ঢাকা ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, সোমবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৪

নতুন বিশাল গ্রহের সন্ধান

প্রকাশ: ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৩৩ এএম
নতুন বিশাল গ্রহের সন্ধান
নতুন গ্রহের প্রতীকী। ছবি: নাসা
সৌরজগতের বাইরে ধাতব কেন্দ্রসমৃদ্ধ একটি নতুন বিশাল গ্রহের সন্ধান পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। এটি নেপচুনিয়ান অঞ্চলে অবস্থিত। এই গ্রহটি পৃথিবীর চেয়ে পাঁচ গুণ বড়। এর ওজন পৃথিবীর চেয়ে প্রায় ৬০ গুণ বেশি এবং এটি সূর্য থেকে প্রায় ৬৯০ আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত।
 
ভারতের ফিজিক্যাল রিসার্চ ল্যাবরেটরির নেতৃত্বে একটি আন্তর্জাতিক দল ‘টিওআই-৬৬৫১বি’ নামে পরিচিত এই গ্রহটি আবিষ্কার করেছেন। রাজস্থানের মাউন্ট আবুতে অবস্থিত পিএআরএএস-২ টেলিস্কোপের মাধ্যমে নতুন এই গ্রহটির অস্তিত্ব শনাক্ত করা হয়।
 
জার্নাল অব অ্যাস্ট্রোনমি অ্যান্ড অ্যাস্ট্রোফিজিকসে প্রকাশিত গবেষণায় এ তথ্য জানানো হয়েছে। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, গ্রহটির আকৃতি নেপচুন ও শনি গ্রহের মাঝামাঝি। এই গ্রহটিকে নেপচুনিয়ান অঞ্চলের চতুর্থ এক্সো-গ্রহ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে, যেখানে তাপমাত্রা অত্যন্ত বেশি। নেপচুন আকারে পৃথিবীর ৪ গুণ বড় ও ১৭ গুণ ভারী। এ অঞ্চলে যেসব গ্রহের খোঁজ মিলেছে বা ভবিষ্যতে মিলবে, সেগুলো এমন প্রকৃতির হবে।
 
ভারতের ফিজিক্যাল রিসার্চ ল্যাবরেটরির বিজ্ঞানীরা জানান, নতুন গ্রহটি তার কেন্দ্রীয় নক্ষত্রের চারপাশে মাত্র পাঁচ দিনে ঘোরে। গ্রহটির ৮৭ শতাংশই লোহার মতো শক্ত ধাতু দিয়ে গঠিত, আর বাহ্যিক স্তরে রয়েছে হাইড্রোজেন ও হিলিয়ামের একটি কম ঘনত্বের মেরু। নতুন এই গ্রহটির পৃষ্ঠের তাপমাত্রা প্রায় ১২০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস হওয়ায় এটি মানুষের বসবাসের জন্য পুরোপুরি অনুপযোগী।
 
এর আগে নেপচুনিয়ান অঞ্চলে তিনটি অন্য এক্সোপ্ল্যানেট আবিষ্কৃত হয়েছিল, যা পৃথিবীর চেয়ে ১২ থেকে ১৩ গুণ বড়। বিজ্ঞানীরা ভবিষ্যতে আরও এমন গ্রহ আবিষ্কারের ব্যাপারে আশাবাদী। এই নতুন গ্রহ আবিষ্কারটি মহাকাশ নিয়ে আমাদের জানার পরিধি আরও সম্প্রসারিত করবে।
 
উল্লেখ্য, এক বছর আগে আরেকটি নতুন গ্রহের সন্ধান পেয়েছিলেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। তারা বলেছিলেন, নেপচুনের পেছনে কুইপার বেল্টে ওই গ্রহ শনাক্ত করা হয় যার আকার ‘পৃথিবীর মতো’। তখন অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, কুইপার বেল্টে সন্ধান পাওয়া বস্তুকে ‘প্ল্যানেট নাইন’ নামে ডাকা হচ্ছে। এর বিচিত্র বৈশিষ্ট্য রয়েছে। যেমন- অন্যান্য বস্তুর ওপর এর মহাকর্ষীয় প্রভাব রয়েছে। তাই ধারণা করা হচ্ছে, এটি একটি গ্রহ। সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

