস ঘোষণা দিয়েছেন, ২০৪৫ সালের মধ্যে তিনি তার ৯৯ শতাংশ সম্পদ দান করে দেবেন এবং তার পরিচালিত গেটস ফাউন্ডেশন ওই সময়ের মধ্যে কাজ বন্ধ করবে। তিনি বলেন, ‘আমি প্রতিশ্রুতি দিয়েছি, আগামী ২০ বছরের মধ্যে আমার সম্পদ বিলিয়ে দেব। এর বেশির ভাগ ব্যয় হবে আফ্রিকার সমস্যা মোকাবিলায়।’

বিল গেটসের এই ঘোষণাকে ‘সংকটময় সময়ে আশাজাগানিয়া এক বার্তা’ হিসেবে উল্লেখ করেন মোজাম্বিকের সাবেক ফার্স্ট লেডি গ্রাসা মাশেল। তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করি, গেটস আমাদের পাশে থেকেই এই রূপান্তরের পথে এগিয়ে যাবেন।’

যুক্তরাষ্ট্রের ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতির আওতায় আফ্রিকায় সহায়তা কমিয়ে আনা হয়েছে। ফলে এইচআইভি/এইডস চিকিৎসার মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পগুলো হুমকির মুখে পড়েছে।

এই প্রেক্ষাপটে গেটস বলেন, ‘তার ফাউন্ডেশন আফ্রিকায় প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার ওপর গুরুত্ব দেবে।‘ 

এ সময় তিনি বলেন, ‘আমরা দেখেছি, গর্ভধারণের আগে এবং গর্ভের সময় মা যদি সঠিক পুষ্টি পান, তাহলে সবচেয়ে ভালো ফল পাওয়া যায়। শিশুর প্রথম চার বছরেও পুষ্টির সঠিক সরবরাহ জীবনভর প্রভাব ফেলে।‘

গেটস মনে করেন, আফ্রিকায় মোবাইল ফোন যেমন ব্যাংকিং খাতকে বদলে দিয়েছে, তেমনি এআই ব্যবহার করে পরবর্তী প্রজন্মের স্বাস্থ্যব্যবস্থা তৈরি করা সম্ভব। রুয়ান্ডার উদাহরণ টেনে তিনি জানান, দেশটি এআই-চালিত আলট্রাসাউন্ড প্রযুক্তির মাধ্যমে উচ্চ-ঝুঁকিপূর্ণ গর্ভাবস্থা শনাক্ত করছে।

এক ব্লগপোস্টে বিল গেটস লিখেন, ‘মানুষ আমার সম্পর্কে অনেক কিছু বলবে। কিন্তু আমি নিশ্চিত করতে চাই—সে ধনী অবস্থায় মারা গেল—এই কথা যেন কেউ বলতে না পারে।’ তবে ব্লুমবার্গ বলছে, ৯৯ শতাংশ দান করলেও বিশ্বের অন্যতম ধনী ব্যক্তি হিসেবে তিনি তবু বিলিয়নিয়ারই থাকবেন।

সুলতানা দিনা/

বেলুচ বিচ্ছিন্নতাবাদীরা ভারতের ক্রীতদাস : পাক মেজর জেনারেল আহমেদ শরিফ চৌধুরী

প্রকাশ: ০৩ জুন ২০২৫, ০২:৩২ পিএম
বেলুচ বিচ্ছিন্নতাবাদীরা ভারতের ক্রীতদাস : পাক মেজর জেনারেল আহমেদ শরিফ চৌধুরী
আইএসপিআর-এর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আহমেদ শরিফ চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত

বেলুচিস্তানের স্বাধীনতা আন্দোলনে (ইসলামাবাদের ভাষায় বিচ্ছিন্নতাবাদী তৎপরতা) যারা অংশ নিচ্ছেন যারা তারা সবাই ভারতের মদতপুষ্ট এবং তারা ‘ভারতের ক্রীতদাস’- বলে অভিযোগ করেছেন পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর জনসংযোগ দপ্তরের (আইএসপিআর) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আহমেদ শরিফ চৌধুরী। 

বেলুচ স্বাধীনতাকামীদের ‘ভারতের ক্রীতদাস’ উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, 'বেলুচিস্তান পাকিস্তানের অংশ হিসেবেই থাকবে, কখনও বিচ্ছিন্ন হবে না।’

