
কোটা সংস্কার আন্দোলনের ছয় সমন্বয়ককে মুক্তি দিতে এবং আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর গুলি না চালানোর নির্দেশনা চেয়ে করা রিটের শুনানি হয়নি বুধবার (৩১ জুলাই)। হাইকোর্টের বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি এস এম মাসুদ হোসেন দোলনের বেঞ্চে শুনানি ধার্য ছিল। কিন্তু কনিষ্ঠ বিচারপতি এস এম মাসুদ হোসেন দোলন অসুস্থতার কারণে অনুপস্থিত ছিলেন। অসুস্থতার কারণে তিনি সকালেই প্রধান বিচারপতির কাছে ছুটি নেন। আজ বৃহস্পতিবারও এ রিটের শুনানি হবে না।
সুপ্রিম কোর্টের কার্যতালিকায় দেখা যায়, আজ বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি এস এম মাসুদ হোসেন দোলনের বেঞ্চ বসবে না। আজকের কার্যতালিকায় বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম একক বেঞ্চে বসবেন এবং শুনানির জন্য সহকারী জজ ব্যতীত অন্য বিচারকের ডিক্রি ও আদেশের বিরুদ্ধে অনূর্ধ্ব ৬ কোটি টাকা মানের এবং সহকারী জজের মান নিরপেক্ষ ডিক্রি ও আদেশের বিরুদ্ধে দেওয়ানি রিভিশন মোকদ্দমা এবং দেওয়ানি মোকদ্দমা বা কার্যধারা এ বেঞ্চেই শুনানি ও নিষ্পত্তি হবে।
গত সোম ও মঙ্গলবার দুই দিনের শুনানিতে হাইকোর্ট সাম্প্রতিক বিষয় নিয়ে বেশ কিছু মন্তব্য করেন। এর মধ্যে ছয় সমন্বয়ককে ধরে খাবার টেবিলে নিয়ে তা প্রকাশ করে দেওয়ার ঘটনায় হাইকোর্ট বলেন, ‘জাতির সঙ্গে মশকরা কইরেন না।’ এ ছাড়া আন্দোলন ঘিরে মৃত্যুর ঘটনায় হাইকোর্ট বলেন, ‘সব মৃত্যুই দুঃখজনক, আমরা লজ্জিত।’
শুনানিতে রিটের পক্ষে বক্তব্য উপস্থাপন করেন ব্যারিস্টার সারা হোসেন ও ব্যারিস্টার অনীক আর হক। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম মনির, শেখ মোহাম্মদ (এস কে) মোরশেদ ও ব্যারিস্টার মোহাম্মদ মেহেদী হাসান চৌধুরী। রাষ্ট্রপক্ষে আওয়ামী লীগ নেতা ও সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, সাবেক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম সুজন, অ্যাডভোকেট আজহার উল্লাহ ভূঁইয়া এবং অ্যাডভোকেট শাহ মঞ্জুরুল হকও শুনানিতে অংশ নেন। মঙ্গলবার শুনানির একপর্যায়ে উভয় পক্ষের আইনজীবীদের পরস্পরবিরোধী উচ্চবাক্য বিনিময় হয়। শুনানির পর বিচারপতিরা এজলাস ছেড়ে গেলে উভয় পক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে হট্টগোল হয়।
গত সোমবার সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মনজুর-আল-মতিন এবং আইনুন্নাহার সিদ্দিকা এ রিট করেন। সেদিনই দুপুরে রিটের শুনানি হয়। রিটে আইন সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান, পুলিশের মহাপরিদর্শকসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়। এতে আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে সরাসরি গুলি করা কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না এবং গুলি ব্যবহার না করার নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারির আবেদন জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে নিরাপত্তার নামে হেফাজতে নেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের দ্রুত মুক্তির নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।