ঢাকা ৬ ফাল্গুন ১৪৩১, বুধবার, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
English
বুধবার, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ৬ ফাল্গুন ১৪৩১

চিন্ময়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার শুনানি বৃহস্পতিবার

প্রকাশ: ০১ জানুয়ারি ২০২৫, ০৯:২৮ পিএম
আপডেট: ০২ জানুয়ারি ২০২৫, ০৮:২৭ এএম
চিন্ময়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার শুনানি বৃহস্পতিবার
সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ। ছবি: সংগৃহীত

রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন শুনানি আগামীকাল বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি)। আদালত কতৃক পূর্বের নির্ধারিত ছিল শুনানির সময়। এর জন্য চট্টগ্রাম আদালতে অতিরিক্ত নিরাপত্তা নেওয়া হয়েছে। বুধবার রাত থেকে যৌথ বাহিনী টহল ও পাহাড়া দিচ্ছে চট্টগ্রাম আদালত এলাকা। 

এর আগে গত ২৫ নভেম্বর চট্টগ্রামে ফেরার পথে হযরত শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে চিন্ময় কৃষ্ণ ব্রহ্মচারীকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। পরদিন তাকে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) কাছে হস্তান্তর করা হলে কোতোয়ালী থানায় হওয়া একটি রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে তোলা হয়। ওইদিন আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এ ঘটনায় প্রিজনভ্যান আটকে চিন্ময়ের অনুসারীরা বিক্ষোভ করতে থাকে। এ সময় তারা প্রায় তিন ঘণ্টা বিক্ষোভ করেন। একপর্যায়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদেরকে সরিয়ে দিতে টিয়ারেশল ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুঁড়লে তাদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। পরে চট্টগ্রাম আদালত ভবনে প্রবেশপথের বিপরীতে রঙ্গম সিনেমা হল গলিতে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে নৃশসংসভাবে হত্যা করা হয়।

গত ১২ ডিসেম্বর চিন্ময়ের পক্ষে আগাম শুনানির জন্য উচ্চ আদালত থেকে ওকালতনামা স্বাক্ষর করে নিয়ে এসেছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী রবীন্দ্র ঘোষ। 

কিন্তু চট্টগ্রাম বারের আইনজীবীর ওকালতনামা দিয়েই মামলায় লড়তে হবে-এমনটাই জানিয়েছেন আদালত। পরপর তিনবার এজলাস বসলেও স্থানীয় বারের কোনো আইনজীবী ওকালতনামা দেননি। ফলে, রবীন্দ্র ঘোষের আবেদন নথিভুক্ত করে আবারও ২ জানুয়ারিই শুনানির দিন ধার্য করেছেন আদালত। ওইদিন চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ মো. সাইফুল ইসলাম এ আদেশ দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতের নাজির নেছার আহমেদ। 

চট্টগ্রাম বারের সভাপতি অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন বলেন, সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস চট্টগ্রাম বারের আইনজীবী হত্যার আসামি। তার পক্ষে চট্টগ্রামের কোনো আইনজীবী দাঁড়াতে রাজি নন। আমরা আমাদের ভাই আলিফ হত্যার জন্য চিন্ময় দাসের শাস্তি চাই। 

এদিকে চট্টগ্রাম আদালতের অদূরে সরকারি কৌঁসলি আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ খুন হন এবং পুলিশের ওপর হামলা-গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় পৃথক দুটি মামলা করে তার বাবা এবং ভাই। আর পুলিশ করে ৩ টি মামলা। 

আলিফের বাবার করা হত্যা মামলায় ৩১ জনকে আসামি করা হয়েছে। আর ভাইয়ের করা মামলায় এজাহারনামীয় আসামি করা হয় ১১৬ জনকে। সেই মামলায় চিন্ময় কৃষ্ণের আইনজীবী অ্যাডভোকেট শুভাশিস শর্মাকে আসামি করা হয়েছে। তিনি মামলাটির ৩৩ নম্বর আসামি। এরপর আজ চিন্ময়ের জামিন শুনানীর দিন ধার্য্য থাকলেও সে সময় কোনো আইনজীবীই তার পক্ষে অংশ নেননি। ফলে আদালত আগামী বছরের ২ জানুয়ারি শুনানীর দিন ধার্য্য করেছিলেন আদালত। 

গত ২৫ অক্টোবর লালদিঘি মাঠে সনাতনীদের নিয়ে একটি বড় সমাবেশ করে বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চ ও বাংলাদেশ সম্মিলিত সংখ্যালঘু জোট নামে দুটি সংগঠন। ওই সমাবেশের অন্যতম উদ্যোক্তা ছিলেন নতুন এই জোটের মুখপাত্র চন্দন দাস ওরফে চিন্ময় কৃষ্ণ দাস। 

সেদিন সমাবেশ শেষে নগরীর নিউ মার্কেট মোড়ে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার ওপরে ইসকনের গেরুয়া রঙের আরেকটি পতাকা উড়িয়ে দেওয়া হয়। ওই অভিযোগে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ এনে ৩০ অক্টোবর কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা করেন বিএনপির এক নেতা। পরে তাকে বহিস্কার করে বিএনপি। সেই মামলায় চিন্ময়কে গ্রেপ্তার করা হয় ঢাকা থেকে। 

এদিকে চিন্ময় কৃষ্ণকে আলিফ হত্যায় আসামি করতে আইনজীবীরা বার বার বিক্ষোভ করেছে। আইনজীবীরা চিন্ময়কে আলিফ হত্যা মামলায় আসামি করার দাবি জানান। 

এর মধ্যে পুলিশের ওপর হামলার মামলায় ৮ জনকে আদালতে তোলা হলে তাদের ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়। তাদের মধ্যে নুরু ও দেলোয়ার নামে দুই আসামির পক্ষে জামিন আবেদন করেন সানজিদা গফুর নামে জুনিয়র আইনজীবী। এনিয়ে আদালত এলাকায় তোলপাড় শুরু হয়। কেননা সানজিদা গফুর আদালতের কাছে যে ওকালতনামাটি দাখিল করেন সেটিতে রাস্ট্র পক্ষের আইনজীবী নেজামুদ্দিনের সীল পাওয়া গেছে। তাৎক্ষণিক আইনজীবীরা তার কার্যালয় ঘিরে বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে তিনি লিখিতভাবে অতিরিক্ত মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটরের পদ থেকে পদত্যাগ করেন। 

মাহফুজ

খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে হামলার মামলায় সাবেক ৩ মন্ত্রী রিমান্ডে

প্রকাশ: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৮:২৩ পিএম
খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে হামলার মামলায় সাবেক ৩ মন্ত্রী রিমান্ডে
সাবেক বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী ফারুক খান, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু ও সমাজকল্যাণমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে হামলার ঘটনায় মতিঝিল থানায় হওয়া হত্যাচেষ্টার মামলায় সাবেক বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী ফারুক খান, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু ও সমাজকল্যাণমন্ত্রী রাশেদ খান মেননকে পাঁচ দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। 

বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এম এ আজহারুল ইসলাম শুনানি শেষে এ আদেশ দেন। 

এর আগে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা প্রত্যেককে পাঁচ দিন রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেন। আসামিদের আইনজীবীরা রিমান্ড বাতিলপূর্বক জামিনের আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক রিমান্ড মঞ্জুর করেন। 

মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, ২০১৫ সালের ২০ এপ্রিল নির্বাচনি প্রচারণার সময় পল্টনে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত পথসভায় দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে হত্যার উদ্দেশ্যে আসামিরা অস্ত্রসহ তার গাড়িবহরে হামলা চালান। এ সময় তারা খালেদা জিয়ার গাড়িবহরের ১২ থেকে ১৪টি গাড়ি ভাঙচুর করেন। চারটি মোটরসাইকেলে আগুন দেন। নেতা-কর্মীদের মারধর করেন। হামলায় খালেদা জিয়ার নিরাপত্তারক্ষীরা আহত হন।

আরও বলা হয়, খালেদা জিয়াকে লক্ষ্য করে হামলাকারীরা ইট-পাথর নিক্ষেপ করলে সাধারণ পথচারীরাও আহত হন। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪-দলীয় জোট ও এর অঙ্গসংগঠনের ২০০ থেকে ৩০০ নেতা-কর্মী দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটান। হামলাকারীরা মূল্যবান জিনিসপত্র ছিনিয়ে নেন ও জোরপূর্বক আটকে রেখে মুক্তিপণ দাবি করেন।

