ঢাকা ২৭ আষাঢ় ১৪৩২, শুক্রবার, ১১ জুলাই ২০২৫
English
শুক্রবার, ১১ জুলাই ২০২৫, ২৭ আষাঢ় ১৪৩২

রাশিয়ায় সেতু ভেঙে পড়ল ট্রেনে, নিহত ৭

প্রকাশ: ০২ জুন ২০২৫, ০৯:১২ এএম
রাশিয়ায় সেতু ভেঙে পড়ল ট্রেনে, নিহত ৭
ছবি: সংগৃহীত

রাশিয়ায় একই দিনে ভিন্ন স্থানে দুটি সেতু ভেঙে সাতজন নিহত হয়েছেন। শনিবার (১ জুন) রাতে ইউক্রেনের সীমান্তবর্তী ব্রিয়ানস্ক ও ঝেলেজনোগর্স্ক অঞ্চলে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এতে কয়েক ডজন মানুষ হতাহত হয়েছে।

ইউক্রেনের সীমান্তবর্তী রাশিয়ার ব্রিয়ানস্ক অঞ্চলে একটি চলন্ত ট্রেনের ওপর সেতুটি ধসে পড়ে। এ সময় সেতুর ওপর থাকা কতগুলো ভারী ট্রাকও ট্রেনের ওপর আছড়ে পড়ে। 

আঞ্চলিক গভর্নর আলেকজান্ডার বোগোমাজ জানান, লাইনচ্যুত হওয়ার ঘটনায় কমপক্ষে সাতজন নিহত হয়েছে এবং এক শিশুসহ ৪৭ জনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। 

রাশিয়ার জরুরি ব্যবস্থাপনাবিষয়ক মন্ত্রণালয় জানায়, অগ্নিনির্বাপণ ও উদ্ধারকারী দল ট্রেনে ভ্রমণকারী লোকজনকে উদ্ধারের চেষ্টা করছে। মস্কো রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ এ দুর্ঘটনাকে ‘অবৈধ হস্তক্ষেপ’ বলে অভিযোগ করেছে।

মস্কো রেলওয়ে টেলিগ্রামে জানিয়েছে, ব্রিয়ানস্ক অঞ্চলের পিলশিনো এবং ভাইগোনিচি স্টেশনে স্থানীয় সময় গত রাত ১০টা ৪৪ মিনিটে এ দুর্ঘটনাটি ঘটে। ট্রেনটি ক্লিমোভো শহর থেকে মস্কোর দিকে যাচ্ছিল। ইউক্রেন সীমান্ত থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার বা ৬২ মাইল দূরে অবস্থিত।

এ ঘটনার প্রায় এক ঘণ্টা পর ঝেলেজনোগর্স্ক অঞ্চলে দ্বিতীয় আরেকটি সেতু ধসে ট্রেন লাইনচ্যুত হয়েছে। অঞ্চলটির গভর্নর আলেকজান্ডার খিনেসটেইন জানান, ট্রেনটি সেতুর ওপর পৌঁছালে ট্রেনটি লাইন থেকে বিচ্যুত হয়ে যায় এবং সঙ্গে সঙ্গে আগুন ধরে যায়। এতে ট্রেনের চালক আহত হয়েছেন। 

খিনেসটেইন জানান, দুর্ঘটনার কারণ উদঘাটন করা হবে। জরুরি সেবা চালু রয়েছে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা চলছে।

বিবিসি জানায়, এটা এখনো পরিষ্কার নয় যে এ ঘটনার পেছনে ইউক্রেনের হাত রয়েছে কি না। ইউক্রেনের পক্ষ থেকেও এ বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি। তবে রুশ কর্তৃপক্ষের সন্দেহ, এই ধ্বংসযজ্ঞের পেছনে ইউক্রেনীয় নাশকতাকারী ও গোয়েন্দা দলের হাত থাকতে পারে। সূত্র: বিবিসি, রয়টার্স

বাংলাদেশের প্রকৌশল খাতে বিনিয়োগ বাড়াতে চায় চীন

প্রকাশ: ১১ জুলাই ২০২৫, ০১:০৮ পিএম
আপডেট: ১১ জুলাই ২০২৫, ০১:১২ পিএম
বাংলাদেশের প্রকৌশল খাতে বিনিয়োগ বাড়াতে চায় চীন
কুয়ালালামপুরে ৩২তম আসিয়ান আঞ্চলিক ফোরাম (এআরএফ) মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকের ফাঁকে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই। ছবি: সংগৃহীত

মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে অনুষ্ঠিত ৩২তম আসিয়ান আঞ্চলিক ফোরাম (এআরএফ) মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকের ফাঁকে বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে বৈঠকে বসেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই।

এই বৈঠকে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই জানান, বাংলাদেশের বিশ্বাসযোগ্য বন্ধু হতে চায় চীন। 

চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী উভয় পক্ষ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের অগ্রগতিতে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন এবং অগ্রাধিকারমূলক ক্ষেত্রগুলোতে বাংলাদেশ্কে সহযোগিতা বৃদ্ধির প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।

এছাড়া, সম্প্রতি ঢাকায় অনুষ্ঠিত চীন বিনিয়োগ সম্মেলনের পর ওয়াং ই বাংলাদেশে, বিশেষ করে টেক্সটাইল, জ্বালানি এবং হালকা প্রকৌশল খাতে বিনিয়োগ সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে চীনের গভীর আগ্রহের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন।

চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে চলমান সংস্কার উদ্যোগের প্রতি বেইজিংয়ের পূর্ণ সমর্থনের কথা জানান।পাশাপাশি চিকিৎসা পর্যটন এবং পানি ব্যবস্থাপনা সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতার আশ্বাস দেন।

চীনা মন্ত্রী পররাষ্ট্র উপদেষ্টাকে  আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের বন্ধু হওয়ার পাশাপাশি বিশ্বাসযোগ্য প্রতিবেশী এবং সহযোগী হতে চান তারা।’

ওয়াং ই চীনের কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির পলিটিক্যাল ব্যুরোর একজন সদস্য। বৈঠকে তিনি বাংলাদেশ-চীনের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তির কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘এটি দুই দেশের পুরোনো ইতিহাস এবং ভবিষ্যত পরিকল্পনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।’

এসময়, তিনি আরও জানান, বাংলাদেশ ও এশিয়ার অন্যান্য দেশকে আধুনিক এবং উন্নত করতে চীন কাজ করতে চায়।

এদিন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী অনিতা আনন্দের সঙ্গেও দেখা করেন। এই আলোচনায় বাংলাদেশ-কানাডা অংশীদারিত্বে বাণিজ্য বৈচিত্র্য এবং স্থিতিস্থাপকতা তৈরির উপর জোর দিয়ে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক সম্প্রসারণের উপর আলোকপাত করা হয়।

কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীর্ঘদিনের রোহিঙ্গা সংকট মোকাবেলায় অটোয়ার সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন এবং জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিকদের আশ্রয় দেওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অব্যাহত মানবিক প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন।

বৈঠকে মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মোঃ শামীম আহসান, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক মোঃ ফরহাদুল ইসলাম এবং অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সুলতানা দিনা/

ট্রাম্পকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় ৬ গোয়েন্দা কর্মকর্তার সাজা

প্রকাশ: ১১ জুলাই ২০২৫, ১২:৩৫ পিএম
আপডেট: ১১ জুলাই ২০২৫, ১২:৪৫ পিএম
ট্রাম্পকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় ৬ গোয়েন্দা কর্মকর্তার সাজা
গত বছর ১৩ জুলাই পেনসিলভিনিয়ার বাটলার শহরে হামলা শিকার হন ট্রাম্প। ছবি: সংগৃহীত

ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদের নির্বাচনি প্রচারণায় ডোনাল্ড ট্রাম্পকে গুলি করে হত্যাচেষ্টার ঘটনাকে কেন্দ্র করে ছয় গোয়েন্দা কর্মকর্তাকে সাজা দেওয়া হয়েছে। 

বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) মার্কিন সিক্রেট সার্ভিসের পক্ষ থেকে জানানো হয়, দায়িত্বরত ওই কর্মকর্তারা ১০ থেকে ৪২ দিনের জন্য সাময়িক বরখাস্ত থাকবেন। এই খবর জানায় মার্কিন বার্তাসংস্থা সিএনএন।

কিন্তু সিক্রেট সার্ভিসের পক্ষ থেকে সাজাপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের পরিচয় বা বরখাস্ত হওয়ার সুনির্দিষ্ট কারণ সম্পর্কে এখনও কিছু জানানো হয়নি।

