ঢাকা ২ শ্রাবণ ১৪৩২, বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই ২০২৫
English
বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই ২০২৫, ২ শ্রাবণ ১৪৩২

কাশ্মীরে ভারতের আইফেল টাওয়ারের চেয়ে উঁচু রেলসেতু নির্মাণ

প্রকাশ: ০৬ জুন ২০২৫, ১০:০২ পিএম
কাশ্মীরে ভারতের আইফেল টাওয়ারের চেয়ে উঁচু রেলসেতু নির্মাণ
চেনাব রেলওয়ে সেতু। ছবি: সংগৃহীত

জম্মু ও কাশ্মীরে আইফেল টাওয়ারের চেয়ে উঁচু একটি রেলসেতু নির্মাণ করেছে ভারত। জম্মু ও কাশ্মীরের চেনাব নদীর ওপর নির্মিত এই রেলসেতুর উচ্চতা ভূমি থেকে ৩৫৯ মিটার (আইফেল টাওয়ার ৩৩০ মিটার)। সেতুটির দৈর্ঘ্য ১ দশমিক ৩ কিলোমিটার।

সেতুটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে প্রায় ১ হাজার ৪০০ কোটি রুপি। 

শুক্রবার (৬ জুন) জম্মু ও কাশ্মীর গিয়ে ‘চেনাব রেলসেতু’ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। পাহালগামে সন্ত্রাসী হামলার পর জম্মু ও কাশ্মীরে এটিই ছিল তার প্রথম সফর।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য ওয়্যারের প্রতিবেদনে বলা হয়, চেনাব রেল সেতু নির্মাণ করা হয়েছে উদমপুর-শ্রীনগর-বারামুল্লা রেললাইন প্রকল্পের অংশ হিসেবে। ভারতের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এই প্রকল্পের মাধ্যমে কাশ্মীরকে দেশের অন্যান্য অংশের সঙ্গে সরাসরি রেলপথে যুক্ত করা হয়েছে। পুরো ২৭২ কিলোমিটার দীর্ঘ এই লাইনটিতে রয়েছে ৩৬টি সুড়ঙ্গ ও ৯৪৩টি সেতু।

২০০২ সালে এই প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হলেও সেতু তৈরির কাজ শুরু হয় ২০১৭ সাল থেকে। ২০২২ সালের মধ্যে শেষ হয় সেতু তৈরির কাজ। পরের বছরই নতুন সেতুর ওপর রেলপথ তৈরির কাজ শুরু হয়। 

এক বছর পর অর্থাৎ ২০২৪ সাল থেকে চেনাব সেতুর ওপরে শুরু হয় রেলের ট্রায়াল রান। চলতি বছর জানুয়ারি মাসেই সফলভাবে এই সেতুর ওপরে ট্রায়াল রান শেষ করে বন্দে ভারত এক্সপ্রেস। এখন থেকে চেনাব ব্রিজ ও সেখানে অবস্থিত রেলপথের মাধ্যমে সরাসরি যোগাযোগ হবে শ্রীনগর ও কাটরার। 

নতুন এই লাইনে চলবে এক জোড়া বন্দে ভারত এক্সপ্রেস। এর ফলে শ্রীনগর থেকে বৈষ্ণোদেবী মন্দিরের নিকটবর্তী কাটরা স্টেশনে যাওয়া যাবে মাত্র তিন ঘণ্টায়।

চেনাব সেতু একটি স্টিল আর্চ বা ধনুকাকৃতির নকশায় তৈরি, যা প্রকৌশলীদের জন্য ছিল এক বিশাল চ্যালেঞ্জ। রিখটার স্কেলে ৮ মাত্রার ভূমিকম্পেও টিকে থাকবে এই সেতু। 

প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে কনকন রেলওয়ে করপোরেশন এবং নির্মাণ করেছে আফকনস ইনফ্রাস্ট্রাকচার, দক্ষিণ কোরিয়ার আলট্রা কনস্ট্রাকশন অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি এবং ভারতের ভিএসএল ইন্ডিয়া।

