ঢাকা ১৬ শ্রাবণ ১৪৩২, বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই ২০২৫
English
বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই ২০২৫, ১৬ শ্রাবণ ১৪৩২

গাজায় মৃতের সংখ্যা বাড়ছেই

প্রকাশ: ৩১ জুলাই ২০২৫, ০৮:৫৮ এএম
আপডেট: ৩১ জুলাই ২০২৫, ০৯:২৩ এএম
গাজায় মৃতের সংখ্যা বাড়ছেই
সংগৃহীত

ইসরায়েল হামলার ক্ষেত্রে কোনো আন্তর্জাতিক নিয়মকানুনের তোয়াক্কা করছে না। আমলে নিচ্ছে না বিশ্বের অন্যান্য দেশের উদ্বেগ, হুঁশিয়ারিকেও।

বুধবার (৩০ জুলাই) ভোর থেকে অবরুদ্ধ উপত্যকাটিতে ইসরায়েলি হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ১৬ জন। নিহতদের মধ্যে ১৩ জন সহায়তাপ্রত্যাশী বলে জানায় এক সূত্র। এখন পর্যন্ত মোট ৭০ জন সহায়তাপ্রত্যাশী নিহত হয়েছেন।

গাজার যুদ্ধে ইসরায়েলি হামলায় মৃতের সংখ্যা এরই মধ্যে ৬০ হাজারের ঘর পার করেছে। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর শুরু হয় এ যুদ্ধ। এ পর্যন্ত মোট ৬৬২ দিন যুদ্ধ হয়েছে। সে হিসাবে ইসরায়েলি হামলায় প্রতিদিন গড়ে ৯০ জনেরও বেশি মানুষ মারা গেছেন। গাজার মোট জনসংখ্যার সঙ্গে তুলনা করলে দেখা যাচ্ছে, প্রতি ৩৬ গাজাবাসীর একজন ইসরায়েলের নির্বিচার হামলায় নিহত হয়েছেন।

ইসরায়েল দীর্ঘ একটা সময় গাজায় সহায়তা ঢুকতে দেয়নি। সম্প্রতি তারা সে সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে। সীমিত সময়ের জন্য গাজায় সহায়তা ঢুকতে দিতে রাজি হয়েছে। তবে অবরুদ্ধ উপত্যকাটিতে অবস্থানরত আল-জাজিরার সাংবাদিক জানিয়েছেন, গাজায় সহায়তা প্রবেশ করতে দেওয়ার ওই বিষয়টি শুধু কাগজে-কলমেই রয়েছে। কারণ সহায়তা নিয়ে যেসব ট্রাক গাজায় প্রবেশ করছে, সেগুলো মানুষের হাত পর্যন্ত পৌঁছাচ্ছে না।   

আল-জাজিরার সংবাদদাতা জানান, বিপুলসংখ্যক মানুষের খাবারে সরাসরি কোনো প্রবেশাধিকার নেই। তারা বিকল্প পথের ওপর নির্ভর করছে। অনেক ক্ষেত্রে বিপজ্জনক পথ পাড়ি দিয়ে সহায়তা সংগ্রহ করতে যাচ্ছে। যেমন- জিকিম এলাকায় ট্রাকের প্রবেশের জন্য অপেক্ষা করছে, আবার উপত্যকার দক্ষিণ ও মধ্য অংশে বিতরণকেন্দ্রগুলোতে তারা যাচ্ছে। সেসব স্থানে তাদের ইসরায়েলি সেনাদের গুলির মুখে পড়ার ঝুঁকি প্রবল।

আল-জাজিরার খবর বলছে, গাজার বেশির ভাগ মানুষ ভালোভাবে খেতে পারছে না। মানবেতর পরিস্থিতি পাড়ি দেওয়ার জন্য তাদের যেটুকু খাবারের প্রয়োজন, তা তাদের নেই। গাজার মানুষ এখন নিজেদের মধ্যেই বলাবলি করছে যে চার দিন ধরে গাজায় যে সহায়তা ঢোকার তোড়জোড় করা হয়েছে, তা আসলে লোক দেখানো কাজ ছাড়া আর কিছু নয়।   

