ঢাকা ২৬ আষাঢ় ১৪৩২, বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫
English
বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫, ২৬ আষাঢ় ১৪৩২

সহায়তা নিতে এসে ইসরায়েলি আক্রমণে নিহত ২৭

প্রকাশ: ০৪ জুন ২০২৫, ০৮:৫২ এএম
সহায়তা নিতে এসে ইসরায়েলি আক্রমণে নিহত ২৭
ছবি: সংগৃহীত

গাজার দক্ষিণে ইসরায়েলি আক্রমণে অন্তত ২৭ ফিলিস্তিনি মারা গেছেন। আহত হয়েছেন আরও কয়েকজন। নিহতরা যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল সমর্থিত সহায়তা সংস্থার বিতরণকেন্দ্রে খাবারের জন্য গিয়েছিলেন। অপেক্ষারত অবস্থায় তাদের ওপর গুলি চালায় ইসরায়েল। গাজা উপত্যকার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাতে জানা গেছে এ তথ্য।

গত ২৭ মে থেকে প্রতিদিন এ ধরনের হামলার ঘটনা সামনে এসেছে। প্রাণহানি ও আহত হয়েছে ফিলিস্তিনিরা। জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস এ রকম ঘটনাগুলোর স্বাধীন তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বলছে, রাফায় বিতরণকেন্দ্রের নির্ধারিত প্রবেশপথ রয়েছে। একটি দল ওই পথের বাইরে যাওয়ায় গুলি চালানো হয়। 

ইন্টারন্যাশনাল কমিটি অব দ্য রেড ক্রসের এক মুখপাত্র বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, রাফার ফিল্ড হাসপাতালে ১৮৪ জনকে নিয়ে আসা হয়েছিল। তাদের মধ্যে ১৯ জনকে তাৎক্ষণিকভাবে মৃত ঘোষণা করা হয় এবং আটজন গুরুতর আহত অবস্থায় কিছুক্ষণ পর মারা যান। ৩৫ জনেরও বেশি রোগীর তাৎক্ষণিকভাবে ভালো চিকিৎসার প্রয়োজন ছিল।  

গাজার গণমাধ্যম দপ্তর বলছে, ইসরায়েল সহায়তার কথা বলে ডেকে এনে আট দিনে ১০২ জন ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে। দপ্তরটি ইসরায়েলের এ অপরাধকে ‘ভয়ংকর, ইচ্ছাকৃতভাবে অপরাধের পুনরাবৃত্তি’ হিসেবে অভিহিত করেছে। তারা বলছে, ক্ষুধার্ত ফিলিস্তিনিদের ডেকে এনে তাদের ওপর প্রকাশ্যে গুলি চালানো হচ্ছে। টেলিগ্রামে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘কথিত ওই সহায়তাকেন্দ্রগুলো বিপজ্জনক এলাকায় অবস্থিত, যা দখলদার সামরিক বাহিনী নিয়ন্ত্রণ করে।’ জাতিসংঘ, নিরাপত্তা কাউন্সিল ও মানবাধিকার সংস্থাগুলোকেও এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে গণমাধ্যম দপ্তর।

এদিকে, গত সোমবার শেষ ভাগে গাজার খান ইউনিস থেকে ফিলিস্তিনিদের সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে ইসরায়েল। এতে বিপাকে পড়েছেন অসুস্থ ব্যক্তিরা। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, এ নির্দেশের কারণে নাসের হাসপাতালের রোগীরা ‘সুনির্দিষ্টভাবে মৃত্যু’ঝুঁকির সম্মুখীন হয়েছে। 

সামরিক বাহিনী বাসিন্দাদের মাওয়াসি এলাকার দিকে যাওয়ার নির্দেশনা দিয়েছে। তবে ফিলিস্তিনি ও জাতিসংঘের কর্মকর্তারা বলছেন, পুরো উপত্যকায় এখন আর নিরাপদ কোনো স্থান নেই। উপত্যকার ২৩ লাখ জনগোষ্ঠীর বেশিসংখ্যকই অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হয়ে পড়েছে।  

ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, গাজার জাবালিয়া এলাকায় তাদের তিন সেনার মৃত্যু হয়েছে। মার্চ মাসের পর তাদের ওপর হওয়া বড় মাপের হামলা এটি। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলের নির্বিচার হামলায় অন্তত ৫৪ হাজার ৩৮১ জন ফিলিস্তিনি মারা গেছেন। আহত হয়েছেন ১ লাখ ২৪ হাজার ৫৪ জন। 

ইসরায়েল শুধু গাজায় নয়, পশ্চিম তীরেও ফিলিস্তিনিদের ওপর চড়াও হচ্ছে। সেখানে জেনিন, হেবরন, রামাল্লাহ ও বেথলেহাম এলাকা থেকে ইসরায়েলি বাহিনী অন্তত ৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। সূত্র: রয়টার্স

যুক্তরাষ্ট্রকে ইরানের কড়া বার্তা যুদ্ধ না শান্তি, কোনটি চান?

প্রকাশ: ১০ জুলাই ২০২৫, ০৮:৩৩ এএম
যুদ্ধ না শান্তি, কোনটি চান?
প্রতীকী ছবি

ইরান-ইসরায়েলের ১২ দিনের যুদ্ধ এবং যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক হস্তক্ষেপের পর তেহরান ওয়াশিংটনকে কঠোর বার্তা দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র আলোচনার মাধ্যমে শান্তি স্থাপন করতে চায় না-কি যুদ্ধ চালিয়ে যেতে চায়- তা স্পষ্ট করতে হবে। 

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ফিন্যানশিয়াল টাইমস-এ প্রকাশিত এক নিবন্ধে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে ওই বার্তা দেন। 

তিনি বলেন, পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে ওয়াশিংটনের সঙ্গে আলোচনায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হচ্ছিল। কিন্তু ইসরায়েলের আগ্রাসনে তা বাধাগ্রস্ত হয়। 

তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে সতর্ক করে বলেন, ‘অন্যের জন্য যুদ্ধে না জড়িয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে নিজের স্বার্থে শান্তির পথে হাঁটতে হবে।’

নিবন্ধে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতি প্রশ্ন ছুড়ে দেন- ‘যুক্তরাষ্ট্র কি শেষ পর্যন্ত কূটনীতি বেছে নেবে? নাকি অন্যের জন্য যুদ্ধে আটকে থাকবে?’

আরাগচি জানান, যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফের সঙ্গে মাত্র ৯ সপ্তাহে পাঁচ দফা বৈঠকে যে অগ্রগতি হয়েছিল, তা অতীতে কখনো সম্ভব হয়নি। তার দাবি অনুযায়ী, এই আলোচনাগুলো হঠাৎই বন্ধ হয়ে যায় যখন ইসরায়েল ১৩ জুন ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় বিমান হামলা চালায়। ইসরায়েল একে ‘অস্তিত্বের জন্য হুমকি’ থেকে বাঁচার জন্য পূর্বপ্রস্তুতিমূলক হামলা হিসেবে বর্ণনা করলেও, ইরান একে সরাসরি শান্তি প্রক্রিয়া ধ্বংস করার চেষ্টা হিসেবে দেখছে।

ইসরায়েলের হামলার পর যুক্তরাষ্ট্রও ইরানের ভূগর্ভস্থ পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে বিমান হামলা চালায়, যা আরও উত্তেজনা তৈরি করে। আরাগচি অভিযোগ করেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণ আলোচনায় এগোচ্ছিলাম। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্র সেই অগ্রগতিকে ইচ্ছাকৃতভাবে ধ্বংস করেছে।’

তিনি জোর দিয়ে বলেন, ইরান এখনো পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ চুক্তির (এনপিটি) সদস্য এবং জাতিসংঘের পর্যবেক্ষণে শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে।

অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, সময় আসলে তিনি ইরানের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে আগ্রহী হবেন, যাতে ইরান নিজেকে শান্তিপূর্ণভাবে গড়ে তুলতে পারে।

এদিকে আব্বাস আরাগচি সম্প্রতি সৌদি আরব সফরে গিয়ে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। সেখানে ইরান-সৌদি সম্পর্ক ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা নিয়ে আলোচনা হয়।

