বিজ্ঞানীরা ব্রাজিলের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রেইনফরেস্টে আঙুলের নখের চেয়েও ছোট আকৃতির একটি নতুন ব্যাঙের প্রজাতি আবিষ্কার করেছেন। প্রাপ্তবয়স্ক অবস্থায় এই প্রজাতির ব্যাঙের দৈর্ঘ্য ১ সেন্টিমিটারেরও কম। এটি পৃথিবীর অন্যতম ক্ষুদ্রতম কশেরুকা প্রাণী। ‘ব্র্যাচিসেফালাস ডাকনিস’ নামের এই ব্যাঙ পরিবেশ সংরক্ষণ সংস্থা প্রজেক্ট ডাকনিসের নামে নামকরণ করা হয়েছে, যারা এই আবিষ্কারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
গবেষকরা এই ছোট ‘ফ্লি টোড বা পোকার মতো ব্যাঙ’ নিয়ে গবেষণা করার সময় এদের এই ক্ষুদ্রাকৃতির জন্য বিশেষভাবে আকৃষ্ট হন। এই ক্ষুদ্র ব্যাঙের আকৃতি ও তার গঠন বিজ্ঞানীদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। এটি এখন পর্যন্ত আবিষ্কৃত ক্ষুদ্রতম মেরুদণ্ডী প্রাণীদের মধ্যে অন্যতম। গবেষণায় বলা হয়েছে, এটি দ্বিতীয় ক্ষুদ্রতম উভচর প্রাণী। বিশ্বের অন্যতম ক্ষুদ্র ব্যাঙ হওয়া সত্ত্বেও এই ব্যাঙের অস্থি কাঠামো সাধারণ বড় ব্যাঙের মতোই।
গবেষণাপত্রের সহলেখক লুইস ফেলিপে তোলেদো জানান,‘বিবর্তনের ধারায় এটির হাড়ের গঠন সংকুচিত হয়ে ক্ষুদ্রাকার ধারণ করেছে, যা শরীরের কিছু অংশের অনুপস্থিতির জন্য দায়ী। আমরা জীববিজ্ঞানীরা যাকে মাইক্রোটাইজেশন বলি, এদের বিবর্তনের সময় সেই প্রক্রিয়ার মধ্যদিয়ে যেতে হয়েছে। এতে হাড়ের ক্ষয়, হ্রাস বা একীভূতকরণ ও শরীরের অন্যান্য অংশের অনুপস্থিতি ঘটে।’
এই প্রজাতি দেখতে একই অঞ্চলের আরেক প্রজাতি বি হারমোজেনেসি (B. hermogenesi) দেখতে অনেকটাই মিল রয়েছে। উভয়ের ত্বক হলুদাভ-বাদামি ও পাতার নিচে বাস করে। এ ছাড়া এরা সরাসরি ডিম থেকে ক্ষুদ্র ব্যাঙ হিসেবে জন্ম নেয়। তবে গবেষকরা নতুন প্রজাতিটির স্বতন্ত্র ডাকের মাধ্যমে এর অস্তিত্ব সম্পর্কে অবগত হন। পরবর্তীতে ডিএনএ বিশ্লেষণের মাধ্যমে নিশ্চিত করা হয়, ব্রাচিসেফালাস ডাকনিস সত্যিই একটি নতুন প্রজাতি। তোলেদো বলেন, ‘১৯৯৮ সালে বি হারমোজেনেসি বর্ণনার জন্য ব্যবহৃত নমুনাগুলোর মধ্যে নতুন প্রজাতির নমুনা থাকতে পারে।’