এদিকে, যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কেইর স্টারমার বুধবার জানিয়েছেন, ইসরায়েল যদি গাজায় সুনির্দিষ্ট কিছু শর্ত মেনে না চলে, তা হলে আগামী সেপ্টেম্বরে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেবে যুক্তরাজ্য। এরই মধ্যে বিষয়টির বিরোধিতা করেছে একাধিক পক্ষ। তাদের মধ্যে হামাসের হাতে থাকা ইসরায়েলি জিম্মিদের পরিবার ও ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু রয়েছেন। 

ইসরায়েলি জিম্মিদের পরিবার বলছে, যুক্তরাজ্য ও অন্যান্য ইউরোপীয় রাষ্ট্রের ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার অর্থ দাঁড়াবে ‘সন্ত্রাসবাদকে মদদ’ দেওয়া। জিম্মিদের পরিবারের সংগঠন হোস্টেজ অ্যান্ড মিসিং ফ্যামিলিস ফোরাম বলেছে, এ ধরনের স্বীকৃতি শান্তির পথে যাওয়া নয়। বরং আন্তর্জাতিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।

ফিলিস্তিনকে বিশ্বের ১৪০টি রাষ্ট্র স্বীকৃতি দিয়েছে। গত সপ্তাহে ফ্রান্সও জানিয়েছে, তারা আগামীতে দেশটিকে স্বীকৃতি দেবে। এদিকে, যুক্তরাজ্য নিজ সিদ্ধান্ত জানানোর পরপরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পুরো বিষয়টির নিন্দা ও কড়া সমালোচনা করেছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বলছেন, স্টারমার হামাসের দানবীয় সন্ত্রাসকে পুরস্কৃত করছেন এবং সে সন্ত্রাসের ভুক্তভোগীদের শাস্তি দিচ্ছেন। ইসরায়েল সীমান্তে কোনো জিহাদি রাষ্ট্র আজ প্রতিষ্ঠিত হলে, তা আগামীতে ব্রিটেনকে হুমকির মুখে ফেলবে। নেতানিয়াহু আরও বলেন, ‘জিহাদি সন্ত্রাসীদের তুষ্ট করার প্রচেষ্টা সব সময় ব্যর্থ হয়। এটি আগামীতেও আপনাকে ব্যর্থ করবে। এটি হবে না।’ 

এমন একটি সময়ে এসব ঘটনা ঘটছে যখন জাতিসংঘ সমর্থিত সংস্থা বলছে, গাজায় দুর্ভিক্ষের মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। গত মঙ্গলবার গাজায় একশরও বেশি লরি সহায়তা নিয়ে প্রবেশ করেছিল। কিন্তু সেগুলোর বেশির ভাগই লুট হয়ে গেছে। 

ইসরায়েল আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থাগুলোকে গাজায় নিজেদের কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে দিচ্ছে না। বিবিসির মতো সংবাদমাধ্যমেরও গাজার খবর সংগ্রহ করতে বেগ পেতে হচ্ছে।  সূত্র: বিবিসি

সিরিয়ায় সহায়তা পাঠানোর প্রস্তুতি জাতিসংঘের

প্রকাশ: ৩১ জুলাই ২০২৫, ০৯:১৮ এএম
সিরিয়ায় সহায়তা পাঠানোর প্রস্তুতি জাতিসংঘের
ছবি: সংগৃহীত

জাতিসংঘ সিরিয়ার দক্ষিণের প্রদেশ সুয়েইদায় মানবিক সহায়তা পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানিয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে সেখানে সংঘাতের ঘটনায় এক হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন এবং আনুমানিক ১ লাখ ৭৫ হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।

সিরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জাতিসংঘের সহায়তা সংস্থাকে খাবার পাঠাতে দিতে রাজি হওয়ার পর প্রস্তুতির খবরটি সামনে এল। এর আগে তিনবার সহায়তা দেওয়া হয়েছে ওই অঞ্চলে। নতুন সহায়তায় খাবার ও অন্যান্য রসদ থাকবে বলে জানিয়েছেন জাতিসংঘের খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফপি) সিরিয়ার প্রধান ম্যারিয়েন ওয়ার্ড। তিনি বলেন, ‘আমরা জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থার সমর্থনে সহায়তার বহর পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছি।’