গত বছর ১৩ জুলাই পেনসিলভিনিয়ার বাটলার শহরে হামলা শিকার হন ট্রাম্প। সেখানে আয়োজিত জনসভায় ভাষণ দিতে মঞ্চে উঠলে নিকটবর্তী এক ভবনের ছাদ থেকে তাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়া হয়।

এ সময় হামলাকারীর গুলিতে ট্রাম্প ও তার আশেপাশের কয়েকজন আহত এবং এক সমর্থক নিহত হন। যদিও আইন শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর গুলিতে হামলাকারীও নিহত হয়। ওই ঘটনার পর সিক্রেট সার্ভিসে একাধিক তদন্ত শুরু হয় এবং সংস্থাটির পরিচালক পদত্যাগ করেন।

সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প জানান, স্থানীয় পুলিশকে তাদের যোগাযোগব্যবস্থায় অন্তর্ভুক্ত না করে ভুল করেছিল সিক্রেট সার্ভিস। আর ওই ভবনের ছাদে কাউকে পাহারায় না রাখা ছিল আরেকটি ভুল। তো, একাধিক ভুল হয়েছে, যা হওয়া উচিত ছিল না।

ওই জনসভা চলাকালীন ট্রাম্পের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা শন কুরান জানান, এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি এড়ানোর জন্য বহু পদক্ষেপ নিয়েছে সিক্রেট সার্ভিস। কংগ্রেশনাল ওভারসাইট বডির তরফ থেকে পেশকৃত ৪৬টির মধ্যে ২১টি পরামর্শই ইতোমধ্যে প্রয়োগ করা হয়েছে। আরও ১৬টি প্রক্রিয়াধীন আছে এবং বাকি নয়টি তাদের জন্য নয়।

সংস্থাটি আরও জানায়, গলফ কোর্সেও নিরাপত্তা জোরদারে বাড়তি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

এর আগে, প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী থাকা অবস্থায় ট্রাম্প ফ্লোরিডায় নিজ মালিকানাধীন গলফ কোর্সে অবকাশযাপনে গেলে সেখান থেকে তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে লুকিয়ে থাকা এক ব্যক্তিকে বন্দুকসহ আটক করা হয়।

সুলতানা দিনা/

প্রতিবেশীদের কটাক্ষ,বাবার হাতে টেনিস খেলোয়াড় মেয়ে খুন

প্রকাশ: ১১ জুলাই ২০২৫, ১১:৪৬ এএম
আপডেট: ১১ জুলাই ২০২৫, ১২:১৪ পিএম
প্রতিবেশীদের কটাক্ষ,বাবার হাতে টেনিস খেলোয়াড় মেয়ে খুন
ভারতের জাতীয় পর্যায়ের টেনিস খেলোয়াড় ছিলেন রাধিকা যাদব। ছবি: সংগৃহীত

ভারতের দিল্লিতে টেনিস খেলার কারণে প্রতিবেশীদের কটাক্ষ সহ্য করতে না পেরে মেয়েকে গুলি করে হত্যা করেছেন বাবা। 

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদনে বলা হয়, মেয়ের টেনিস একাডেমি চালানো নিয়ে অসম্মান বোধ করা এবং প্রতিবেশীদের কটাক্ষ সহ্য করতে না পেরে মেয়েকে নিজের লাইসেন্সকৃত পিস্তল থেকে গুলি করে হত্যা করেন সেই বাবা।

শুক্রবার (১১ জুলাই) গুরুগ্রামের সুশান্তলোক এলাকায় এই ঘটনা ঘটেছে।

নিহত রাধিকা যাদব (২৫) জাতীয় পর্যায়ের টেনিস খেলোয়াড় ছিলেন। তিনি সুশান্ত লোক ফেজ ২-তে একটি টেনিস একাডেমি চালাতেন তিনি। বাবা দীপক যাদব (৫৭) মেয়েকে একাডেমি বন্ধ করতে বললেও তিনি রাজি হননি।

পুলিশ জানায়, শুক্রবার সকাল আনুমানিক ১০টায় দীপক যাদব মেয়ে রাধিকার পিঠে পাঁচটি গুলি চালান। এর মধ্যে তিনটি গুলি রাধিকার শরীরে বিদ্ধ হয়। ঘটনার পরপরই রাধিকাকে নিকটস্থ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসকেরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায় এবং তদন্ত শুরু করে। দীপক যাদবকে আটক করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মেয়েকে হত্যার কথা স্বীকার করেন। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে হত্যায় ব্যবহৃত ০.৩২ বোরের রিভলবার জব্দ করেছে।

পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে দীপক যাদব জানান, রাধিকা কাঁধে আঘাত পাওয়ার পর টেনিস খেলা ছেড়ে একাডেমি শুরু করেন। তিনি যখন তার পৈতৃক গ্রাম ওয়াজিরাবাদে যেতেন, তখন অনেকেই রাধিকার জীবনযাপন নিয়ে কটাক্ষ করতেন। তাকে প্রায়শই মেয়ের আয়ের উপর নির্ভর করার জন্য উপহাস করা হতো। 

দীপক যাদবের দাবি, এই কথাগুলো তার ‘সম্মানে আঘাত’ হানত। তিনি বারবার রাধিকাকে একাডেমি বন্ধ করে দিতে বললেও রাজি হননি। এই নিয়ে দুজনের মধ্যে প্রায়শই ঝামেলা হতো। ক্ষোভের বশেই আজ তিনি মেয়েকে গুলি করে হত্যা করেন।

রাধিকার মৃত্যুতে অভিযোগ দায়ের করেছেন দীপক যাদবের ভাই, রাধিকার চাচা। তিনি জানান, দীপক যাদব তার বড় ভাই। তারা একই বাড়ির পৃথক তলায় থাকেন। ঘটনার দিন সকালে তিনি গুলির শব্দ শুনতে পান। উপরের তলায় গিয়ে রাধিকাকে রান্নাঘরে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন।  ড্রয়িংরুমে রিভলবারটি পড়ে ছিল। রাধিকাকে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া হলেও তাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি।

পুলিশ জানিয়েছে, পুরো ঘটনা তদন্তাধীন।

সুলতানা দিনা/

ব্রহ্মপুত্রে চীনের বাঁধ ভারতের জন্য বোমার মতোই ভয়ঙ্কর : অরুণাচল মুখ্যমন্ত্রী

প্রকাশ: ১১ জুলাই ২০২৫, ১০:৪৬ এএম
আপডেট: ১১ জুলাই ২০২৫, ১২:১৪ পিএম
ব্রহ্মপুত্রে চীনের বাঁধ ভারতের জন্য বোমার মতোই ভয়ঙ্কর : অরুণাচল মুখ্যমন্ত্রী
ছবি: সংগৃহীত

চীন তিব্বতের মেদোগ কাউন্টিতে তিব্বত, ভারত ও বাংলাদেশের ওপর দিয়ে প্রবাহিত ব্রহ্মপুত্র নদের (তিব্বতে ইয়ারলুং সাংপো নামে পরিচিত) উপর বিশ্বের বৃহত্তম জলবিদ্যুৎ বাঁধ নির্মাণের পরিকল্পনা করছে। এই প্রকল্পটি শেষ হলে এই বাঁধ ভারত তথা অরুণাচল রাজ্যের জন্য বোমার মতো ভয়ঙ্কর হয়ে উঠবে বলে সতর্কবার্তা দিয়েছেন রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী পেমা খাণ্ডু।

বুধবার (৯ জুলাই) ভারতীয় বার্তাসংস্থা প্রেস ট্রাস্ট ইন্ডিয়া (পিটিআিই)-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ সতর্কবার্তা দেন অরুণাচলের মুখ্যমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘ওই বাঁধ ভারতের জন্য বোমার মতোই ভয়ঙ্কর এবং ভারতের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপের চেয়েও বেশি কিছু। চীনের এই প্রকল্প শেষ হলে তা আমাদের জীবন-জীবিকার অস্তিত্বকে হুমকির মুখে ফেলবে।’

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘হিমালয়ের কৈলাস পর্বতের মানস সরোবর থেকে ব্রহ্মপুত্র নদের উৎপত্তি। এই কৈলাস পর্বতের অবস্থান বর্তমান চীনের স্বায়ত্বশাসিত প্রদেশ তিব্বতে। মানস সরোবার থেকে উদ্ভূত হওয়ার পর তিব্বতের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে ভারতের অরুণাচল রাজ্য, আসাম এবং তারও পরে বাংলাদেশের কুড়িগ্রাম জেলায় প্রবেশ করে বঙ্গোপসাগরে পতিত হয়েছে ব্রহ্মপুত্র। তিব্বতে এবং চীনে এই নদের নাম ইয়ারলুঙ্ক সাংপো, অরুণাচলে নাম সিয়াং, আসামে প্রবেশের পর নদের নাম হয়েছে ব্রহ্মপুত্র।‘