সোমবার (০২ জুন) রাওয়ালপিন্ডিতে পাকিস্তান সেনা সদর দপ্তর মিলনায়তনে স্কুল-কলেজের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন আহমেদ শরিফ চৌধুরী।

সম্প্রতি স্কুল ও কলেজ শিক্ষার্থীদের নৈতিক মান উন্নয়নে ‘হিলাল টকস’ নামের একটি প্রকল্প শুরু করেছে পাকিস্তান। সোমবার (০২ জুন) রাওয়ালপিন্ডিতে পাকিস্তান সেনা সদর দপ্তর মিলনায়তনে স্কুল-কলেজের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সঙ্গে এই বিষয় নিয়ে মত বিনিময় করেন আহমেদ শরিফ চৌধুরী।

সেখানে এই মেজর জেনারেল বলেন, ‘যেসব বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসীরা বেলুচিস্তানে তৎপরতা চালাচ্ছে, তারা শুধু ভারতের মদতপুষ্টই নই, বরং ভারতের ক্রীতদাসও। বেলুচিস্তান লিবারেশন আর্মি (বিএলএ— বেলুচিস্তানের স্বাধীনতা সংগ্রামে নেতৃত্বদানকারী গোষ্ঠী)-এর পুরো আর্থিক ব্যয় নির্বাহ করে ভারত। বিএলএ হলো ফিৎনা-ই-হিন্দুস্তান (ভারত থেকে আগত ঝামেলা সৃষ্টিকারী ব্যক্তি বা গোষ্ঠী); আরও স্পষ্টভাবে বললে— বেলুচিস্তানের বিচ্ছিন্নতাবাদীরা ভারতের ক্রীতদাস। ভারত তাদের অর্থ দিয়ে কিনে নিয়েছে।'

তিনি আরও বলেন, ‘বিএলএকে মদত দেওয়ার মাধ্যমে ভারত শুধু পাকিস্তানের নয়, উপরন্তু এই দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের নিরাপত্তাকে ঝুঁকিতে ফেলছে। আমরা বিএলএ এবং তাদের প্রভু ভারতকে স্পষ্টভাবে বলতে চাই— বেলুচিস্তান পাকিস্তানের অংশ এবং পাকিস্তানেরই থাকবে। পাকিস্তানের অর্থনীতি ও সমাজের সঙ্গে বেলুচিস্তানের সম্পর্ক নিবিড় এবং একদিন বেলুচিস্তান পাকিস্তানের সবেচেয়ে ধনী প্রদেশ হবে।’

১৯৪৭ সালের আগস্টে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন থেকে ভারত ও পাকিস্তানের স্বাধীনতা লাভের পর থেকেই বেলুচিস্তানে স্বাধীনতা সংগ্রামের শুরু। ব্রিটিশ আমলে এই প্রদেশে মাকরা, লাস বেলা, খারান এবং কালাতমোট-এই ৪টি করদ রাজ্য বা প্রিন্সলি স্টেট ছিল। 

১৯৪৭ সালে স্বাধীনতার সময় মাকরা, লাস বেলা এবং খারান পাকিস্তান ইউনিয়নে যোগ দিলেও খালাতের তৎকালীন রাজা আহমেদ ইয়ার খান বালোচ তখন পাকিস্তানে যোগ দিতে অস্বীকৃতি জানান।

পরের বছর ১৯৪৮ সালে তিনি পাকিস্তানে যোগ দেওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করেন, কিন্তু এবার বেঁকে বসেন আহমেদ ইয়ার খান বালোচের ভাই প্রিন্স আগা আবদুল করিম খান বালোচ। পাকিস্তানে যোগদানের পরিবর্তে তিনি স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। সেই থেকে বেলুচিস্তানে স্বাধীনতা সংগ্রামের শুরু।

এরপর ৭ দশকেরও বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও বেলুচিস্তানের সঙ্গে ইসলামাবাদের সম্পর্কের কোনো উন্নতি তো হয়ইনি, বরং উত্তরোত্তর অবনতি হয়েছে। রাজ্যটির স্বাধীনতাকামী রাজনৈতিক গোষ্ঠী বালোচ লিবারেশন আর্মিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে পাকিস্তান। তবে এতে পরিস্থিতির তেমন পরিবর্তন হয়নি। বেলুচিস্তানজুড়ে বিএলএর সঙ্গে পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর সংঘাত এখন নিত্যদিনের ঘটনা।

