ঢাকা ২ শ্রাবণ ১৪৩২, বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই ২০২৫
English
বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই ২০২৫, ২ শ্রাবণ ১৪৩২

যুক্তরাষ্ট্রে ‘বিপজ্জনক ছত্রাক’ পাচারের অভিযোগে চীনা যুগল গ্রেপ্তার

প্রকাশ: ০৪ জুন ২০২৫, ১২:৩২ পিএম
আপডেট: ০৪ জুন ২০২৫, ১২:৩৫ পিএম
যুক্তরাষ্ট্রে ‘বিপজ্জনক ছত্রাক’ পাচারের অভিযোগে চীনা যুগল গ্রেপ্তার
ছবি:সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগানে বিপজ্জনক ছত্রাক পাচারের অভিযোগে ইউনকিং জিয়ান ও জুনিয়ং লিউ নামে দুই চীনা নাগরিক গ্রেপ্তার করেছে । এছাড়া ভিসা জালিয়াতি ও ষড়যন্ত্রের অভিযোগও আনা হয়েছে এই দুই  চীনা নাগরিকের বিরুদ্ধে।

মঙ্গলবার (৪ জুন) মিশিগানের বিচার বিভাগ দুই চীনা গবেষকের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে বিপজ্জনক ছত্রাক পাচার চেষ্টার অভিযোগ ঘোষণা করে। 
মঙ্গলবার (৪ জুন) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায় দ্য নিউইয়র্ক টাইমস। 

যদিও চীন বলছে,যুক্তরাষ্ট্রের সরকার আরও বেশি সংখ্যক চীনা শিক্ষার্থীকে দেশ থেকে দূরে রাখার  কৌশল হিসেবে এই মামলাটি সাজিয়েছে।

গত জুলাই মাসে, ৩৩ বছর বয়সী ইউনকিং জিয়ান এবং ৩৪ বছর বয়সী জুনিয়ং লিউ নামের  এই দুই শিক্ষার্থীর মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল।

মার্কিন কর্তৃপক্ষ জানায়, মি. লিউ ফুসারিয়াম গ্রামিনিয়ারাম ছত্রাকের ছোট ব্যাগ বহন করে যুক্তরাষ্ট্রে আসেন। এই ছত্রাক গম, বার্লি, ভুট্টা এবং চাল জাতীয় ফসলের গাছেকে পঙ্গু করে দিতে পারে।

গত বছর ৩২টি রাজ্যে কৃষি বিভাগের অর্থায়নে পরিচালিত গবেষণা অনুসারে, উত্তর ও পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে ফসলের মাথার ক্ষয় রোগটি আমেরিকান কৃষকদের কাছে একটি পরিচিত সমস্যা। এই ছত্রাক শীতকালীন গম ফসলের জন্য বিশেষভাবে ক্ষতিকর হতে পারে।

মিস জিয়ানকে গ্রেপ্তার করে ডেট্রয়েটের ফেডারেল আদালতে মামলা করা হয়েছে। বর্তমানে মিঃ লিউ চীনে আছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। 

চীনা নাগরিকদের জন্য শিক্ষার্থী ভিসা ‘আক্রমণাত্মকভাবে’ বাতিল করার ট্রাম্প প্রশাসনের প্রতিশ্রুতির কারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধির সাথে সাথে এই ফৌজদারি অভিযোগ আনা হয়েছে।

মার্কিন প্রশাসন বলছে, এই ধরনের ছাত্ররা তাদের দেশের স্বার্থে আমেরিকান ল্যাব থেকে সংবেদনশীল প্রযুক্তি বা বাণিজ্য গোপনীয়তা চুরি করার মতো কাজ করার ঝুঁকিতে থাকে।

এই প্রতিবেদনে বলা হয়, জিয়ান মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ে কাজ করতেন। আর তার প্রেমিক লিউ কাজ করতেন একটি চীনা বিশ্ববিদ্যালয়ে। তাদের বিরুদ্ধে যৌথ তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করছে এফবিআই, মার্কিন কাস্টমস এবং সীমান্ত সুরক্ষা কর্তৃপক্ষ।