সেতুটির নকশা ও ভিত্তি তৈরিতে কাজ করেছে ভারতের আইআইটি, ভূতাত্ত্বিক জরিপ অধিদপ্তর (জিএসআই), ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (ডিআরডিও), ফিনল্যান্ডের ডব্লিউএপি গ্রুপ ও জার্মানির লিওনার্ড অ্যান্ড্রার মতো আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো।

কাশ্মীরের কঠিন ভূপ্রকৃতি, তীব্র তাপমাত্রা ওঠানামা, উচ্চগতির ঝোড়ো হাওয়া ও ভূমিকম্প প্রবণ অঞ্চল হওয়ায় এটি নির্মাণ ছিল অত্যন্ত কঠিন। সেতুটিকে ভূমিকম্প ও প্রবল বাতাসের ধাক্কা সামাল দেওয়ার মতো করে নির্মাণ করা হয়েছে। এ কারণে এটিকে প্রকৌশল জগতের এক অনন্য অর্জন হিসেবে দেখা হচ্ছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, জম্মু ও কাশ্মীরের রিয়াসি জেলার চন্দ্রভাগা নদীর নির্মিত এই ব্রিজটি স্টিল ও কংক্রিট দিয়ে এমনভাবে তৈরি, যা রিখটার স্কেলে ৮ মাত্রার ভূমিকম্পেও টিকে থাকবে। বড়সড় বিস্ফোরণেও তেমন ক্ষতি হবে না এই সেতুর।

চেনাব সেতু ও উদমপুর-শ্রীনগর-বারামুল্লা রেললাইন প্রকল্প কাশ্মীরের পর্যটন, কর্মসংস্থান এবং সামগ্রিক অর্থনীতিতে বড় অবদান রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে। বিশেষ করে পাহালগামে সন্ত্রাসী হামলার পর পর্যটন খাতে যে ভাটা নেমেছিল, এই উন্নয়ন প্রকল্পগুলো তা কাটিয়ে উঠতে সহায়তা করবে।

প্রধানমন্ত্রী মোদি এদিন শ্রীনগর-কটরা বন্দে ভারত এক্সপ্রেসেরও উদ্বোধন করেন। এটি কাশ্মীরে প্রথম আধুনিক উচ্চগতির ট্রেন। এই ট্রেনগুলোতে রয়েছে হিটিং প্যাড, গরম পানির পাইপলাইন এবং বরফ প্রতিরোধী জানালার কাচ—যা অঞ্চলটির কড়া শীত উপযোগী। উদ্বোধনের সময় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে জম্মু ও কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা, উপরাজ্যপাল মনোজ সিনহা ও রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবও উপস্থিত ছিলেন।

সুলতানা দিনা/

ইউক্রেনকে মস্কোতে আঘাত হানতে মানা করলেন ট্রাম্প

প্রকাশ: ১৭ জুলাই ২০২৫, ০৯:২০ এএম
ইউক্রেনকে মস্কোতে আঘাত হানতে মানা করলেন ট্রাম্প
ডোনাল্ড ট্রাম্প

ইউক্রেন মস্কোতে দূর-পরিসীমার ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে আঘাত হানুক, তা চান না যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

তিনি সরাসরি জানিয়ে দিয়েছেন, মস্কোতে আঘাত হানা উচিত হবে না। মূলত এর আগে গণমাধ্যমে এমন খবর এসেছিল যে ট্রাম্প চাইছেন ইউক্রেন মস্কোতে হামলা করুক। সে বিষয়েই নিজের অবস্থান স্পষ্ট করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

তবে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের হাতে যে শান্তিচুক্তিতে পৌঁছানোর জন্য ৫০ দিন রয়েছে, তা আবারও মনে করিয়ে দিয়েছেন তিনি। ট্রাম্প বলেছেন, ‘আমার মনে হয় না এটি দীর্ঘ সময়।’ তিনি ঠিক কী ধরনের ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ভাবছেন, তা জানতে চাওয়া হলে ট্রাম্প বলেন, ‘অনেক ব্যবস্থাই খুব দ্রুত বদলে যায়। ৫০ দিন না-ও হতে পারে। ৫০ দিনের চেয়ে অনেক দ্রুতও হতে পারে সবকিছু।’