কিন্তু পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর সঙ্গে প্রতিদিন সংঘাত ঘটলেও বেলুচিস্তানের স্বাধীনতা সুদূরপরাহত। কারণ বেলুচিস্তানের কিছু অংশ ইরান ও আফগানিস্তানের ভূখণ্ডে পড়েছে এবং স্বাধীন বেলুচিস্তানের জন্য প্রতিবেশী ইরান ও আফগানিস্তানের সমর্থন প্রয়োজন। 

কিন্তু ইরান ও আফগানিস্তানের পক্ষে ওই সমর্থন দেওয়া কখনও সম্ভব নয়। তার কারণ, পাকিস্তানের বেলুচরা স্বাধীনতা অর্জন করলে ইরান ও আফগানিস্তানের বেলুচরা স্বাধীন বেলুচিস্তানে যোগ দিতে চাইবে। তাছাড়া বর্তমানে বেলুচ আন্দোলনের নেতৃত্ব বহু ধারায় বিভক্ত, নেতাদের মধ্যে মতবিরোধও তীব্র। সূত্র : জিও টিভি

সুলতানা দিনা/

মুম্বাই বিমানবন্দরে বিষাক্ত ৪৭ সাপসহ এক ব্যক্তি আটক

প্রকাশ: ০৩ জুন ২০২৫, ০১:৫০ পিএম
আপডেট: ০৩ জুন ২০২৫, ০১:৫৫ পিএম
মুম্বাই বিমানবন্দরে বিষাক্ত ৪৭ সাপসহ এক ব্যক্তি আটক
মুম্বাই বিমানবন্দরে এক যাত্রীর ব্যাগে পাওয়া ৪৭টি বিষধর সাপ। ছবি: সংগৃহীত

মুম্বাই বিমানবন্দর থেকে বিষাক্ত সাপ সহ কয়েক ডজন বিরল সরীসৃপ পাচারের চেষ্টা করার অভিযোগে একজন ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে কর্তৃপক্ষ।

রবিবার (০২ জুন) মুম্বাই শহরের বিমানবন্দরে থাইল্যান্ড থেকে ফিরে আসা এই ভারতীয় নাগরিককে কাস্টমস কর্মকর্তারা আটকে দেন। কর্মকর্তারা জানান, ওই ব্যক্তির চেক-ইন করা লাগেজে ৪৭টি বিষাক্ত সাপ সহ সরীসৃপগুলি লুকানো অবস্থায় পাওয়া গেছে।

এরপর ভারতের বিভিন্ন বন্যপ্রাণী সুরক্ষা আইনের অধীনে সরীসৃপগুলি জব্দ করা হয়েছে। যাত্রীর তবে এই ব্যক্তির নাম প্রকাশ করা হয়নি যেহেতু তিনি পুলিশ হেফাজতে আছেন। তবে মুম্বাই বিমানবন্দরের কাস্টমস কর্মকর্তারা একটি পাত্রে রঙিন সাপের ছটফট করার ছবি  এক্সে প্রকাশ করেছেন।

সেই পোস্টে তারা জানান,তারা এক যাত্রীর কাছ থেকে তিনটি মাকড়সার লেজযুক্ত শিংওয়ালা ভাইপার, পাঁচটি এশিয়ান পাতার কচ্ছপ এবং ৪৪টি ইন্দোনেশিয়ান পিট ভাইপার জব্দ করেছে। তবে সরীসৃপগুলি কোথা থেকে আনা হয়েছিল তা স্পষ্ট নয়।

রবিবার(০২ জুন)ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এই খবর জানায়।

কাস্টমস কর্মকর্তারা জানান, ওই যাত্রী তার লাগেজে গোপনে প্রাণীগুলো বহন করছিলেন। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, প্রাণীগুলোর বেশিরভাগই অবৈধভাবে পাচার করা হচ্ছিল।

ভারতের বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনের বিভিন্ন ধারায় ওই যাত্রীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। তবে গ্রেফতার হওয়া ওই ব্যক্তির নাম প্রকাশ করা হয়নি। তিনি এখনও পুলিশি হেফাজতে রয়েছেন এবং তার পক্ষ থেকে কোনও মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