এ নিয়ে এক সপ্তাহের মধ্যে দ্বিতীয়বারের মতো মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে সম্পর্কযুক্ত চীনা নাগরিকের বিরুদ্ধে ফেডারেল তদন্তে অভিযোগ আনা হলো। গত সপ্তাহে, অ্যান আর্বার-ভিত্তিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া একজন চীনা নাগরিকের বিরুদ্ধে ২০২৪ সালের নভেম্বরের নির্বাচনে অবৈধভাবে ভোট দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়।

মার্কিন অ্যাটর্নি জেরোম এফ. গর্গন জুনিয়র এক বিবৃতিতে বলেন, এই চীনা নাগরিকদের মধ্যে চীনা কমিউনিস্ট পার্টির একজন অনুগত সদস্যও রয়েছে। তাদের কার্যকলাপ জাতীয় নিরাপত্তার জন্য গুরুতর উদ্বেগের বিষয়।

মূলত, জিয়ান ও লিউকে ফুসারিয়াম গ্রামিনিয়ারাম নামক ছত্রাক পাচারের অভিযোগে গ্রেপ্তার করে এফবিআই, যা বৈজ্ঞানিক সাহিত্যে সম্ভাব্য কৃষি সন্ত্রাসবাদের অস্ত্র হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ। এ চীনা যুগল তাদের পরিকল্পনা এগিয়ে নিতে মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি পরীক্ষাগার ব্যবহার করার ইচ্ছা পোষণ করেছিলেন বলেও জানান মার্কিন অ্যাটর্নি জেরোম এফ. গর্গন জুনিয়র।

কর্মকর্তারা বলছেন, ক্ষতিকারক এই ছত্রাক মাথার ক্ষয় সৃষ্টি করে, যা গম, বার্লি, ভুট্টা ও ধানের একটি রোগ এবং প্রতি বছর বিশ্বব্যাপী কোটি কোটি ডলারের অর্থনৈতিক ক্ষতির জন্য দায়ী এটি। ফুসারিয়াম গ্রামিনিয়ারামের বিষাক্ত পদার্থ মানুষ ও গবাদি পশুর বমি, লিভারের ক্ষতি এবং প্রজনন ত্রুটি সৃষ্টি করে।

অভিযোগে বলা হয়, চীনে এই রোগজীবাণু নিয়ে কাজের জন্য জিয়ানকে তহবিল প্রদান করেছিল চীনা সরকার। তার প্রেমিক লিউ একটি চীনা বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত যেখানে সে একই জীবাণু নিয়ে গবেষণা করে বলেও অভিযোগ রয়েছে।

সুলতানা দিনা/

গাজায় আবারও ২০ সহায়তাপ্রত্যাশী নিহত

প্রকাশ: ১৭ জুলাই ২০২৫, ০৯:১২ এএম
গাজায় আবারও ২০ সহায়তাপ্রত্যাশী নিহত
গাজার দক্ষিণের খান ইউনিসে জিএইচএফের বিতরণকেন্দ্রে বুধবার ভিড়ে চাপা পড়ে মারা গেছেন ২০ জন। তাদের স্বজনদের এভাবেই শোক প্রকাশ করতে দেখা যায়। সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল সমর্থিত বিতর্কিত সহায়তা সংস্থা গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের বিতরণকেন্দ্রে বুধবার (১৬ জুলাই) ২০ জন নিহত হয়েছেন। 

জিএইচএফ দাবি করছে, সশস্ত্র কিছু ব্যক্তির ইন্ধনে গাজার খান ইউনিসে সহায়তা নিতে আসা জনতার ঢল নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় এবং এতেই চাপা পড়ে প্রাণ হারান ১৯ জন। আর এসব চলাকালে ভিড়ের মধ্যেই একজনের মৃত্যু হয়েছে ছুরিকাঘাতে। 