সাক্ষাৎকারে অরুণাচলের মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘সমস্যা হলো, চীন আন্তর্জাতিক পানিচুক্তিতে স্বাক্ষর করেনি। এ কারণেই চীনকে বিশ্বাস করা যায় না। কেউই জানে না যে তারা কী করতে পারে।’

চীন এই প্রকল্পটি হাতে নেয়ার পরই ভারত ও বাংলাদেশে, ভাটির দেশগুলোতে, জলপ্রবাহ, আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা এবং পরিবেশগত ভারসাম্যের উপর এটির সম্ভাব্য প্রভাব সম্পর্কে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে গবেষক-পরিবেশবিদ থেকে শুরু করে রাজনীতিবিদ এবং এখানকার সাধারণ মানুষ। 

এরপর এসব উদ্বেগের জবাবে, চীন তাদের পরিকল্পনার পক্ষে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি দেখিয়ে জানায়,নিঁখুদ বৈজ্ঞানিক মূল্যায়নের পরই বাঁধ নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই প্রকল্পটি পরিবেশগত, ভূতাত্ত্বিক অবস্থা ও ভাটির দেশগুলোর পানি সম্পদের সাথে সম্পর্কিত অধিকার এবং স্বার্থের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে না।

তবে, এরপরও ভারত ও বাংলাদেশের বিশেষজ্ঞরা এই প্রকল্প নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। বাঁধ নির্মাণের জন্য প্রস্তাবিত অঞ্চলটি ভূমিধসের জন্য অত্যন্ত সংবেদনশীল এবং এটি একটি ভূতাত্ত্বিক ফল্ট লাইনের উপর অবস্থিত যা ইয়ারলুং জাংবো নদীকে অতিক্রম করে।

এই ধরণের জটিল ভূখণ্ডে এই ধরণের বাঁধের পরিকল্পনা ভারত ও বাংলাদেশের ভাটির অঞ্চলের জন্য উল্লেখযোগ্য ঝুঁকি তৈরি করে, বিশেষ করে যদি কোনও দুর্ঘটনা ঘটে বা জলপ্রবাহে পরিবর্তন আসে। সম্প্রতি তিব্বতে ভূমিকম্পে কমপক্ষে ১২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে, যা এই অঞ্চলের প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকির কথা তুলে ধরেছে। 

প্রকল্পের বিস্তারিত বিবরণ:

এই বাঁধটি পূর্ব তিব্বতের একটি প্রত্যন্ত নদী গিরিখাতে অবস্থিত হবে, যা ভারত সীমান্তের খুব কাছে অবস্থিত। এই অংশ ধরে নদীটি ২০০০ মিটার (৬,৫৬০ ফুট) গভীরে নেমে গেছে, যা জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রধান স্থান। এই প্রকল্পের ব্যয় ১৩৭ বিলিয়ন ডলার এবং উৎপাদন ক্ষমতার দিক থেকে এটি থ্রি গর্জেস বাঁধকে ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। 

চীনের অবস্থান:

চীন এই প্রকল্পের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে, বলছে এটি একটি নিরাপদ প্রকল্প যা পরিবেশগত সুরক্ষাকে অগ্রাধিকার দেয় এবং কার্বন নিরপেক্ষতার লক্ষ্য পূরণে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। তারা আরও দাবি করেছে, এই প্রকল্পটি ভাটির দেশগুলোর উপর কোনও নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে না। 

নিম্নগামী উদ্বেগ:

ভারত ও বাংলাদেশ পানি প্রবাহে এই বাঁধের কারণে সৃষ্ট সম্ভাব্য ব্যাঘাতের বিষয়ে উদ্বিগ্ন। কারণ এটি কৃষি, বাস্তুতন্ত্র এবং সামগ্রিক পানি নিরাপত্তার উপর প্রভাব ফেলতে পারে। এছাড়া, বাঁধটি নদীর স্বাভাবিক পলি কণার প্রবাহকে আটকে রাখতে পারে, নদীর প্রবাহকে প্রভাবিত করতে পারে এবং বাংলাদেশ ও ভারতের সুন্দরবনকে মারত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। 

রয়েছে ভূ-রাজনৈতিক প্রভাব:

এই প্রকল্পটি ভারত ও চীনের মধ্যে ইতিমধ্যেই নাজুক সম্পর্কের ক্ষেত্রে জটিলতার আরেকটি স্তর যুক্ত করেছে, যেখানে সম্ভাব্য কৌশলগত হাতিয়ার হিসেবে পানি নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে। 

