ঢাকা ২৯ ভাদ্র ১৪৩১, শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪

লাখো বছরের বিবর্তনে ধান বন্য থেকে ঘরে

প্রকাশ: ৩১ মে ২০২৪, ০৫:৩৫ পিএম
লাখো বছরের বিবর্তনে ধান বন্য থেকে ঘরে
চাষের ধান ‘ওরিজা স্যাটিভা’-এর জন্মভুমি চীন ছবি: সংগৃহীত

সম্প্রতি চীনের একদল বিজ্ঞানী ধানের বিবর্তনের ১ লাখ বছরের অবিশ্বাস্য ইতিহাস উন্মোচন করেছেন। তাদের গবেষণায় উঠে এসেছে, কীভাবে বন্য উদ্ভিদ থেকে চাষের ফসলে রূপান্তরিত হয়েছে ধান। সম্প্রতি বিজ্ঞানভিত্তিক জার্নাল ‘সায়েন্স’-এ প্রকাশিত এক গবেষণায় ধানের বিবর্তন সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ এ তথ্য উঠে এসেছে। যেখানে ধান কীভাবে ক্রমাগত বিবর্তিত হয়েছে, যা মানবসমাজের বিকাশ ও কৃষির উৎপত্তি সম্পর্কে নতুন ধারণা দিয়েছে।

গবেষণায় নিশ্চিত করা হয়েছে, চাষের ধান ‘ওরিজা স্যাটিভা’-এর জন্মভূমি চীন। চায়নিজ একাডেমি অব সায়েন্সেস (আইজিজিএসিএএস) ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের জিওলজি ও জিওফিজিক্স ইনস্টিটিউটের যৌথ গবেষণা দল ঝেজিয়াংয়ের শাংশান সাংস্কৃতিক এলাকায় গবেষণাটি পরিচালনা করেছে।

তাদের আবিষ্কার বিশ্বব্যাপী কৃষির উৎপত্তিতে শাংশান সংস্কৃতির গুরুত্ব তুলে ধরেছে। মানুষের জীবনযাপন শিকার ও সংগ্রহ থেকে কৃষিক্ষেত্রে স্থানান্তরের মাধ্যমে মানব ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় নিয়েছে। কারণ বর্তমানে বিশ্বের অর্ধেক জনসংখ্যার প্রধান খাদ্য ধান, যা চীনা সভ্যতার উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।

কখন ও কীভাবে মানুষ বন্য ধান ঘরে তুলতে শুরু করেছে, এ নিয়ে বিজ্ঞানীদের মাঝে দীর্ঘদিন ধরে বিতর্ক চলছে। ধানের উৎপত্তির বিষয়টি গত শতাব্দীতে সবচেয়ে আলোচিত বিষয় ছিল। ১৯৭০ এর দশকে চীনের ইয়াংসি নদী অঞ্চলের হেমুডু ও শাংশানের মতো স্থানে আবিষ্কারের মাধ্যমে, বিজ্ঞানীরা অঞ্চলটিকে ধানের উৎপত্তির জন্য গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন।

প্রাচীন নমুনায় বন্য ও চাষাবাদের ধানের মধ্যে পার্থক্য করা, এই গবেষণার প্রধান চ্যালেঞ্জ ছিল। আইজিজিএসিএএসের ড. লু হুয়ুয়ান ও তার দল বছরের পর বছর ধরে ধানের ‘ফাইটোলিথ’ পর্যবেক্ষণ করেছেন। এই ফাইটোলিথগুলো গাছপালায় পাওয়া ক্ষুদ্র সিলিকা কণিকা।

তারা এ গবেষণায় খুঁজে পেয়েছেন, ধানের ‘বুলিফর্ম’ কোষ মাছের আঁশের মতো বিভিন্ন ফাইটোলিথের আকার বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে ধান আবাদি হয়েছে। এই তথ্যের সাহায্যে গবেষকরা বন্য ও চাষের ধানের মধ্যে পার্থক্য নির্ণয়ের একটি পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছেন। ধানের ফাইটোলিথ বিশ্লেষণের সঙ্গে তারা আরও কিছু কৌশল যেমন- পরাগ ও কাঠকয়লার বিশ্লেষণ, মাটি পরীক্ষা, শস্যের দানার আকার পরীক্ষা ও প্রত্নতাত্ত্বিক খননের সম্মিলিত পদ্ধতি ব্যবহার করেছেন। এই পদ্ধতি ব্যবহার করে চীনের পুজিয়াং প্রদেশের শাংশান সাইট ও লংইউ প্রদেশের হেহুয়াশান সাইট পরীক্ষা করেছেন।