জিএইচএফের বিতরণকেন্দ্রে মৃত্যুর ঘটনা নতুন কিছু নয়। প্রায় প্রতিদিনই সহায়তা বিতরণকেন্দ্রগুলোতে গিয়ে প্রাণ হারান সহায়তাপ্রত্যাশীরা। জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তর বলছে, গত ছয় সপ্তাহে সহায়তা সংস্থাটির বিতরণকেন্দ্রে ও তাদের সহায়তার গাড়িবহরের আশপাশে অন্তত ৮৭৫টি মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। 

জিএইচএফ এক বিবৃতিতে জানায়, হামাস ভিড়ের মধ্যে প্রবেশ করে অস্থিরতা তৈরি করেছে- এমনটা মনে করার বিশ্বাসযোগ্য কারণ রয়েছে তাদের। তবে হামাসের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য আসেনি।
  
ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারাও ২০ জনের মৃত্যুর খবর জানিয়েছে। তারা বলছে, ভিড়ে দম আটকে ও পায়ের নিচে চাপা পড়ে ওই মৃত্যুর ঘটনাগুলো ঘটেছে। ভিড়ের মধ্যে টিয়ার গ্যাস ছোড়া হয়েছিল বলেও উল্লেখ করেছেন তারা। এক চিকিৎসাকর্মী জানান, তুলনামূলক ছোট স্থানে অনেক মানুষ একত্রে ঢুকে পড়েছিলেন এবং পরে তারা চাপা পড়েন। 

জাতিসংঘ এর আগে জিএইচএফের প্রসঙ্গে মন্তব্য করেছিল, সংস্থাটি সহায়তা বিতরণে যে মডেল অনুসরণ করছে, সেটি ব্যাপকভাবে অনিরাপদ। তবে জিএইচএফ জাতিসংঘের সমালোচনা প্রত্যাখ্যান করেছে। উল্টো তারা বলেছে, জাতিসংঘ ভুল তথ্য ছড়াচ্ছে। 

প্রসঙ্গত, গোটা গাজা অবরুদ্ধ করে রেখেছে ইসরায়েল। কোনো আন্তর্জাতিক সহায়তা সংস্থাকে সেখানে কোনো রসদ বিতরণের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না। এমনকি তারা বাইরে থেকে কোনো সহায়তা গাজায় প্রবেশও করাতে পারছে না। শুধু জিএইচএফ সহায়তা বিতরণ করতে পারছে। তবে যেটুকু সহায়তা বিতরণ করা হচ্ছে, সেটি প্রয়োজনের তুলনায় যথেষ্ট নয়।


গাজায় প্রতি দশ শিশুর একজন অপুষ্টিতে ভুগছে
গাজায় প্রতি দশ শিশুর একজন অপুষ্টিতে ভুগছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ। ইসরায়েলি অবরোধের মুখে তারা ব্যাপকভাবে ক্ষুধায় ভুগছে বলেও জানিয়েছে সংস্থাটি।

ইউএনআরডব্লিউএর প্রধান ফিলিপ্পে লাজারানি গত মঙ্গলবার বলেছেন, ইসরায়েল গাজায় সাহায্য ঢুকতে না দেওয়ার কারণে উপত্যকায় পুষ্টিসংক্রান্ত রসদের স্বল্পতা দেখা দিয়েছে। তিনি শিশুদের ক্ষুধার্ত থাকাকে মানবসৃষ্ট পরিস্থিতি হিসেবেও অভিহিত করেছেন।

লাজারনি বলেছেন, জাতিসংঘকে অবশ্যই গাজায় কাজ করতে দিতে হবে। বিশেষ করে শিশুদের জন্য বড় পরিসরে সহায়তা প্রবেশের পথ অবারিত রাখতে হবে। যুদ্ধবিরতি নিয়েও কথা বলেন তিনি। লাজারানি বলেন, ‘যুদ্ধবিরতির আরও বিলম্ব শুধু মৃত্যুর সংখ্যাই বাড়াবে।’  

ইউএনআরডব্লিউএর যোগাযোগবিষয়ক পরিচালক জুলিয়েট টোউমা সাংবাদিকদের বলেছেন, গাজায় ওষুধ, পুষ্টি সরবরাহ, স্বাস্থ্যবিধি উপাদান, জ্বালানি সবই দ্রুত ফুরিয়ে আসছে। তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের স্বাস্থ্যবিষয়ক টিম নিশ্চিত করেছে যে গাজায় অপুষ্টি বৃদ্ধি পাচ্ছে, বিশেষ করে চার মাস আগের তুলনায় অবরোধ এখন আরও জোরালোভাবে হচ্ছে।’

টোউমার দেওয়া তথ্যানুসারে, ইউএনআরডব্লিউএর ছয় হাজার ট্রাক সহায়তা গাজার বাইরে দাঁড়িয়ে আছে প্রবেশের অপেক্ষায়। সেগুলো খাবার, স্বাস্থ্যকর উপাদান, ওষুধ, চিকিৎসা রসদে বোঝাই। কিন্তু ইসরায়েলি অবরোধের কারণে সেগুলো ক্ষুধার্ত ও যাদের প্রয়োজন, তাদের হাতে পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। 

এদিকে, গাজায় এখনো নির্বিচারে হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েল। প্রতিদিনই সেখান থেকে হতাহতের ঘটনা ঘটছে। ২০ সহায়তাপ্রত্যাশী ছাড়াও বুধবার ভোর থেকে গাজায় আরও অন্তত ২২ জন ইসরায়েলি হামলায় নিহত হয়েছেন। আল-জাজিরার খবর বলছে, শুধু গাজার আল মাওয়াসি শরণার্থী শিবিরেই ইসরায়েলের হামলায় ৯ জন প্রাণ হারিয়েছেন।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত অবরুদ্ধ উপত্যকাটিতে অন্তত ৫৮ হাজার ৪৭৯ জন মারা গেছেন। আহত হয়েছেন ১ লাখ ৩৯ হাজার ৩৫৫ জন। হতাহতদের বেশির ভাগই বেসামরিক নাগরিক।

 সূত্র: আল-জাজিরা

 

সকাল থেকে গাজায় নিহত ৭৪, পদদলিত হয়ে প্রাণ যায় ২০ জনের

প্রকাশ: ১৬ জুলাই ২০২৫, ১১:০৮ পিএম
সকাল থেকে গাজায় নিহত ৭৪, পদদলিত হয়ে প্রাণ যায় ২০ জনের
ছবি: সংগৃহীত

গাজা উপত্যকার মেডিকেল সূত্রগুলো জানিয়েছে, বুধবার (১৬ জুলাই) সকাল থেকে ইসরায়েলি হামলায় গাজা জুড়ে অন্তত ৭৪ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে অন্তত ২০ জন ছিলেন খাদ্যসাহায্য নিতে গিয়ে পদদলিত হয়ে মারা যান।

দক্ষিণ গাজার খান ইউনুস এলাকায় যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল সমর্থিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (GHF)-এর একটি সাহায্য বিতরণ কেন্দ্রে চরম বিশৃঙ্খলার মধ্যে পদদলিত হয়ে অন্তত ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে GHF এবং একটি স্থানীয় হাসপাতাল।

GHF জানায়, এদের মধ্যে ১৯ জন পদদলিত হয়ে এবং একজন ছুরিকাঘাতে মারা গেছেন একটি বিশৃঙ্খল ও বিপজ্জনক পরিস্থিতির মধ্যে। তারা অভিযোগ করে, ‘হামাসের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সশস্ত্র ব্যক্তিরা’ এই অবস্থাকে উসকে দেয়।

তবে হামাস-নিয়ন্ত্রিত গাজার সরকারি গণমাধ্যম অফিস এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে এবং দাবি করেছে, GHF ‘অপরাধ ধামাচাপা’ দেওয়ার চেষ্টায় হামাসের ওপর দোষ চাপাচ্ছে।

খান ইউনুসের নাসের হাসপাতাল জানিয়েছে, তারা এমন ২১ জনের মরদেহ গ্রহণ করেছে, যারা গ্যাসে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে এবং পদদলিত হয়ে মারা গেছে।

এই প্রথম GHF নিজেই স্বীকার করল যে তাদের পরিচালিত কোনো সাহায্য কেন্দ্রে প্রাণহানি ঘটেছে।

সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়- নাসের হাসপাতালের একটি ঠেলাগাড়িতে ৬ শিশু ও যুবকের মরদেহ রাখা, এবং একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলছেন, ‘তারা খাদ্যের জন্য মারা গেছে। শিশুদের কী দোষ ছিল?’

তিনি বলেন, ‘GHF-এর দরজার সামনে ও পেছনে তারা লোহার বেড়া বসায়। ছেলেরা সামনের দিকে ছিল, আর পেছনের মানুষজন চাপে তাদের উপর দিয়ে হেঁটে যায়।’ আর এতেই এই হতাহতের ঘটনা ঘটে।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ২১ বছর বয়সী আহত যুবক মাহমুদ ফুজো রয়টার্সকে বলেন, ‘আমি যখন সাহায্যকেন্দ্রে পৌঁছাই, তখন দেখলাম গেট বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। লোকজন গাদাগাদি করতে থাকে। কেউ চাপ সহ্য করতে না পেরে পড়ে যায় এবং তাদের পিষে ফেলা হয়।’

GHF–এর এক মুখপাত্র এসব অভিযোগ ‘সম্পূর্ণ মিথ্যা’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন।

GHF ইসরায়েলি সেনা নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলে বেসরকারি নিরাপত্তা বাহিনী ব্যবহার করে সাহায্য বিতরণ করে। ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র বলছে, হামাস যাতে ত্রাণ লুট করতে না পারে, তা নিশ্চিত করতেই এই ব্যবস্থা।

জাতিসংঘ এই ব্যবস্থার সমালোচনা করেছে এবং বলেছে, এটি অনৈতিক।

GHF গত মে মাসের শেষ থেকে কার্যক্রম শুরু করার পর থেকেই প্রায় প্রতিদিনই খাদ্য নিতে গিয়ে ফিলিস্তিনিদের নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, তাদের অনেকেই ইসরায়েলি সেনাদের গুলিতে মারা গেছেন।

জাতিসংঘ মানবাধিকার দপ্তর জানায়, গত ছয় সপ্তাহে GHF-এর দক্ষিণ ও মধ্য গাজার চারটি বিতরণকেন্দ্রের আশপাশে মোট ৬৭৪ জন নিহত হয়েছেন। আর জাতিসংঘ ও অন্যান্য সংস্থার ত্রাণ বহরের রুটে আরও ২০১ জন নিহত হওয়ার ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলের গাজা যুদ্ধ এখন পর্যন্ত অন্তত ৫৮ হাজার ৫৭৩ জনকে হত্যা করেছে এবং ১ লাখ ৩৯ হাজার ৬০৭ জনকে আহত করেছে।

অন্যদিকে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের নেতৃত্বে ইসরায়েলে চালানো হামলায় আনুমানিক ১ হাজার ১৩৯ জন নিহত হন এবং ২০০-র বেশি মানুষকে জিম্মি করে নেওয়া হয়। সূত্র: আল জাজিরা, বিবিসি

 

সিরিয়ার সেনাবাহিনীর দপ্তর গুঁড়িয়ে দিয়েছে ইসরায়েল

প্রকাশ: ১৬ জুলাই ২০২৫, ০৮:৫২ পিএম
সিরিয়ার সেনাবাহিনীর দপ্তর গুঁড়িয়ে দিয়েছে ইসরায়েল
ছবি: সংগৃহীত

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী নিশ্চিত করেছে যে, তারা সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে অবস্থিত সেনাবাহিনীর সদর দপ্তর এবং প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের নিকটবর্তী একটি সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে।

টেলিগ্রামে দেওয়া এক বিবৃতিতে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানায়, দক্ষিণ সিরিয়ায় দ্রুজ সম্প্রদায়ের বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে সিরীয় শাসকগোষ্ঠীর কার্যক্রম এবং অন্যান্য পরিস্থিতির উপর সেনাবাহিনী নজরদারি চালিয়ে যাচ্ছে। রাজনৈতিক নেতৃত্বের নির্দেশনা অনুযায়ী ওই এলাকায় হামলা চালানো হচ্ছে এবং ভবিষ্যতের সম্ভাব্য পরিস্থিতির জন্য সেনাবাহিনী প্রস্তুত রয়েছে।

সিরিয়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাতে জানা গেছে, দামেস্কে ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত একজন নিহত এবং ১৮ জন আহত হয়েছেন। সূত্র: আল জাজিরা

 

সিরিয়ার প্রেসিডেন্টের বাসভবনে ইসরায়েলি হামলা, দ্রুত সরে যাওয়ার আহ্বান

প্রকাশ: ১৬ জুলাই ২০২৫, ০৭:৪৯ পিএম
আপডেট: ১৬ জুলাই ২০২৫, ০৭:৫৯ পিএম
সিরিয়ার প্রেসিডেন্টের বাসভবনে ইসরায়েলি হামলা, দ্রুত সরে যাওয়ার আহ্বান
ছবি: সংগৃহীত

সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল শারা ও সেনাপ্রধানের (জেনারেল স্টাফ) প্রাসাদে ইসরায়েলের হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। তুরস্কের তরফ থেকে প্রেসিডেন্ট আল শারাকে দ্রুত প্রাসাদ ত্যাগ করার আহ্বান জানিয়েছে।

বুধবার (১৬ জুলাই) সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কজুড়ে অবিরাম বিমান হামলায় সামরিক সদর দপ্তর, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অফিসসহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তর ও স্থাপনায় হামলা চালাচ্ছে দখলদার ইসরায়েল। বাদ যায়নি প্রেসিডেন্ট ও সেনাপ্রধানের বাসভবন। হামলায় প্রকৃত হতাহতের সংখ্যা এখনো জানা যায় নি।

সিরিয়ার সুইদা প্রদেশে দ্রুজদের সঙ্গে সিরিয়ার সরকারি বাহিনীর সংঘাতকে কেন্দ্র করে দ্রুজদের পক্ষ নিয়ে সিরিয়ার সরকারি বাহিনীর বিরুদ্ধে এ হামলা পরিচালনা করা হচ্ছে। 

ইসরায়েল বলছে এটি সতর্কবার্তা দেওয়ার জন্য করা হয়েছে। কথা না শুনলে প্রেসিডেন্ট আল-শারাকে টার্গেট করা হবে। সুওয়াইদার ঘটনাবলী নিয়ে সিরিয়ান সরকারের সঙ্গে সকল প্রকার যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছে ইসরায়েল।

ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী কাটজ এক বিবৃতিতে বলেন, সিরিয়ান সরকারকে সুয়াইদার দ্রুজ সম্প্রদায়কে একা ছেড়ে দিতে হবে এবং তাদের বাহিনীকে অঞ্চলটি থেকে প্রত্যাহার করতে হবে। তিনি আরও বলেন, আমরা আগেই স্পষ্ট করে দিয়েছি, ইসরায়েল সিরিয়ার দ্রুজ জনগণকে ত্যাগ করবে না এবং আমরা যে ‘অসামরিককরণ নীতি’ গ্রহণ করেছি তা কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন করব।

ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়াভ গ্যালান্ট দক্ষিণ সিরিয়ায় জরুরি সামরিক হস্তক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী সিরিয়ার সীমান্তে আরও দুইটি সামরিক কোম্পানি মোতায়েন করেছে। এর আগে গতকাল মঙ্গলবার একটি কোম্পানি মোতায়েন করেছিল।

