ঢাকা ২৭ আষাঢ় ১৪৩২, শুক্রবার, ১১ জুলাই ২০২৫
English
শুক্রবার, ১১ জুলাই ২০২৫, ২৭ আষাঢ় ১৪৩২

গাজায় গত ২৪ ঘণ্টায় নিহত ১০০, আহত ৪৪০

প্রকাশ: ০৫ জুন ২০২৫, ০১:০৫ এএম
গাজায় গত ২৪ ঘণ্টায় নিহত ১০০, আহত ৪৪০
ইসরায়েলি হামলায় নিহত স্বজনদের মৃতদেহ নিয়ে গাজার আস শিফা হাসপাতাল প্রাঙ্গণে কান্না করছেন মৃতদের স্বজনরা। ছবি: সংগৃহীত

গাজায় গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ১০০ ফিলিস্তিনি নিহত এবং ৪৪০ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে সেখানকার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। খবর আল জাজিরার।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, আগের ইসরায়েলি হামলায় আরও দুইজনের মরদেহ ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।

চলতি বছরের ১৮ মার্চে যুদ্ধবিরতি ভঙ্গের পর থেকে ইসরায়েল ৪ হাজার ৩৩৫ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে এবং আহত করেছে ১৩ হাজার ৩০০ জনকে।

এদিকে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গাজার ক্ষুধার্ত ফিলিস্তিনিদের সতর্ক করে দিয়েছে, যেন তারা যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত বিতর্কিত মানবিক সংস্থা গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) ত্রাণ বিতরণকেন্দ্রগুলোর আশেপাশের সড়কের কাছে না যায়। এসব ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্র একদিনের জন্য বন্ধ থাকবে।

জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ গাজায় যুদ্ধবিরতি ও মানবিক সহায়তার সুযোগ সৃষ্টির আহ্বানে একটি প্রস্তাবের ওপর ভোট দিতে যাচ্ছে। তবে এই প্রস্তাবটিতে যুক্তরাষ্ট্র ভেটো দেবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত ইসরায়েলের চালানো হামলায় গাজায় নিহত বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৪ হাজার ৬০৭ জনে। আহত হয়েছেন এক লাখ ২৫ হাজার ৩৪১ জন। সূত্র: আল জাজিরা

 

স্যোশাল মিডিয়ায় সারা বিশ্বকে ট্রাম্পের হুমকি দায়িত্বশীল আচরণ নয়: ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট

প্রকাশ: ১১ জুলাই ২০২৫, ০৯:২০ পিএম
স্যোশাল মিডিয়ায় সারা বিশ্বকে ট্রাম্পের হুমকি দায়িত্বশীল আচরণ নয়: ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট
ছবি: সংগৃহীত

সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ব্রাজিল থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর ৫০% ট্যারিফ চাপানোর ঘোষণা দেওয়ার পর ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা এর কড়া জবাব দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘একজন মার্কিন প্রেসিডেন্টের পক্ষে সামাজিক মাধ্যমে বসে সারা বিশ্বকে হুমকি দেওয়া দায়িত্বশীল আচরণ নয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্ব অনেক বদলে গেছে, আমরা স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র, কোনো সম্রাটের প্রজা নই। যদি সে (ট্রাম্প) শুল্ক আরোপ করে, তাহলে অন্যরাও পাল্টা ব্যবস্থা নিতে পারে।’

শুক্রবার (১১ জুলাই) ব্রাজিলের রিও ডি জেনেরো’তে ‘ব্রিকস সামিট ২০২৫’ সম্মেলনে বক্তব্য প্রদানকালে তিনি এ হুশিয়ারি উচ্চারণ করেন।

চীন, রাশিয়ার নেতৃত্বে ব্রিকস অর্থনৈতিক জোটের কার্যক্রমকে নিন্দা জানিয়ে আসছেন ট্রাম্প। শেষ পর্যন্ত তিনি ঘোষণা দেন, যেসব দেশ ব্রিকসের নীতিমালা ও আদর্শ মেনে চলবে, জোটটির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলবে, তাদের ওপর তিনি অতিরিক্ত ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবেন। এরই মাঝে চলমান বাণিজ্য যুদ্ধে ব্রাজিল হতে আমদানি করা পণ্যে ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেন ট্রাম্প। তবে এর পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন প্রেসিডেন্ট লুইস ইনাসিও লুলা দা সিলভা।