ইউক্রেনকে জার্মানির মাধ্যমে প্রথম প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র পাঠানোর কথাও নিশ্চিত করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেছেন, ‘এটি এরই মধ্যে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।’ 

তবে ইউক্রেনকে মস্কোতে আক্রমণ চালাতে মানা করলেও রাশিয়ার অন্যান্য স্থানের ক্ষেত্রে কিছু বলেননি ট্রাম্প। এদিকে ইউক্রেনে রুশ হামলা অব্যাহত রয়েছে। ইউক্রেনের আকাশ প্রতিরক্ষা বাহিনী জানিয়েছে, চার শ ড্রোন ও একটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে তাদের ওপর আবারও হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। মূলত খারকিভ, ক্রিভ রিহ ও ভিনিৎসিয়াকে লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়েছে। এসব হামলায় অন্তত দুজন নিহত হয়েছেন এবং ১২ জন আহত হয়েছেন।

এদিকে পশ্চিমা রাষ্ট্রগুলো শান্তিচুক্তির বিষয়ে তার শর্তে রাজি হওয়ার আগ পর্যন্ত পুতিন ইউক্রেনে হামলা চালিয়ে যাবেন। ট্রাম্পের হুমকি তিনি আমলে নিচ্ছেন না। ইউক্রেনের আরও অঞ্চল দখলে নিতে পারেন পুতিন। ক্রেমলিন-ঘনিষ্ঠ তিন সূত্র এ বিষয়ে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানকে এ কথা জানিয়েছে।  

দ্য গার্ডিয়ান প্রতিবেদনে বলছে, রাশিয়ার তিন সূত্র ক্রেমলিনের উচ্চপদস্থদের চিন্তাভাবনার সঙ্গে পরিচিত। 

তারা জানায়, পুতিন পশ্চিমের চাপে নতি স্বীকার করবেন না। রুশ প্রেসিডেন্ট মনে করেন, পশ্চিমের সবচেয়ে কঠোর নিষেধাজ্ঞা পার করে ফেলেছে রাশিয়া। ফলে আগামীতে আরও আর্থিক চাপ তারা নিতে পারবেন। প্রসঙ্গত, যুক্তরাষ্ট্র এবার শুধু রাশিয়া নয়, দেশটির কাছ থেকে যারা তেল কিনবেন, তাদের ওপরও নিষেধাজ্ঞা আরোপের পরিকল্পনা করেছে। 

সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

গাজায় আবারও ২০ সহায়তাপ্রত্যাশী নিহত

প্রকাশ: ১৭ জুলাই ২০২৫, ০৯:১২ এএম
গাজায় আবারও ২০ সহায়তাপ্রত্যাশী নিহত
গাজার দক্ষিণের খান ইউনিসে জিএইচএফের বিতরণকেন্দ্রে বুধবার ভিড়ে চাপা পড়ে মারা গেছেন ২০ জন। তাদের স্বজনদের এভাবেই শোক প্রকাশ করতে দেখা যায়। সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল সমর্থিত বিতর্কিত সহায়তা সংস্থা গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের বিতরণকেন্দ্রে বুধবার (১৬ জুলাই) ২০ জন নিহত হয়েছেন। 

জিএইচএফ দাবি করছে, সশস্ত্র কিছু ব্যক্তির ইন্ধনে গাজার খান ইউনিসে সহায়তা নিতে আসা জনতার ঢল নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় এবং এতেই চাপা পড়ে প্রাণ হারান ১৯ জন। আর এসব চলাকালে ভিড়ের মধ্যেই একজনের মৃত্যু হয়েছে ছুরিকাঘাতে। 

