
চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গনে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যার দিনে সহিংসতার ঘটনায় বিস্ফোরক মামলায় ৬৩ জন আসামিকে জামিন দিয়েছেন আদালত।
সোমবার (১৩ জানুয়ারি) দুপুরে শুনানি শেষে এই আদেশ দেন চট্টগ্রামের অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক সরকার হাসান শাহরিয়ার।
বিষয়টি খবরের কাগজকে নিশ্চিত করে মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট মফিজুল হক ভূঁইয়্যা বলেন, ‘বিচারক হাসান শাহরিয়ার বিস্ফোরক আইনের মামলায় (কোতোয়ালি থানার মামলা নং-৪৭/১১/২৪) ৬৩ জন আসামির জামিন মঞ্জুর করেছেন। যাদের সকলেই আইনজীবী। তবে মামলার মোট আসামি ১১৬ জন। এদের মধ্যে ৬৬ জনই আইনজীবী। যাদের মধ্যে ৩ জন দেশের বাইরে থাকায় আত্মসমর্পণ করেননি।
এদিন আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন ওই আইনজীবীরা।
আসামি পক্ষের আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী বলেন, ‘এ মামলায় যে আইনজীবীদের আসামি করা হয়েছে তারা ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত নয়। যিনি মামলা করেছেন তিনি নিজেও ঘটনাস্থলে ছিলেন না। আলামতও মামলাতে দিতে সক্ষম হননি। আদালত আমাদের শুনানিতে সন্তষ্ট হয়ে চার্জশীট বা পুলিশ রিপোর্ট না দেওয়া পর্যন্ত আইনজীবীদের জামিন দিয়েছেন।’
রাস্ট্রপক্ষের আইনজীবী সামশুল হক বলেন, ‘এর আগে এ ধরণের বিস্ফোরক আইনের মামলায় জজ কোর্ট থেকে জামিন পায়নি কেউ। আমরা শুনানী করেছি। আদালত জামিনের আদেশ দিয়েছেন।’
এদিকে এই মামলার শুনানি ঘিরে আদালতে প্রাঙ্গনে সকাল থেকে কড়া নিরাপত্তা নেওয়া হয়েছিল। আদালত ভবনের তৃতীয় তলায় পুলিশ, বিজিবিসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। জামিন আদেশের পর আইনজীবীদের একাংশ আলিফ হত্যার বিচারের দাবিতে আদালত প্রাঙ্গনে বিক্ষোভ করেন।
গত বছরের ২৬ নভেম্বর রাস্ট্রদ্রোহ মামলায় বাংলাদেশ সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাশকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে ষষ্ঠ মহানগর কাজী শরীফুল ইসলামের আদালতে তোলা হলে আদালত তার জামিন নাকচ করে দেন। ওইদিন ওই আদেশের বিরুদ্ধে চিন্ময় কৃষ্ণ দাশকে বহনকারী প্রিজনভ্যান আটকে দিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকে তার অনুসারীরা। প্রায় ৩ ঘণ্টা ধরে চলে সেই বিক্ষোভ। একপর্যায়ে পুলিশ তাদেরকে ছত্রভঙ্গ করতে সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে। সেদিন আদালত প্রাঙ্গনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায় চিন্ময় অনুসারী ও ইসকন সদস্যরা। একপর্যায়ে মসজিদ ও আশেপাশের গাড়ি, দোকানপাটে ভাঙচুর করা হয়। ওইদিন বিকালে আদালতের প্রধান ফটকের বিপরীতে রঙ্গম কনভেনশন হলের গলিতে নৃশংসভাবে খুন হন আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ।
এ ঘটনায় গত ২৯ নভেম্বর রাতে কোতোয়ালি থানায় ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে তার বাবা জামাল উদ্দিন বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা এবং ভাই জানে আলম বাদী হয়ে একটি বিস্ফোরক আইনের মামলা দায়ের করেন। সেই মামলাতেই আজ ৬৩ জন আসামির জামিন দেন আদালত।
মনির/তাওফিক/