এক্স-এ দেওয়া এক দীর্ঘ পোস্টে তিনি বলেন, ‘ব্রাজিল একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র, যার নিজস্ব স্বাধীন প্রতিষ্ঠান রয়েছে- আমরা কোনো রকম হস্তক্ষেপ মেনে নেব না।’

তিনি আরও ঘোষণা দেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র যদি একতরফাভাবে শুল্ক বাড়ায়, তবে আমরাও মার্কিন পণ্যের ওপর পাল্টা শুল্ক আরোপ করব।’

চীনকে ছাড়িয়ে যুক্তরাষ্ট্র ব্রাজিলের দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্য অংশীদার। তাই শুল্কহার ১০ শতাংশ থেকে বেড়ে ৫০ শতাংশে পৌঁছালে তা ব্রাজিলের অর্থনীতির ওপর বড় আঘাত হানবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

তবে ট্রাম্পের দাবিকে চ্যালেঞ্জ করে লুলা বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রাজিলের মধ্যে বাণিজ্য ঘাটতির যে অভিযোগ তোলা হয়েছে, তা ‘ভুল’।

যুক্তরাষ্ট্র সরকারের নিজস্ব পরিসংখ্যানও লুলার বক্তব্যকে সমর্থন করে। ২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্র ব্রাজিলের সঙ্গে ৭.৪ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য উদ্বৃত্তে ছিল।

বর্তমানে ব্রাজিল যুক্তরাষ্ট্রের ১৫তম বৃহত্তম বাণিজ্য অংশীদার।

যুক্তরাষ্ট্র ব্রাজিল থেকে প্রধানত গ্যাস ও পেট্রোলিয়াম, লোহা এবং কফি আমদানি করে। অন্যদিকে ব্রাজিলে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসে খনিজ জ্বালানি, বিমান এবং যন্ত্রপাতি। সূত্র: বিবিসি

মাহফুজ/

 

 

 

ইউক্রেনকে প্যাট্রিয়ট আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দিচ্ছেন ট্রাম্প

প্রকাশ: ১১ জুলাই ২০২৫, ০৮:২৪ পিএম
আপডেট: ১১ জুলাই ২০২৫, ০৮:২৬ পিএম
ইউক্রেনকে প্যাট্রিয়ট আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দিচ্ছেন ট্রাম্প
যুক্তরাষ্ট্রের প্যাট্রিয়ট আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছেন, তার দেশ ইউক্রেনের জন্য প্যাট্রিয়ট আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ও অন্যান্য অস্ত্র পাঠাবে ন্যাটোর (NATO) মাধ্যমে। তিনি বলেন, এই অস্ত্রগুলো ন্যাটোর কাছে হস্তান্তর করা হবে এবং তারাই সেগুলো ইউক্রেনে বিতরণ করবে। ন্যাটো এই অস্ত্রের ব্যয়ভার বহন করবে বলেও জানান তিনি। 

এই ঘোষণা আসে এমন এক সময়ে, যখন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ট্রাম্পের সঙ্গে একটি ‘সফল আলোচনা’ হয়েছে বলে জানিয়েছেন। সম্প্রতি ইউক্রেনের শহরগুলোতে রাশিয়ার ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা বেড়ে যাওয়ায় জেলেনস্কি ১০টি প্যাট্রিয়ট সিস্টেমের আবেদন করেছিলেন।

বিশ্বের সবচেয়ে কার্যকর আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাগুলোর মধ্যে প্যাট্রিয়ট সিস্টেম অন্যতম। এটি শত্রুপক্ষের আগত ক্ষেপণাস্ত্র শনাক্ত ও ধ্বংস করতে সক্ষম।

জার্মানি ও নরওয়ের আর্থিক সহযোগিতা
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) রোমে দেওয়া বক্তব্যে জেলেনস্কি জানান, জার্মানি দু’টি এবং নরওয়ে একটি প্যাট্রিয়ট সিস্টেমের জন্য অর্থ প্রদানে সম্মত হয়েছে। ইউরোপের আরও কিছু দেশ সহায়তা দিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।

গত সপ্তাহে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে ফোনালাপের পর ট্রাম্প বলেন, যুদ্ধ শেষ করার বিষয়ে কোনো অগ্রগতি না হওয়ায় তিনি ‘অখুশ’। তিনি অভিযোগ করেন, পুতিনের ‘ভদ্র আচরণ’ আসলে অর্থহীন প্রমাণিত হয়েছে।