মুম্বাই কাস্টমস কর্তৃপক্ষ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (আগের টুইটার) ছবি প্রকাশ করেছে, যেখানে রঙিন বিষধর সাপগুলোকে একটি থালায় কিলবিল করতে দেখা গেছে। পোস্টে বলা হয়, যাত্রীর লাগেজ থেকে ৩টি স্পাইডার-টেইল্ড হর্নড ভাইপার, ৫টি এশিয়ান লিফ টার্টল এবং ৪৪টি ইন্দোনেশীয় পিট ভাইপার উদ্ধার করা হয়েছে।

তবে এই সাপগুলো কোথা থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে, সে বিষয়ে এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

ভারতে নির্দিষ্ট প্রজাতির বন্যপ্রাণী আমদানির জন্য সরকারি অনুমোদন ও লাইসেন্স প্রয়োজন হয়। বিশেষ করে বিলুপ্তপ্রায় ও সংরক্ষিত প্রাণী আমদানিতে কড়াকড়ি রয়েছে।

বিমানবন্দর দিয়ে অবৈধভাবে বন্যপ্রাণী পাচারের ঘটনা ভারতে নতুন নয়। চলতি বছরের জানুয়ারিতে দিল্লি বিমানবন্দরে এক কানাডিয়ান যাত্রীর লাগেজ থেকে একটি কুমিরের খুলি উদ্ধার করা হয়।

এছাড়া, গত ফেব্রুয়ারিতে মুম্বাই বিমানবন্দরে এক যাত্রীর ব্যাগে পাওয়া যায় পাঁচটি সিয়ামাং গিবন, যেগুলো ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ডের বনাঞ্চলে পাওয়া যায় এবং বিপন্ন প্রাণী হিসেবে তালিকাভুক্ত।

২০১৯ সালে চেন্নাই বিমানবন্দরে থাইল্যান্ডফেরত এক যাত্রীর ব্যাগ থেকে উদ্ধার হয় একটি হর্নড পিট ভাইপার, পাঁচটি ইগুয়ানা, চারটি ব্লু-টাং স্কিঙ্ক, তিনটি গ্রিন ট্রি ফ্রগ এবং ২২টি মিসরীয় কচ্ছপ।

সুলতানা দিনা/

আসন্ন জি-৭ সম্মেলনে আমন্ত্রণ পেলেন না নরেন্দ্র মোদি

প্রকাশ: ০৩ জুন ২০২৫, ১২:৫০ পিএম
আসন্ন জি-৭ সম্মেলনে আমন্ত্রণ পেলেন না নরেন্দ্র মোদি
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ছবি:সংগৃহীত

৬ বছরের মধ্যে প্রথমবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কানাডার অটোয়াতে ১৫-১৭ জুন অনুষ্ঠিতব্য জি-৭ (G7 ) শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নেওয়ার সম্ভাবনা কম। আলবার্টায় অনুষ্ঠিত এই বৈঠকের জন্য মোদীকে কানাডা থেকে এখনও কোনও আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণ জানানো হয়নি।

গত বছর দিল্লিতে জি-২০ শীর্ষ সম্মেলন আয়োজনের পর নরেন্দ্র মোদি অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে সুবিধা পেতে সেই অর্জন বেশ ফলাও করে প্রচার করেন। এরপর গত পাঁচ বছর জি-৭ শীর্ষ সম্মেলনে বিশেষ আমন্ত্রিত হিসেবে উপস্থিতি থেকেছেন তিনি।

কিন্তু এবার সম্ভবত বিষয়টি ব্যতিক্রমই হতে যাচ্ছে। ছয় বছরের মধ্যে এই প্রথমবার এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। পর্যবেক্ষকেরা বলছেন, ভারত ও কানাডার মধ্যে চলমান শীতল সম্পর্কের ইঙ্গিত এটি।