জিএইচএফের বিতরণকেন্দ্রে মৃত্যুর ঘটনা নতুন কিছু নয়। প্রায় প্রতিদিনই সহায়তা বিতরণকেন্দ্রগুলোতে গিয়ে প্রাণ হারান সহায়তাপ্রত্যাশীরা। জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তর বলছে, গত ছয় সপ্তাহে সহায়তা সংস্থাটির বিতরণকেন্দ্রে ও তাদের সহায়তার গাড়িবহরের আশপাশে অন্তত ৮৭৫টি মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। 

জিএইচএফ এক বিবৃতিতে জানায়, হামাস ভিড়ের মধ্যে প্রবেশ করে অস্থিরতা তৈরি করেছে- এমনটা মনে করার বিশ্বাসযোগ্য কারণ রয়েছে তাদের। তবে হামাসের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য আসেনি।
  
ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারাও ২০ জনের মৃত্যুর খবর জানিয়েছে। তারা বলছে, ভিড়ে দম আটকে ও পায়ের নিচে চাপা পড়ে ওই মৃত্যুর ঘটনাগুলো ঘটেছে। ভিড়ের মধ্যে টিয়ার গ্যাস ছোড়া হয়েছিল বলেও উল্লেখ করেছেন তারা। এক চিকিৎসাকর্মী জানান, তুলনামূলক ছোট স্থানে অনেক মানুষ একত্রে ঢুকে পড়েছিলেন এবং পরে তারা চাপা পড়েন। 

জাতিসংঘ এর আগে জিএইচএফের প্রসঙ্গে মন্তব্য করেছিল, সংস্থাটি সহায়তা বিতরণে যে মডেল অনুসরণ করছে, সেটি ব্যাপকভাবে অনিরাপদ। তবে জিএইচএফ জাতিসংঘের সমালোচনা প্রত্যাখ্যান করেছে। উল্টো তারা বলেছে, জাতিসংঘ ভুল তথ্য ছড়াচ্ছে। 

প্রসঙ্গত, গোটা গাজা অবরুদ্ধ করে রেখেছে ইসরায়েল। কোনো আন্তর্জাতিক সহায়তা সংস্থাকে সেখানে কোনো রসদ বিতরণের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না। এমনকি তারা বাইরে থেকে কোনো সহায়তা গাজায় প্রবেশও করাতে পারছে না। শুধু জিএইচএফ সহায়তা বিতরণ করতে পারছে। তবে যেটুকু সহায়তা বিতরণ করা হচ্ছে, সেটি প্রয়োজনের তুলনায় যথেষ্ট নয়।


গাজায় প্রতি দশ শিশুর একজন অপুষ্টিতে ভুগছে
গাজায় প্রতি দশ শিশুর একজন অপুষ্টিতে ভুগছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ। ইসরায়েলি অবরোধের মুখে তারা ব্যাপকভাবে ক্ষুধায় ভুগছে বলেও জানিয়েছে সংস্থাটি।

ইউএনআরডব্লিউএর প্রধান ফিলিপ্পে লাজারানি গত মঙ্গলবার বলেছেন, ইসরায়েল গাজায় সাহায্য ঢুকতে না দেওয়ার কারণে উপত্যকায় পুষ্টিসংক্রান্ত রসদের স্বল্পতা দেখা দিয়েছে। তিনি শিশুদের ক্ষুধার্ত থাকাকে মানবসৃষ্ট পরিস্থিতি হিসেবেও অভিহিত করেছেন।

লাজারনি বলেছেন, জাতিসংঘকে অবশ্যই গাজায় কাজ করতে দিতে হবে। বিশেষ করে শিশুদের জন্য বড় পরিসরে সহায়তা প্রবেশের পথ অবারিত রাখতে হবে। যুদ্ধবিরতি নিয়েও কথা বলেন তিনি। লাজারানি বলেন, ‘যুদ্ধবিরতির আরও বিলম্ব শুধু মৃত্যুর সংখ্যাই বাড়াবে।’  

