
প্রায় এক বছরের দীর্ঘ পরিকল্পনা, গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ ও কয়েক দফা যুক্তরাষ্ট্র-ইরান পরমাণু অস্ত্র চুক্তির নাটক করে ইরানি কর্মকর্তাদের আচরণ নিয়ন্ত্রণ করে শীর্ষ জেনারেলদের হত্যার কথা জানিয়েছে দখলদার ইসরায়েলি কর্মকর্তারা।
ইসরায়েল এই পরিকল্পনা করে ইরানের ইসলামিক রেভ্যুলশনারি গার্ড কর্পসের (IRGC) বিমান শাখার শীর্ষ কমান্ডারদের হত্যা করে। ইরানি কর্মকর্তাদের প্রথমে একটি বৈঠকে আসতে প্রলুব্ধ করানো হয়। এরপর সেই জায়গা ঘিরে রাখা হয়, যাতে তারা সরে যেতে না পারে। ঠিক তখনই হামলা চালানো হয়।
মার্কিন গণমাধ্যম ফক্স নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এক ইসরায়েলি নিরাপত্তা কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা তাদের আচরণ নিয়ন্ত্রণ করেছি এবং তাদের সেখানে রেখে হামলার সময় নির্ধারণ করেছি।’
মাত্র ১৫ মিনিটের মধ্যে ২০টিরও বেশি জায়গায় যেমন: কমান্ডারদের বাসা ও অফিসে আঘাত হানা হয়।
লক্ষ্য ছিল গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের হত্যা করা। হামলাটি ইসরায়েলের প্রত্যাশার চেয়েও বেশি সফল হয়েছে বলে দাবি করেছেন ওই কর্মকর্তা।
পাশাপাশি, আলাদা করে পারমাণবিক কেন্দ্র, ক্ষেপণাস্ত্র ছোঁড়ার ঘাঁটি এবং বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাও ধ্বংস করা হয়েছে। এই পুরো পরিকল্পনার জন্য এক বছর ধরে গোপনে গোয়েন্দা তথ্য জোগাড় করা হয়েছে।
ইসরায়েলি ওই কর্মকর্তার মতে, শুক্রবার শেষ রাতে চালানো হামলায় ইরান তার পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য বৈঠকে বসবে এটা জানা ছিল। আর তখনই তাদের অবস্থানকে লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়। এ হামলায় আইআরজিসির শীর্ষ অন্তত ২০ কমান্ডার নিহত হয়েছে। এজন্য গোয়েন্দা তথ্যের প্রয়োজন ছিল যা এক বছরেরও বেশি সময় ধরে সংগ্রহ করা হয়েছিল।
এদিকে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে পরমাণু চুক্তি নিয়ে আলোচনা চলছিল এবং এ আলোচনায় দুই পক্ষই যে কেউ কারও প্রস্তাব মেনে নেবে না তা আগেই অনুমেয় ছিল। তারপরও এই আলোচনার নাটক সাজানো হয়েছে মূলত ইরানি কর্মকর্তাদের নির্ভার রাখার জন্য এবং তাদের গতিবিধি সহজ ও স্বাভাবিক রাখার জন্য। গত বুধবার (১১ জুন) যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের শেষ বৈঠকে কোনো সিদ্ধান্ত না আসার পর দিনই ইরানে হামলা করে ইসরায়েল।
এদিকে ইরানে হামলার বিষয়ে ট্রাম্প নতুন এক টুইটে লিখেন, ‘দুই মাস আগে আমি ইরানকে "চুক্তিতে পৌঁছানোর" জন্য ৬০ দিনের আল্টিমেটাম দিয়েছিলাম। তাদের এটা করা উচিত ছিল। আজ ৬১তম দিন। আমি তাদের কী করতে হবে তা বলেছিলাম, কিন্তু তারা সেখানে পৌঁছাতে পারেনি। এখন তাদের কাছে সম্ভবত দ্বিতীয় সুযোগ আছে।’
অর্থাৎ ইরানকে পরমাণু চুক্তিতে রাজি করাতে না পারলে ইরানে হামলা যে পরিকল্পিত ছিল তা ট্রাম্পের টুইট ও ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের মন্তব্যে তা স্পষ্ট। সোর্স: ফক্স নিউজ
মাহফুজ