ঢাকা ৩০ ভাদ্র ১৪৩১, শনিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪

বেনজীরের অবৈধ সম্পদ: দুদকের অনুসন্ধান প্রতিবেদন গ্রহণ করেছেন হাইকোর্ট

প্রকাশ: ৩০ জুলাই ২০২৪, ১২:২৬ পিএম
বেনজীরের অবৈধ সম্পদ: দুদকের অনুসন্ধান প্রতিবেদন গ্রহণ করেছেন হাইকোর্ট
বেনজীর আহমেদ

পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজি) বেনজীর আহমেদ ও তার স্ত্রী জীশান মির্জা এবং তাদের মেয়ে ফারহীন রিশতা বিনতে বেনজীর ও তাহসীন রাইসা বিনতে বেনজীরের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান প্রতিবেদন গ্রহণ করেছেন হাইকোর্ট।

সোমবার (২৯ জুলাই) দুদকের পক্ষে অনুসন্ধানের অগ্রগতিসংক্রান্ত ৫ পৃষ্ঠার মূল প্রতিবেদন ও আনুষঙ্গিক তথ্য-উপাত্তসহ মোট ৪২ পৃষ্ঠার এই প্রতিবেদন হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী ইবাদত হোসেনের বেঞ্চে দাখিল করা হয়। এরপর আদালত এটি গ্রহণ করেন। পরবর্তী সময়ে মামলা হলো কি না এবং সময়ে সময়ে আরও অগ্রগতি প্রতিবেদন আকারে দাখিল করতে বলেন হাইকোর্ট। এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানি আগামী ৫ নভেম্বর ধার্য করা হয়েছে। দুদকের পক্ষে সিনিয়র আইনজীবী খুরশিদ আলম খান এ প্রতিবেদন দাখিল করেন।

অনুসন্ধানের জন্য গত ১৮ এপ্রিল তিন সদস্যের কমিটি গঠন করে দুদক। ১৯ ও ২০ এপ্রিল সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় এই কমিটি দায়িত্ব গ্রহণ করে ২১ এপ্রিল। এক রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২৩ এপ্রিল হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ বেনজীরের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু এবং দুই মাসের মধ্যে অনুসন্ধানের অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। 

দুদকের অনুসন্ধান প্রতিবেদনে দেখা যায়, হাইকোর্টের আদেশের দিনেই (২৩ এপ্রিল) বেনজীর আহমেদ কমিউনিটি ব্যাংক করপোরেট শাখায় তার অ্যাকাউন্ট (নম্বর-১০১৬০০০৮২০১) থেকে ৩ কোটি ৩ লাখ ২ হাজার ৮১২ টাকা তোলেন। তার স্ত্রী জীশান মির্জা একই শাখার অ্যাকাউন্ট (নম্বর-১০৩০৫৭৩৯২০১) থেকে ৩ কোটি ৩৩ লাখ ৫ হাজার ১৪ টাকা উঠিয়ে নেন। এরপর দুদকের অনুসন্ধানকারী দল বেনজীর ও তার স্ত্রী-সন্তানদের অর্থ সম্পদের তথ্য চেয়ে ২৫ এপ্রিল বাংলাদেশ ব্যাংক, রাজউক, বিভিন্ন ভূমি অফিস, সাব-রেজিস্ট্রি অফিসসহ ৪৬টি দপ্তরে চিঠি ইস্যু করে। ২৬ ও ২৭ এপ্রিল সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় এ চিঠি ওই সব দপ্তরে গিয়ে পৌঁছায় ২৮ এপ্রিল। এরপর ২৯ এপ্রিল বেনজীর সোনালী ব্যাংক লোকাল অফিস থেকে ০০০২৬০২০০৫৬৫৮ অ্যাকাউন্ট থেকে বহির্গামী লেনদেন নিষ্পত্তির (আউটওয়ার্ড ক্লিয়ারিং) মাধ্যমে মোট ৬ কোটি ৭ লাখ টাকা পাচার করেন। এ ছাড়া ৩০ এপ্রিল সোনালী ব্যাংকের একই শাখা থেকে নগদে আরও ১৪ লাখ টাকা এবং কমিউনিটি ব্যাংক থেকে ১৬ লাখ ৭০ হাজার ৮৮৬ টাকা উঠিয়ে নেন বেনজীরের মেয়ে ফারহীন রিশতা বিনতে বেনজীর।