সুয়েইদায় গত ১৩ জুলাই সহিংসতা শুরু হয়। সেখানে দ্রুজ জাতিগোষ্ঠীর স্থানীয় একটি অংশের সঙ্গে যুদ্ধ শুরু হয় বেদুইনদের। সিরিয়ার সরকার সংঘাত থামানোর জন্য সেনা পাঠায়, কিন্তু এক হাজারের বেশি নিহত হয় বলে জানিয়েছে সিরিয়ান নেটওয়ার্ক ফর হিউম্যান রাইটস। 

সংঘাতের এক সপ্তাহ পর যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় একটি যুদ্ধবিরতি হয়। কিন্তু সুয়েইদার বাসিন্দারা খাবার, পানি, বিদ্যুৎ, ওষুধের অভাবের মুখে পড়েন। সংঘাতের সময় ৫২ হাজারেরও বেশি মানুষ পালিয়ে পার্শ্ববর্তী প্রদেশ দারায় আশ্রয় নেয়।

দামেস্কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ওয়ার্ড বলেন, কার্যত এখন যারাই সুয়েইদায় বসবাস করছে, তাদেরই সহায়তার প্রয়োজন পড়ছে। আর যারা সুয়েইদা থেকে দারায় গেছে, তাদেরও সহায়তা প্রয়োজন।

ডব্লিউএফপি এরই মধ্যে সুয়েইদার বেকারিগুলোতে প্রায় আড়াই শ টন আটা পাঠিয়েছে। এ ছাড়া প্রদেশটির ৫০ হাজার মানুষের জন্য রেডি খাবার পাঠিয়েছে। দারায় অবস্থানরত ১০ হাজার মানুষও তাদের সহায়তা পেয়েছে।

তবে এখনো ওই স্থানটি পুরোপুরি শান্ত হয়নি। ফলে সরকারের সবুজ সংকেত পাওয়ার আগ পর্যন্ত তারা সুয়েইদায় সহায়তা পাঠানোর জন্য নিয়মিত রুট খুলতে পারছে না বলে একটি সূত্র জানায়।

ওয়ার্ড জানিয়েছেন, সুয়েইদার বাসিন্দাদের কাছে সরাসরি সহয়তা পৌঁছানোর জন্য জাতিসংঘের সংস্থাগুলোর স্থিতিশীল যুদ্ধবিরতির প্রয়োজন ছিল।
 
সূত্র: রয়টার্স

চীনে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া, সরানো হলো লাখো মানুষ

প্রকাশ: ৩১ জুলাই ২০২৫, ০৯:১১ এএম
চীনে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া, সরানো হলো লাখো মানুষ
ছবি:সংগৃহীত

পূর্ব চীনে ভারী বৃষ্টি ও ঝড়ের মতো প্রতিকূল আবহাওয়ার মুখে সাংহাই থেকে ২ লাখ ৮০ হাজার মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।বুধবার (৩০ জুলাই) শত শত ফ্লাইট ও ফেরিসেবা স্থগিত করে দেওয়া হয়েছে। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে একাধিক সড়ক ও রেলপথ।

এ ছাড়া সুনামি সতর্কতাও জারি করা হয়েছে। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সাংহাই ও ঝোউশান অঞ্চলে ওই সতর্কতা জারি করা হয়। বুধবার সাংহাইয়ের দুটি মূল বিমানবন্দরে অন্তত ৬৪০টি ফ্লাইট বাতিল করা হয়। 

রয়টার্সের খবর বলছে, সাংহাইয়ে ১০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। এক মাসের সমপরিমাণ বৃষ্টি হয়েছে ছয় ঘণ্টার ব্যবধানে। এ ছাড়া রয়েছে প্রবল বাতাস। বৃষ্টির কারণে শহরের বিভিন্ন অংশে জলাবদ্ধতা তৈরি হতে পারে জানিয়েছে নগর কর্তৃপক্ষ।

 বুধবার দুপুরের আগে চীনের ন্যাশনাল ম্যারিন এনভায়রনমেন্টাল ফোরকাস্টিং সেন্টার জানায়, সুনামি হলে দেশের উপকূলীয় অঞ্চলে বিপর্যয়কর প্রভাব পড়বে। উপকূলের পার্শ্ববর্তী এলাকাগুলোতে পানি বয়ে যাওয়ার মাত্রা বৃদ্ধি পেলেও বিপৎসীমা পার করেনি।

