সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল মইন উ আহমেদের বিরুদ্ধে ১০০ কোটি টাকার মানহানির অভিযোগে করা একটি মামলা আদালতে নিষ্পত্তির অপেক্ষায় আছে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু এই মামলা করেছিলেন।
২০০৯ সালের ৮ সেপ্টেম্বর এই মামলা করেন ইকবাল হাসান মাহমুদ। মামলা দায়েরের ১৫ বছর পূর্ণ হয় গত ৭ সেপ্টেম্বর শনিবার। মামলার সর্বশেষ অবস্থা জানতে চাইলে গত রাতে তিনি দৈনিক খবরের কাগজকে বলেন, মামলাটি এখনো নিম্ন আদালতে নিষ্পত্তির অপেক্ষায় আছে। ঢাকার তৃতীয় যুগ্ম জেলা জজ আদালতে আছে মামলাটি।
মামলাটি সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগেও গিয়েছিল- মনে করিয়ে দিলে ইকবাল হাসান মাহমুদ বলেন, মামলাটি খারিজ চেয়ে মইন উ আহমেদ আবেদন করেছিলেন। আদালতে তা খারিজ হয়। নিম্ন আদালতের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তিনি উচ্চ আদালতে আবেদন করেন। সেখানেও তা খারিজ হয়। পরে তিনি আবার আপিল বিভাগে আবেদন করেন, এখানে আবারও উনার আবেদন খারিজ হয়। সর্বোচ্চ আদালতে তা খারিজ হওয়ার পর এই মামলা চলতে আর কোনো বাধা নেই। এখন মামলাটি নিম্ন আদালতে নিষ্পত্তির অপেক্ষায় আছে।
আদালতে মইন উ আহমেদের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী কামরুল হক সিদ্দিকী। দৈনিক খবরের কাগজকে তিনি বলেন, ‘এই মামলায় তার সম্পত্তি ক্রোকের আদেশও চাওয়া হয়েছিল। আমি আদালতকে বলেছিলাম, মামলা নিষ্পত্তি হওয়ার আগেই সম্পত্তি ক্রোকের মতো বিষয় নয় এটি। তাই ক্রোকের নির্দেশ দেওয়া ঠিক হবে না। শুনানি শেষে আদালতও সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশ দেননি।’
সর্বোচ্চ আদালতের আপিল বিভাগে তার আবেদনটি খারিজ হয় ১০ বছর আগে ২০১৪ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি। সেদিন আদালত থেকে বের হওয়ার পর ইকবাল হাসান মাহমুদের আইনজীবী মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেছিলেন, আপিল বিভাগে আবেদনটি খারিজ হওয়ার ফলে মইন উ আহমেদের বিরুদ্ধে নিম্ন আদালতে করা মানহানির মামলাটির কার্যক্রম চলবে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, এক-এগারোর পর গঠিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ২০০৭ সালের ২৭ মার্চ রাজধানীতে জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে এক অনুষ্ঠানে মইন উ আহমেদ বলেছিলেন, বিএনপি-জামায়াত নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকারের আমলে বিদ্যুৎ খাতে ২০ হাজার কোটি টাকা লুটপাট এবং বিদেশে পাচার করা হয়েছে।
ওই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে ১০০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে এই মামলা করেন জোট সরকার আমলের বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী ইকবাল হাসান মাহমুদ। ঢাকার তৃতীয় যুগ্ম জেলা জজ আদালতে এই মামলা করেন তিনি। পরে মামলাটি চলতে পারে না বলে দাবি করে তা খারিজ চেয়ে আবেদন করেন মইন উ আহমেদ। তার পক্ষে ২০১০ সালের ১০ জানুয়ারি আদালতে এই আবেদন করা হয়। ওই আদালতেই আবেদনটি খারিজ হলে তা পুনর্বিবেচনা চেয়ে উচ্চ আদালতে তার পক্ষে আবেদন করা হয়। হাইকোর্টের ওই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে মইন উ আহমেদ আপিল বিভাগে আবেদন করেন। তার পক্ষে করা আবেদনটির ওপর পরপর দুই দিন শুনানি নিয়ে তা খারিজ করে আদেশ দেন সর্বোচ্চ আদালত। এরপর থেকে নিম্ন আদালতে মামলাটি নিষ্পত্তির অপেক্ষায় আছে।