ইউএনআরডব্লিউএর যোগাযোগবিষয়ক পরিচালক জুলিয়েট টোউমা সাংবাদিকদের বলেছেন, গাজায় ওষুধ, পুষ্টি সরবরাহ, স্বাস্থ্যবিধি উপাদান, জ্বালানি সবই দ্রুত ফুরিয়ে আসছে। তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের স্বাস্থ্যবিষয়ক টিম নিশ্চিত করেছে যে গাজায় অপুষ্টি বৃদ্ধি পাচ্ছে, বিশেষ করে চার মাস আগের তুলনায় অবরোধ এখন আরও জোরালোভাবে হচ্ছে।’

টোউমার দেওয়া তথ্যানুসারে, ইউএনআরডব্লিউএর ছয় হাজার ট্রাক সহায়তা গাজার বাইরে দাঁড়িয়ে আছে প্রবেশের অপেক্ষায়। সেগুলো খাবার, স্বাস্থ্যকর উপাদান, ওষুধ, চিকিৎসা রসদে বোঝাই। কিন্তু ইসরায়েলি অবরোধের কারণে সেগুলো ক্ষুধার্ত ও যাদের প্রয়োজন, তাদের হাতে পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। 

এদিকে, গাজায় এখনো নির্বিচারে হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েল। প্রতিদিনই সেখান থেকে হতাহতের ঘটনা ঘটছে। ২০ সহায়তাপ্রত্যাশী ছাড়াও বুধবার ভোর থেকে গাজায় আরও অন্তত ২২ জন ইসরায়েলি হামলায় নিহত হয়েছেন। আল-জাজিরার খবর বলছে, শুধু গাজার আল মাওয়াসি শরণার্থী শিবিরেই ইসরায়েলের হামলায় ৯ জন প্রাণ হারিয়েছেন।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত অবরুদ্ধ উপত্যকাটিতে অন্তত ৫৮ হাজার ৪৭৯ জন মারা গেছেন। আহত হয়েছেন ১ লাখ ৩৯ হাজার ৩৫৫ জন। হতাহতদের বেশির ভাগই বেসামরিক নাগরিক।

 সূত্র: আল-জাজিরা

 

সকাল থেকে গাজায় নিহত ৭৪, পদদলিত হয়ে প্রাণ যায় ২০ জনের

প্রকাশ: ১৬ জুলাই ২০২৫, ১১:০৮ পিএম
সকাল থেকে গাজায় নিহত ৭৪, পদদলিত হয়ে প্রাণ যায় ২০ জনের
ছবি: সংগৃহীত

গাজা উপত্যকার মেডিকেল সূত্রগুলো জানিয়েছে, বুধবার (১৬ জুলাই) সকাল থেকে ইসরায়েলি হামলায় গাজা জুড়ে অন্তত ৭৪ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে অন্তত ২০ জন ছিলেন খাদ্যসাহায্য নিতে গিয়ে পদদলিত হয়ে মারা যান।

দক্ষিণ গাজার খান ইউনুস এলাকায় যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল সমর্থিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (GHF)-এর একটি সাহায্য বিতরণ কেন্দ্রে চরম বিশৃঙ্খলার মধ্যে পদদলিত হয়ে অন্তত ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে GHF এবং একটি স্থানীয় হাসপাতাল।

GHF জানায়, এদের মধ্যে ১৯ জন পদদলিত হয়ে এবং একজন ছুরিকাঘাতে মারা গেছেন একটি বিশৃঙ্খল ও বিপজ্জনক পরিস্থিতির মধ্যে। তারা অভিযোগ করে, ‘হামাসের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সশস্ত্র ব্যক্তিরা’ এই অবস্থাকে উসকে দেয়।

তবে হামাস-নিয়ন্ত্রিত গাজার সরকারি গণমাধ্যম অফিস এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে এবং দাবি করেছে, GHF ‘অপরাধ ধামাচাপা’ দেওয়ার চেষ্টায় হামাসের ওপর দোষ চাপাচ্ছে।

খান ইউনুসের নাসের হাসপাতাল জানিয়েছে, তারা এমন ২১ জনের মরদেহ গ্রহণ করেছে, যারা গ্যাসে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে এবং পদদলিত হয়ে মারা গেছে।

এই প্রথম GHF নিজেই স্বীকার করল যে তাদের পরিচালিত কোনো সাহায্য কেন্দ্রে প্রাণহানি ঘটেছে।

সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়- নাসের হাসপাতালের একটি ঠেলাগাড়িতে ৬ শিশু ও যুবকের মরদেহ রাখা, এবং একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলছেন, ‘তারা খাদ্যের জন্য মারা গেছে। শিশুদের কী দোষ ছিল?’