আনিসুল-কামাল-দীপঙ্কর-সালেহীন রিমান্ডে

প্রকাশ: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৮:১৫ পিএম
আনিসুল-কামাল-দীপঙ্কর-সালেহীন রিমান্ডে
সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার

সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী দীপঙ্কর তালুকদার ও পুলিশ সুপার (এসপি) তানভীর সালেহীন ইমনকে রাজধানীর পৃথক মামলায় বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ড দিয়েছেন আদালত। 

বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) মামলার আলাদাভাবে শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এম এ আজহারুল ইসলামের আদালত এ আদেশ দেন। 

গত বছর বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হত্যার ঘটনায় রাজধানীর বিভিন্ন থানায় হওয়া মামলায় শুনানি শেষে তাদের রিমান্ড দেওয়া হয়। আদালতে রিমান্ড আবেদনের বিরোধিতা করে জামিন চান আসামিদের আইনজীবীরা। শুনানি শেষে তদন্ত কর্মকর্তাদের প্রার্থিত মেয়াদে আসামিদের রিমান্ড মঞ্জুর করেন বিচারক। এর আগে আসামিদের কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। পৃথক মামলায় তদন্ত কর্মকর্তারা বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেন। 

সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হককে উত্তরায় ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি কলেজের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল মাহিন হত্যার ঘটনায় উত্তরা পশ্চিম থানার মামলায় পাঁচ দিন রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়। সাবেক শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদারকে মিরপুর মডেল থানার আনোয়ার হোসেন পাটোয়ারী হত্যা মামলায় পাঁচ দিন রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়। 

সাবেক পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী দীপঙ্কর তালুকদারকে রাজধানীর পল্টনে বিএনপির সমাবেশে যুবদল নেতা শামীম হত্যা মামলায় সাত দিন রিমান্ডে নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। 

এ ছাড়া, পুলিশ সুপার (এসপি) তানভীর সালেহীন ইমনকে রাজধানীর নিউমার্কেট থানার আব্দুল ওয়াদুদ হত্যা মামলায় রিমান্ডে নিয়ে সাত দিন জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

আওয়ামী নেত্রী রেশমা গ্রেপ্তার, কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ

প্রকাশ: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৭:০৪ পিএম
আওয়ামী নেত্রী রেশমা গ্রেপ্তার, কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ
গফরগাঁও উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রেশমা আক্তার। ছবি: সংগৃহীত

অপারেশন ডেভিল হান্টের অভিযানে ময়মনসিংহে গফরগাঁও উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রেশমা আক্তারকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বিকালে ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সফিকুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন।

তিনি বলেন, গত ৫ আগস্ট আওয়ামী সরকারের পতনের পর থেকেই রেশমা আক্তার পলাতক ছিলেন। মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারি তিনি ময়মনসিংহ শহরে আত্নগোপনে রয়েছেন। পরে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। 

রেশমা আক্তার গফরগাঁওয়ের সাবেক সংসদ সদস্য ফাহমী গোলন্দাজ বাবেলের বিশ্বস্ত সহযোগী ছিলেন। তিনি গফরগাঁও উপজেলা পরিষদের সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান। ২০১৯ সালে গফরগাঁওয় উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে অন্য কোনো প্রার্থী না থাকায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগের এই নেত্রী।

কামরুজ্জামান মিন্টু/সিফাত/

২৭তম বিসিএসের ভাইভা বাতিলবিষয়ক রায় বৃহস্পতিবার

প্রকাশ: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:০৯ পিএম
আপডেট: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:২৪ পিএম
২৭তম বিসিএসের ভাইভা বাতিলবিষয়ক রায় বৃহস্পতিবার
বাংলাদেশ সুুপ্রিম কোর্ট। ছবি: সংগৃহীত

২৭তম বিসিএসের ভাইভা বাতিলবিষয়ক রায় বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) ধার্য করেছেন আদালত। এ  বিসিএসে নিয়োগবঞ্চিত ১ হাজার ১৩৭ জন চাকরি ফেরত পাবেন কি না সে বিষয়ে আগামীকাল রায় দেবেন আদালত।

বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন ৫ সদস্যের আপিল বিভাগ এ দিন ধার্য করেন। 