‘গাজায় যুদ্ধ থামাতে চায় পুরো বিশ্ব, ব্যতিক্রম শুধু ইসরায়েল’
ইসরায়েলি নিরাপত্তা পরিষদের সাবেক প্রধান ও প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক গিয়োরা আইল্যান্ড বলেছেন, গাজার মতো জনবহুল এলাকায় সেনা মোতায়েন ‘মিথ্যা সাফল্যের ধারণা তৈরি করে’ এবং এটি ‘সেনাবাহিনীকে একটি ব্যয়বহুল ও বিপজ্জনক জটিলতায় ফেলে দেয়।’

তিনি বলেন, ‘জয়ের কোনো বাস্তব সম্ভাবনা নেই, অথচ এর জন্য মূল্য দিতে হচ্ছে অনেক বেশি’। সম্প্রতি এক নিবন্ধে তিনি ওই মন্তব্য করেন। গতকাল বুধবার জেরুজালেম পোস্টের এক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়।

আইল্যান্ড আরও বলেন, সম্প্রতি গাজার বেইত হানুনে পাঁচ ইসরায়েলি সেনা নিহত হয়েছেন এবং ১৪ জন আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এর আগে একটি হামলায় সাতজন সেনা প্রকৌশলী নিহত হয়েছিলেন। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে তিনি বলেন, ‘এই ধরনের ঘটনা বারবার প্রমাণ করে যে, গাজায় চলমান যুদ্ধটি বাস্তবে অর্থহীন ও ক্ষতিকর।’

আইল্যান্ড বলেন, আধুনিক যুদ্ধের একটি অভিন্ন নিয়ম হলো- ‘যেখানে কোনো সেনাবাহিনী শত্রু জনগণের মধ্যে অবস্থান নেয়, সেখানে ভয়াবহ হামলার ঝুঁকি থেকেই যায়।’

তিনি অতীত উদাহরণ টেনে বলেন, ‘এই একই বাস্তবতা আমরা দেখেছি ভিয়েতনামে আমেরিকানদের ক্ষেত্রে, লেবাননে ইসরায়েলি সেনাদের ক্ষেত্রে এবং ইরাক ও আফগানিস্তানে আমেরিকান ও ব্রিটিশ বাহিনীর ক্ষেত্রে।’

আইল্যান্ড আরও জানান, ‘গাজার স্থল অভিযান শুরুর আগে এই বাস্তবতা বোঝা সম্ভব হয়েছিল। কিন্তু তা সত্ত্বেও এই অভিযান চালানো হয়েছে, যার ফলে ইতোমধ্যেই ৪০০-এর বেশি ইসরায়েলি সেনা নিহত হয়েছেন এবং হাজার হাজার আহত হয়েছেন।’

ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিতে যুক্তরাজ্যের প্রতি আহ্বান ম্যাক্রোঁর

প্রকাশ: ০৯ জুলাই ২০২৫, ১০:৪৩ পিএম
আপডেট: ০৯ জুলাই ২০২৫, ১০:৪৩ পিএম
ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিতে যুক্তরাজ্যের প্রতি আহ্বান ম্যাক্রোঁর
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাজ্যে তিন দিনের রাষ্ট্রীয় সফরের প্রথম দিনে ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিতে যুক্তরাজ্যের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (৮ জুলাই) পার্লামেন্টে দেওয়া বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘এটাই একমাত্র শান্তির পথ।’

গাজায় অব্যাহত ইসরায়েলি বর্বরতায় যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে ম্যাক্রোঁ বলেন, ‘গাজা ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে। প্রতিদিন পশ্চিম তীরে হামলা হচ্ছে। ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের ধারণা কখনো এতটা বিপন্ন হয়নি।’

তিনি বলেন, ‘দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধান এবং ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি প্রদানই অঞ্চলজুড়ে শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠার একমাত্র উপায়।’

অর্ধঘণ্টার ওই বক্তৃতায় ম্যাক্রোঁ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী আন্তর্জাতিক শৃঙ্খলা রক্ষায় ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্যের একসঙ্গে কাজ করার গুরুত্ব তুলে ধরেন। পাশাপাশি ইউক্রেন ইস্যুতে ইউরোপের ঐক্য বজায় রাখার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।

