
গাজায় তাৎক্ষণিক, নিঃশর্ত এবং স্থায়ী যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের (ইউএনএসসি) একটি প্রস্তাবে ভেটো দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় বুধবার (৪ জুন) কাউন্সিলের অন্য ১৪ সদস্য পক্ষে ভোট দেয়। যুক্তরাষ্ট্রই একমাত্র দেশ যারা এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে ভোট দেয়।
এদিকে ত্রাণ অবরোধের মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় গাজায় ইসরায়েলি হামলায় প্রায় ১০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
প্রস্তাবে গাজায় আটক ইসরায়েলি বন্দিদের মুক্তিরও আহ্বান জানানো হয়েছিল। কিন্তু ওয়াশিংটন বলেছে, এটি ‘অসম্ভব প্রস্তাব’ যুদ্ধবিরতির দাবি সরাসরি বন্দিদের মুক্তির সঙ্গে সম্পর্কিত নয়।
ভোটগ্রহণ শুরুর আগে বক্তব্যে জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত ডোরোথি শেয়া তার দেশের এই প্রস্তাবের বিরোধিতার বিষয়টি অত্যন্ত স্পষ্ট করে দেন। তিনি বলেন, এটি ‘আশ্চর্যের কিছু নয়’ যে যুক্তরাষ্ট্র এমন অবস্থান নিয়েছে। প্রস্তাবটি ১৫ সদস্যবিশিষ্ট পরিষদের ১০টি দেশ উপস্থাপন করেছিল।
তার বক্তব্যে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ইসরায়েলের পক্ষে প্রতিরক্ষা ও হামাসবিরোধী অবস্থান জোরালোভাবে তুলে ধরেন।
তিনি পরিষদকে জানান, এই সংঘাত শুরু হওয়ার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র খুব স্পষ্ট অবস্থান নিয়েছে। ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকার রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে হামাসকে পরাজিত করা এবং এটি নিশ্চিত করা যে, তারা আর কখনও ইসরায়েলকে হুমকি দেওয়ার মতো অবস্থানে থাকবে না।
চীনের রাষ্ট্রদূত ফু কং বলেন, ইসরায়েলের কার্যকলাপ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের ‘সব ধরনের সীমা অতিক্রম করেছে’ এবং জাতিসংঘের প্রস্তাবনাগুলিকে গুরুতরভাবে লঙ্ঘন করেছে।
তিনি আরও বলেন, ‘তবুও, একটি দেশের পক্ষপাতদুষ্ট আশ্রয়ে এই লঙ্ঘনগুলো বন্ধ হয়নি বা এর জন্য কাউকে দায়ী করা হয়নি।’
এখানে রাষ্ট্রদূত ফু কং পরোক্ষভাবে যুক্তরাষ্ট্রের কথা উল্লেখ করছেন, যারা ইসরায়েলের প্রতি সমর্থন দিয়ে আসছে এবং জাতিসংঘে বারবার প্রস্তাবে ভেটো দিয়ে আসছে।
যুদ্ধবিরতির আহ্বান সত্ত্বেও, ইসরায়েল বারবার কোনো শর্ত ছাড়াই বা স্থায়ী যুদ্ধবিরতির আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেছে। তাদের দৃঢ় অবস্থান হলো, হামাস ক্ষমতায় থাকতে পারবে না, গাজায়ও নয়।
ইসরায়েল গাজায় তাদের সামরিক অভিযান আরও বিস্তৃত করেছে, যার ফলে আরও হাজার হাজার ফিলিস্তিনি নিহত ও আহত হয়েছে এবং অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার ওপর নির্মম অবরোধ অব্যাহত রেখেছে। সেখানে দুর্ভিক্ষ দেখা দেওয়ায় তারা শুধু সামান্য ও কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত ত্রাণ প্রবেশের অনুমতি দিচ্ছে।
গাজা স্বাস্থ্য দপ্তরের কর্মকর্তাদের বরাতে জানা গেছে, বুধবার অন্তত ৯৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ৪৪০ জনের বেশি আহত হয়েছেন।
জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের ভোটের আগে, জাতিসংঘের সাহায্য-প্রধান টম ফ্লেচার আবারও জাতিসংঘ এবং সাহায্য গোষ্ঠীগুলোকে গাজার মানুষকে সহায়তা করার অনুমতি দেওয়ার জন্য আবেদন করেছেন।
অমিয়/