এই স্থানগুলো বিশ্লেষণ করে গবেষকরা প্রায় ১ লাখ বছরের একটি ধারাবাহিক সময়রেখা তৈরি করেছেন। গবেষণায় ইঙ্গিত মিলেছে, প্রায় ১ লাখ বছর আগে ইয়াংসি অঞ্চলে বন্য ধানের পরিমাণ অনেক বেশি ছিল। প্রায় ২৪ হাজার বছর আগে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সম্ভবত মানুষ বন্য ধান সংগ্রহ শুরু করে। প্রায় ১৩ হাজার বছর আগে মানুষ বন্য ধানের প্রাক-চাষাবাদ শুরু করে। ১১ হাজার বছর পর চাষের আরও বেশি সাধারণ হয়ে ওঠে, যা পূর্ব এশিয়ায় ধান চাষের শুরুকে চিহ্নিত করে।

এই গবেষণায় আরও উঠে আসে, কৃষিতে পূর্ব এশিয়ায় ধান ও দক্ষিণ-পশ্চিম এশিয়ায় প্রায় একই সময়ে গড়ে উঠেছিল। এই গবেষণা বিশ্বব্যাপী কৃষি কীভাবে শুরু হয়েছিল সে সম্পর্কে আমাদের জ্ঞানকে আরও সমৃদ্ধ করেছে এবং ধান, জলবায়ু, মানুষের কার্যকলাপ ও সাংস্কৃতিক বিকাশের মধ্যে জটিল সম্পর্ককে তুলে ধরেছে।

 

মঙ্গলের মাটিতে ‘হাসিমুখ’

প্রকাশ: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:২১ পিএম
মঙ্গলের মাটিতে ‘হাসিমুখ’
ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সির ক্যামেরায় হাসিমুখ মুখ ধরা পড়ল। ছবি: সংগৃহীত

দুই দিকে কিছুটা দূরত্বে দুটি গোলাকৃতির গর্ত। গর্ত দুটিকে ঘিরে রয়েছে আরও একটি বড় বৃত্তাকার রেখা। দূর থেকে দেখলে এক নজরে মনে হয়, কেউ যেন মানুষের হাসিমুখ এঁকে দিয়েছেন। মঙ্গলের মাটিতে এ ‘হাসিমুখ’-এর ছবি ধরা পড়েছে। সম্প্রতি ইনস্টাগ্রামের পাতায় সেই ছবিই পোস্ট করেছে ইউরোপের মহাকাশ সংস্থা ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি (ইএসএ)। ছবি পোস্ট করে এই হাসিমুখের রহস্যও উদ্ঘাটন করেছেন বিজ্ঞানীরা।

ইএসএর ‘এক্সোমার্স ট্রেস গ্যাস অরবিটার’-এর মাধ্যমে এই ছবি ধরা পড়েছে বলে জানান তারা। তারা বলছেন, অতীতে ওই এলাকায় সমুদ্র অথবা হ্রদ ছিল বলে মনে করা হচ্ছে। পানির উপস্থিতির কারণে সেখানে অনেক বছর ধরে ক্লোরাইড লবণ জমা হয়ে রয়েছে। সেই লবণের কারণে এমন আকার ধারণ করেছে, যা দূর থেকে কোনো মানুষের ‘হাসিমুখ’ বলে মনে হচ্ছে। 

মহাকাশ সংস্থাটি আরও জানিয়েছে , এই চিহ্নগুলো সম্ভবত কয়েক বিলিয়ন বছর আগে বসবাসযোগ্য অঞ্চলের ইঙ্গিত দিচ্ছে। 