এ ছাড়া প্রাথমিক অনুসন্ধানে বেনজীর আহমেদ, তার স্ত্রী জীশান মির্জা এবং তাদের মেয়ে ফারহীন রিশতা বিনতে বেনজীর, তাহসীন রাইসা বিনতে বেনজীর ও নাবালিকা আরেক মেয়ের মালিকানায় জমি, বাড়ি, ফ্ল্যাট, প্লট, রিসোর্ট, বাংলোসহ বিপুল পরিমাণ স্থাবর সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে। তাদের নামে চলতি, সঞ্চয়ী, স্থায়ী আমানত, বৈদেশিক মুদ্রাসংক্রান্ত ব্যাংক অ্যাকাউন্ট পাওয়া গেছে ১১৬টি। এসব অ্যাকাউন্টে কোটি কোটি টাকার অস্বাভাবিক লেনদেন হয়েছে। অনুসন্ধান শুরুর পর দ্রুততম সময়ে সন্দেহজনক লেনদেনের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ টাকা উঠিয়ে নিয়েছেন বেনজীর ও তার পরিবারের সদস্যরা। তাদের নামে থাকা আরও অনেক সম্পদের দলিলে কোনো মূল্য উল্লেখ করা হয়নি। সেগুলোর প্রকৃত মূল্য নিরূপণের কাজ চলছে। 

অবৈধ সম্পদের অভিযোগে দুদকের অনুসন্ধান চলাকালে বেনজীর আহমেদ গত ৪ মে সপরিবারে দেশ ছাড়েন। তিনি ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ছিলেন। এর আগে ২০১৫ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২০ সালের এপ্রিল পর্যন্ত র‍্যাবের মহাপরিচালক ছিলেন। তিনি ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার হিসেবেও দীর্ঘ সময় দায়িত্ব পালন করেন।

৪ মামলায় জামিন পেলেন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বাবর

প্রকাশ: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:০৭ পিএম
আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:০৭ পিএম
৪ মামলায় জামিন পেলেন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বাবর
সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর (ফাইল ছবি)

সাবেক মন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের জনসভায় গ্রেনেড হামলা ও সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়া হত্যা মামলাসহ সিলেটে জঙ্গি হামলার চারটি মামলায় জামিন পেয়েছেন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর।

গতকাল বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) সিলেটের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক স্বপন কুমার সরকার শুনানি শেষে বাবরের জামিন মঞ্জুর করেন। তার পক্ষের আইনজীবী শহীদুজ্জামান চৌধুরী এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। 

তিনি খবরের কাগজকে বলেন, ‘সিলেটে চারটি মামলার আসামি বাবর। তার জামিনের আবেদন করা হলে চারটি মামলা শুনানির পর আদালত জামিন মঞ্জুর করেন। তিনি বর্তমানে কাশিমপুর কারাগারে আছেন। শারীরিকভাবে অসুস্থ থাকায় তিনি আদালতে হাজির থাকতে পারেননি।’

আদালতের বেঞ্চ সহকারীর দপ্তর থেকে জানা গেছে, গত ৪ সেপ্টেম্বর সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরের জামিন শুনানির আবেদন করেছিলেন তার পক্ষের আইনজীবী। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত জামিন শুনানির তারিখ নির্ধারণ করেছিলেন।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০০৪ সালের ২১ জুন সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের নির্বাচনি এলাকা সুনামগঞ্জের দিরাই বাজারে জনসভায় গ্রেনেড হামলা হয়। জনসভায় তখন বক্তব্য দিচ্ছিলেন সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। গ্রেনেড হামলায় তিনি অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান। এ ঘটনায় দিরাই থানার উপপরিদর্শক (এসআই) হেলাল উদ্দিন বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে গ্রেনেড হামলার মাধ্যমে হত্যাচেষ্টা ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে দুটি মামলা করেছিলেন। দুটো মামলার অধিকতর তদন্তে বাবরকে অভিযুক্ত করা হয়েছিল।

অপর দুটো মামলা হচ্ছে সাবেক অর্থমন্ত্রী কিবরিয়া হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে করা মামলা। ২০০৫ সালের ২৭ জানুয়ারি হবিগঞ্জ সদর উপজেলার বৈদ্যের বাজারে গ্রেনেড হামলায় সাবেক অর্থমন্ত্রী কিবরিয়া নিহতের ঘটনায় দুটো মামলায় অধিকতর তদন্তে বাবরকে অভিযুক্ত করা হয়েছিল।