এনবিসি নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, আগামী সোমবার (১৪ জুলাই) রাশিয়া বিষয়ে তিনি একটি ‘গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা’ দেবেন, যদিও বিষয়বস্তু সম্পর্কে কিছু জানাননি। তিনি আরও বলেন, ইউক্রেনে পাঠানো অস্ত্রের সম্পূর্ণ ব্যয় ন্যাটো বহন করবে, যা সদস্য দেশগুলোর যৌথ তহবিল থেকে আসে।

ন্যাটোর মজুত অস্ত্র ব্যবহারের তাগিদ
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও শুক্রবার জানান, তিনি জার্মানি ও স্পেনসহ বেশ কয়েকটি দেশকে তাদের মজুত প্যাট্রিয়ট সিস্টেম দ্রুত ইউক্রেনের জন্য সরবরাহ করার আহ্বান জানিয়েছেন।

রুবিও বলেন, ‘আমরা আমাদের ন্যাটো মিত্রদের উৎসাহ দিচ্ছি, যেহেতু এসব অস্ত্র তাদের কাছে ইতোমধ্যেই রয়েছে। পরে আর্থিক চুক্তির মাধ্যমে তারা প্রতিস্থাপন কিনে নিতে পারবে।’

গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র কিছু গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্র চালান সাময়িকভাবে স্থগিত করায় ইউক্রেন উদ্বেগ প্রকাশ করে ইউক্রেন। এসব অস্ত্রের মধ্যে ছিল প্যাট্রিয়ট ইন্টারসেপ্টর ক্ষেপণাস্ত্র ও সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম গোলাবারুদ।

এই অবস্থায় রুশ বাহিনী ইউক্রেনের ওপর ব্যাপক ড্রোন হামলা চালালে ট্রাম্প জানান, তিনি নতুন করে অস্ত্র পাঠাবেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের পাঠাতেই হবে। ইউক্রেন এখন খুবই জঘন্যভাবে আক্রান্ত হচ্ছে।’

জেলেনস্কি এই অস্ত্র চালান পুনরায় চালু করার আহ্বান জানিয়ে প্যাট্রিয়ট সিস্টেমকে ‘ইউক্রেনীয় জনগণের প্রকৃত রক্ষক’ বলে বর্ণনা করেন।

রেকর্ড হামলা ও বেসামরিক হতাহত
গত মঙ্গলবার (৮ জুলাই) রাতে ইউক্রেন রেকর্ড ৭২৮টি ড্রোন হামলার শিকার হয়। জেলেনস্কি সতর্ক করে বলেন, রাশিয়া এই সংখ্যা ১ হাজারে  উন্নীত করতে চায়।

জাতিসংঘের তথ্যানুযায়ী, ২০২৫ সালের জুন মাস ছিল ইউক্রেনে গত তিন বছরের মধ্যে বেসামরিক হতাহতের দিক থেকে সবচেয়ে ভয়াবহ মাস -যেখানে ২৩২ জন নিহত ও ১ হাজার ৩০০ জনের বেশি আহত হয়।

ইসরায়েলের প্যাট্রিয়ট সিস্টেম ইউক্রেনে যাচ্ছে
দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে মেরামতের পর ইসরায়েলে মোতায়েন থাকা এক ব্যাটারি প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্রের চালান ইউক্রেনে পাঠানো হবে। এ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই আলোচনা চলছিল। ইউক্রেনের এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা গত মাসে জানান, ব্যাটারিটি যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছেছে, তবে এখনো ইউক্রেন তা পায়নি।

প্যাট্রিয়ট সিস্টেম ও এর ইন্টারসেপ্টর ক্ষেপণাস্ত্র ইউক্রেনের বেসামরিক ও সামরিক অবকাঠামোকে রুশ হামলা থেকে রক্ষা করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

সোভিয়েত যুগের এস-৩০০ এবং পশ্চিমা নির্মিত NASAMS ব্যবস্থার সঙ্গে মিলিয়ে ইউক্রেন এক ধরনের ‘স্তরবিন্যাসভিত্তিক প্রতিরক্ষা’ (layered air defence system) গড়ে তুলেছে। এর উন্নত রাডার ও নিখুঁত আঘাত হানার সক্ষমতা ইউক্রেনের জন্য একটি অবিচ্ছেদ্য নিরাপত্তা সরঞ্জাম।

