
গাজার দক্ষিণে ইসরায়েলি আক্রমণে অন্তত ২৭ ফিলিস্তিনি মারা গেছেন। আহত হয়েছেন আরও কয়েকজন। নিহতরা যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল সমর্থিত সহায়তা সংস্থার বিতরণকেন্দ্রে খাবারের জন্য গিয়েছিলেন। অপেক্ষারত অবস্থায় তাদের ওপর গুলি চালায় ইসরায়েল। গাজা উপত্যকার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাতে জানা গেছে এ তথ্য।
গত ২৭ মে থেকে প্রতিদিন এ ধরনের হামলার ঘটনা সামনে এসেছে। প্রাণহানি ও আহত হয়েছে ফিলিস্তিনিরা। জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস এ রকম ঘটনাগুলোর স্বাধীন তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বলছে, রাফায় বিতরণকেন্দ্রের নির্ধারিত প্রবেশপথ রয়েছে। একটি দল ওই পথের বাইরে যাওয়ায় গুলি চালানো হয়।
ইন্টারন্যাশনাল কমিটি অব দ্য রেড ক্রসের এক মুখপাত্র বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, রাফার ফিল্ড হাসপাতালে ১৮৪ জনকে নিয়ে আসা হয়েছিল। তাদের মধ্যে ১৯ জনকে তাৎক্ষণিকভাবে মৃত ঘোষণা করা হয় এবং আটজন গুরুতর আহত অবস্থায় কিছুক্ষণ পর মারা যান। ৩৫ জনেরও বেশি রোগীর তাৎক্ষণিকভাবে ভালো চিকিৎসার প্রয়োজন ছিল।
গাজার গণমাধ্যম দপ্তর বলছে, ইসরায়েল সহায়তার কথা বলে ডেকে এনে আট দিনে ১০২ জন ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে। দপ্তরটি ইসরায়েলের এ অপরাধকে ‘ভয়ংকর, ইচ্ছাকৃতভাবে অপরাধের পুনরাবৃত্তি’ হিসেবে অভিহিত করেছে। তারা বলছে, ক্ষুধার্ত ফিলিস্তিনিদের ডেকে এনে তাদের ওপর প্রকাশ্যে গুলি চালানো হচ্ছে। টেলিগ্রামে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘কথিত ওই সহায়তাকেন্দ্রগুলো বিপজ্জনক এলাকায় অবস্থিত, যা দখলদার সামরিক বাহিনী নিয়ন্ত্রণ করে।’ জাতিসংঘ, নিরাপত্তা কাউন্সিল ও মানবাধিকার সংস্থাগুলোকেও এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে গণমাধ্যম দপ্তর।
এদিকে, গত সোমবার শেষ ভাগে গাজার খান ইউনিস থেকে ফিলিস্তিনিদের সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে ইসরায়েল। এতে বিপাকে পড়েছেন অসুস্থ ব্যক্তিরা। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, এ নির্দেশের কারণে নাসের হাসপাতালের রোগীরা ‘সুনির্দিষ্টভাবে মৃত্যু’ঝুঁকির সম্মুখীন হয়েছে।
সামরিক বাহিনী বাসিন্দাদের মাওয়াসি এলাকার দিকে যাওয়ার নির্দেশনা দিয়েছে। তবে ফিলিস্তিনি ও জাতিসংঘের কর্মকর্তারা বলছেন, পুরো উপত্যকায় এখন আর নিরাপদ কোনো স্থান নেই। উপত্যকার ২৩ লাখ জনগোষ্ঠীর বেশিসংখ্যকই অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হয়ে পড়েছে।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, গাজার জাবালিয়া এলাকায় তাদের তিন সেনার মৃত্যু হয়েছে। মার্চ মাসের পর তাদের ওপর হওয়া বড় মাপের হামলা এটি। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলের নির্বিচার হামলায় অন্তত ৫৪ হাজার ৩৮১ জন ফিলিস্তিনি মারা গেছেন। আহত হয়েছেন ১ লাখ ২৪ হাজার ৫৪ জন।
ইসরায়েল শুধু গাজায় নয়, পশ্চিম তীরেও ফিলিস্তিনিদের ওপর চড়াও হচ্ছে। সেখানে জেনিন, হেবরন, রামাল্লাহ ও বেথলেহাম এলাকা থেকে ইসরায়েলি বাহিনী অন্তত ৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। সূত্র: রয়টার্স