 সূত্র: রয়টার্স

রোহিঙ্গাদের ওপর যুদ্ধাপরাধ, আইসিসিকে আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে তদন্তের আহ্বান

প্রকাশ: ৩০ জুলাই ২০২৫, ০৯:৪০ পিএম
রোহিঙ্গাদের ওপর যুদ্ধাপরাধ, আইসিসিকে আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে তদন্তের আহ্বান
আরাকান আর্মি। ছবি: সংগৃহীত

মায়ানমারের রাখাইন রাজ্যে আরাকান আর্মির (এএ) বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা বেসামরিক নাগরিকদের অপহরণ, নির্যাতন, হত্যা এবং শিরশ্ছেদের মতো যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ তদন্ত করতে সম্প্রতি আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতকে (আইসিসি) আহ্বান জানিয়েছে মানবাধিকার সংস্থা ফর্টিফাই রাইটস। 

ব্যাংককভিত্তিক এই সংস্থাটির নতুন তদন্তে বলা হয়েছে, রাখাইনের বেশির ভাগ এলাকা নিয়ন্ত্রণকারী এই শক্তিশালী সশস্ত্র গোষ্ঠীটি তাদের অধীনস্থ গ্রাম এবং অস্থায়ী আটক কেন্দ্রগুলোতে আন্তর্জাতিক মানবিক আইন লঙ্ঘন করেছে।

ফর্টিফাই রাইটসের মানবাধিকার বিশেষজ্ঞ ইজাজ মিন খান্ট বলেছেন, রোহিঙ্গাদের ব্যাপক অপহরণ, পাশবিক নির্যাতন এবং হত্যার জন্য আরাকান আর্মি দায়ী, যাদের মধ্যে কয়েকজনকে শিরশ্ছেদ অবস্থায় পাওয়া গেছে। 

এই কাজগুলো যুদ্ধের আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

ফর্টিফাই রাইটস জানিয়েছে, গত এপ্রিল থেকে জুলাই পর্যন্ত ৩৯ জন রোহিঙ্গা, যার মধ্যে আটজন নারীর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন তারা। এ ছাড়া তারা এসব কথিত অপরাধের ছবি এবং ভিডিও প্রমাণ যাচাই করেছে।

তবে ফর্টিফাই রাইটসের বৈঠকের অনুরোধের জবাবে আরাকান আর্মি অভিযোগগুলো ‘মিথ্যা ও মানহানিকর’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছে। এটিকে তারা ‘আমাদের সুনাম নষ্ট করার লক্ষ্যে একটি বিদ্বেষপূর্ণ আক্রমণ’ হিসেবে বর্ণনা করেছে।

আরাকান আর্মির বারবার অস্বীকার সত্ত্বেও ফর্টিফাই রাইটস দাবি করেছে, তারা ধারাবাহিকভাবে এই গোষ্ঠীর যুদ্ধাপরাধ নথিভুক্ত করেছে। এর মধ্যে ২০২৪ সালের আগস্টে নাফ নদীর কাছে একটি গণহত্যা এবং ওই বছরের মে মাসে রোহিঙ্গা বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগের ঘটনা উল্লেখযোগ্য। এমনকি, ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে আরাকার আর্মি নিজেরাই স্বীকার করেছে, তাদের যোদ্ধারা দুজন যুদ্ধবন্দিকে নির্যাতন ও সংক্ষিপ্তভাবে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে।

আগস্ট থেকে ভারতীয় পণ্যে ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করলেন ট্রাম্প

প্রকাশ: ৩০ জুলাই ২০২৫, ০৮:২৯ পিএম
আপডেট: ৩০ জুলাই ২০২৫, ০৮:৩৩ পিএম
আগস্ট থেকে ভারতীয় পণ্যে ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করলেন ট্রাম্প
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারত থেকে আমদানিকৃত পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন। আগামী ১ আগস্ট থেকে এই শুল্ক কার্যকর হবে বলে জানানো হয়েছে। এর পাশাপাশি আরও কিছু আর্থিক নিষেধাজ্ঞাও আরোপ করা হচ্ছে। এই সিদ্ধান্ত এমন সময় এলো, যখন ওয়াশিংটন ও নয়াদিল্লির মধ্যে এখনো কোনো বাণিজ্য চুক্তি চূড়ান্ত হয়নি।