তবে এই সিস্টেম অত্যন্ত ব্যয়বহুল, একটি প্যাট্রিয়ট ব্যাটারির দাম ক্ষেপণাস্ত্রসহ প্রায় ১ বিলিয়ন ডলার। এ কারণেই অনেক পশ্চিমা দেশ এখনো এই অস্ত্র সরবরাহে অনাগ্রহী।

২০২৩ সালের এপ্রিলে ইউক্রেন প্রথম দু’টি পশ্চিমা প্যাট্রিয়ট সিস্টেম পায়। এখন ইউক্রেনের কতটি সিস্টেম সক্রিয় রয়েছে, সে তথ্য গোপন রাখা হচ্ছে।

প্রতিটি নতুন ব্যাটারি যুক্ত হওয়ায় ইউক্রেন আরও বেশি শহর ও গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো—যেমন বিদ্যুৎকেন্দ্র ও সামরিক ঘাঁটি—রক্ষা করতে পারছে।
তবে ইউক্রেন একটি বিশাল দেশ। সব অঞ্চলকে একযোগে রক্ষা করা সম্ভব নয়। তাই মিত্র দেশগুলো এখন অস্ত্র সরবরাহে গতি বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছে।

যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা কমানোর চাপ
গত জানুয়ারিতে দ্বিতীয় মেয়াদে হোয়াইট হাউসে ফেরার পর থেকেই ট্রাম্প ইউক্রেনকে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা কমানোর পদক্ষেপ নিচ্ছেন।

জার্মান গবেষণা সংস্থা কিয়েল ইনস্টিটিউট-এর তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালের শুরু থেকে ২০২৪ সালের শেষ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে ৬৯ বিলিয়ন ডলারের সামরিক সহায়তা দিয়েছে, যা বিশ্বে সর্বোচ্চ।

ট্রাম্প ন্যাটো মিত্রদের সামরিক খাতে তাদের জিডিপির ২% ব্যয় করার চাপও দিয়ে যাচ্ছেন। গত বছর সব ইউরোপীয় সদস্য দেশ এ বিষয়ে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

রাশিয়া ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে পূর্ণমাত্রার সামরিক অভিযান শুরু করে। যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধ বন্ধে দুই পক্ষকে আলোচনায় আসার আহ্বান জানিয়ে আসছে।

রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা
মালয়েশিয়ায় এক সম্মেলনের ফাঁকে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভের সঙ্গে আলোচনার কথা জানান মার্কো রুবিও। তিনি বলেন, ‘শান্তি আলোচনায় অগ্রগতির অভাব এবং রাশিয়ার নমনীয়তার ঘাটতিতে আমরা হতাশ।’

তিনি জানান, তারা যুদ্ধ শেষ করতে কিছু নতুন ধারণা তুলে ধরেছে, যা তিনি ট্রাম্পের কাছে তুলে ধরবেন। সূত্র: বিবিসি

মাহফুজ/

পাকিস্তানে ৯ বাসযাত্রীকে অপহরণের পর হত্যা

প্রকাশ: ১১ জুলাই ২০২৫, ০৬:৪৯ পিএম
পাকিস্তানে ৯ বাসযাত্রীকে অপহরণের পর হত্যা
ছবি: সংগৃহীত

পাকিস্তানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় বেলুচিস্তান প্রদেশে বন্দুকধারীদের হাতে অপহরণের পর নয়জন বাসযাত্রী নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

শুক্রবার (১১ জুলাই) প্রাদেশিক সরকারের মুখপাত্র শাহিদ রিন্দ জানান, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় একাধিক বাস থেকে যাত্রীদের নামিয়ে অপহরণ করা হয়। বাসগুলো বেলুচিস্তান থেকে পাঞ্জাবের উদ্দেশে যাচ্ছিল।

সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নিহতদের জাতিগত পরিচয়ের ভিত্তিতে—বিশেষ করে তাদের পাঞ্জাবি হওয়ায়—টার্গেট করা হয়ে থাকতে পারে।

আরেক সরকারি কর্মকর্তা নাভিদ আলম জানান, গুলিবিদ্ধ মৃতদেহগুলো পাহাড়ি এলাকায় রাতের আঁধারে উদ্ধার করা হয়।

ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহসিন নাকভি।

প্রধানমন্ত্রী শরিফ বলেন, ‘নিরপরাধ মানুষের রক্তের বদলা নেওয়া হবে। নিরীহ নাগরিকদের হত্যা ভারত-সমর্থিত সন্ত্রাসীদের একটি প্রকাশ্য সন্ত্রাসমূলক কর্মকাণ্ড।’

ভারত সরকারের পক্ষ থেকে শরিফের এই মন্তব্যের বিষয়ে তাৎক্ষণিক কোনো প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি। এখন পর্যন্ত কোনো গোষ্ঠী এ হামলার দায় স্বীকার করেনি। সূত্র: আল জাজিরা

মাহফুজ/

কানাডার পণ্যে ৩৫% শুল্ক আরোপের ঘোষণা ট্রাম্পের

প্রকাশ: ১১ জুলাই ২০২৫, ০৬:৩১ পিএম
কানাডার পণ্যে ৩৫% শুল্ক আরোপের ঘোষণা ট্রাম্পের
ছবি: সংগৃহীত

আগামী পহেলা আগস্ট থেকে কানাডা থেকে আমদানিকৃত পণ্যে ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবে যুক্তরাষ্ট্র - এমন ঘোষণা দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। পাশাপাশি তিনি যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য বাণিজ্য অংশীদারদের ওপরও ১৫ থেকে ২০ শতাংশ ‘সর্বজনীন’ শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছেন।

স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) রাতে কানাডার উদ্দেশে পাঠানো এক চিঠিতে ট্রাম্প এ ঘোষণা দেন। এর আগে এনবিসি নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোও খুব শিগগিরই শুল্ক সংক্রান্ত ঘোষণা শুনতে পাবে।

ট্রাম্প বলেন, যেসব দেশ তার কাছ থেকে কোনো চিঠি পায়নি, তাদের ওপর তুলনামূলক বেশি হারে শুল্ক আরোপ করা হবে, যদি না তারা ১০ শতাংশের ‘প্রতিশোধমূলক’ (reciprocal) বাণিজ্য চুক্তিতে সম্মত হয়।

সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, বাকি সব দেশকে আমরা শুধু বলব—তোমাদেরকে ১৫ বা ২০ শতাংশ শুল্ক দিতেই হবে। আমরা এখন এই বিষয়গুলো গুছিয়ে নিচ্ছি।’

নিজস্ব সামাজিক মাধ্যমে ট্রুথ স্যোশালে প্রকাশিত চিঠিতে ট্রাম্প কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নিকে জানান, ১ আগস্ট থেকে শুল্ক কার্যকর হবে এবং কানাডা পাল্টা ব্যবস্থা নিলে তা আরও বাড়ানো হবে।

জবাবে কার্নি এক্স (সাবেক টুইটার)-এ বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চলমান বাণিজ্য আলোচনায় কানাডা সবসময় আমাদের শ্রমিক ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর স্বার্থ রক্ষা করেছে। ১ আগস্টের নতুন সময়সীমা সামনে রেখে আমরা সেই অবস্থান বজায় রাখব।”

চিঠিতে ট্রাম্প অভিযোগ করেন, কানাডা থেকে যুক্তরাষ্ট্রে ফেন্টানিল নামক প্রাণঘাতী মাদক প্রবাহিত হচ্ছে। তিনি লিখেন, ‘যদি কানাডা ফেন্টানিল ঠেকাতে আমার সঙ্গে কাজ করে, তাহলে আমরা হয়তো এই চিঠির কিছু অংশ পুনর্বিবেচনা করতে পারি।’

তবে কানাডীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করা ফেন্টানিলের পরিমাণের খুবই সামান্য অংশ কানাডা থেকে আসে। এর জবাবে কার্নি বলেন, ‘উত্তর আমেরিকায় ফেন্টানিল (মাদক) মোকাবেলায় কানাডা গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি অর্জন করেছে। আমরা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ চালিয়ে যেতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, যাতে উভয় দেশের মানুষকে রক্ষা করা যায়।’

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক কর্মকর্তারা সতর্ক করেছেন, ট্রাম্পের কঠোর বাণিজ্য নীতিগুলো দেশটিকে বিদেশি সিনথেটিক মাদক প্রবাহের ক্ষেত্রে আরও ঝুঁকির মুখে ফেলতে পারে।

