ঢাকা ২৫ আষাঢ় ১৪৩২, বুধবার, ০৯ জুলাই ২০২৫
English

প্রধান উপদেষ্টার বিরুদ্ধে সুনাম নষ্ট করতে পরিকল্পিত প্রচারণার অভিযোগ টিউলিপের

প্রকাশ: ২৪ জুন ২০২৫, ১১:৩৩ এএম
প্রধান উপদেষ্টার বিরুদ্ধে সুনাম নষ্ট করতে পরিকল্পিত প্রচারণার অভিযোগ টিউলিপের

ব্রিটেনের লেবার পার্টির এমপি ও সাবেক মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিক বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে তার সুনাম নষ্ট করা এবং ‘যুক্তরাজ্যের রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ’ করতে ‘পরিকল্পিত প্রচারণা’ চালানোর অভিযোগ করেছেন। ড. ইউনূস ও দুদক বরাবর টিউলিপের পাঠানো উকিল নোটিশের মাধ্যমে এই অভিযোগ করা হয় বলে জানায় যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম স্কাইনিউজ

গত ১৮ মার্চ ও ১৫ এপ্রিল দুদক চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের চিঠি পাঠানো হয়। এরপর ৪ জুন একটি চিঠি পাঠানো হয় প্রধান উপদেষ্টা ইউনূসকে।

লেবার পার্টির এই এমপি আরও বলেন, ‘স্কাই নিউজে সাক্ষাৎকারে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের মন্তব্য তার সুষ্ঠু তদন্তের অধিকারকে ক্ষুণ্ন করেছে, যার অর্থ তার বিরুদ্ধে চলমান দুর্নীতির তদন্ত বাতিল করা উচিত।’

নোটিশে টিউলিপ বলেছেন, ‘তার সুনাম ক্ষুণ্ণ করাই ড. ইউনূস ও দুদকের প্রধান উদ্দেশ্য। সেইসঙ্গে যুক্তরাজ্যের রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করা, বিশেষ করে টিউলিপের নিজ নির্বাচনী এলাকা, তার রাজনৈতিক দল এবং দেশসেবার কাজে বিঘ্ন ঘটাতে তারা এসব অভিযোগ তুলেছেন, যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।’

যুক্তরাজ্যভিত্তিক আইনি প্রতিষ্ঠান স্টেফেনসন হারউড এলএলপির মাধ্যমে এ নোটিশ পাঠিয়েছেন টিউলিপ। নোটিশে তার দেওয়া আগের কোনো চিঠির জবাব না পাওয়ায় অন্তর্বর্তী সরকারের সমালোচনাও করা হয়।

উকিল নোটিশে টিউলিপ বলেন, গত ১৮ মার্চ ও ১৫ এপ্রিল দুদক চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের চিঠি পাঠানো হয়। এরপর ৪ জুন একটি চিঠি পাঠানো হয় প্রধান উপদেষ্টা ইউনূসকে। 

নোটিশে আইনি প্রতিষ্ঠান স্টেফেনসন হারউড বলছে, ‘এখনো আমরা কিংবা টিউলিপ সিদ্দিক কোনো চিঠির জবাব পাইনি। আমরা চিঠিতে স্পষ্ট বলেছি, টিউলিপ সিদ্দিক একটি পরিকল্পিত অভিযানের শিকার, যার নেপথ্যে রয়েছে প্রধান উপদেষ্টা ও দুদক। আমাদের চিঠিপত্রে এটা দেখিয়েছি, কেন টিউলিপের বিরুদ্ধে ওঠা প্রতিটি অভিযোগ অসত্য।’ 

উকিল নোটিশে ইউনুসের সাক্ষাৎ না দেওয়ার সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে বলা হয়, ‘ইউনূসের লন্ডন সফরের কথা শুনে টিউলিপ তার সঙ্গে সাক্ষাতের উদ্যোগ নেন। তিনি দুদকের অভিযোগের বিষয়ে ইউনুসের সঙ্গে আলোচনা করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু প্রধান উপদেষ্টা দুঃখজনকভাবে টিউলিপের সেই প্রস্তাবটি গ্রহণে ব্যর্থ হন।’

বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে টিউলিপের সঙ্গে দেখা না করার যে কারণ ইউনূস তুলে ধরেছেন, তার সমালোচনা করে, স্টেফেনসন হারউড নোটিশে বলেছে, ‘বিবিসি রেডিওর সাক্ষাৎকারে ইউনূসের কাছে সুনির্দিষ্টভাবে দুটি বিষয় জানতে চাওয়া হয়। প্রথমত, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ না পেয়ে তিনি হতাশ কি না। দ্বিতীয়ত, টিউলিপের সঙ্গে তিনি কেন সাক্ষাৎ করেননি।’

এতে বলা হয়, ‘এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা অবাক করার মতো অবস্থান নিয়েছিলেন। তিনি সেদিন বলেছিলেন, এটি একটি আইনি প্রক্রিয়া এবং তিনি সেটিতে হস্তক্ষেপ করতে চান না।’ 

নোটিশে আরও বলা হয়, ‘আমাদের প্রত্যাশা ছিল, যুক্তরাজ্যের নির্বাচিত একজন জনপ্রতিনিধির বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলার আগে প্রধান উপদেষ্টা সঠিকভাবে তথ্য যাচাই করবেন। তার এটাও মাথায় রাখা উচিত ছিল, দুদকের পক্ষ থেকে যখন তদন্ত চলছে বলে দাবি করা হচ্ছে, তখন টিউলিপকে নিয়ে প্রকাশ্যে সমালোচনা করাটা সমীচীন নয়।’

স্টেফেনসন হারউড মনে করে, টিউলিপের সঙ্গে বসার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করার দুটি কারণ থাকতে পারে। প্রথমত, টিউলিপের বিরুদ্ধে প্রধান উপদেষ্টা যেসব অভিযোগ তুলেছেন, সেগুলো মিথ্যা। স্টেফেনসন হারউড বলছে, টিউলিপের সঙ্গে বসে এসব মিথ্যা অভিযোগ নিয়ে খোলামেলা আলোচনার সুযোগ পেয়েছিলেন ইউনূস। কিন্তু তিনি সেই সুযোগ গ্রহণ না করে দুদকের আড়ালে থাকার সিদ্ধান্ত নিলেন, যা তাদের কাছে টিউলিপের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যানের দ্বিতীয় কারণ বলে মনে
হয়েছে।

দুদক চেয়ারম্যান বরাবর পাঠানো এ নোটিশের একটি অনুলিপি প্রধান উপদেষ্টাকে পাঠানোর কথাও বলা হয়।

নোটিশে টিউলিপ বলেন, ‘সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় এখন প্রধান উপদেষ্টা ও দুদকের এসব মিথ্যা প্রচারণা থেকে সরে দাঁড়ানোর সময় এসেছে।’

স্টেফেনসন হারউড বলছে, ‘দয়া করে এখন এটা নিশ্চিত করুন, যে দুদকের তদন্ত কার্যক্রম বন্ধ হয়েছে। আমরা স্পষ্ট করে বলছি, যদি এই চিঠি এবং আমাদের আগের চিঠিগুলোর যথাযথ জবাব ৩০ জুনের মধ্যে না দেন, তবে টিউলিপ সিদ্দিক যুক্তিসংগতভাবেই বিষয়টির ইতি ঘটেছে বলে ধরে নেবেন।’

ইয়েমেনের নাগরিক হত্যায় ভারতীয় নার্সের ফাঁসি কার্যকর করা হবে

প্রকাশ: ০৯ জুলাই ২০২৫, ১০:৪৭ এএম
ইয়েমেনের নাগরিক হত্যায় ভারতীয় নার্সের ফাঁসি কার্যকর করা হবে
নিমিশা প্রিয়া

ইয়েমেনে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ভারতীয় নার্স নিমিশা প্রিয়ার ফাঁসি কার্যকর করা হবে ১৬ জুলাই। ইয়েমেনের নাগরিক তালাল আবদো মেহদিকে হত্যার দায়ে ৩৭ বছর বয়সি নিমিশা প্রিয়াকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়।

এক সমাজকর্মীকে উদ্ধৃত করে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানায়, এই আবহে ভারত সরকার তার জীবন বাঁচাতে হস্তক্ষেপ করতে পারে।

মেহদিকে হত্যার অভিযোগে ২০১৭ সাল থেকে ইয়েমেনের কারাগারে রয়েছেন প্রিয়া।

ফাঁসি কার্যকরের ঘোষণায় ভারত উদ্বেগ প্রকাশ করে বলে, তারা এই ঘটনার সমস্ত বিকল্প খতিয়ে দেখছে।

আর এরই মাঝে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়ার বার্তা দিলো ইরান।

এদিকে নিমিশার হাতে খুন হওয়া মেহদির পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে সেই দেশে যাচ্ছেন ভারতের এক সমাজকর্মী স্যামুয়েল জেরোম ভাস্করণ।

জানা যায়, নিমিশা প্রিয়া কেরলের পলক্কড় জেলার বাসিন্দা। কর্মসূত্রে স্বামীর সঙ্গে ইয়েমেনে থাকতেন। ২০১৪ সালে তার স্বামী এবং মেয়ে ভারতে ফিরে আসেন। এদিকে ২০১৬ সালে ইয়েমন থেকে যাতায়তে নিষেধাজ্ঞা জারি করে ভারত। তখন ইয়েমেনে একটি প্রাইভেট হাসপাতালে চাকরি করতেন প্রিয়া। সেখানেই মেহদির সঙ্গে পরিচয় হয়।

পরবর্তীতে মেহদি প্রিয়াকে একটি ক্লিনিক খোলার বিষয়ে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কারণ, ইয়েমেনে কোনো বিদেশি নাগরিক যদি ক্লিনিক খুলতে চায়, তাহলে তাকে স্থানীয় কারও সঙ্গে পার্টনারশিপে খুলতে হবে। সে কারণেই মেহদিকে প্রয়োজন ছিল প্রিয়ার। এই আবহে ২০১৫ সালে মেহদির সাহায্যে ক্লিনিক খোলেন প্রিয়া।

পরে মেহদির সঙ্গে তার মতপার্থক্য দেখা দেয়। মেহদি প্রিয়ার পাসপোর্ট ছিনিয়ে নেন। এর জেরে সেই দেশেই আটকে পড়েন তিনি। এদিকে প্রিয়াকে নিজের স্ত্রী হিসেবে পরিচয় দিতেন মেহদি। প্রিয়াকে অত্যাচারও করতেন তিনি। পরে প্রিয়া পুলিশে অভিযোগ জানিয়েছিলেন মেহদির নামে। ২০১৬ সালে গ্রেপ্তারও হয় মেহদি। পরে অবশ্য সে ছাড়া পেয়ে যান।

এরপর ২০১৭ সালের ২৫ জুলাই মেহদিকে ঘুম পাড়ানো ইনজেকশন দেয় প্রিয়া। তার উদ্দেশ্য ছিল, লুকিয়ে রাখা পাসপোর্টটি নিয়ে ভারতে ফিরে আসা। তবে সেই ইনজেকশনের ওভারডোজে মৃত্যু হয় মেহদির। পরে প্রিয়া এক বান্ধবীকে নিয়ে মেহদির দেহ কেটে ক্লিনিকের ট্যাঙ্কে রেখে পালিয়ে যায়।

পরে ২০১৮ সালে খুনের দায়ে দোষী সাব্যস্ত হন প্রিয়া। পরে সেই নির্দেশের বিরুদ্ধে ইয়েমেনের সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেন তিনি। কিন্তু শীর্ষ আদালতেও হেরে যান প্রিয়া। পরে গত জানুয়ারি মাসে প্রিয়ার মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন দেন ইয়েমেনের প্রেসিডেন্ট রাশাদ মোহাম্মদ আল-আলিমি।

অমিয়/

টেক্সাসে বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১০৭

প্রকাশ: ০৯ জুলাই ২০২৫, ০৮:১৮ এএম
টেক্সাসে বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১০৭
ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসে বন্যায় মৃতের সংখ্যা ১০৭ জনে পৌঁছেছে। এ সংখ্যা আরও বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এদিকে ওই অঞ্চলে আরও বৃষ্টি হওয়ার পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। এতে অঞ্চলটির বন্যা পরিস্থিতি আরও প্রতিকূল হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

টেক্সাসের গুয়াদালুপে নদীর ধারের গ্রীষ্মকালীন ক্যাম্প থেকে নিখোঁজ হওয়া ২৭ মেয়ে শিশু ও তাদের কাউন্সিলরদের মৃত হিসেবে পাওয়া গেছে। ক্যাম্প ওয়েবসাইটের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘এই অকল্পনীয় মর্মান্তিক ঘটনায় আমাদের পরিবারের পাশাপাশি আমাদের হৃদয় ভেঙে যাচ্ছে। আমরা তাদের জন্য প্রতিনিয়ত প্রার্থনা করছি।’ 

এখনো নিখোঁজদের সন্ধানে অনুসন্ধান চলছে। এক বিবৃতিতে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আমরা আপনাদেরকে ভুক্তভোগী পরিবারের জন্য প্রার্থনা করতে, তাদের সম্মান করতে ও গোপনীয়তা বজায় রাখতে আহ্বান জানাচ্ছি।

পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন ক্যাম্প থেকেও অনেকে নিখোঁজ হয়েছেন। তাদের সংখ্যা প্রকাশ করা হয়নি। উদ্ধার কাজ পূর্ণগতিতে চললেও বন্যা পরিস্থিতির কারণে এ কাজ ব্যাহত হচ্ছে। 

ব্রিটিশ দৈনিক গার্ডিয়ানের প্রতিবেদন বলছে, স্যান অ্যান্টোনিওর উত্তরাঞ্চলে গত শুক্রবার ভোরের আগে ৪৫ মিনিটের প্রবল বর্ষণে প্লাবিত হয় গুয়াদালুপে নদী। এ সময়ের মধ্যে নদীর পানি ২৬ ফুট বেড়ে যায়। এতে আশপাশের অঞ্চল দ্রুত প্লাবিত হয়।

টেক্সাসের হিল কাউন্টিতে অন্তত ৬৮ জনকে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ট্র্যাভিস, বার্নেট, কেনডাল, টম গ্রিন ও উইলিয়ামসন থেকে আরও অন্তত ১০ জনের মৃত্যুর খবর এসেছে।

টেক্সাসের গভর্নর গ্রেগ অ্যাবট জানিয়েছেন, আবারও ভারী বৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে এবং এ পরিস্থিতির কারণে বন্যা আরও ছড়াতে পারে। কের-এর বাসিন্দাদের নিজেদের নষ্ট হয়ে যাওয়া জিনিসপত্র থেকে কাদা পরিষ্কার করতে দেখা গেছে। অনেকেই বলেছেন, প্রতিবেশীদের বীরত্বের কারণে তারা রক্ষা পেয়েছেন। 

কর্তৃপক্ষের দিকে এরই মধ্যে এ বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে আঙুল উঠেছে। তীব্র বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু যে মাত্রায় বৃষ্টি হয়েছে, তা ছিল এর দ্বিগুণ। এ ছাড়া পূর্বাভাস জানানোর ক্ষেত্রে যথেষ্ট ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল কি না, সব মানুষের কাছে খবর পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছিল কি না- এসব নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। বিষয়গুলো নিয়ে পরে তদন্ত করে দেখা হবে বলে আশ্বস্ত করেছে কর্তৃপক্ষ। আপাতত পূর্ণ মনোযোগ তারা দিচ্ছে উদ্ধারকাজের দিকে। সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান, বিবিসি

ইরানকে আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সরবরাহ করল চীন

প্রকাশ: ০৮ জুলাই ২০২৫, ০৯:৩০ পিএম
ইরানকে আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সরবরাহ করল চীন
চীনের তৈরী এইচকিউ-৯ আকাশ প্রতিরক্ষা ক্ষেপণাস্ত্র। ছবি: সংগৃহীত

ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা চীনের কাছ থেকে হাতে পেয়েছে ইরান। ইসরায়েলের সঙ্গে টানা ১২ দিনের সংঘাতের পর আকাশ প্রতিরক্ষা আরও জোরদার করতে তেহরান তার অস্ত্রভাণ্ডার সমৃদ্ধ করার পদক্ষেপ নিয়েছে।

মিডল ইস্ট আই-কে এক আরব গোয়েন্দা কর্মকর্তা জানান, গত ২৪ জুন ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধবিরতির পর তেহরানে পৌঁছেছে চীনের তৈরি ওই ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক আরব কর্মকর্তা জানান, যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র রাষ্ট্রগুলো আগে থেকেই জানত যে ইরান তার আকাশ প্রতিরক্ষা শক্তিশালী করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এই অগ্রগতি সম্পর্কে হোয়াইট হাউসকেও জানানো হয়েছে।

তবে যুদ্ধবিরতির পর চীন থেকে ইরান ঠিক কতগুলো ক্ষেপণাস্ত্র পেয়েছে, এবং কোন ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র পেয়েছে সে বিষয়ে নিশ্চিত কোনো তথ্য দেননি সংশ্লিষ্ট কেউ। তবে এক আরব কর্মকর্তা জানান, ইরান তেলের বিনিময়ে এসব ক্ষেপণাস্ত্র সংগ্রহ করেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও ইরানের সবচেয়ে বড় তেল ক্রেতা হচ্ছে চীন। মার্কিন জ্বালানি তথ্য সংস্থা ইউএস এনার্জি ইনফরমেশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের মে মাসে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, ইরানের প্রায় ৯০ শতাংশ অপরিশোধিত তেল ও কনডেনসেট রপ্তানি হয় চীনে। উল্লেখ্য, কনডেনসেট হলো প্রাকৃতিক গ্যাস উত্তোলনের সময় সংগৃহীত হালকা তরল জ্বালানি।

দ্বিতীয় আরব কর্মকর্তা বলেন, নিষেধাজ্ঞা এড়াতে ইরান বিভিন্ন সৃজনশীল কৌশলে বাণিজ্য করে থাকে। এই সামরিক চালান চীন-ইরান সম্পর্কের গভীরতাকেই নির্দেশ করে।

বর্তমানে ইরান রাশিয়ার তৈরি এস-৩০০ আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ব্যবহার করছে, যা বিমান ও ড্রোন ধ্বংসের পাশাপাশি কিছুটা ব্যালিস্টিক ও ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করতেও সক্ষম। পাশাপাশি চীনের পুরোনো ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থার পাশাপাশি ইরান নিজেদের তৈরি খোরদাদ সিরিজ এবং বাভার-৩৭৩ ব্যবস্থাও ব্যবহার করছে। সূত্র: মিডল ইস্ট আই

 

তালেবানের ২ শীর্ষ নেতার বিরুদ্ধে আইসিসির গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

প্রকাশ: ০৮ জুলাই ২০২৫, ০৯:০৮ পিএম
তালেবানের ২ শীর্ষ নেতার বিরুদ্ধে আইসিসির গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
ছবি: সংগৃহীত

নারী ও মেয়েদের ওপর নিপীড়নের অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) তালেবানের শীর্ষ দুই নেতার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে।

মঙ্গলবার (৮ জুলাই) আইসিসির বিচারকরা জানিয়েছেন, তালেবান সুপ্রিম লিডার হিবতুল্লাহ আখুন্দজাদা এবং প্রধান বিচারপতি আবদুল হাকিম হাক্কানির বিরুদ্ধে লিঙ্গভিত্তিক নিপীড়নের অভিযোগে মামলা চালানোর মতো ‘যুক্তিসঙ্গত প্রমাণ’ রয়েছে।

এক বিবৃতিতে আদালত জানায়, ‘তালেবান সমগ্র জনগণের ওপর কিছু নিয়ম ও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলেও তারা বিশেষভাবে নারীদের লক্ষ্যবস্তু করেছে কেবলমাত্র তাদের লিঙ্গের কারণে এবং তাদের মৌলিক অধিকার ও স্বাধীনতা থেকে বঞ্চিত করেছে।’

আইসিসির বিচারকরা বলেন, ‘তালেবান মেয়েদের শিক্ষা, গোপনীয়তা ও পারিবারিক জীবনের অধিকার এবং চলাফেরা, মতপ্রকাশ, চিন্তা, বিবেক ও ধর্মের স্বাধীনতা থেকে চরমভাবে বঞ্চিত করেছে।’

তারা আরও জানান, এছাড়া, এমন কিছু ব্যক্তিকেও লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে যাদের যৌনতা ও লিঙ্গ পরিচয়ের কিছু অভিব্যক্তি তালেবানের লিঙ্গনীতি পরিপন্থী বলে মনে হয়েছে।

আদালতের মতে, এসব অপরাধ ২০২১ সালের ১৫ আগস্ট তালেবান ক্ষমতা দখলের সময় থেকে শুরু হয়ে ২০২৫ সালের ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত অব্যাহত ছিল।

নেদারল্যান্ডসের হেগে অবস্থিত আইসিসি বিশ্বের সবচেয়ে ভয়াবহ অপরাধ যেমন যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার করে। তবে আদালত নিজস্ব কোনো পুলিশ বাহিনী চালায় না এবং সদস্য রাষ্ট্রগুলোর ওপর নির্ভর করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে - যার ফলাফল মিশ্র।

বিধি অনুযায়ী, আইসিসির গ্রেপ্তারি পরোয়ানার আওতাভুক্ত কোনো ব্যক্তি সদস্য রাষ্ট্রে ভ্রমণ করলে তাকে গ্রেপ্তার হওয়ার ঝুঁকি নিতে হয়। সূত্র: আল জাজিরা

মাহফুজ/

গাজার সব বাসিন্দাকে ‘ক্যাম্পে বন্দি’ করার পরিকল্পনা ইসরায়েলের

প্রকাশ: ০৮ জুলাই ২০২৫, ০৬:৫২ পিএম
আপডেট: ০৮ জুলাই ২০২৫, ০৬:৫৩ পিএম
গাজার সব বাসিন্দাকে ‘ক্যাম্পে বন্দি’ করার পরিকল্পনা ইসরায়েলের
ছবি: সংগৃহীত

ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ জানিয়েছেন, গাজার সব ফিলিস্তিনিকে গাজার দক্ষিণাঞ্চলের একটি শিবিরে স্থানান্তরের জন্য সামরিক বাহিনীকে প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। দেশটির গণমাধ্যমগুলো সোমবার (৭ জুলাই) এ তথ্য জানিয়েছে।

কাটজ সাংবাদিকদের বলেন, রাফাহ শহরের ধ্বংসস্তূপের ওপর একটি ‘হিউম্যানিটারিয়ান সিটি’ অর্থাৎ মানবিক আশ্রয় শিবির হিসেবে একটি এলাকা গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে তার, যেখানে প্রাথমিকভাবে প্রায় ৬ লাখ ফিলিস্তিনিকে রাখা হবে, এবং পরে গাজার পুরো ২১ লাখ জনগোষ্ঠীকে সেখানে স্থানান্তর করা হবে।

ইসরায়েল কাটজ জানান, সবার আগে নিরাপত্তা যাচাই করে নিশ্চিত করা হবে তারা হামাসের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়। যাচাইয়ের পর তাদের ভেতরে আনা হবে এবং বাইরে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হবে না। তিনি আরও বলেন, যদি পরিস্থিতি অনুকূল হয়, তাহলে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে প্রস্তাবিত ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতির সময় এই নির্মাণ কাজ শুরু করা হবে।

এ পরিকল্পনাকে এক ইসরায়েলি মানবাধিকার আইনজীবী সরাসরি ‘মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের একটি প্রক্রিয়াগত পরিকল্পনা’ হিসেবে অভিহিত করেছেন।

মানবাধিকার আইনজীবী মাইকেল স্ফার্ড ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ানকে বলেন, এটা গাজার দক্ষিণ প্রান্তে জনগণকে স্থানান্তরের মাধ্যমে পরবর্তীতে তাদের বহিষ্কারের প্রস্তুতি।

জাতিসংঘও এর আগে সতর্ক করেছে, কোনো দখলকৃত ভূখণ্ডের বেসামরিক জনগোষ্ঠীকে জোরপূর্বক স্থানান্তর বা বহিষ্কার আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের পরিপন্থী এবং ‘জাতিগত নির্মূলের শামিল’।

এ বিষয়ে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ বা হামাসের পক্ষ থেকে কোনো তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

এদিন পরে, হোয়াইট হাউসে এক বৈঠকে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবের কথা বলেন, যেখানে যুদ্ধোত্তর গাজা শাসনে যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণ ও ফিলিস্তিনিদের অন্যত্র স্থায়ীভাবে পুনর্বাসনের কথা বলা হয়েছে।

নেতানিয়াহু বলেন, ‘আমি মনে করি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের দৃষ্টিভঙ্গি অসাধারণ। এটা 'স্বাধীন পছন্দ' নামে পরিচিত। কেউ থাকতে চাইলে থাকুক, আর কেউ যদি চলে যেতে চায়, তাহলে তাদের যাওয়ার সুযোগ দেওয়া উচিত… আমরা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছি এমন দেশ খুঁজতে, যারা ফিলিস্তিনিদের জন্য ভালো ভবিষ্যৎ চায়।’

ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা আশেপাশের দেশগুলোর কাছ থেকে অসাধারণ সহযোগিতা পেয়েছি… প্রতিটি দেশের কাছ থেকেই দারুণ সমর্থন এসেছে। তাই, কিছু ভালোই ঘটবে।’

গত মার্চে আরব রাষ্ট্রগুলো ট্রাম্পের পরিকল্পনার বিকল্প হিসেবে মিশরের ৫৩ বিলিয়ন ডলারের গাজা পুনর্গঠন পরিকল্পনাকে সমর্থন করে, যেখানে ফিলিস্তিনিদের নিজ ভূমিতেই থেকে যাওয়ার সুযোগ থাকবে।

তারা একে ‘ফিলিস্তিনি জনগণের যেকোনো প্রকার স্থানান্তরের ঘোরতর বিরোধতা’ বলে অভিহিত করে এবং এটিকে ‘আন্তর্জাতিক আইনের চরম লঙ্ঘন, মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ এবং জাতিগত নির্মূল’ হিসেবে আখ্যায়িত করে।

ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ এবং হামাস মিশরের এই পরিকল্পনাকে সমর্থন জানালেও, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল বলেছে, এ পরিকল্পনা গাজার বাস্তবতা বিবেচনায় নেয়নি।

এদিকে ফিলিস্তিনিদের মধ্যে ভয় বাড়ছে আরেকটি নাকবার আশঙ্কায়। আরবি ভাষায় যার অর্থ ‘বিপর্যয়’, যখন ১৯৪৮ সালে ইসরায়েল রাষ্ট্র গঠনের আগে ও পরে লক্ষাধিক ফিলিস্তিনি তাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যান বা উৎখাত হন।

সেই সময়ের অনেক শরণার্থীই গাজায় এসে আশ্রয় নেন, এবং তাদের সন্তান-সন্ততিসহ তারা গাজার মোট জনসংখ্যার প্রায় তিন-চতুর্থাংশ। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, আরও ৯ লাখ নিবন্ধিত শরণার্থী পশ্চিম তীরে এবং ৩৪ লাখ ফিলিস্তিনি জর্ডান, সিরিয়া ও লেবাননে বাস করছেন।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন সীমান্ত পেরিয়ে হামলায় প্রায় ১ হাজার ২০০ ইসরায়েলি নিহত এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করা হলে, ইসরায়েল হামাসকে নিশ্চিহ্ন করতে সামরিক অভিযান শুরু করে।

হামাস-নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, এরপর থেকে গাজায় ৫৭ হজার ৫০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন।

গাজার অধিকাংশ মানুষ একাধিকবার বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। বাড়িঘরের ৯০ শতাংশেরও বেশি ধ্বংস হয়েছে বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ধ্বংস হয়েছে স্বাস্থ্যব্যবস্থা, পানি, স্যানিটেশন এবং পরিচ্ছন্নতা ব্যবস্থা। তীব্র সংকটে রয়েছে খাদ্য, জ্বালানি, ওষুধ ও আশ্রয়। সূত্র: বিবিসি

মাহফুজ/