নারায়ণগঞ্জের মেধাবী কিশোর তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী হত্যা মামলায় আজমেরী ওসমানের গাড়িচালক জামশেদ শেখকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে পেয়েছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) ভোরে ঢাকার মিরপুর থেকে জামশেদকে গ্রেপ্তার করা হয়। দুপুরে নারায়ণগঞ্জ আমলি আদালতে তোলা হয়। এ সময় র্যাব আদালতকে জানায়, জামশেদ শেখ ত্বকী হত্যার সঙ্গে সরাসরি জড়িত ছিলেন, তাকে সাত দিনের জন্য রিমান্ডে নেওয়া দরকার। শুনানি শেষে বিচারক কাউসার আলম পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
আদালত পুলিশের পরিদর্শক আব্দুর রশীদ জানান, এ নিয়ে গত তিন দিনে চারজনকে গ্রেপ্তার করেছেন র্যাব-১১ সদস্যরা। গত মঙ্গলবার মো. শাফায়েত হোসেন শিপন, মামুন মিয়া ও মো. কাজল হাওলাদারকে আদালতে হাজির করে ছয় দিনের রিমান্ডে পেয়েছে র্যাব।
ত্বকী হত্যা মামলা আইনজীবী প্রদীপ ঘোষ বলেন, ‘মামলাটির আসামিরা দীর্ঘদিন পালিয়ে ছিলেন। ত্বকী হত্যায় জড়িত সব আসামিকে দ্রুত গ্রেপ্তারের জন্য আমরা আদালতকে জানিয়েছি। শিগগিরই আদালতে অভিযোগপত্র দাখিলেরও প্রার্থনা করেছি। একই সঙ্গে আসামিদের জামিন না দিতে আদালতে আবেদন করেছি।’
মামলার বাদী নিহত ত্বকীর বাবা সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চের আহ্বায়ক রফিউর রাব্বি বলেন, পতন হওয়া সরকারের আশ্রয়ে থাকায় ত্বকী হত্যায় জড়িত ব্যক্তিদের পরিচয় প্রকাশের পরও বিগত বছরগুলোতে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়নি।
মেধাবী ছাত্র ত্বকী ২০১৩ সালের ৬ মার্চ নগরীর শায়েস্তা খাঁ রোডের বাসা থেকে বের হওয়ার পর নিখোঁজ হয়। এরপর ৮ মার্চ শীতলক্ষ্যা নদীর কুমুদিনী শাখা খাল থেকে ত্বকীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। সে সময় দেশব্যাপী এ ঘটনা আলোচিত হয়। এ ঘটনায় ত্বকীর বাবা রফিউর রাব্বি হত্যা মামলা করেন। নারায়ণগঞ্জে হরতাল পালন করা হয়। এ ছাড়া মানববন্ধন ও সমাবেশ করাসহ নানা প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করা হয়।
পরে হাইকোর্টের নির্দেশে মামলা তদন্তের দায়িত্ব পায় র্যাব। ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে সংস্থাটি। তাদের মধ্যে ইউসুফ হোসেন লিটন ও সুলতান শওকত ভ্রমর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। তারা বলেন, আজমেরী ওসমানের নেতৃত্বে ত্বকীকে অপহরণের পর হত্যা করা হয়। এ সময় আজমেরী ওসমানের টর্চার সেলে অভিযান চালিয়ে ত্বকীর রক্তমাখা প্যান্ট উদ্ধার করা হয়।
হত্যাকাণ্ডের এক বছর পর ২০১৪ সালে ৮ মার্চ তৎকালীন র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল জিয়াউল আহসান সংবাদ সম্মেলন করে উল্লেখ করেন ত্বকী হত্যায় অংশ নেন সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের ভাতিজা আজমেরীসহ ১১ জন। দ্রুত আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হবে বলেও জানান তিনি। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে তা আর হয়ে ওঠেনি।