এক মার্কিন প্রশাসনিক কর্মকর্তা জানান, ট্রাম্পের ২০২০ সালের ইউএসএমসিএ (USMCA) চুক্তিভুক্ত পণ্যে সম্ভাব্যভাবে শুল্ক ছাড় দেওয়া হতে পারে, যদিও এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। এ ধরনের ছাড় পাওয়া গেলে কানাডার ওপর শুল্ক বৃদ্ধির প্রভাব অনেকটাই হ্রাস পাবে।

চলতি বছরের মার্চে ট্রাম্প কানাডা থেকে আমদানিকৃত গাড়ি ও গাড়ির যন্ত্রাংশে ২৫ শতাংশ শুল্ক দেন। জুনে কানাডার স্টিল ও অ্যালুমিনিয়ামে ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেন। নতুন ৩৫ শতাংশ হারে শুল্ক এই তালিকার বাইরে থাকা সব পণ্যের ক্ষেত্রে কার্যকর হবে।

বর্তমানে কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্র একটি সমঝোতার লক্ষ্যে আলোচনায় আছে, তবে ট্রাম্পের সর্বশেষ হুমকি আলোচনার ভবিষ্যৎকে অনিশ্চিত করে তুলেছে। এ সপ্তাহে তিনি বিশ্বের বহু দেশের উদ্দেশে ২০টিরও বেশি অনুরূপ চিঠি পাঠিয়েছেন।

তবে ট্রাম্পের ঘোষিত নতুন শুল্ক হার আদালতে চ্যালেঞ্জের মুখে শূন্যে নেমে আসতে পারে, যদি চলতি মাসের শেষে মার্কিন আন্তর্জাতিক বাণিজ্য আদালতের এক রায়ের বিরুদ্ধে প্রশাসনের আপিল খারিজ হয়। মে মাসে আদালত রায় দিয়েছিল, জরুরি অবস্থা ছাড়া ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হিসেবে শুল্ক আরোপের আইনগত ক্ষমতা অতিক্রম করেছেন।

এই আপিলের শুনানি ৩১ জুলাই সকাল ১০টায় ওয়াশিংটনে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল সার্কিট কোর্ট অব আপিলসে অনুষ্ঠিত হবে।

এদিকে কানাডা ও মেক্সিকো নতুন করে যুক্তরাষ্ট্রকে সন্তুষ্ট করতে চাইছে, যাতে ২০২০ সালে প্রবর্তিত ইউএসএমসিএ চুক্তির ভবিষ্যৎ স্থিতিশীল থাকে। এটি আগের নাফটা (NAFTA) চুক্তির পরিবর্তে চালু হয়।

কানাডা ও মেক্সিকোর পণ্যে ইতোমধ্যেই ২৫ শতাংশ পর্যন্ত আমেরিকান শুল্ক বসানো হয়েছে, যদিও কানাডার জ্বালানির ক্ষেত্রে হার কিছুটা কম ছিল। ট্রাম্প উভয় প্রতিবেশী দেশের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন যে, তারা অবৈধ অভিবাসন ও মাদক পাচার রোধে যথেষ্ট পদক্ষেপ নিচ্ছে না।

পরবর্তীতে ট্রাম্প ইউএসএমসিএ আওতায় আসা অনেক পণ্যে শুল্ক ছাড়ের ঘোষণা দেন।

বৃহস্পতিবারের চিঠি এমন এক সময় এলো, যখন অনেকেই ট্রাম্প ও কার্নির মধ্যে সম্পর্কের উত্তাপ কমে আসার ইঙ্গিত দেখছিলেন। ৬ মে কার্নি হোয়াইট হাউসে এসে ট্রাম্পের সঙ্গে ওভাল অফিসে সৌহার্দ্যপূর্ণ বৈঠক করেছিলেন।

তবে কানাডা সম্প্রতি একটি ডিজিটাল সার্ভিসেস ট্যাক্স চালু করায় ট্রাম্প আলোচনার টেবিল ছেড়ে দেন। পরে কার্নি সেই কর প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন, যা মার্কিন টেক কোম্পানিগুলোর ওপর প্রভাব ফেলতে পারত।

গত কয়েক দিনে ট্রাম্প তার বাণিজ্যযুদ্ধ আরও বিস্তৃত করেছেন। তিনি জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার মতো মিত্র দেশগুলোর ওপর নতুন শুল্কের হুমকি দিয়েছেন এবং তামার ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণাও দিয়েছেন।