এদিকে সিরিয়ার দ্রুজ অধ্যুষিত এলাকায় দ্রুজ মিলিশিয়ারা ইসরায়েলি পতাকা উড়িয়েছে। 

সিরিয়ায় থাকা তুরস্ক তার সমস্ত ঘাঁটিতে জরুরি সতর্কতা অবস্থা জারি করেছে।


বিস্তারিত আসছে…

ইয়েমেনে ভারতীয় নার্সের ফাঁসি পেছানোর নেপথ্যে মুফতি মুসলিয়ার

প্রকাশ: ১৬ জুলাই ২০২৫, ০২:২৪ পিএম
ইয়েমেনে ভারতীয় নার্সের ফাঁসি পেছানোর নেপথ্যে মুফতি মুসলিয়ার
নিমিশা প্রিয়া

ইয়েমেনে বন্দি ভারতীয় নার্স নিমিশা প্রিয়ার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ার কথা ছিল আজ (১৬ জুলাই)। তবে তা স্থগিত করা হয়েছে। জানা যাচ্ছে, ভারতীয় কর্তৃপক্ষের সম্মিলিত প্রচেষ্টা এবং ভারতের গ্র্যান্ড মুফতি কাঁথাপুরম এপি আবুবকর মুসলিয়ার হস্তক্ষেপে নিমিশার মৃত্যুদণ্ড পিছিয়েছে।

এর ফলে নিমিশার পরিবার আপাতত কিছুটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে।

বর্তমানে নিমিশা হুথি নিয়ন্ত্রিত একটি কারাগারে বন্দি। হুথিদের সঙ্গে ভারতের কূটনৈতিক সম্পর্ক না থাকা সত্ত্বেও নিমিশার জন্য আশার আলো দেখা দিয়েছে ভারতের গ্র্যান্ড মুফতির চেষ্টায়।

ভারতের এই সুন্নি মুসলিম নেতা ইয়েমেনের কিছু ইসলামিক স্কলারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। পরে তারা নিমিশার মৃত্যুদণ্ড নিয়ে দেশটির কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সাক্ষাত করে আলোচনা করেন।

এর আগে জানা গিয়েছিল, আবুবকর মুসলিয়ারের নির্দেশে এক সুফি আলেমের প্রতিনিধি এবং খুন হওয়া ব্যক্তির পরিবারের এক সদস্যের মধ্যে কথাবার্তা হয়। পাশাপাশি, অন্য পক্ষের সঙ্গে পারস্পরিক সম্মতিতে একটি সমাধানে পৌঁছাতে প্রিয়ার পরিবারকে বাড়তি সময় দেওয়ার চেষ্টা করছে ভারত।

ভারতের কর্মকর্তারাও ইয়েমেনের কারা কর্তৃপক্ষ এবং প্রসিকিউটর অফিসের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছিলেন, ফলে শেষ পর্যন্ত আজকের মতো নিমিশার মৃত্যু স্থগিত করা সম্ভব হয়।

ইয়েমেনের শরিয়া আইনে ‘ব্লাড মানি’ একটি গ্রহণযোগ্য বিধান। এই হিসাবে নিমিশার পরিবার ভুক্তভোগীর পরিবারকে আট কোটি ৬০ লাখ টাকা দিতে ইচ্ছুক ছিল।

মুসলিয়ার বলেন, ‘ইসলামে হত্যার পরিবর্তে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার প্রথা রয়েছে। আমি তাদের তা গ্রহণ করার জন্য অনুরোধ করেছি।’

গ্র্যান্ড মুফতিকে উদ্ধৃত করে সংবাদ সংস্থা এএনআই জানায়, নিমিশা প্রিয়ার মৃত্যুদণ্ড স্থগিত হওয়ায় আপাতত স্বস্তি পেলেও তা পুরোপুরি এড়াতে এবং তাকে নিরাপদে ভারতে ফেরানোর পথ এখনও অনেকটাই দীর্ঘ।

অমিয়/