সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে আরও দুটি মামলা করা হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকায় একটি হত্যা মামলা এবং গুলিতে একজন আহত হওয়ার ঘটনায় নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ থানায় একটি মামলা হয়েছে।
বৈষম্যবিরোধী সাম্প্রতিক আন্দোলনের মধ্যে যাত্রাবাড়ীর কাজলায় গুলি করে সোহেল রানা নামে একজনকে হত্যার অভিযোগে মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) তার ভাই জুয়েল ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে মামলা করেন।
মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শাহীন রেজার আদালত অভিযোগটি এজাহার হিসেবে গ্রহণ করতে যাত্রাবাড়ী থানার পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলায় উল্লেখ করা হয়, গত ১৮ জুলাই বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মধ্যে গুলিবিদ্ধ হন সোহেল রানা। সেখানে অন্য আসামিদের নির্দেশে পুলিশের পোশাক পরিহিত লোকের গুলিতে গুলিবিদ্ধ হন সোহেল। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। শেখ হাসিনা ছাড়া মামলার অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন তার মন্ত্রিপরিষদ সদস্য ওবায়দুল কাদের, আসাদুজ্জামান খান কামাল, আনিসুল হক, হাছান মাহমুদ, মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, রাশেদ খান মেনন, হাসানুল হক ইনু, শাজাহান খান, কামরুল ইসলাম, জুনাইদ আহমেদ পলক ও মোহাম্মদ আলী আরাফাত এবং সাবেক মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, সাবেক সংসদ সদস্য হাজি সেলিম, মির্জা আজম, পংকজ দেবনাথ, যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ, যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল।
অন্যদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে মো. জাহাঙ্গীর নামে এক ব্যক্তি গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনায় শেখ হাসিনাকে প্রধান আসামি করে সোনারগাঁ থানায় মামলা করা হয়েছে। গতকাল সোমবার রাতে আহত মো. জাহাঙ্গীর নিজেই এ মামলা করেন।
মামলার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আব্দুল বারী।
মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, পিরোজপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমান মাসুম, সোনারগাঁ যুবলীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম নান্নু, সোনারগাঁ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান মাসুম, হাজি সোহাগ রনি, কাঁচপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেনসহ ১৫১ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। এ ছাড়া ২০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।
মামলায় উল্লেখ করা হয়, গত ১৯ জুলাই দুপুরে সোনারগাঁয়ের কাঁচপুর এলাকায় জাহাঙ্গীরসহ ছাত্র-জনতার ওপর ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ আসামিরা গুলিবর্ষণ করে। এ সময় একটি গুলি তার কপালে লাগলে রক্তাক্ত অবস্থায় তিনি লুটিয়ে পড়েন। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিনি চিকিৎসা নেন। এর আগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে কাঁচপুর এলাকায় নিহতের ঘটনায় সোনারগাঁ থানায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে চারটি হত্যা মামলা ও একটি আহতের ঘটনায় মামলা করা হয়। এ নিয়ে ছয়টি মামলা হয়েছে। আরও মামলা প্রক্রিয়াধীন বলে থানার একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে।