ইরাকের স্বায়ত্তশাসিত কুর্দিস্তান অঞ্চলে একটি তেলক্ষেত্রে ড্রোন হামলার ফলে একটি মার্কিন তেল কোম্পানি কার্যক্রম স্থগিত করতে বাধ্য হয়েছে, যা এই অঞ্চলের জ্বালানি অবকাঠামো লক্ষ্য করে ধারাবাহিক হামলার সর্বশেষ ঘটনা।
মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) কুর্দিস্তান আঞ্চলিক সরকার , দুহোক প্রদেশের সারসাং তেলক্ষেত্রের এই হামলাকে ‘কুর্দিস্তানের অর্থনৈতিক অবকাঠামোর বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদ’ হিসেবে অভিহিত করেছে।
এর আগে পার্শ্ববর্তী আরবিল প্রদেশের একটি বিমানবন্দরে একদিন আগে একই রকম ড্রোন হামলা চালানো হয়। সেখানে মার্কিন সেনারা অবস্থান করছে।
সাইটটি পরিচালনাকারী মার্কিন সংস্থা এইচকেএন এনার্জি এক বিবৃতিতে জানায়, স্থানীয় সময় সকাল ৭:০০ টার দিকে সারসাং ফিল্ডে তাদের একটি উৎপাদন কেন্দ্রে বিস্ফোরণটি ঘটে। স্থানটি সুরক্ষিত না হওয়া পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত সুবিধার কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে।
ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কুর্দিস্তানের জ্বালানি অবকাঠামোকে লক্ষ্য করে সম্প্রতি একাধিক হামলার ঘটনা ঘটেছে। সর্বশেষ এই হামলাটি হয়েছে দুহক প্রদেশের সারসাং তেলক্ষেত্রে। গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক অবকাঠামো লক্ষ্য করে চালানো এই হামলাকে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বলে অভিহিত করেছে সরকার।
তেল ক্ষেত্র পরিচালনাকারী মার্কিন কোম্পানি এইচকেএন এনার্জি বলেছে, সারসাং তেল ক্ষেত্রের একটি উৎপাদন স্থাপনায় স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সকাল ৭টার দিকে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে।
এই বিবৃতিতে মার্কিন এই কোম্পানি আরও বলেছে, ড্রোন হামলার পরপরই সেখানে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে কোনও হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
এইচকেএন এনার্জি বলছে, তেল ক্ষেত্রের জরুরি পরিষেবা দলের সদস্যরা আগুন নিভিয়ে ফেলেছেন। গত কয়েক সপ্তাহে কুর্দিস্তানে ড্রোন ও রকেট হামলা বৃদ্ধি পেয়েছে। সংঘাতে বিধ্বস্ত ইরাকে প্রায়ই এই ধরনের হামলার ঘটনা ঘটে। সাধারণত যুক্তরাষ্ট্র ও তাদের মিত্র ইসরায়েল-বিরোধী ইরান-সমর্থিত গোষ্ঠীগুলো এসব হামলার সঙ্গে জড়িত।
যদিও, এখন পর্যন্ত এই হামলাগুলোর দায় কেউ স্বীকার করেনি।
কিন্তু, ৩ জুলাই, কুর্দিস্তান কর্তৃপক্ষ জানায়,তারা আরবিল বিমানবন্দরের কাছে একটি ড্রোন ভূপাতিত করেছে। এর জন্য তারা হাশেদ আল-শাবিকে দায়ী করেছে। হাশেদ আল-শাবি ইরানপন্থী সাবেক আধাসামরিক বাহিনীর একটি জোট যা এখন সশস্ত্র বাহিনীতে একীভূত হয়ে কাজ করছে।
এদিকে, বাগদাদের ফেডারেল সরকার এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে।
তেল রপ্তানি নিয়ে বাগদাদ এবং আরবিলের মধ্যে তীব্র উত্তেজনার সময়ে সর্বশেষ এই হামলাগুলোড় ঘটনা ঘটল। বর্তমানে আইনি বিরোধ এবং প্রযুক্তিগত সমস্যার কারণে ২০২৩ সাল থেকে তুরস্কের মধ্য দিয়ে তেল পরিবহনের একটি প্রধান পাইপলাইন বন্ধ রয়েছে।
মে মাসে, ইরাকের ফেডারেল কর্তৃপক্ষ এইচকেএন এনার্জি সহ দুটি মার্কিন কোম্পানির সাথে গ্যাস চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য স্বায়ত্তশাসিত কুর্দিস্তান অঞ্চলের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে।
ইরাক এই চুক্তির নিন্দা জানিয়ে বলেছে, সমস্ত তেল ও গ্যাস উন্নয়ন অবশ্যই ফেডারেল সরকারের মাধ্যমে হতে হবে।
সুলতানা দিনা/