রাষ্ট্র সংস্কারে কমিশন গঠন জনগণের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন: অ্যাটর্নি জেনারেল

প্রকাশ: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:২৫ পিএম
রাষ্ট্র সংস্কারে কমিশন গঠন জনগণের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন: অ্যাটর্নি জেনারেল
অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান

অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকার রাষ্ট্র সংস্কারের উদ্যোগে যে ছয়টি কমিশন গঠন করেছে, তাতে মানুষের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটেছে। 

বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) সুপ্রিম কোর্টে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘শুধু আমাদের দেশে নয়, পৃথিবীব্যাপী তিনটি বিভাগ গুরুত্বপূর্ণ। তা হলো আইন বিভাগ, শাসন বিভাগ ও বিচার বিভাগ।’ 

অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘আমাদের বিচার বিভাগের সংস্কার প্রয়োজন। কেননা বিচার বিভাগ তার কার্যক্রমে সার্বভৌম ক্ষমতা প্রয়োগ করে। প্রজাতন্ত্রের অন্য কোনো বিভাগের সঙ্গে বিচার বিভাগকে মেলানোর কোনো সুযোগ নেই। বিচার বিভাগ তার কার্যক্রমে সার্বভৌম ক্ষমতা প্রয়োগ করবে।’

তিনি বলেন, ‘বিগত সরকারের সময় নিম্ন আদালত থেকে উচ্চ আদালত পর্যন্ত বিচার বিভাগের ওপর অন্য বিভাগের হস্তক্ষেপ ছিল। বিগত সময়ে গণতন্ত্র হত্যা, লুটপাটের বিরুদ্ধে যারা প্রতিবাদ করেছেন তারা আদালতে ন্যায়বিচার পাননি, হয়রানির শিকার হয়েছেন। বিচার বিভাগের কর্মকর্তারা ভুলেই গিয়েছিলেন যে, তারা সার্বভৌম ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারেন। তারা নিজেদের প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী ভাবতেন।’ 

সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদের কারণেই কার্যত বাংলাদেশের আইন বিভাগ, শাসন বিভাগ ও বিচার বিভাগ এক ব্যক্তির নিয়ন্ত্রণে চলে গিয়েছে বলে মনে করেন অ্যাটর্নি জেনারেল। সংবিধান সংস্কার কমিশন বিষয়গুলো দেখবেন বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। এ সময় সরকারের সংস্কারের উদ্যোগে সবাইকে ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান তিনি।

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আরও দুই মামলা

প্রকাশ: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:৫৩ পিএম
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আরও দুই মামলা
শেখ হাসিনা (ফাইল ছবি)

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আরও দুটি মামলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) ঢাকার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি ও অন্য মামলাটি করা হয় গতকাল বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) রাতে বগুড়ায়। এসব মামলায় শেখ হাসিনা ছাড়াও তার আমলের মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, পুলিশপ্রধানদেরও আসামি করা হয়েছে। 

ঢাকা: বিএনপিদলীয় সাবেক সংসদ সদস্য নাজিম উদ্দিন আলমকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ সাতজনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। 

ঢাকার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ভুক্তভোগী নিজেই মামলাটির আবেদন করেন। আদালত তার জবানবন্দি রেকর্ড করে অভিযোগটি সাভার মডেল থানাকে এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দেন।

বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেন আদালত।

মামলার অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর, ভোলা-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব, তৎকালীন আইজিপি হাসান মাহমুদ খন্দকার, ঢাকা রেঞ্জের তৎকালীন ডিআইজি এস এম মাহফুজুল হক নুরুজ্জামান, তৎকালীন পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমান ও সাভার মডেল থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান। 

এক যুগ আগের ঘটনায় করা এ মামলায় উল্লেখ করা হয়, ২০১২ সালের ৯ ডিসেম্বর বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৮-দলীয় জোটের ডাকা গণতান্ত্রিক শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচিতে নাজিম উদ্দিন আলমসহ নেতা-কর্মীরা আমিনবাজার ব্রিজের ওপর অবস্থান করছিলেন। এ সময় পুলিশ নেতা-কর্মীদের ওপর চড়াও হয়ে গুলি চালায় ও লাঠিপেটা করে। তখন পুলিশের ছোড়া টিয়ারশেল ও শর্টগানের গুলিতে নাজিম উদ্দিন আলমসহ অর্ধশতাধিক নেতা-কর্মী গুলিবিদ্ধ হন।