নিজের ‘ট্রুথ সোশ্যাল’ প্ল্যাটফর্মে এক পোস্টে ট্রাম্প বলেন, “ভারত আমাদের বন্ধু হলেও, বহু বছর ধরেই আমরা তাদের সঙ্গে তুলনামূলকভাবে খুব কম ব্যবসা করেছি। কারণ, তাদের শুল্ক হার অত্যন্ত বেশি—বিশ্বে সর্বোচ্চের মধ্যে পড়ে। তাছাড়া তারা এমন সব কঠিন ও বিরক্তিকর অমৌলিক বাণিজ্যিক বাধা দিয়ে রেখেছে, যা অন্য কোনো দেশে দেখা যায় না।”

ট্রাম্প আরও বলেন, “ভারত সব সময় তাদের সামরিক সরঞ্জামের বড় একটি অংশ রাশিয়া থেকে কিনে এসেছে। চীনসহ তারাই এখন রাশিয়ার সবচেয়ে বড় জ্বালানি ক্রেতা। অথচ এই সময় বিশ্ব চায়—রাশিয়া যেন ইউক্রেনে হত্যাযজ্ঞ বন্ধ করে। এসব কিছুই মোটেই ভালো নয়!”

ভারতের রাশিয়াপন্থী অবস্থান নিয়ে নাখোশ ট্রাম্প

রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে শুরু হলেও, ভারত তখন থেকেই মস্কোর বিরুদ্ধে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞায় যোগ দেয়নি।

যদিও যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, জাপানসহ অনেক দেশ রাশিয়ার বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে, ভারত বরাবরই নিজ অবস্থানে অনড় থেকেছে।

ট্রাম্পের এই সমালোচনার পেছনে রয়েছে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের যুদ্ধ বন্ধে আগ্রহের ঘাটতি নিয়ে তার সন্দেহ। ট্রাম্প সম্প্রতি রাশিয়াকে ১০ দিনের মধ্যে ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির চুক্তিতে পৌঁছাতে বলেছে, না হয় রাশিয়ার ওপর ‘দ্বিতীয় পর্যায়ের নিষেধাজ্ঞা’ আরোপের হুমকি দিয়েছেন তিনি।

২০২৪ সালের নির্বাচনি প্রচারে ট্রাম্প প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তিনি ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করবেন এবং রক্তপাত থামাবেন।

ভারতের ওপর নতুন শুল্ক আরোপ এমন সময় করা হলো, যখন ট্রাম্প জাপান, ফিলিপাইন, ইন্দোনেশিয়া এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে নতুন বাণিজ্য কাঠামোতে অগ্রগতি অর্জন করেছেন।

বিশ্বের সর্বাধিক জনবহুল দেশ ভারত একই সঙ্গে বিশ্বের বৃহৎ অর্থনীতির অন্যতম। দীর্ঘদিন ধরেই ট্রাম্প ভারতের বাণিজ্যনীতি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে আসছেন। ২০১৯ সালে নিজের প্রথম মেয়াদকালে তিনি ভারতের বিশেষ বাণিজ্য সুবিধা প্রত্যাহার করে নিয়েছিলেন।

দ্বিতীয় মেয়াদের শুরুর দিকে গত এপ্রিল মাসে তিনি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ওপর “পারস্পরিক শুল্ক” আরোপের ঘোষণা দেন, যার হার সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ পর্যন্ত হতে পারে। ভারতের জন্য তখন ২৬ শতাংশ শুল্ক নির্ধারণ করা হয়েছিল। তবে সে মাসের শেষ দিকে তিনি ১০ শতাংশের বেশি শুল্ক ৯০ দিনের জন্য স্থগিত রাখেন, যাতে বাণিজ্য আলোচনা চালানো যায়—তবে এই ছাড় চীনের জন্য প্রযোজ্য ছিল না।