মহাকাশে রহস্যময় ধনভান্ডার

প্রকাশ: ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:৩৮ এএম
আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:২২ এএম
মহাকাশে রহস্যময় ধনভান্ডার
সৌরজগতের বিশাল গ্রহাণু ১৬ সাইকি। এতে স্বর্ণ ও প্লাটিনামের মতো মূল্যবান ধাতু রয়েছে বলে ধারণা গবেষকদের। ছবি: ইন্টারনেট

মহাকাশ সব সময়ই আমাদের কাছে রহস্যময়। কত রহস্যই না লুকিয়ে আছে এখানে। এই যেমন ধরুন কোথা থেকে কীভাবে এর উদ্ভব? রাতের আকাশে কীভাবে উল্কাবৃষ্টি হয়। কেন হ্যালির ধূমকেতু প্রতি ৭৬ বছর পর একবার করে সূর্যকে ঘুরে যায়। সুপারনোভার মধ্যে লুকিয়ে আছে কত অজানা রহস্য। ইদানীং এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে সেখানে লুকিয়ে থাকা ধনভান্ডার। 

সাধারণত ধনভান্ডার বলতে আমরা একধরনের রহস্যময়তার গন্ধ পাই। এটি থাকে পাহাড় বা বনজঙ্গলের গুহায় কিংবা কোনো উঁচু স্থানে। মাটি খুঁড়েই যেটি তোলা হয়। কিন্তু পৃথিবীর কোনো এলাকায় নয়, এবার গবেষকরা ধনভান্ডারের কথা বলেছেন আমাদের সৌরজগতে। আর রহস্যটা সৃষ্টি হয়েছে সেখানেই। 

১৬ সাইকি একটি বিশাল গ্রহাণু। আমাদের সৌরজগতের অন্যতম রহস্যময় বস্তু এটি। এটি মঙ্গল ও বৃহস্পতির মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত। এটি এমন একটি গ্রহাণু, যা তার ধাতব গঠনের জন্য বিশেষভাবে পরিচিত। ১৮৫২ সালে ইতালীয় জ্যোতির্বিজ্ঞানী আনিবালে দে গ্যাসপারিস এটি আবিষ্কার করেন। গ্রিক পুরাণের ‘সাইকি’র নামে নামকরণ করা হয়। এটি সাধারণ পাথুরে বা বরফের অ্যাস্টেরয়েডের মতো নয়। ১৬ সাইকি মূলত নিকেল ও লোহার মতো ধাতু দিয়ে তৈরি। এর ব্যাস প্রায় ২২৬ কিলোমিটার, যা এটিকে অ্যাস্টেরয়েড বেল্টের অন্যতম বৃহৎ গ্রহাণু করে তুলেছে। এটি সূর্যকে প্রায় ৩৭০ মিলিয়ন কিলোমিটার দূর থেকে প্রদক্ষিণ করে।

গবেষকরা মনে করছেন, ১৬ সাইকিতে স্বর্ণ ও প্লাটিনামের মতো মূল্যবান ধাতুও থাকতে পারে। এর ধাতব উপাদান যদি অনুমানের মতোই সমৃদ্ধ হয়, তবে এর মূল্য কয়েক কোয়াড্রিলিয়ন ডলার হতে পারে, যা ভবিষ্যতে মহাকাশ খননের জন্য আকর্ষণীয়। ওই পরিমাণ অর্থ দিয়ে পৃথিবীর সবাই কোটিপতি হতে পারেন। ১৬ সাইকির এই রহস্য উন্মোচনের জন্য নাসা চালু করেছে পসাইকি মিশন। এটি শুরু হয়েছে ২০২৩ সালের ১৩ অক্টোবর। কাজ শেষ হবে ২০২৯ সালে। ২১ মাস ধরে এটি ১৬ সাইকির চারপাশে ঘুরে এর পৃষ্ঠতল, গঠন এবং চৌম্বকক্ষেত্র নিয়ে তথ্য পাঠাবে। 