বক্তব্যের পর উইন্ডসর ক্যাসেলে এক রাজকীয় নৈশভোজে অংশ নেন প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ এবং রাজা চার্লস তৃতীয়। যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার, সঙ্গীত তারকা এলটন জন ও মিক জ্যাগার-সহ সকল অতিথিদের সামনে ম্যাক্রোঁ বলেন, ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে মৈত্রীর সম্পর্ক আজও সমান গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে এই জটিল বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে। সূত্র: ব্লমবার্গ

মাহফুজ/

আন্দোলনকারীদের ‘পায়ে গুলি করেন’: পুলিশকে নির্দেশ কেনিয়ার প্রেসিডেন্টের

প্রকাশ: ০৯ জুলাই ২০২৫, ০৮:৩৬ পিএম
আপডেট: ০৯ জুলাই ২০২৫, ০৮:৩৭ পিএম
আন্দোলনকারীদের ‘পায়ে গুলি করেন’: পুলিশকে নির্দেশ কেনিয়ার প্রেসিডেন্টের
ছবি: সংগৃহীত

কেনিয়ার প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম রুটো পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন, কেউ যদি বিক্ষোভে অংশ নিয়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বা সম্পত্তি পুড়িয়ে দেয়, তাহলে তাকে পায়ে গুলি করে অক্ষম করে দিন, তবে হত্যা নয়।

সম্প্রতি দেশজুড়ে সরকারবিরোধী বিক্ষোভে পুলিশের অতিরিক্ত বলপ্রয়োগে ৩১ জন নিহত হওয়ার ঘটনায় জাতিসংঘ ও মানবাধিকার সংগঠনগুলো উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। কেনিয়ার রাষ্ট্রীয় মানবাধিকার কমিশনের (KNCHR) তথ্যমতে, গত সোমবারের (৭ জুলাই) বিক্ষোভেই মারা গেছে ৩১ জন, আহত হয়েছে ১০০ জনের বেশি এবং গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৫৩২ জনকে। তবে কেনিয়া পুলিশ দাবি করেছে, নিহত হয়েছে ১১ জন।

রুটো বলেন, ‘কেউ যদি অন্যের ব্যবসা বা সম্পত্তি পুড়িয়ে দেয়, তাহলে তাকে পায়ে গুলি করে হাসপাতালে পাঠান, পরে আদালতে সোপর্দ করুন। হত্যা করবেন না, তবে নিশ্চিত করুন যেন তার পা ভেঙে যায়।’

তিনি আরও বলেন, তার বিরোধীরা যেন সহিংস বিক্ষোভ বা বেআইনি উপায়ে তাকে ক্ষমতা থেকে সরানোর চেষ্টা না করে। তিনি কড়া হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, ‘আইন লঙ্ঘন করে বা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে কেনিয়াকে কেউ শাসন করতে পারবে না, আমার আমলে তা কখনোই হবে না।’

তিনি উল্লেখ করেন, সরকার পরিবর্তনের একমাত্র বৈধ পথ হচ্ছে নির্বাচন। ২০২৭ সালের সাধারণ নির্বাচন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।

রুটো বলেন, ‘এই দেশ কয়েকজন অধৈর্য মানুষের জন্য ধ্বংস হতে পারে না, যারা অসাংবিধানিক উপায়ে সরকার পরিবর্তন করতে চায় - তা কোনোভাবেই ঘটতে দেওয়া যাবে না।’

২০২২ সালে রুটোর সঙ্গে নির্বাচিত হয়েছিলেন সাবেক উপ-প্রেসিডেন্ট রিগাথি গাচাগুয়া। পরে সম্পর্কের অবনতি হলে তিনি অভিশংসিত হন। গাচাগুয়া বলেন, ‘আমরা রুটোকে অসাংবিধানিকভাবে সরাতে চাই না। আমরা চাই ২০২৭ সালের নির্বাচনে ব্যালটের মাধ্যমে তার মোকাবিলা করতে।’

গত মাসে পুলিশি হেফাজতে ব্লগার আলবার্ট ওজওয়াংয়ের মৃত্যুর পর থেকে কেনিয়ায় আবার উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এক বছর আগে কর বৃদ্ধির প্রতিবাদে তরুণরা পার্লামেন্টে ঝড় তুলেছিল।

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, তরুণদের বেকারত্ব ও চাকরির মানজনিত সংকট এই ক্ষোভের আগুনে ঘি ঢেলে দিয়েছে।