যুক্তরাষ্ট্রের আদমশুমারি ব্যুরোর তথ্যমতে, গত বছর দেশটির সঙ্গে ভারতের বাণিজ্য ঘাটতি ছিল ৪৫.৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার (৩৯.৮ বিলিয়ন ইউরো)। যুক্তরাষ্ট্র সবসময় বাণিজ্য ঘাটতির বিষয়ে উদ্বিগ্ন, বিশেষ করে যেসব দেশে সে তুলনায় কম পণ্য রপ্তানি করতে পারে—ভারত তার একটি উদাহরণ। সূত্র: ডি ডব্লিও

মাহফুজ/

ভূমিকম্পের পর সক্রিয় রাশিয়ার আগ্নেয়গিরি

প্রকাশ: ৩০ জুলাই ২০২৫, ০৫:১৬ পিএম
ভূমিকম্পের পর সক্রিয় রাশিয়ার আগ্নেয়গিরি
ছবি: সংগৃহীত

ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর রাশিয়ার সুদূর পূর্বাঞ্চলের কামচাটকা উপদ্বীপে অবস্থিত ক্লিউচেভস্কয় আগ্নেয়গিরিতে বড় ধরনের অগ্ন্যুৎপাত শুরু হয়েছে। আগ্নেয়গিরি থেকে নির্গত ছাইয়ের স্তর আকাশ ঢেকে ফেলেছে, যা ইতোমধ্যেই সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৩ কিলোমিটার (১ দশমিক ৮ মাইল) উচ্চতায় ছড়িয়ে পড়েছে।

রাশিয়ান একাডেমি অব সায়েন্সেসের আগ্নেয়গিরি ও ভূকম্পবিদ্যা ইনস্টিটিউটের তথ্যমতে, আগ্নেয়গিরিটি এখনও চূড়ান্তভাবে অগ্ন্যুৎপাত করছে এবং ছাই ৫৮ কিলোমিটার (৩৬ মাইল) পূর্ব পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে। এ ছাড়া যেকোনো সময় ৮ কিলোমিটার (৪ দশমিক ৯ মাইল) উচ্চতায় ছাই নির্গমনের আশঙ্কা করা হচ্ছে। পরিস্থিতির কারণে নিচু উচ্চতায় উড়তে থাকা বিমানগুলোর জন্য ঝুঁকি বাড়ছে। 

ক্লিউচেভস্কয় অঞ্চলের ওপর দিয়ে আন্তর্জাতিক বিমান চলাচলের রুট না থাকলেও আঞ্চলিক ফ্লাইটের জন্য রাশিয়ার বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ ‘কমলা রঙের’ সতর্কতা জারি করেছে। অর্থাৎ আগ্নেয়গিরি-সংক্রান্ত কার্যকলাপ বিমান চলাচলে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে।

ইনস্টিটিউটের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আগ্নেয়গিরির মুখ প্রায় লাভায় পূর্ণ হয়ে গেছে। যেকোনো সময় লাভা প্রবাহিত হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এতে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে ব্যাপক আতঙ্ক বিরাজ করছে।

বুধবার (৩০ জুলাই) রাশিয়ার কামচাটকা উপদ্বীপে ৮ দশমিক ৭ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। পরে সংশোধিত পরিমাপে তা ৮ দশমিক ৮ মাত্রা রেকর্ড করা হয়। এই ভূকম্পনের ফলে ৪ মিটার (১৩ ফুট) উচ্চতার সুনামি সৃষ্টি হয় এবং এটি রাশিয়ার উপকূলে আঘাত হানে।

যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) জানায়, এটি পৃথিবীর ইতিহাসে রেকর্ডকৃত ষষ্ঠ বৃহত্তম ভূমিকম্প। ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল কামচাটকা উপদ্বীপের পূর্ব-দক্ষিণ-পূর্ব দিকে এবং এর উৎপত্তিস্থল ছিল ভূপৃষ্টের কাছাকাছি, যা সুনামি সৃষ্টির জন্য আরও বিপজ্জনক করে তোলে।

প্রশান্ত মহাসাগরীয় উপকূলজুড়ে ৫২টি দেশ ও অঞ্চলকে সুনামি সতর্কতায় রাখা হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে রাশিয়া, জাপান, ইকুয়েডর, হাওয়াই, চিলি, ফ্রেঞ্চ পলিনেশিয়া, ফিজি, ফিলিপাইনসহ বহু দ্বীপ ও উপকূলবর্তী দেশ।

মেহেদী/