এর আগে কক্ষপথে পাঠানো নাসার মহাকাশযানের ‘মার্স রিকনেসান্স অরবিটারে (এমআরও) ধরা পড়েছিল ‘ভালুকে’র মুখাবয়ব। মঙ্গলের ভূপৃষ্ঠের বিস্ময়কর এই চিত্রটি দেখে মনে হয়েছিল একটি ভালুক ফিরে তাকাচ্ছে। নাসার এমআরও ২০০৬ সাল থেকে মঙ্গল গ্রহ প্রদক্ষিণ করতে থাকে। এর পর থেকে লাল গ্রহটির ছবি তুলতে থাকে ‘হাইরাইজ’ ক্যামেরা। তিন ফুট ছোট বস্তুসহ মঙ্গলের ভূপৃষ্ঠের বিশদ স্পষ্ট ছবি তোলার উপযোগী করে ক্যামেরাটি তৈরি করা হয়েছিল।

এই মহাকাশযান প্রতি ১২২ মিনিটে মঙ্গল গ্রহকে একবার প্রদক্ষিণ করে। এটি নাসার বিজ্ঞানীদের মঙ্গল গ্রহের বায়ুমণ্ডল, আবহাওয়া ও জলবায়ু এবং সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেগুলোর কীভাবে পরিবর্তন হয়, তা গবেষণা করতে সাহায্য করছে। এটি পানি, বরফ ও জটিল ভূখণ্ডের অস্তিত্ব অনুসন্ধান করছে। পাশাপাশি অন্যান্য ভবিষ্যৎ মিশনের অবতরণ উপযোগী স্থান খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে। সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা

বিকল নভোযানে রহস্যময় শব্দ

প্রকাশ: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০২:১২ পিএম
বিকল নভোযানে রহস্যময় শব্দ
নাসার মহাকাশচারী বুচ উইলমোর ও সুনীতা উইলিয়ামস। ছবি: সংগৃহীত

মহাকাশে বিকল হয়ে যাওয়া বোয়িং স্টারলাইনার যানটি থেকে ভেসে আসছে রহস্যময় শব্দ। আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে আটকে পড়া নভোচারি সুনীতা উইলিয়ামসের সঙ্গী বুচ উইলমোর সে শব্দ শুনতে পান। সঙ্গে সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসাকে বিষয়টি সম্পর্কে অবগত করেছেন তিনি।

আগামী শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) সুনীতা ও বুচকে ছাড়াই পৃথিবীতে ফিরে আসার কথা রয়েছে মহাকাশযানটির। আর বেশি সময় বাকি নেই। তার মধ্যে এই অদ্ভুত শব্দ নতুন করে জটিলতা তৈরি করেছে। এতে চিন্তায় পড়েছেন নাসার বিজ্ঞানীরা।

জানা গেছে, রহস্যময় শব্দ শোনার পর উদ্বিগ্ন বুচ উইলমোর নাসার হাউস্টনের মিশন কন্ট্রোলে বার্তা পাঠান। তিনি জানান, বোয়িং স্টারলাইন মহাকাশযানটি থেকে মুহুর্মুহু অদ্ভুত শব্দ ভেসে আসছে। তার মনে হয়েছে যেন স্টারলাইনারের বাইরে থেকে কেউ যানটির গায়ে ধাক্কা মারছে। এই শব্দটি সাবমেরিনের শব্দের মতো বলে জানিয়েছেন তিনি।

স্টারলাইনের ভেতরে থাকা স্পিকারের সঙ্গে একটি মাইক্রোফোন সংযোগ করেছেন বুচ উইলমোর। অদ্ভুত শব্দটি নাসার কন্ট্রোল রুমে শোনানোর জন্য বিশেষ এই বন্দোবস্ত করেন মার্কিন মহাকাশচারী।

নাসার তরফ থেকেও শব্দটি নিশ্চিত করা হয়েছে। শব্দটি হার্টবিটের মতো বলে ব্যাখ্যা দিয়েছে নাসা। তবে এর উৎস এখনো অজানা। নাসার বিজ্ঞানীরা এই শব্দ নিয়ে রীতিমতো চিন্তায় পড়ে গেছেন। কোনোরকম ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক অডিয়ো সিস্টেমের কারণে এই শব্দটি হচ্ছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে বিশেষজ্ঞদের আনা হয়েছে। রহস্যময় সেই শব্দ রেকর্ড করেছে নাসা। একটি ভিডিও-ও শেয়ার করা হয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। 