বগুড়া: ছাত্র-জনতার আন্দোলনে বগুড়ায় আব্দুল মান্নান নামে এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদেরসহ ১২২ জনের নামে মামলা করা হয়েছে। মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও ২০০-৩০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

গতকাল বুধবার রাতে বগুড়া সদর থানায় মামলাটি করেন নিহতের ছেলে মো. রানা। 

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইহান ওয়ালিউল্লাহ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মামলায় শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদের, সাবেক সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের বগুড়া জেলা শাখার সভাপতি মো. মজিবুর রহমান মজনু এবং সাবেক সংসদ সদস্য ও দলটির জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক রাগেবুল আহসান রিপুকে হুকুমের আসামি করা হয়েছে।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, গত ৪ আগস্ট দুপুর ১টার দিকে আসামি মঞ্জুরুল আলম মোহন, রফি নেওয়াজ খান রবিন, আসাদুর রহমান দুলু, ওবায়দুল হাসান ববি, আমিনুল ইসলাম মণ্ডল ও আওয়ামী লীগ নেতা বগুড়া চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাছুদুর রহমান মিলনের নেতৃত্বে আন্দোলনকারীদের ওপর পিস্তল ও কাটা রাইফেল দিয়ে গুলি করা হয়। এ সময় ককটেল ও পেট্রলবোমারও বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। মামলার ২৩ নম্বর আসামি আব্দুল মতিন পিস্তল দিয়ে আব্দুল মান্নানকে গুলি করেন। পরে আব্দুল মান্নান মারা যান।

সাবেক ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান ৭ দিনের রিমান্ডে

প্রকাশ: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬:৩২ পিএম
আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:১১ পিএম
সাবেক ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান ৭ দিনের রিমান্ডে
আদালতে তোলা হয় সাবেক ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়াকে। ছবি : ইন্দ্রজিৎ কুমার ঘোষ

ক্রসফায়ারের নামে হত্যার অভিযোগে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) সাবেক কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন মঞ্জুর করেছেন আদালত। খিলগাঁও থানা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. নুরুজ্জামান জনিকে হত্যার অভিযোগে করা এই মামলায় আছাদুজ্জামান মিয়ার সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়েছে। 

বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত এই আদেশ দেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও খিলগাঁও থানার উপ-পরিদর্শক গোলাপ মাহমুদ তাকে ১০ দিন রিমান্ডে চেয়ে এই আবেদন করলে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুল ইসলামের আদালত এই আদেশ দেন। এর আগে গতকাল বুধবার রাতে রাজধানীর মহাখালী ফ্লাইওভার এলাকা থেকে ডিএমপির সাবেক এই কমিশনারকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী থেকে জানানো হয়।

প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালে রাজধানীর খিলগাঁও থানা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. নুরুজ্জামান জনিকে পুলিশি হেফাজতে ‘ক্রসফায়ারের নামে হত্যার’ অভিযোগে এই মামলা করা হয়। মামলায় ডিএমপির তৎকালীন পুলিশ কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়াসহ পুলিশের বর্তমান ও সাবেক ১৩ কর্মকর্তাসহ ৬২ জনকে আসামি করা হয়। গত ২ সেপ্টেম্বর খিলগাঁও থানায় জনির বাবা ইয়াকুব আলী এই মামলা করেন।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ২০১৫ সালের ১৯ জানুযারি সকালে নূরুজ্জামান জনি ও তার সহপাঠী মইন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে ছোট ভাই মনিরুজ্জামান হীরাকে দেখতে যান। কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ফেরার পথে আসামিরা জনি ও মইনকে ডিবি পরিচয়ে অবৈধভাবে আটক করে অজ্ঞাতস্থানে নিয়ে নির্যাতন চালায়। তখন নুরুজ্জামান জনির ৭ মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী মুনিয়া পারভিনসহ আত্মীস্বজন খিলগাঁও থানা, ডিবি দক্ষিণ অফিস, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ অফিসসহ বিভিন্ন থানায় হন্য হয়ে খুঁজে বেড়ান। দুদিন ধরে খোঁজাখুজি করার পরও নুরুজ্জামান জনির কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। পরে ২০ জানুয়ারি রাত ৩টা থেকে সাড়ে ৩টার দিকে খিলগাঁও থানার জোড়াপুকুর খেলার মাঠের আশপাশের লোকজন কান্নার শব্দ শুনতে পান।