এনবিসি-তে বৃহস্পতিবার প্রকাশিত সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, ‘সব দেশকে চিঠি দিতে হবে এমন না। আমরা শুধু আমাদের শুল্ক ঠিক করে দিচ্ছি। বাকি দেশগুলোকে বলব, তারা ২০ অথবা ১৫ শতাংশ শুল্ক দেবে। আমরা এখন এটা গুছিয়ে নিচ্ছি।’ সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

মাহফুজ/

 

দীর্ঘ ৪০ বছরের সশস্ত্র সংগ্রামের পর নিরস্ত্রীকরণের পথে পিকেকে

প্রকাশ: ১১ জুলাই ২০২৫, ০৫:৪৯ পিএম
আপডেট: ১১ জুলাই ২০২৫, ০৫:৫৪ পিএম
দীর্ঘ ৪০ বছরের সশস্ত্র সংগ্রামের পর নিরস্ত্রীকরণের পথে পিকেকে
কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টির (পিকেকে) যোদ্ধাদের নিরস্ত্রীকরণ অনুষ্ঠান চলাকালে ইরাকের সুলাইমানিয়ার কাছে একটি চেকপয়েন্টে কুর্দি নিরাপত্তা বাহিনী ও অন্যান্যরা অবস্থান করছে। ছবি: সংগৃহীত

তুরস্কের বিরুদ্ধে চার দশকব্যাপী সশস্ত্র লড়াইয়ের অবসান ঘটিয়ে নিরস্ত্রীকরণ প্রক্রিয়া শুরু করেছে কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টি (পিকেকে)। ১৯৮৪ সাল থেকে এ পর্যন্ত ৪০ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন তুরস্ক ও পিকেকের মধ্যকার সংঘর্ষে।

শুক্রবার (১১ জুলাই) ইরাকের উত্তরাঞ্চলীয় কুর্দি অঞ্চলে একটি ছোট আনুষ্ঠানিকতায় ২০ থেকে ৩০ জন পিকেকে সদস্য প্রতীকীভাবে অস্ত্র ধ্বংস করতে শুরু করেন। তারা এগুলো কোনো সরকার বা কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর না করে নিজেরাই ধ্বংস করছেন। কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া এই প্রক্রিয়া গ্রীষ্মকালজুড়ে চলবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেব এরদোয়ান এ পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, ‘এটি আমাদের দেশের পায়ে পরানো রক্তাক্ত শৃঙ্খল ছিঁড়ে ফেলে দেওয়ার মতো ঘটনা।’ তিনি বলেন, ‘এতে পুরো অঞ্চল উপকৃত হবে।’

এই পদক্ষেপের আগে গত মে মাসে পিকেকে তাদের সশস্ত্র সংগ্রাম পরিত্যাগের ঘোষণা দেয়। সংগঠনটিকে তুরস্ক, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘদিন ধরে ‘সন্ত্রাসী’ গোষ্ঠী হিসেবে তালিকাভুক্ত করে রেখেছে।

প্রায় ৪০ বছরের সংঘাতে দক্ষিণ-পূর্ব তুরস্ক থেকে বহু কুর্দি নাগরিক সহিংসতা এড়িয়ে উত্তরাঞ্চলের শহরগুলোতে আশ্রয় নিতে বাধ্য হন।

পিকেকে-ঘনিষ্ঠ ফিরাত নিউজ এজেন্সি সম্প্রতি এক ভিডিও প্রকাশ করে, যেখানে সংগঠনের বন্দি নেতা আবদুল্লাহ ওজালান এই পদক্ষেপকে “সশস্ত্র লড়াই থেকে গণতান্ত্রিক রাজনীতি ও আইনের পথে স্বেচ্ছায় উত্তরণের একটি ঐতিহাসিক অর্জন” বলে অভিহিত করেন। ভিডিওটি জুনে ধারণ করা হলেও সম্প্রতি সম্প্রচারিত হয়।

ওজালান ১৯৯৯ সাল থেকে তুরস্কের ইমরালি দ্বীপে একাকী কারাবন্দি। বন্দিত্বে থেকেও তিনি সংগঠন ও এর বিভিন্ন শাখার জন্য একটি প্রতীকী নেতা হিসেবে রয়েছেন।

