
মাইক্রোসফটের সহপ্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস আগামী ২০ বছরের মধ্যে তার প্রায় ২০০ বিলিয়ন ডলারের সম্পদের বেশির ভাগই আফ্রিকায় স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়নে ব্যয় করবেন।
ইথিওপিয়ার রাজধানী আদ্দিস আবাবায় আফ্রিকান ইউনিয়নের সদর দপ্তরে এক বক্তব্যে তিনি এই ঘোষণা দিয়েছেন। এসময় তিনি বলেন, ‘স্বাস্থ্য ও শিক্ষার মাধ্যমে মানব সম্ভাবনা মুক্ত করলেই আফ্রিকার প্রতিটি দেশ উন্নতির পথে এগোতে পারবে।’
একই সঙ্গে তিনি আফ্রিকার তরুণ উদ্ভাবকদের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহারের মাধ্যমে স্বাস্থ্য খাতে পরিবর্তন আনার আহ্বান জানান।
সম্প্রতি গেটস ঘোষণা দিয়েছেন, ২০৪৫ সালের মধ্যে তিনি তার ৯৯ শতাংশ সম্পদ দান করে দেবেন এবং তার পরিচালিত গেটস ফাউন্ডেশন ওই সময়ের মধ্যে কাজ বন্ধ করবে। তিনি বলেন, ‘আমি প্রতিশ্রুতি দিয়েছি, আগামী ২০ বছরের মধ্যে আমার সম্পদ বিলিয়ে দেব। এর বেশির ভাগ ব্যয় হবে আফ্রিকার সমস্যা মোকাবিলায়।’
বিল গেটসের এই ঘোষণাকে ‘সংকটময় সময়ে আশাজাগানিয়া এক বার্তা’ হিসেবে উল্লেখ করেন মোজাম্বিকের সাবেক ফার্স্ট লেডি গ্রাসা মাশেল। তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করি, গেটস আমাদের পাশে থেকেই এই রূপান্তরের পথে এগিয়ে যাবেন।’
যুক্তরাষ্ট্রের ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতির আওতায় আফ্রিকায় সহায়তা কমিয়ে আনা হয়েছে। ফলে এইচআইভি/এইডস চিকিৎসার মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পগুলো হুমকির মুখে পড়েছে।
এই প্রেক্ষাপটে গেটস বলেন, ‘তার ফাউন্ডেশন আফ্রিকায় প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার ওপর গুরুত্ব দেবে।‘
এ সময় তিনি বলেন, ‘আমরা দেখেছি, গর্ভধারণের আগে এবং গর্ভের সময় মা যদি সঠিক পুষ্টি পান, তাহলে সবচেয়ে ভালো ফল পাওয়া যায়। শিশুর প্রথম চার বছরেও পুষ্টির সঠিক সরবরাহ জীবনভর প্রভাব ফেলে।‘
গেটস মনে করেন, আফ্রিকায় মোবাইল ফোন যেমন ব্যাংকিং খাতকে বদলে দিয়েছে, তেমনি এআই ব্যবহার করে পরবর্তী প্রজন্মের স্বাস্থ্যব্যবস্থা তৈরি করা সম্ভব। রুয়ান্ডার উদাহরণ টেনে তিনি জানান, দেশটি এআই-চালিত আলট্রাসাউন্ড প্রযুক্তির মাধ্যমে উচ্চ-ঝুঁকিপূর্ণ গর্ভাবস্থা শনাক্ত করছে।
এক ব্লগপোস্টে বিল গেটস লিখেন, ‘মানুষ আমার সম্পর্কে অনেক কিছু বলবে। কিন্তু আমি নিশ্চিত করতে চাই—সে ধনী অবস্থায় মারা গেল—এই কথা যেন কেউ বলতে না পারে।’ তবে ব্লুমবার্গ বলছে, ৯৯ শতাংশ দান করলেও বিশ্বের অন্যতম ধনী ব্যক্তি হিসেবে তিনি তবু বিলিয়নিয়ারই থাকবেন।
সুলতানা দিনা/