২০১০ সালের ১১ জুলাই ২৭তম বিসিএসে প্রথমবারের মৌখিক পরীক্ষা বাতিলের সিদ্ধান্ত বৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায় বহাল রেখে রায় দেন আপিল বিভাগ। পরবর্তী সময়ে রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে ১ হাজার ১৩৭ জনের পক্ষে ১৪০ জন ২০২৪ সালে পৃথক আবেদন করেন।

আবেদনকারীদের আইনজীবী সালাহ উদ্দিন দোলন বলেন, ‘এক-এগারোর সরকারের সময় ২৭তম বিসিএসে দ্বিতীয়বারের মতো মৌখিক পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ১ হাজার ১৩৭ জন চূড়ান্ত সুপারিশের পর চাকরিতে প্রবেশ করবেন এমন অবস্থায় ওই সিদ্ধান্ত হয়। পরে দ্বিতীয় মৌখিক পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নিয়ে মামলা হয়।’

এই আইনজীবী জানান, হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ দ্বিতীয়বারের মৌখিক পরীক্ষা অবৈধ ঘোষণা করেন। অপর একটি বেঞ্চ দ্বিতীয় মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া বৈধ বলেন। পরে দ্বিতীয়বারের মতো মৌখিক পরীক্ষা অবৈধ ঘোষণার হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সরকারপক্ষ পৃথক লিভ টু আপিল করে। এরপর লিভ টু আপিল পর্যবেক্ষণসহ নিষ্পত্তি করে ২০১০ সালে আপিল বিভাগ রায় দেন। এই রায়ে দ্বিতীয় মৌখিক পরীক্ষা নেওয়াকে সঠিক বলা হয়।

আইনজীবী সালাহ উদ্দিন দোলন বলেন, দ্বিতীয়বার মৌখিক পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত দেওয়ার ক্ষমতা তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ছিল না। এমনকি দ্বিতীয়বার মৌখিক পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়টি পিএসসি আইন ও বিধিতে নেই।

সালাহ উদ্দিন বলেন, ‘২০০৮ সালের ৩ জুলাই হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ ২৭তম বিসিএস পরীক্ষার প্রথম মৌখিক পরীক্ষার ফল বাতিলের সিদ্ধান্ত বৈধ ঘোষণা করে রায় দেন। হাইকোর্টের অপর একটি বেঞ্চ ২০০৯ সালের ১১ নভেম্বর দ্বিতীয় মৌখিক পরীক্ষা অবৈধ ঘোষণা করেন। প্রথম রায়ের বিরুদ্ধে নিয়োগবঞ্চিত ২৫ জন আপিল বিভাগে দুটি লিভ টু আপিল করেন। দ্বিতীয় রায়ের বিরুদ্ধে সরকার তিনটি লিভ টু আপিল করে। এ ক্ষেত্রে ২০৫ জন হাইকোর্টে রিট করেছিলেন। কিছু পর্যবেক্ষণ দিয়ে আপিল বিভাগ সরকারের লিভ টু আপিল নিষ্পত্তি করে ২০১০ সালের ১১ জুলাই রায় দেন।’

তথ্য অনুযায়ী, ২০০৭ সালের ২১ জানুয়ারি ২৭তম বিসিএসের প্রথম মৌখিক পরীক্ষায় ৩ হাজার ৫৬৭ জন উত্তীর্ণ হন। তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ ওই বছরের ৩০ মে প্রথম মৌখিক পরীক্ষার ফল বাতিলের সিদ্ধান্ত নেন। এর প্রেক্ষিতে সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) ওই বছরের ১ জুলাই প্রথম মৌখিক পরীক্ষার ফল বাতিল করে। পরবর্তী সময়ে একই বছরের ২৯ জুলাই দ্বিতীয় মৌখিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এর পর ২০০৮ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর দ্বিতীয় মৌখিক পরীক্ষায় ৩ হাজার ২২৯ জন উত্তীর্ণ হন। পরে তাদের চাকরিতে নিয়োগ দেওয়া হয়।

সুমন/

রমনায় বোমা হামলা: ডেথ রেফারেন্সের রায় যেকোনো দিন

প্রকাশ: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০:০০ পিএম
রমনায় বোমা হামলা: ডেথ রেফারেন্সের রায় যেকোনো দিন
ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর রমনা পার্কে বাংলা নববর্ষের অনুষ্ঠানে বোমা হামলার ঘটনায় করা হত্যা মামলায় আসামিদের ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন) ও আপিলের ওপর যেকোনো দিন রায় ঘোষণা (সিএভি) করা হবে।

মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) এ নির্দেশ দেন আদালত।

আদালতে আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী এস এম শাহজাহান, সরওয়ার আহমেদ ও মোহাম্মদ শিশির মনির। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল (ডিএজি) সুলতানা আক্তার রুবী ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসিফ ইমরান জিসান। আদালত থেকে বের হওয়ার পর আইনজীবীরা এ তথ্য জানান।

হাইকোর্টে রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি নাসরিন আক্তারের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

প্রায় দুই যুগ আগে ২০০১ সালের ১৪ এপ্রিল রমনার বটমূলে পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠানে বোমা হামলার ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় ঘটনাস্থলেই ৯ জন নিহত হন, পরে হাসপাতালে মারা যান আরও একজন।

হাইকোর্টে ওই ঘটনায় করা হত্যা মামলায় পেপারবুক (মামলার বৃত্তান্ত) প্রস্তুতসহ আনুষঙ্গিক প্রক্রিয়ার পর ডেথ রেফারেন্স ও আসামিদের আপিল ২০১৬ সালে হাইকোর্টের একটি দ্বৈত বেঞ্চে প্রথম শুনানির জন্য ওঠে। পরে যথারীতি এ মামলার শুনানিও শুরু হয়। তবে পরে কার্যতালিকা থেকে মামলাটি বাদ দেওয়া হয়। আলোচিত এ মামলায় এ নিয়ে আট আসামির ডেথ রেফারন্স (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন) ও আপিল হাইকোর্টের তিনটি বেঞ্চের কার্যতালিকায় উঠলেও শুনানি শেষে মামলাটি নিষ্পত্তি হয়নি। এরপর আসামিদের ডেথ রেফারেন্স ও আপিল শুনানির জন্য হাইকোর্টের ওই দ্বৈত বেঞ্চে ২০২৪ সালের ৮ ডিসেম্বর কার্যতালিকায় ওঠে। পেপারবুক উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে শুনানি শুরু হয়, যা শুনানি শেষে রায়ের জন্য সিএভি রেখে মঙ্গলবার আদেশ দেন উচ্চ আদালত।

২০১৪ সালের ২৩ জুন ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ রুহুল আমিন রাজধানীর রমনা বটমূলে বোমা হামলার ঘটনায় করা হত্যা মামলায় রায় দেন। রায়ে আটজনের মৃত্যুদণ্ড এবং ছয়জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। মৃত্যুদণ্ডের রায় হওয়া আসামিরা হলেন, মুফতি হান্নান, আকবর হোসেন, আরিফ হাসান সুমন, সাবেক উপমন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টুর ভাই মো. তাজউদ্দিন, হাফেজ জাহাঙ্গীর আলম বদর, আবু বকর ওরফে হাফেজ সেলিম হাওলাদার, আবদুল হাই ও শফিকুর রহমান। সিলেটে গ্রেনেড হামলার মামলায় মুফতি হান্নানের মৃত্যুদণ্ড ইতোমধ্যে কার্যকর হয়েছে।

আর বিচারিক আদালতের রায়ে যাবজ্জীবন দণ্ডিতরা হলেন, শাহাদাতউল্লাহ জুয়েল, সাব্বির, শেখ ফরিদ, আবদুর রউফ, ইয়াহিয়া ও আবু তাহের।

বিচারিক আদালতের রায়ের পর আসামিদের মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের (ডেথ রেফারেন্স) জন্য রায়সহ নথিপত্র হাইকোর্টে আসে, যা ২০১৪ সালে ডেথ রেফারেন্স মামলা হিসেবে নথিভুক্ত হয়। এরপর শুনানির পূর্বপ্রস্তুতি হিসেবে পেপারবুক (মামলার বৃত্তান্ত) তৈরি করা হয়। অন্যদিকে কারাগারে থাকা আসামিরা পৃথক আপিল ও জেল আপিল করেন। ডেথ রেফারেন্স, আপিল ও জেল আপিলের শুনানি শেষে রায়ের জন্য মামলাটি সিএভি রেখে মঙ্গলবার আদেশ দেন হাইকোর্ট।