তুরস্কের কুর্দি ডিইএম (DEM) পার্টি ও স্থানীয় গণমাধ্যম নিবিড়ভাবে এই নিরস্ত্রীকরণ পর্যবেক্ষণ করছে। পরবর্তী ধাপগুলো নির্ধারিত স্থানে তুরস্ক, ইরাক ও ইরাকের কুর্দি স্বায়ত্তশাসিত সরকারের সমন্বয়ে বাস্তবায়িত হবে।

সংঘাতের প্রভাব শুধু তুরস্কেই নয়, ইরাক, সিরিয়া ও ইরানেও গভীরভাবে অনুভূত হয়েছে, যেখানে পিকেকে ও তাদের সহযোগী গোষ্ঠীগুলোর উপস্থিতি রয়েছে।

‘এখনও অনেক পথ বাকি’
আল জাজিরার প্রতিবেদন অনুসারে, অস্ত্র জমাদানের অনুষ্ঠানটি ছিল অত্যন্ত প্রতীকী, যেখানে ইরাকের কেন্দ্রীয় সরকার ও কুর্দি স্বায়ত্তশাসিত প্রশাসনের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

তিনি বলেন, ‘এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত, কিন্তু পথ এখনো দীর্ঘ। পিকেকে কিছু দাবি জানিয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে তাদের নেতা ওজালানের মুক্তি এবং তাকে ইরাকের উত্তরাঞ্চলে এনে ‘গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া’ পরিচালনার সুযোগ দেওয়া।’

২০২৪ সালের এপ্রিল মাসে ইরাক সরকার পিকেকে-কে আনুষ্ঠানিকভাবে নিষিদ্ধ সংগঠন ঘোষণা করে। তার আগে তুরস্ক-ইরাক নিরাপত্তা বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

ইস্তানবুল থেকে আল জাজিরার প্রতিনিধি সিনেম কোসেউগ্লু জানিয়েছেন, আঙ্কারার কাছে সুলাইমানিয়ার এই উদ্যোগ কয়েক দশকের সংঘাত অবসানের বড় পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

‘তুরস্ক ও কুর্দি - উভয় পক্ষের হাজার হাজার প্রাণহানির পর এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি। এমনকি অতীতে যারা শান্তি প্রক্রিয়াকে ‘দেশদ্রোহ’ বলে অভিহিত করত, সেই জাতীয়তাবাদী দল (এমএইচপি) পর্যন্ত এখন এই প্রক্রিয়াকে সমর্থন করছে।’

প্রো-কুর্দি ডিইএম পার্টি মূল ভূমিকা পালন করছে। এমনকি প্রধান বিরোধী দল সিএইচপি - যারা একসময় শান্তি প্রক্রিয়ার তীব্র সমালোচক ছিল - এখন শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টাকে সমর্থন করছে।

‘পিকেকে চলে গেলে গোলাবর্ষণও থামবে’
ইরাকের উত্তরাঞ্চলে, যেখানে পিকেকে ও তুরস্কের মধ্যে সংঘাত প্রায়শই ছড়িয়ে পড়ে, সেখানকার সাধারণ মানুষ এখন কিছুটা আশাবাদী।

সুলাইমানিয়ার আমেদি জেলার পার্বত্য গ্রামগুলোতে গিয়ে আবদেলওয়াহেদ দেখেছেন, কীভাবে স্থানীয় জনগণ লড়াইয়ের সরাসরি শিকার। সেখানে বহু গ্রাম এখন কার্যত যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে।

একজন কৃষক শিরওয়ান সিরকলি বলেন, ‘আমার খামার গোলাবর্ষণে পুড়ে গেছে। তুরস্ক ও পিকেকের সংঘাত আমাদের ভূমিতে চলে এসেছে। আমার ভাইয়ের তিন লাখ ডলারের (সাড়ে ৪ কোটির বেশি টাকার) খামার নষ্ট হয়েছে। গ্রামের ১০০টি পরিবারের মধ্যে মাত্র ৩৫টি এখনো টিকে আছে।’

স্থানীয় নেতা আহমদ সাদুল্লাহ বলেন, ‘পিকেকে যেদিন এই এলাকা ছাড়বে, সেদিনই গোলাবর্ষণ বন্ধ হবে। আমরা চাই, শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন হোক, যেন আমরা আবার আমাদের জমিতে ফিরে শান্তিতে থাকতে পারি।’ সূত্র: আল জাজিরা

 

মাহফুজ/