তিনি বলেন, ‘GHF-এর দরজার সামনে ও পেছনে তারা লোহার বেড়া বসায়। ছেলেরা সামনের দিকে ছিল, আর পেছনের মানুষজন চাপে তাদের উপর দিয়ে হেঁটে যায়।’ আর এতেই এই হতাহতের ঘটনা ঘটে।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ২১ বছর বয়সী আহত যুবক মাহমুদ ফুজো রয়টার্সকে বলেন, ‘আমি যখন সাহায্যকেন্দ্রে পৌঁছাই, তখন দেখলাম গেট বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। লোকজন গাদাগাদি করতে থাকে। কেউ চাপ সহ্য করতে না পেরে পড়ে যায় এবং তাদের পিষে ফেলা হয়।’

GHF–এর এক মুখপাত্র এসব অভিযোগ ‘সম্পূর্ণ মিথ্যা’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন।

GHF ইসরায়েলি সেনা নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলে বেসরকারি নিরাপত্তা বাহিনী ব্যবহার করে সাহায্য বিতরণ করে। ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র বলছে, হামাস যাতে ত্রাণ লুট করতে না পারে, তা নিশ্চিত করতেই এই ব্যবস্থা।

জাতিসংঘ এই ব্যবস্থার সমালোচনা করেছে এবং বলেছে, এটি অনৈতিক।

GHF গত মে মাসের শেষ থেকে কার্যক্রম শুরু করার পর থেকেই প্রায় প্রতিদিনই খাদ্য নিতে গিয়ে ফিলিস্তিনিদের নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, তাদের অনেকেই ইসরায়েলি সেনাদের গুলিতে মারা গেছেন।

জাতিসংঘ মানবাধিকার দপ্তর জানায়, গত ছয় সপ্তাহে GHF-এর দক্ষিণ ও মধ্য গাজার চারটি বিতরণকেন্দ্রের আশপাশে মোট ৬৭৪ জন নিহত হয়েছেন। আর জাতিসংঘ ও অন্যান্য সংস্থার ত্রাণ বহরের রুটে আরও ২০১ জন নিহত হওয়ার ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলের গাজা যুদ্ধ এখন পর্যন্ত অন্তত ৫৮ হাজার ৫৭৩ জনকে হত্যা করেছে এবং ১ লাখ ৩৯ হাজার ৬০৭ জনকে আহত করেছে।

অন্যদিকে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের নেতৃত্বে ইসরায়েলে চালানো হামলায় আনুমানিক ১ হাজার ১৩৯ জন নিহত হন এবং ২০০-র বেশি মানুষকে জিম্মি করে নেওয়া হয়। সূত্র: আল জাজিরা, বিবিসি

 

সিরিয়ার সেনাবাহিনীর দপ্তর গুঁড়িয়ে দিয়েছে ইসরায়েল

প্রকাশ: ১৬ জুলাই ২০২৫, ০৮:৫২ পিএম
সিরিয়ার সেনাবাহিনীর দপ্তর গুঁড়িয়ে দিয়েছে ইসরায়েল
ছবি: সংগৃহীত

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী নিশ্চিত করেছে যে, তারা সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে অবস্থিত সেনাবাহিনীর সদর দপ্তর এবং প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের নিকটবর্তী একটি সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে।