ঘটনাস্থলের পাশে সি-ব্লকের বাসিন্দা লাভলী বেগম ও এ-ব্লকের বাসিন্দা সাইফুদ্দিনের স্ত্রী সানজিদা আক্তার সেতু কান্না ও চিৎকারের শব্দ শুনতে পান। সেই সময় আশপাশ এলাকার বাসিন্দারা গুলির শব্দ শুনতে পায়। ভোরে বাদীসহ সাক্ষীরা ও প্রতিবেশীরা খিলগাঁও থানার জোড়াপুকুর মাঠের দিকে গিয়ে পুলিশদের দেখতে পান। আসামিরা বলেন, নুরুজ্জামান জনি পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন। তার মরদেহ ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে।

মামলার বাদী ঢাকা মেডিকেলের মর্গে গিয়ে দেখতে পান নুরুজ্জামানের বুকের বামে, ডান দিকে, দুই হাতের তালুতে ১৬টি গুলির চিহ্ন রয়েছে। শরীরের বিভিন্ন স্থানে মারাত্মক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। উপস্থিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের জিজ্ঞাসা করলে তারা গালিগালাজ করে। লাশ গ্রহণ না করলে মামলা দেওয়ার হুমকিও দেন তারা।

পুলিশ কর্মকর্তা কাফির ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর

প্রকাশ: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৪:০০ পিএম
আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৪:১৯ পিএম
পুলিশ কর্মকর্তা কাফির ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর
সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ হিল কাফিকে আবারো পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন ঢাকার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট

ঢাকা জেলার সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ হিল কাফিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) আদালত এই নির্দেশ দেন।

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সাভারে গুলি করে মিলিটারি ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী শাইখ আসহাবুল ইয়ামিনকে হত্যার অভিযোগে তার বাবার করা মামলায় এই রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন ঢাকার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. জুলহাস উদ্দীন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও সাভার মডেল থানার পরিদর্শক আব্দুল্লাহ বিশ্বাস সাতদিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন। 

শুনানিতে বাদীপক্ষের আইনজীবী ওমর ফারুক ফারুকী রিমান্ড মঞ্জুরের পক্ষে শুনানি করেন।

আসামিপক্ষে রিমান্ড আবেদনের বিরোধিতা করে জামিন চান আইনজীবী ফারজানা ইয়াসমিন। 

দুইপক্ষের শুনানি শেষে পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

গত ২৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৪৯ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলাটি করা হয়। এতে অভিযোগ করা হয়, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মধ্যে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংবাদ সম্মলনে আন্দোলন প্রতিহত করার জন্য উসকানিমূলক বক্তব্য দেন। এতে তিনি বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের আন্দোলনকারীদের নির্মূলের নির্দেশ দেন। 

এরই পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৮ জুলাই দুপুর দেড়টায় পুলিশ ও আওয়ামী লীগ সম্মিলিতভাবে শান্তিপূর্ণ মিছিলে হামলা করে। তারা ইয়ামিনকে ধরে টেনে পুলিশের সাঁজোয়া যানের কাছে নিয়ে বুকের বামপাশে গুলি করে। এই অবস্থায় দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা ইয়ামিনকে টেনে পুলিশের সাঁজোয়া যানের ওপরে ফেলে রেখে আন্দোলনরত ছাত্র-জনতাকে ভীতি প্রদর্শনের জন্য গাড়িটি চালাতে থাকে। পরে ইয়ামিনকে প্রায় মৃত অবস্থায় রাস্তায় ফেলে দেয় এবং সাঁজোয়া যানের ভেতর থেকে একজন পুলিশ সদস্য বের হয়ে তার পায়ে পুনরায় গুলির নির্দেশ দেয়।

ওই পুলিশ সদস্য ইয়ামিনকে মৃত ভেবে গুলি না করে রাস্তার উপরের একপ্রান্ত থেকে অপরপ্রান্তে টেনে নিয়ে রোড ডিভাইডারের পাশে ফেলে দেয়। পুলিশ সদস্যরা গুলিবিদ্ধ শাইখ ইয়ামিনকে ধরাধরি করে উঁচু রোড ডিভাইডারের একপাশ হতে আরেকপাশে ছুঁড়ে ফেলে। তাকে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। 

মাহমুদুল আলম/সাদিয়া নাহার/অমিয়/