সুনীতাদের পৃথিবীতে ফেরানোর ঝুঁকি নিয়ে বড়সড় আশঙ্কার বাণী শুনিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের মিলিটারি স্পেস সিস্টেমসের সাবেক কমান্ডার রুডি রিডল্ফি। তিনি বলেন, ‘পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে ধাক্কা খেয়ে জ্বলে যেতে পারে বোয়িং স্টারলাইনার মহাকাশযানটি। খাড়া অবস্থায় মহাকাশযানটি পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করতে গেলে, তার বর্মটি নষ্ট হয়ে বিপর্যয় নেমে আসতে পারে। কার্যত বাষ্পীভূত হয়ে উবে যেতে পারেন সুনীতারা।’ ফলে কোনোরকম ঝুঁকি নিতে নারাজ নাসা। সাবধানে পদক্ষেপ নিচ্ছে সংস্থাটি। সূত্র: এই সময়

বতসোয়ানায় মিলল বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম হীরা

প্রকাশ: ৩০ আগস্ট ২০২৪, ০৯:০৬ পিএম
বতসোয়ানায় মিলল বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম হীরা
বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম হীরা। ছবি: সংগৃহীত

আফ্রিকার দেশ বতসোয়ানায় আবিষ্কৃত হয়েছে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম হীরক খণ্ড। সম্প্রতি কানাডিয়ান মাইনিং কোম্পানি লুকারা ডায়মন্ড করপোরেশনের মালিকাধীন ‘কারোয়ে ডায়মন্ড মাইন’ নামের খনি থেকে ২ হাজার ৪৯২ ক্যারেটের হীরাটি পাওয়া গেছে। খনিটি বতসোয়ানার রাজধানী গাবোরোনের প্রায় ৫০০ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত। এই হীরা খনি থেকে উত্তোলনে এক্স-রে প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে। 

হীরাটি বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম হলেও এটি এ-যাবৎ বতসোয়ানায় পাওয়া সবচেয়ে বড় আকারের হীরা। এই হীরক খণ্ড ১৯০৫ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় আবিষ্কৃত ৩ হাজার ১৬ ক্যারেটের কলিন্যান ডায়ামন্ডের পর দ্বিতীয় বৃহত্তম। অবশ্য কলিন্যানের আকার এখন আর প্রাথমিক অবস্থায় নেই। এটি নয়টি আলাদা আলাদা ভাগে ব্রিটিশ রাজকীয় মুকুটে শোভা বাড়াচ্ছে।

লুকারা ডায়মন্ড করপোরেশন এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, উত্তর-পূর্ব বতসোয়ানার কারোয়ে ডায়মন্ড মাইন খনি থেকে এই হীরা আবিষ্কৃত হয়েছে। এটি এখন পর্যন্ত পাওয়া সবচেয়ে বড় রাফ হীরাগুলোর একটি। লুকারা হীরকটির মূল্য বা গুণমান সম্পর্কে কিছু উল্লেখ করেনি। তবে যুক্তরাজ্যভিত্তিক ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে লুকারার একটি সূত্র জানিয়েছে, হীরাটির দাম ৪ কোটি মার্কিন ডলারের বেশি হতে পারে।

লুকারা প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম ল্যাম্ব এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘আমরা এই অসাধারণ ২ হাজার ৪৯২ ক্যারেটের হীরা আবিষ্কারের জন্য আনন্দিত। এটি ২০১৭ সালে স্থাপন করা মেগা ডায়মন্ড রিকভারি এক্স-রে প্রযুক্তি ব্যবহার করে শনাক্ত করা হয়েছে, যা বড় ও উচ্চ মূল্যের হীরা শনাক্ত করতে ব্যবহৃত হয়। এতে আকরিক চূর্ণ প্রক্রিয়ার সময় রত্নপাথর ভেঙে যায় না।’ কোম্পানির প্রকাশিত ছবি দেখে বোঝা যায়, হীরাটি হাতের তালুর সমান।

চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে বতসোয়ানার প্রেসিডেন্ট মোকগওয়েটসি মাসিসি এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে হীরাটি সবার সামনে তুলে ধরেন। ইউরোপের বৃহত্তম অনলাইন হীরার জুয়েলার্স ‘সেভেনটি সেভেন ডায়মন্ডস’-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক টোবিয়াস কোরমিন্ড নিশ্চিত করেছেন, এটি কলিন্যানের পর আবিষ্কৃত বৃহত্তম হীরক খণ্ড।