১৬ সাইকি বিজ্ঞানীদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে এটির খনন এবং এর অর্থনৈতিক দিক নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। বর্তমান প্রযুক্তি দিয়ে এত দূরের গ্রহাণু থেকে খনিজ আহরণ করা সম্ভব নয় বলেই মনে করছেন তারা। তাই ১৬ সাইকি মহাকাশের এক রহস্যময় ধনভান্ডার হিসেবে থেকে যেতে পারে আমাদের কাছে। তবে এটি গ্রহের অভ্যন্তরীণ গঠন সম্পর্কে জানতে বিরল সুযোগ করে দিতে পারে আমাদের। সূত্র: আজকাল

গ্লোবাল অ্যাটমিক কুইজ প্রতিযোগিতায় বিজয়ী ৭ বাংলাদেশি

প্রকাশ: ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ০২:৩৮ পিএম
আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:১৫ পিএম
গ্লোবাল অ্যাটমিক কুইজ প্রতিযোগিতায় বিজয়ী ৭ বাংলাদেশি
গ্লোবাল এটমিক কুইজ

রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পরমাণু শক্তি করপোরেশন (রসাটম) আয়োজিত ‘গ্লোবাল অ্যাটমিক কুইজ ২০২৪ প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে বিজয়ী হয়েছেন সাত বাংলাদেশি। অনলাইন এবং অফলাইনে অনুষ্ঠিত এই কুইজে প্রায় ১০০টি দেশের ২৫ হাজারের বেশি বিজ্ঞান অনুরাগীরা অংশ নেন। এদের মধ্যে বাংলাদেশের সাত জনসহ মোট ১০০ জনকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। সম্প্রতি গ্লোবাল অ্যাটমিক কুইজের ফলাফল ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়েছে।

এর মধ্যে শীর্ষ তিনজনকে রাশিয়া ভ্রমণের সুযোগ দেওয়া হবে। যাদের মধ্যে একজন বাংলাদেশি।

শনিবার (৩০ নভেম্বর) রসাটম থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা গেছে।

বিজ্ঞপ্তি সুত্রে জানা যায়, ১০ নভেম্বর বিশ্ব বিজ্ঞান দিবস উপলক্ষে পঞ্চমবারের মতো এই কুইজের আয়োজন করা হয়। গ্লোবাল অ্যাটমিক কুইজ ২০২৪এর মূল লক্ষ্য ছিল সহজভাবে নিউক্লিয়ার ফিজিক্সের মূল বিষয়গুলো ব্যাখ্যা করা, প্রাত্যহিক জীবনে পরমাণু প্রযুক্তির গুরুত্ব তুলে ধরা এবং পৃথিবীর সুরক্ষায় নিউক্লিয়ার ফিজিক্সের ভূমিকা সম্পর্কে অবহিত করা। 

মোট ১৩টি ভাষায় কুইজ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। যার মধ্যে ছিল ইংরেজি, বাংলা, রুশ, হাঙ্গেরিয়, স্প্যানিয়, পর্তুগিজ, কিরগিজ, কাজাখ, মঙ্গোলিয়, তুর্কি, উজবেক, আরবি ও ইন্দোনেশিয়। 

বিভিন্ন টপিকের ওপর ২৫টি প্রশ্ন কুইজে অন্তর্ভূক্ত ছিল। পরমাণু প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয় এমন মূল পাঁচটি ক্ষেত্রের ওপর প্রশ্ন সাজানো হয়। এ সব ক্ষেত্রগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘এনার্জি ও পরিবেশ’, ‘পরমাণু বিজ্ঞান’, ‘শিল্প ও পরিবহণ’, ‘স্বাস্থ্য’, এবং ‘খাদ্য ও কৃষি।’ 

অংশগ্রহণকারী প্রত্যেক প্রতিযোগীকে ডিজিটাল সার্টিফিকেট দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে বিজয়ীদের আকর্ষণীয় ‘অ্যাটমিক পাজল’  দেওয়া হয়। 

বৃহৎ জনগোষ্ঠীকে আকৃষ্ট করা এবং পরমাণু প্রযুক্তিকে জনপ্রিয় করার লক্ষ্যে বিশ্বজুড়ে রসাটম শিক্ষা অবকাঠামো নেটওয়ার্কে ২৫টি তথ্যকেন্দ্র পরিচালিত হচ্ছে। ২০২৩ সালে দুই লাখ ৮০ হাজারের অধিক মানুষ এই তথ্যকেন্দ্রগুলো পরিদর্শন এবং বিভিন্ন প্রোগ্রামে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেছেন। 

জাহাঙ্গীর হোসেন/জোবাইদা/অমিয়/

নতুন গবেষণা ছায়াপথে দ্রুতগতির তারাগুলো কি বুদ্ধিমান এলিয়েনদের মহাকাশযান?