টেলিগ্রামে দেওয়া এক বিবৃতিতে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানায়, দক্ষিণ সিরিয়ায় দ্রুজ সম্প্রদায়ের বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে সিরীয় শাসকগোষ্ঠীর কার্যক্রম এবং অন্যান্য পরিস্থিতির উপর সেনাবাহিনী নজরদারি চালিয়ে যাচ্ছে। রাজনৈতিক নেতৃত্বের নির্দেশনা অনুযায়ী ওই এলাকায় হামলা চালানো হচ্ছে এবং ভবিষ্যতের সম্ভাব্য পরিস্থিতির জন্য সেনাবাহিনী প্রস্তুত রয়েছে।

সিরিয়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাতে জানা গেছে, দামেস্কে ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত একজন নিহত এবং ১৮ জন আহত হয়েছেন। সূত্র: আল জাজিরা

 

সিরিয়ার প্রেসিডেন্টের বাসভবনে ইসরায়েলি হামলা, দ্রুত সরে যাওয়ার আহ্বান

প্রকাশ: ১৬ জুলাই ২০২৫, ০৭:৪৯ পিএম
আপডেট: ১৬ জুলাই ২০২৫, ০৭:৫৯ পিএম
সিরিয়ার প্রেসিডেন্টের বাসভবনে ইসরায়েলি হামলা, দ্রুত সরে যাওয়ার আহ্বান
ছবি: সংগৃহীত

সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল শারা ও সেনাপ্রধানের (জেনারেল স্টাফ) প্রাসাদে ইসরায়েলের হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। তুরস্কের তরফ থেকে প্রেসিডেন্ট আল শারাকে দ্রুত প্রাসাদ ত্যাগ করার আহ্বান জানিয়েছে।

বুধবার (১৬ জুলাই) সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কজুড়ে অবিরাম বিমান হামলায় সামরিক সদর দপ্তর, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অফিসসহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তর ও স্থাপনায় হামলা চালাচ্ছে দখলদার ইসরায়েল। বাদ যায়নি প্রেসিডেন্ট ও সেনাপ্রধানের বাসভবন। হামলায় প্রকৃত হতাহতের সংখ্যা এখনো জানা যায় নি।

সিরিয়ার সুইদা প্রদেশে দ্রুজদের সঙ্গে সিরিয়ার সরকারি বাহিনীর সংঘাতকে কেন্দ্র করে দ্রুজদের পক্ষ নিয়ে সিরিয়ার সরকারি বাহিনীর বিরুদ্ধে এ হামলা পরিচালনা করা হচ্ছে। 

ইসরায়েল বলছে এটি সতর্কবার্তা দেওয়ার জন্য করা হয়েছে। কথা না শুনলে প্রেসিডেন্ট আল-শারাকে টার্গেট করা হবে। সুওয়াইদার ঘটনাবলী নিয়ে সিরিয়ান সরকারের সঙ্গে সকল প্রকার যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছে ইসরায়েল।

ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী কাটজ এক বিবৃতিতে বলেন, সিরিয়ান সরকারকে সুয়াইদার দ্রুজ সম্প্রদায়কে একা ছেড়ে দিতে হবে এবং তাদের বাহিনীকে অঞ্চলটি থেকে প্রত্যাহার করতে হবে। তিনি আরও বলেন, আমরা আগেই স্পষ্ট করে দিয়েছি, ইসরায়েল সিরিয়ার দ্রুজ জনগণকে ত্যাগ করবে না এবং আমরা যে ‘অসামরিককরণ নীতি’ গ্রহণ করেছি তা কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন করব।

ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়াভ গ্যালান্ট দক্ষিণ সিরিয়ায় জরুরি সামরিক হস্তক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী সিরিয়ার সীমান্তে আরও দুইটি সামরিক কোম্পানি মোতায়েন করেছে। এর আগে গতকাল মঙ্গলবার একটি কোম্পানি মোতায়েন করেছিল।

এদিকে সিরিয়ার দ্রুজ অধ্যুষিত এলাকায় দ্রুজ মিলিশিয়ারা ইসরায়েলি পতাকা উড়িয়েছে। 

সিরিয়ায় থাকা তুরস্ক তার সমস্ত ঘাঁটিতে জরুরি সতর্কতা অবস্থা জারি করেছে।


বিস্তারিত আসছে…