ব্রহ্মপুত্র একটি আন্তঃসীমান্ত নদী তাই এর পানি বন্টন নিয়ন্ত্রণকারী একটি চুক্তির অভাব ন্যায়সঙ্গত পানি বণ্টন এবং দুর্যোগ প্রস্তুতি নিশ্চিত করার প্রচেষ্টাকে জটিল করে তুলবে।

সুলতানা দিনা/

কিয়েভে রাশিয়ার ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, নিহত ২

প্রকাশ: ১১ জুলাই ২০২৫, ১০:২০ এএম
কিয়েভে রাশিয়ার ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, নিহত ২
রুশ হামলায় ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে একটি অ্যাপার্টমেন্ট ভবনের ছাদ পুড়ে গেছে। সেখানে গতকাল কাজ করতে দেখা যায় ফায়ার সার্ভিসের এক কর্মীকে। সংগৃহীত

ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে বৃহস্পতিবার (১০জুলাই) রাশিয়ার ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় দুইজন মারা গেছেন। এ ছাড়া আহত হয়েছেন ১৬ জন এবং অ্যাপার্টমেন্ট ও অনাবাসিক ভবনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এমন একটি সময়ে এসব হামলার ঘটনা ঘটল, যখন যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটিতে অস্ত্র পাঠাচ্ছে ওয়াশিংটন। 
  
রাশিয়ার আক্রমণের জেরে ইউক্রেনের আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা এ মুহূর্তে দুর্বল হয়ে পড়েছে। রুশ হামলার মুখে হাজারও বাস্তুচ্যুত মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই নিয়েছেন। মেসেজিং অ্যাপ টেলিগ্রামে কিয়েভের সামরিক প্রশাসনের প্রধান তিমুর তেকাচেঙ্কো বলেন, ‘আবাসিক ভবন, গাড়ি, ওয়্যারহাউস অবকাঠামো, দপ্তর, অনাবাসিক ভবনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।’

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির তথ্যানুসারে, সর্বশেষ হামলায় রাশিয়া কিয়েভকে লক্ষ্য করে ১৮টি ক্ষেপণাস্ত্র ও ৪০০টি ড্রোন ছুড়েছে। মস্কো হামলার বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। বৃহস্পতিবারের হামলার আগে গত বুধবারও রাশিয়া এক রাতে ইউক্রেনকে লক্ষ্য করে সর্বোচ্চসংখ্যক ড্রোন দিয়ে হামলা চালিয়েছে। এর আগে কোনো হামলায় এত ড্রোন ব্যবহার করেনি তারা। 

ইউক্রেনীয় প্রেসিডেনশিয়াল দপ্তরের প্রধান আন্দ্রি ইয়েরমাক বলেন, ‘যুদ্ধের কৌশল বহু আগেই বদলে গেছে। আমাদের সমাজে আতঙ্ক দিয়ে ভাঙন তৈরি করতে রাশিয়া সমন্বিত আক্রমণ চালাচ্ছে।’ 

তবে রাশিয়া বলছে, ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীর অবনতি ঘটাতেই আক্রমণ চালাচ্ছে তারা। রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তাদের আকাশ প্রতিরক্ষা ইউনিটও ১৪টি ইউক্রেনীয় ড্রোন ধ্বংস করেছে।

এদিকে, যুক্তরাষ্ট্র এরই মধ্যে কিয়েভকে অস্ত্র পাঠাতে শুরু করেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চলতি সপ্তাহের শুরুতে কিয়েভে অস্ত্র পাঠাতে রাজি হওয়ার পরপরই গোলাবারুদ, মোবাইল রকেট আর্টিলারি মিসাইল পাঠানো হয়েছে দেশটিতে। যুক্তরাষ্ট্রের দুই কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন। ট্রাম্পের ইউক্রেনবিষয়ক দূত কিথ কেলগ গত বুধবার জেলেনস্কির সঙ্গে উল্লেখযোগ্য বৈঠক করেছেন বলেও জানিয়েছেন। 

ট্রাম্প সাম্প্রতিক সময়ে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, পুতিন যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধ বন্ধের প্রচেষ্টাকে আমলে নিচ্ছেন না। রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভের সঙ্গে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বৈঠক করবেন বলেও জানা গেছে।

 সূত্র: রয়টার্স