প্রকাশ: ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৫৭ এএম
আপডেট: ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ০১:২৭ পিএম
ছায়াপথে দ্রুতগতির তারাগুলো কি বুদ্ধিমান এলিয়েনদের মহাকাশযান?
ডাইসন স্ফিয়ারের অনুমানমূলক কাঠামোর একটি চিত্র। ছবি: সংগৃহীত

ছায়াপথের দ্রুতগতির তারকাগুলো হয়তো বুদ্ধিমান এলিয়েনদের নিয়ন্ত্রণে চলছে। নতুন এক গবেষণাপত্রে এমন সম্ভাবনার কথা বলা হয়েছে। বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন, উন্নত কোনো এলিয়েন সভ্যতা তাদের তারকা বা নক্ষত্রব্যবস্থা ব্যবহার করে মহাকাশে ভ্রমণ করতে পারে।

বেলজিয়ামের ভ্রিজে ইউনিভার্সিটির দর্শনের গবেষক ক্লেমেন্ট ভিদাল তার সাম্প্রতিক গবেষণায় প্রস্তাব করেছেন, উন্নত কোনো সভ্যতা তাদের নক্ষত্র বা নক্ষত্রজোড়াকে (বাইনারি স্টার সিস্টেম) মহাকাশযানের মতো ব্যবহার করতে পারে। এর মাধ্যমে তারা সম্পদ অনুসন্ধান, মহাকাশ আবিষ্কার বা কোনো সুপারনোভার মতো মহাজাগতিক বিপর্যয় থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পারে।

বিদ্যমান তারকাকে মহাকাশযানে রূপান্তর করার একটি সুবিধা হলো, তারা নিজেদের গ্রহসহ পুরো ব্যবস্থা বহন করতে পারবে। নক্ষত্র থেকে একমুখী বিকিরণ বা বাষ্পীভবন ঘটিয়ে এটি সম্ভব হতে পারে। এভাবে নক্ষত্র ও এর গ্রহমণ্ডলীকে একটি নতুন গ্যালাক্টিক গন্তব্যে নিয়ে যাওয়া সম্ভব।

এর আগে বিজ্ঞানীরা ‘হাইপারভেলোসিটি’ নামের অত্যন্ত দ্রুতগতির তারাগুলোর ওপর গবেষণা চালিয়েছেন। এই গবেষণায় তারা জানতে চেয়েছেন, এলিয়েনরা কি এই তারাগুলোকে ইচ্ছাকৃতভাবে এত দ্রুতগতিতে চালিত করছে? তবে এখন পর্যন্ত কোনো তারার গতিতে কৃত্রিম হস্তক্ষেপের প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

তবে ভিদাল নতুন তথ্য তুলে ধরেছেন। তিনি বলছেন, অধিকাংশ তারকা একা থাকে না, বরং বাইনারি সিস্টেমে থাকে। এর মানে, আমরা সম্ভবত কৃত্রিমভাবে গতি বাড়ানো তারাগুলোর অর্ধেক এখনো খুঁজে পাইনি। এমনকি বাইনারি সিস্টেমের নক্ষত্রগুলো একক তারকার চেয়ে অনেক বেশি সুবিধা দিতে পারে। তবে এই গবেষণাপত্রটি এখনো কোনো বিজ্ঞান সাময়িকীতে পর্যালোচনা বা প্রকাশিত হয়নি।

ভিদালের গবেষণায় একটি মডেল সিস্টেম নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। যেখানে একটি নিউট্রন তারা ও একটি নিম্ন-ভরের তারা কাছাকাছি কক্ষপথে অবস্থান করছে। এমন ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালনার জন্য বেশি সুবিধাজনক।