রুটো স্বীকার করেন, তরুণদের জন্য কাজের সুযোগের ঘাটতি রয়েছে, তবে তিনি দাবি করেন- এই সংকট তার আগেই শুরু হয়েছে এবং তার সরকার প্রথমবারের মতো বিষয়টি সমাধানে সচেষ্ট হয়েছে।

তিনি প্রশ্ন তোলেন, ‘আগের সরকারের চেয়ে কেন আমার সময়েই এত বিশৃঙ্খলা? আমাকে আপনি যা খুশি বলতে পারেন, তবে আমি নিশ্চিত করব - কেনিয়ায় শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় থাকবে।’

সোমবারের বিক্ষোভ ছিল কেনিয়ার দীর্ঘদিনের গণতান্ত্রিক সংগ্রামের স্মরণে আয়োজিত কর্মসূচি, যা দ্রুতই প্রাণঘাতী সংঘর্ষে রূপ নেয়। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, দেশের ৪৭টি কাউন্টির মধ্যে অন্তত ১৭টিতে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে।

বিক্ষোভকারীরা ‘রুটো হটাও’ ও ‘ওয়ান টার্ম’ (এক মেয়াদে বিদায়) স্লোগান দেন।

KNCHR এক বিবৃতিতে নিহতের সংখ্যা বেড়ে যাওয়াকে ‘গভীরভাবে উদ্বেগজনক’ বলে অভিহিত করেছে। সংস্থাটি বলেছে, ‘আমরা সকল মানবাধিকার লঙ্ঘনের নিন্দা জানাই এবং পুলিশের পাশাপাশি বেসামরিক ও সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের দায় নিশ্চিত করার আহ্বান জানাই।’

তারা আরও জানিয়েছে, অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের হাতে সরকারি ও বেসরকারি স্থাপনায় লুটপাট ও ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয়েছে।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানায়, রাজধানী নাইরোবির উপকণ্ঠ কিয়াম্বুতে ১২ বছরের এক শিক্ষার্থী ঘরে বসে থাকার সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায়।

জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের মুখপাত্র রবিনা শামদাসানি বলেন, ‘এটি অত্যন্ত উদ্বেগজনক যে, এই হত্যাকাণ্ডগুলো ঘটেছে মাত্র দুই সপ্তাহের ব্যবধানে, যখন ২৫ জুন নাইরোবিসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আরও ১৫ জন বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছিল।’

তিনি জানান, বিক্ষোভকারীদের ওপর প্রাণঘাতী গুলি, রাবার বুলেট, টিয়ার গ্যাস ও জলকামান ব্যবহার করা হয়েছে।

সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানায়, অজ্ঞাত হামলাকারীরা দু’টি হাসপাতালে হামলা চালিয়ে চিকিৎসা সরঞ্জাম লুট করেছে এবং হাসপাতালের কর্মীদের হয়রানি করেছে।

হত্যাকাণ্ড, সম্পত্তি ধ্বংস এবং নির্বিচার গ্রেপ্তারের বিষয়ে ধর্মীয় ও মানবাধিকার সংগঠনগুলো দ্রুত, স্বতন্ত্র ও নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করেছে।

বিরোধী নেতারা অভিযোগ করেছেন, সরকার পুলিশ ভ্যান দিয়ে সশস্ত্র গ্যাং সদস্যদের বিক্ষোভস্থলে পাঠিয়েছে, বিশেষ করে বিরোধী ঘাঁটিগুলোতে।

তারা প্রেসিডেন্ট রুটোর প্রশাসনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব ব্যবসা বর্জনের আহ্বান জানায়।

বিরোধীরা এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, ‘এই সরকার শত্রুভাবাপন্ন। তাদের সঙ্গে যুক্তিযুক্ত আলোচনা সম্ভব নয়। এই সরকারের বিরুদ্ধে আমাদের প্রতিরোধ চলবে। আমরা থামব না, পিছু হটব না, আত্মসমর্পণ করব না।’

কেনিয়ার প্রধান বিচারপতি মার্থা কুমে সহিংস বিক্ষোভ বন্ধে সতর্কবার্তা দিয়েছেন। তিনি বলেন, এ ধরনের আন্দোলন দেশটির গণতান্ত্রিক ভিত্তিকে হুমকির মুখে ফেলতে পারে। সূত্র: বিবিসি

মাহফুজ/

ভারতের গুজরাটে সেতু ধসে নিহত অন্তত ১০ জন

প্রকাশ: ০৯ জুলাই ২০২৫, ০৮:০৩ পিএম
আপডেট: ০৯ জুলাই ২০২৫, ০৮:০৪ পিএম
ভারতের গুজরাটে সেতু ধসে নিহত অন্তত ১০ জন
ছবি: সংগৃহীত

ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় গুজরাট রাজ্যে একটি সেতু ধসে পড়ে অন্তত ১০ জন নিহত হয়েছেন। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।

গুজরাটের স্বাস্থ্যমন্ত্রী রুশিকেশ প্যাটেল জানান, বুধবার (৯ জুলাই) সকালে গামভিরা সেতুর একটি অংশ ধসে পড়লে কয়েকটি যানবাহন নিচে মহিসাগর নদীতে পড়ে যায়। সেতুটি রাজ্যের ভদোদরা জেলায় অবস্থিত এবং ১৯৮৫ সালে নির্মিত হয়েছিল বলেও জানান তিনি।

ঘটনার ভিডিওতে দেখা যায়, সেতুর একাংশ ভেঙে পড়ার পর একটি ট্যাংকার বিপজ্জনকভাবে ঝুলে আছে। আর নিচে নদীতে উল্টে থাকা একটি ভ্যানে আটকে থাকা একজন নারীকে তাঁর ছেলের জন্য সাহায্য চেয়ে কাঁদতে শোনা যায়।

জ্যেষ্ঠ সরকারি কর্মকর্তা অনিল ধামেলিয়া সাংবাদিকদের বলেন, ঘটনাস্থল থেকে এখন পর্যন্ত ১০টি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আহত হয়েছেন আরও পাঁচজন। এখনও উদ্ধার অভিযান চলছে বলেও তিনি জানান।

দুর্ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি নিহতদের পরিবারকে সমবেদনা জানিয়েছেন।

ভারতে দীর্ঘদিন ধরেই অবকাঠামোগত নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে। বিশেষ করে মহাসড়ক ও সেতুগুলোতে প্রায়ই বড় ধরনের দুর্ঘটনার ঘটনা ঘটে।

এর আগে ২০২২ সালে গুজরাটেই ঔপনিবেশিক আমলের একটি তারে ঝোলানো সেতু মাচ্ছু নদীতে ধসে পড়ে। সেই ঘটনায় শত শত মানুষ পানিতে পড়ে যান এবং অন্তত ১৩২ জনের মৃত্যু হয়। সূত্র: আল জাজিরা

 

পুতিনকে ট্রাম্পের সমালোচনার পর ইউক্রেনে জোরালো রুশ হামলা

প্রকাশ: ০৯ জুলাই ২০২৫, ০৫:৫২ পিএম
আপডেট: ০৯ জুলাই ২০২৫, ০৫:৫৭ পিএম
পুতিনকে ট্রাম্পের সমালোচনার পর ইউক্রেনে জোরালো রুশ হামলা
কিয়েভ অঞ্চলে বিস্ফোরণের পর আগুন নেভাচ্ছেন দমকল কর্মীরা। ছবি: সংগৃহীত

রাশিয়ার সর্ববৃহৎ আকাশ হামলায় নাস্তানাবুদ ইউক্রেন। প্রেসিডেন্ট ভলোদেমির জেলেনস্কি জানিয়েছেন, মঙ্গলবার (৮ জুলাই) রাতভর চলা হামলায় একাধিক ধাপে রাশিয়া ৭২৮টি ড্রোন ও ১৩টি ক্রুজ ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে ইউক্রেনজুড়ে বিভিন্ন শহরে। এ হামলা সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে বড় আকাশ হামলা।

এই হামলার কড়া নিন্দা করে জেলেনস্কি বলেন, ঠিক এমন এক সময়ে এই হামলা হলো যখন শান্তি প্রতিষ্ঠা ও যুদ্ধবিরতির জন্য ব্যাপক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কিন্তু একমাত্র রাশিয়াই প্রতিটি শান্তি প্রচেষ্টাকে প্রত্যাখ্যান করে চলেছে।