তিনি বলেন, ‘এই আবিষ্কার মূলত নতুন প্রযুক্তির কারণে সম্ভব হয়েছে, যা বড় হীরাগুলোকে টুকরা টুকরা না করে মাটি থেকে বের করে আনতে কাজ করে। তাই আমরা সম্ভবত এখন থেকে আরও এরকম হীরা দেখতে পাব।’

বতসোয়ানা বিশ্বের বৃহত্তম হীরক উত্তোলনের জন্য অন্যতম। দেশটিতে বিশ্বের মোট হীরার ২০ শতাংশ উত্তোলিত হয়। এ দেশের প্রধান আয়ের উৎস হীরা, যা এর সামগ্রিক ঘরোয়া আয়ের ৩০ শতাংশ এবং রপ্তানির আয়ের ৮০ শতাংশ।

দক্ষিণ আফ্রিকার দেশটি গত মাসে খনির মালিকানা সংক্রান্ত নতুন একটি আইন প্রস্তাব করেছে। যেখানে বলা হচ্ছে, বিদেশি কোম্পানিগুলো পুরোপুরি মালিকানা ধরে রাখতে পারবে না। সরকার যদি কেনার সিদ্ধান্ত না নেয় তবে স্থানীয় কোম্পানির কাছে ২৪ শতাংশ শেয়ার বিক্রি করতে হবে।
এই হীরা আবিষ্কারের ঘোষণার আগে, বতসোয়ানায় আবিষ্কৃত বৃহত্তম হীরাটি ছিল ১ হাজার ৭৫৮ ক্যারেটের, যা ২০১৯ সালে কারোয়ে খনিতে পাওয়া যায়। এটির নাম দেওয়া হয়েছিল সেওয়েলো। ফরাসি ফ্যাশন ব্র্যান্ড ফরাসি ফ্যাশন ব্র্যান্ড লুই ভিটন বড় অঙ্কের অর্থ দিয়ে এটি কিনে ছিল।
লুকারা ২০২১ সালে বতসোয়ানায় একই এক্স-রে প্রযুক্তি ব্যবহার করে আরেকটি ১ হাজার ১৭৪ ক্যারেটের হীরা আবিষ্কার করেছিল।

দ্রুত ছড়াচ্ছে ইউরোপে ব্রিটেনে শনাক্ত ব্লুটং ভাইরাস

প্রকাশ: ৩০ আগস্ট ২০২৪, ০৮:৫০ পিএম
আপডেট: ৩০ আগস্ট ২০২৪, ০৯:০৯ পিএম
ব্রিটেনে শনাক্ত ব্লুটং ভাইরাস

ইউরোপে দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়ার পর ব্রিটেনে শনাক্ত হয়েছে ব্লুটং ভাইরাস। এই ভাইরাস গরু, ভেড়া, ছাগল ও হরিণের মতো গবাদিপশুকে আক্রান্ত করে। ব্লুটং ভাইরাস মানুষের জন্য বিপজ্জনক নয়। তবে গবাদিপশুর মৃত্যু পর্যন্ত ঘটাতে পারে। সম্প্রতি এই ভাইরাস ব্রিটেনের দক্ষিণ নরফোকের কাছে একটি ভেড়ায় পাওয়া গেছে। ব্লুটং ভাইরাসে আক্রান্ত লক্ষণগুলো হলো জিহ্বা নীল ও ফুলে যাওয়া, জ্বর, দুধ উৎপাদন কমে যাওয়া।

ব্রিটেনে ২০২৪-২৫ মৌসুমে এটিই প্রথম কোনো ভাইরাস শনাক্তের ঘটনা বলে মনে করা হয়। ভাইরাসটি আরও ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি কমাতে নরফোকের চারপাশে একটি ২০ কিমি নিয়ন্ত্রণ জোন ঘোষণা করা হয়েছে। যদিও এটি সাধারণত প্রাণী থেকে প্রাণীতে সংক্রমিত হয় না। শুধু সংক্রমিত রক্তের সংস্পর্শে আসলেই কোনো প্রাণী আক্রান্ত হতে পারে।