ভিদাল তার ব্যাখ্যায় বলেছেন, এলিয়ান সভ্যতাকে তারকার থেকে পদার্থ নির্গত করার উপায় বের করতে হবে। এটি অসম চৌম্বক ক্ষেত্র থেকে হতে পারে অথবা তারার পৃষ্ঠে অসম উত্তাপ সৃষ্টি করে এমন কোনো যন্ত্র থেকে হতে পারে। যাইহোক, লক্ষ্য হবে তারার একদিকে অন্য দিকের তুলনায় বেশি পরিমাণে পদার্থ নির্গত করা। এটি ট্রাস্ট বা চাপ তৈরি করবে, যা বাইনারি সিস্টেমকে বিপরীত দিকে ঠেলে দেবে।

যদি এলিয়েনরা কোনো নিউট্রন তারার ওপর বা কাছাকাছি শক্তিশালী যন্ত্র স্থাপন করে, তবে তারার শক্তিশালী মাধ্যাকর্ষণকে কাজে লাগিয়ে তারা পুরো বাইনারি সিস্টেমকে নির্দিষ্ট দিকে চালিত করতে পারবে। এমনকি যন্ত্রটি চালু বা বন্ধ করে নির্দিষ্ট সময়ে চালু রেখে কক্ষপথ পরিবর্তন করাও সম্ভব।

গবেষণায় উল্লেখ করা হয়েছে, মহাবিশ্বে এমন কিছু বাস্তব নক্ষত্র ব্যবস্থা আছে, যা এই বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে মিল রেখে কাজ করছে। উদাহরণ হিসেবে ‘ব্ল্যাক উইডো’ পালসার পিএসআর জে০৬১০-২১০০ ও ‘রেডব্যাক’ পালসার পিএসআর জে২০৪৩+১৭১১-এর নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এগুলোর গতি বেশ দ্রুত, তবে এগুলোর ক্ষেত্রে এলিয়েন প্রযুক্তির প্রভাব থাকার সম্ভাবনা খুব কম। তবুও এসব ব্যবস্থা গবেষণার জন্য গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।

এই তত্ত্ব এখনো প্রমাণিত নয়, এটা নিয়ে আরও গবেষণা দরকার। তবে এটি এলিয়েন সভ্যতা ও তাদের সম্ভাব্য প্রযুক্তির বিষয়ে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি দেয়। বিজ্ঞানীরা আশা করছেন, ভবিষ্যতে এমন অনুসন্ধান মহাবিশ্বের অজানা দিক উন্মোচনে সাহায্য করবে। সূত্র: লাইভ সায়েন্স

ফুলের মধু পান করে ইথিওপিয়ান নেকড়ে

প্রকাশ: ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:০৩ এএম
ফুলের মধু পান করে ইথিওপিয়ান নেকড়ে
ইথিওপিয়ান নেকড়ে রেড হট পোকার ফুলের মধু পান করছে। ছবি: অ্যাড্রিয়েন লেসাফ্রে

ইথিওপিয়ান নেকড়েকে পৃথিবীর সবচেয়ে বিরল বুনো কুকুরের প্রজাতি হিসেবে ধরা হয়। এবার এই নেকড়েকে সম্পূর্ণ নতুন ভূমিকায় দেখা গেল। এই মাংসাশী প্রাণীকে ফুলের মধু পান করতে দেখা গেছে। গবেষকদের মতে, তারা হয়তো ফুলের পরাগায়নেও ভূমিকা রাখছে। এটিই প্রথমবারের মতো কোনো বড় মাংসাশী প্রাণীকে পরাগায়নে অংশ নিতে দেখা গেল।

সম্প্রতি একটি আন্তর্জাতিক গবেষক দল ইথিওপিয়ার বেল পর্বতমালায় ‘রেড হট পোকার’ ফুলে নেকড়েদের এই আচরণ পর্যবেক্ষণ করেন। গবেষক দলটির নেতৃত্বে ছিলেন ইউনির্ভাসিটি অব অক্সফোর্ডের গবেষকরা। এই ফুলের মধু মিষ্টি ও সুস্বাদু। গবেষণাপত্রটি চলতি বছরের ১৯ নভেম্বর ইকোলজি নামের জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। গবেষণায় বলা হয়েছে, একেকটি নেকড়ে একবারে প্রায় ৩০টি ফুলে গিয়ে মধু পান করে।