জি-৭ হলো শিল্পোন্নত পশ্চিমা দেশ এবং জাপানের একটি অনানুষ্ঠানিক জোট।এই গ্রুপের সদস্য রাষ্ট্রগুলো হচ্ছে- যুক্তরাষ্ট্র,যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, জাপান এবং কানাডা। এছাড়া এই সম্মেলনে ইউরোপীয় ইউনিয়ন(ইইউ), আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল(আইএমএফ), বিশ্ব ব্যাংক এবং জাতিসংঘের প্রতিনিধিও উপস্থিত থাকেন।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে জানায়, এরই মধ্যে কানাডার আমন্ত্রণ দক্ষিণ আফ্রিকা, ইউক্রেন এবং অস্ট্রেলিয়া গ্রহণ করেছে। তবে প্রধানমন্ত্রী মোদির সফর নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়ে গেছে।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নির নেতৃত্বে এ বছরের জি-৭ শীর্ষ সম্মেলন আগামী ১৫-১৭ জুন আলবার্টার কানানাসকিস রিসোর্টে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। সেক্ষেত্রে শুধু আমন্ত্রণ না জানানো নয়, এখনও দুই দেশের সম্পর্কের উন্নতির জন্য প্রয়োজনীয় পরিবেশও তৈরি হয়নি। এ কারণে মোদির উপস্থিতি অনিশ্চিত।

২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে কানাডার তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো খালিস্তানি বিচ্ছিন্নতাবাদী হারদীপ সিং নিজ্জার হত্যায় ভারত সরকারের এজেন্টদের জড়িত থাকার অভিযোগ তোলার পর থেকেই ভারত-কানাডা সম্পর্ক তলানিতে এসে ঠেকেছে। ভারত এই অভিযোগকে ‘অমূলক’ আখ্যা দিয়েছে। এরপর উভয় দেশ একে অপরের কূটনীতিকদের বহিষ্কার করে এবং সম্পর্কের ব্যাপক অবনতি হয়।

যদিও কানাডার নির্বাচনে মার্ক কার্নির জয়ে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে উষ্ণতা ফেরার আশা জেগেছিল। তবে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় ভিত্তি এখনো তৈরি হয়নি। 

২০১৯ সাল থেকে ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, জার্মানি, জাপান এবং ইতালি ভারতের ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক গুরুত্ব এবং বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ভূমিকার স্বীকৃতিস্বরূপ জি-৭ শীর্ষ সম্মেলনের আউটরিচ সেশনে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানিয়ে আসছে।

সূত্রগুলো আরও জানায়, উভয় দেশের রাজধানীতে হাইকমিশনার নিয়োগের মাধ্যমে ভারত ও কানাডা সম্পর্ক উন্নয়নের দিকে প্রথম পদক্ষেপ নিতে পারে। নিজ্জার হত্যাকাণ্ডের তদন্তে ভারতের রাষ্ট্রদূত এবং আরও পাঁচজন কূটনীতিককে ‘সন্দেহভাজন ব্যক্তি’ হিসেবে চিহ্নিত করার পর ভারত গত বছর দূতকে প্রত্যাহার করে নেওয়ার পর থেকে এই পদ শূন্য।

কানাডায় খালিস্তানপন্থীদের তৎপরতা, বিশেষ করে ভারতের পক্ষ থেকে যেকোনো উচ্চ পর্যায়ের সফরের সময় বিক্ষোভের সম্ভাবনা নিয়েও ভারতীয় পক্ষ উদ্বিগ্ন।

যদিও কার্নি সরকার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক পুনর্গঠনে আগ্রহী। এখন ধীরে ধীরে সম্পর্ক জোরদার করার দিকে মনোযোগ দেওয়া হচ্ছে। কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী অনিতা আনন্দ, যিনি সম্প্রতি ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন।

অটোয়ার ওপর খালিস্তানপন্থী এবং ভারত-বিরোধী গোষ্ঠীগুলোর পক্ষ থেকেও নরেন্দ্র মোদিকে আমন্ত্রণ না জানানোর জন্য চাপ রয়েছে। এ বিষয়ে প্রকাশ্যে মতামত প্রকাশ করা হয়েছে এবং বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী শিখস ফর জাস্টিস (এসএফজে) নরেন্দ্র মোদি কানাডায় এলে বিক্ষোভের পরিকল্পনা করেছে।

এবারের সম্মেলনে মেক্সিকো এবং দক্ষিণ আফ্রিকার নেতারাও আলবার্টায় উপস্থিত থাকবেন। দক্ষিণ আফ্রিকা এ বছর জি-২০-এর স্বাগতিক দেশ।

সুলতানা দিনা/