চলতি বছরের মে মাসে দেশটির সরকার জানিয়েছিল, বিটিভি-থ্রি নামে পরিচিত নতুন ধরনের ভাইরাস প্রবেশের উচ্চ সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ সংক্রমিত মিজ উত্তর ইউরোপ থেকে উড়ে এসেছে। মিজ হলো এক ধরনের খুব ছোট ডানাযুক্ত উড়ন্ত পোকা। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নেদারল্যান্ডস এবং জার্মানিতে দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছে। একই সঙ্গে ফ্রান্স, লুক্সেমবার্গ এবং ডেনমার্কে নতুন করে সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে।

ব্রিটেনের ডেপুটি চিফ ভেটেরিনারি অফিসার এলি ব্রাউন সোমবার বলেছেন, খামারিদের উচিত তাদের প্রাণীদের ঘন ঘন পরীক্ষা করা। কোনো সন্দেহ হলে অ্যানিম্যাল অ্যান্ড প্ল্যানেট হেলথ এজেন্সিকে জানাতে হবে।

সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ কাউন্টি থেকে এবং সেখানে চলাচলকারী প্রাণীদের জন্য বিনামূল্যে পরীক্ষা পাওয়া যায়। ২০২৩ সালের নভেম্বর মাসে ব্রিটেনে শেষবার ব্লুটং ছড়িয়ে পড়েছিল। চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত পাঁচ মাসের মধ্যে ১৯৯টি ঘটনা পাওয়ার গেছে।

এই ঘটনাগুলোর মধ্যে ভাইরাসটি ১১৯টি গরুতে এবং ৭টি ভেড়ায় পাওয়া গেছে। সে সময় নরফোক, সাফোক, এসেক্স, কেন্ট এবং পূর্ব সাসেক্সকে উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল।

বিলুপ্ত সমুদ্রিক প্রাণী হাবেলিয়া অপাটাটা

প্রকাশ: ২৩ আগস্ট ২০২৪, ০৬:৩২ পিএম
বিলুপ্ত সমুদ্রিক প্রাণী হাবেলিয়া অপাটাটা
হাবেলিয়া অপাটাটা। ছবি: সংগৃহীত

পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত সমুদ্রিক প্রাণী হাবেলিয়া অপাটাটা। রয়েল অন্টারিও মিউজিয়ামের মতে, এরা ৫ কোটি ৫০ লাখ বছর থেকে ক্যাম্ব্রিয়ান যুগে (৫৩ কোটি ৮৮ লাখ থেকে ৪৮ কোটি ৫৪ লাখ বছর আগে) পৃথিবীতে বাস করত। এই প্রাণীর জীবাশ্ম পাওয়া গেছে কানাডার ব্রিটিশ কলাম্বিয়ায়।

হাবেলিয়া অপাটাটা অদ্ভুত দেহ গঠনের জন্য বিজ্ঞানীদের কাছে বেশ আকর্ষণীয়। এরা আকারে বেশ ছোট। দেহের দৈর্ঘ্য ছিল মাত্র ৪ দশমিক ১ সেন্টিমিটার। এর দেহের অংশগুলো অন্যান্য প্রাণীর তুলনায় অনেকটা ভিন্ন ছিল। এর দুটি চোখ, শরীর এবং একটি বিচিত্র ধরনের অঙ্গ ছিল, বিজ্ঞানীদের ধারণা যা খাদ্য গ্রহণে সাহায্য করত। এদের প্রধান খাদ্য ছিল সমুদ্রের ছোট মাছ।

হাবেলিয়া অপাটাটা বিজ্ঞানীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার। কারণ এই প্রাণী প্রাণের উদ্ভব ও বিবর্তনের ইতিহাস সম্পর্কে বোঝার ক্ষেত্রে অনেক তথ্য দিয়েছে। এই প্রাণীর দেহ গঠন এবং জীবনযাত্রা সম্পর্কে গবেষণা করে বিজ্ঞানীরা প্রাণের উৎপত্তি এবং বিভিন্ন প্রজাতির উদ্ভবের সময়কাল সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।

প্রাণীটিকে প্রায়শই ‘প্রাচীন জীবন্ত ফসিল’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়। কারণ এর শারীরিক গঠন অন্যান্য প্রাণীর তুলনায় অনন্য। এটি বিবর্তনের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপের প্রতিনিধিত্ব করে।