ইউনির্ভাসিটি অব অক্সফোর্ডের অধ্যাপক ও ইথিওপিয়ান উলফ কনজারভেশন প্রোগ্রামের (ইডব্লিউসিপি) প্রতিষ্ঠাতা ক্লাওডিও সিলেরো বলেন, ‘বেল পর্বতমালায় স্থানীয় শিশুদের এই ফুলের মধু চুষেতে দেখে, আমিও এটি চেখে দেখেছিলাম। তখন আমি বুঝতে পারি, মধুটি মিষ্টি ও প্রাকৃতিক শক্তির উৎস। পরে নেকড়েদের এটি পান করতে দেখে আমি নিশ্চিত হই, তারা এই খাবার খুব উপভোগ করছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘এটি নেকড়েদের মাঝে একটি সাধারণ আচরণ। আমরা এর পরিবেশগত গুরুত্ব বোঝার চেষ্টা করছি।’

ইথিওপিয়ান নেকড়ে আফ্রিকার সবচেয়ে বিপন্ন প্রাণী ও বিশ্বের সবচেয়ে বিরল বন্য ক্যানাইন প্রজাতির মধ্যে অন্যতম। মনে করা হয় বর্তমানে  এদের সংখ্যা ৫০০-এর কম। বেল পর্বতমালায় এই নেকড়েদের একাধিক দলকে মধু পান করতে দেখা গেছে। এদের আচরণ আরও চমকপ্রদ। কারণ এ পর্যন্ত কোনো বড় মাংসাশী প্রাণীকে এই ধরনের পরাগায়নকারী ভূমিকায় দেখা যায়নি।

গবেষকদের মতে, ফুল থেকে মধু পান করার সময় নেকড়েদের মুখে ফুলের পরাগ লেগে যায়। এরপর যখন তারা এক ফুল থেকে অন্য ফুলে যায়, তখন ওই পরাগ স্থানান্তরিত হয়। এভাবে মৌমাছি বা প্রজাপতির মতো তারাও পরাগায়নের কাজ করে।

গবেষণাপত্রের সহ-লেখক ও ইডব্লিউসিপির সিনিয়র বিজ্ঞানী স্যান্ড্রা লাই বলেন, ‘এটি প্রমাণ করে, এই বিরল প্রজাতি সম্পর্কে আমাদের জানার অনেক কিছু বাকি আছে। এটি ইথিওপিয়ার হাইল্যান্ড অঞ্চলের জটিল বাস্তুতন্ত্র ও জীববৈচিত্র্যের ওপর আলোকপাত করে। তবে এই অঞ্চলের বাসস্থান ধ্বংস ও টুকরো টুকরো হয়ে যাওয়ার ফলে এই প্রজাতি মারাত্মক হুমকির মুখে রয়েছে।’

গবেষকরা বলছেন, পরাগায়নের ক্ষেত্রে ইথিওপিয়ান নেকড়ের ভূমিকা পরিবেশগত গবেষণার নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। ভবিষ্যতে এই আবিষ্কার পরাগায়ন, প্রাণীর খাদ্যাভ্যাস ও বাস্তুতন্ত্রের জটিল সম্পর্ক আরও ভালোভাবে বুঝতে সাহায্য করবে। পরের বার কেউ ‘নেকড়ে এল!’ বলে সতর্ক করলে, হয়তো সেটি একজন মালী হবে, রাখাল নয়। সূত্র: লাইভ সায়েন্স

পাখির মতো উড়ছে রোবোটিক কবুতর লেজের রহস্য খুলল

প্রকাশ: ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:০২ এএম
পাখির মতো উড়ছে রোবোটিক কবুতর
লেজের রহস্য খুলল
পিজনবট টু। ছবি: সংগৃহীত

পাখির মতো লেজের সাহায্যে স্থিতিশীলভাবে উড়তে সক্ষম এমন রোবোটিক কবুতর তৈরি করেছেন এক দল গবেষক। পাখির লেজের অনুকরণে তৈরি করা হয়েছে রোবোটিক কবুতরের লেজের অংশ। গবেষকদের মতে, এটি ভবিষ্যতে জ্বালানি সাশ্রয়ী ও গতিসম্পন্ন বিমান তৈরিতে সহায়ক হতে পারে।