এর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউক্রেনকে নতুন করে অস্ত্র সহায়তা পাঠানোর ঘোষণা দেন - যা গত সপ্তাহে স্থগিত হয়ে গিয়েছিল বলে মার্কিন গণমাধ্যমে দাবি করা হয়। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ট্রাম্প নিজে এই স্থগিতাদেশ সম্পর্কে জানতেন না।

স্থানীয় সময় মঙ্গলবার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্রকাশ্যে ক্ষোভ ঝাড়েন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ওপর। সাংবাদিকদের সঙ্গে ট্রাম্প বলেন, ‘আলোচনায় পুতিন আমাদের দিকে অনেক বাজে কথা ছুড়ে দেয়। সে সব সময় আমাদের সঙ্গে ভদ্রভাবে কথা বলে, কিন্তু আসলে কিছুই করে না।’

ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ এ বিষয়ে বলেন, ‘আমরা বিষয়টি বেশ ঠান্ডা মাথায় নিচ্ছি। ট্রাম্প সাধারণত একটু রুক্ষ ভাষায় কথা বলেন।’

দুই নেতার মধ্যে নিয়মিত যোগাযোগ থাকলেও এখন পর্যন্ত তা ইউক্রেন সংঘাতে কোনো যুদ্ধবিরতিতে রূপ নেয়নি-যা একসময় ট্রাম্প বলেছিলেন তিনি একদিনেই বাস্তবায়ন করতে পারবেন।

গত সপ্তাহে পুতিনের সঙ্গে এক ফোনালাপের পর ট্রাম্প বলেছিলেন, ‘আমি খুব হতাশ। সে (পুতিন) এখনো থামতে চায় না, কেবল মানুষ হত্যা করেই যাচ্ছে। এটা কোনো ভালো বিষয় না।’

ট্রাম্প প্রশাসনের ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তা স্থগিতের সিদ্ধান্ত নিয়েও বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। মার্কিন গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, এই সিদ্ধান্তে সম্মতি দিয়েছিলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ এবং প্রতিরক্ষা নীতির আন্ডার-সেক্রেটারি এলব্রিজ কলবি।

মঙ্গলবার সাংবাদিকরা ট্রাম্পের কাছ থেকে জানতে চান, ‘এই সিদ্ধান্ত কে নিয়েছিলেন? পাশে বসা হেগসেথের দিকে তাকিয়ে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি জানি না। আপনি আমাকে বলুন।’

পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার ফলে যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে ১০টি প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করতে পারে বলে জানিয়েছে মার্কিন গণমাধ্যম Axios। ইউক্রেন এই আন্তঃবাহিনী ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা ব্যবহার করে রাশিয়ার ক্রমবর্ধমান ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা প্রতিহত করার চেষ্টা করছে।

যদিও পূর্ব ইউক্রেন ও রাজধানী কিয়েভ নিয়মিত হামলার মুখে পড়ে, রাশিয়ার আঘাত থেকে দেশটির কোনো অংশই রেহাই পায়নি।

মঙ্গলবার রাতের ভয়াবহ হামলায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে লুটস্ক শহর, যেটি পোল্যান্ড সীমান্ত থেকে মাত্র ৯০ কিলোমিটার দূরে এবং সামরিক ও মানবিক সহায়তা পরিবহনের গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র।

এছাড়া পশ্চিমাঞ্চলের লভিভ ও রিভনে শহরেও বিস্ফোরণের খবর পাওয়া গেছে।

চলতি বছর শুরুর দিকে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে দুই দফা যুদ্ধবিরতির আলোচনা হলেও এরপর আর কোনো বৈঠকের তারিখ নির্ধারিত হয়নি। কিয়েভ কিংবা মস্কো-কোনো পক্ষই বর্তমানে কূটনীতিকে আশাব্যঞ্জক পথ মনে করছে না।

এর মধ্যেই ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে রাশিয়ার গ্রীষ্মকালীন সামরিক অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

পেসকভ বুধবার (৯ জুলাই) বলেন, ‘আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। প্রতিদিনই ইউক্রেনকে নতুন বাস্তবতা মেনে নিতে হচ্ছে।’ সূত্র: বিবিসি

মাহফুজ/