মানুষের তৈরি বিমানের লেজের খাড়া ডানাকে ‘ভার্টিক্যাল স্ট্যাবিলাইজার’ বলা হয়। এটি বিমানের দিক পরিবর্তনে সাহায্য করে। এটি বিমানের গতিপথ স্থিতিশীল রাখে ও অপ্রত্যাশিতভাবে দিক পরিবর্তন ঠেকায়। তবে নর্থরপ বি-২ স্পিরিটের মতো সামরিক বিমানের ক্ষেত্রে লেজের ডানা ছাড়া তৈরি করা হয়, যেন রাডারে ধরা না পড়ে। তবে এতে বাড়তি ড্র্যাগ বা বায়ুর প্রতিরোধ তৈরি হয়, যা জ্বালানির অপচয় বাড়ায়।

পাখিদের লেজে কোনো খাড়া স্ট্যাবিলাইজার থাকে না। তবু তারা দারুণভাবে উড়তে পারে। এ রহস্য উদঘাটনে নেদারল্যান্ডসের ইউনির্ভাসিটি অব গ্রোনিনজেনের গবেষক ডেভিড লেনটিঙ্ক ও তার দল ‘পিজনবট টু’ (pigeonbot ii) নামের রোবোটিক পাখি তৈরি করেছেন। এই রোবোটিক পাখির নকশায় ৫২টি আসল কবুতরের পালক ব্যবহার করা হয়েছে।

২০২০ সালে তাদের তৈরি করা আগের মডেলটি পাখির মতো ডানা ঝাপটানো ও আকার পরিবর্তন করে উড়ত। তবে সেটিতেও প্রচলিত বিমানের লেজের মতো অংশ ছিল। নতুন মডেলটিতে পাখির মতো একটি লেজ যুক্ত করেছে। পরীক্ষামূলক উড্ডয়নে এটি সফলভাবে উড়তে সক্ষম হয়েছে।

লেনটিঙ্ক বলেন, পাখিদের উড়ার সময় স্থিতিশীলতার গোপন রহস্য তাদের লেজের স্বয়ংক্রিয় নড়াচড়ায় লুকিয়ে আছে। একটি কবুতরকে হাত দিয়ে সামনের দিকে বা পাশের দিকে ঝুঁকলে দেখা যায়, তার লেজ স্বয়ংক্রিয়ভাবে জটিল পদ্ধতিতে নড়াচড়া করে। এই প্রতিক্রিয়া পাখির স্থিতিশীলতার মূল কারণ। ‘পিজনবট টু’ তে সেই বৈশিষ্ট্য নকল করা হয়েছে।

রোবটটি পরিচালনা করতে নয়টি সার্ভোমোটর ব্যবহার করা হয়েছে, যা লেজের ঘোরা ও পাখার দিক পরিবর্তনের মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে স্থিতিশীলতা ধরে রাখে।একজন অপারেটর সরাসরি পিজনবট উড়াতে পারে না। বরং অপারেটর অটোপাইলটকে উচ্চ স্তরের নির্দেশ দেয়। যেমন এটিকে বাম বা ডানদিকে ঘুরতে বলে। আর এতে থাকা কম্পিউটার সিস্টেম সেই নির্দেশ অনুযায়ী লেজ ও ডানার সঠিক গতি নির্ধারণ করে।

অনেকবার ব্যর্থতার পর পিজনবট টু সফলভাবে উড়তে, মাঝ আকাশে স্থিতিশীল থাকতে ও অবতরণ করতে পেরেছে। গবেষক লেনটিঙ্ক বলেন, ‘খাড়া লেজ ছাড়া উড়ার উপায় আমরা জেনেছি। এই লেজ বিমানের জন্য অপ্রয়োজনীয় ওজন ও বাতাসের বাধা তৈরি হয়, যা জ্বালানি অপচয় বাড়ায়। আমাদের সমাধান বড় আকারের যাত্রীবাহী বিমানের জন্যও কার্যকর হতে পারে। তবে এটি সহজে উৎপাদনের উপযোগী করতে আরও গবেষণা প্রয়োজন।’ সূত্র: নিউ সায়েন্টিস্ট