সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়
সরকারি আলিয়া মাদ্রাসার শিক্ষার্থী সাইফুদ্দিন মোহাম্মদ এমদাদ হত্যাচেষ্টার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়সহ ২০১ জনের বিরুদ্ধে নালিশি (সিআর) মামলার আবেদন করা হয়েছে।
মামলার অন্য আসামির তালিকায় সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, শেখ রেহানা, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, ওবায়দুল কাদের, সালমান এফ রহমান, আসাদুজ্জামান খান কামাল, শেখ ফজলে নূর তাপস, সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ, মনিরুল ইসলাম, শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, মসিউর রহমান, ড. গওহর রিজভী, ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী, ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী, হারুন অর রশিদ, বিপ্লব কুমার সরকার, নাঈমুল ইসলাম খান, নঈম নিজাম, শ্যামল দত্ত, সুভাষ সিংহ রায়ের নাম রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বাদী হয়ে মামলাটি করেন ফ্যাসিস্ট উৎখাত আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির প্রধান সমন্বয়ক ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কমিশন বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের সভাপতি এম এ হাশেম রাজু।
শুনানি শেষে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মনিরুল ইসলাম বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করেন। একই সঙ্গে এ ঘটনার বিষয়ে শাহবাগ থানায় কোনো নিয়মিত মামলা চলমান আছে কি না, তা জানতে চেয়ে আগামী সাত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গত ৪ আগস্ট বেলা সাড়ে ১১টায় স্বৈরাচার শেখ হাসিনার বিদায়ের লক্ষ্যে সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলন এক দফায় রূপ নেয়। এক দফা বাস্তবায়নের দাবিতে মামলার বাদীর নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার থেকে মামলার ঘটনাস্থল পরীবাগ হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনের মোড়ে এসে পৌঁছালে ওত পেতে থাকা মামলার আসামি ছাত্রলীগ, যুবলীগ, আওয়ামী লীগের বিভিন্ন স্তরের নেতা-কর্মীরা ফ্যাসিস্ট হাসিনার সহযোগী পুলিশসহকারে ভিকটিম ও তার সঙ্গীদের অবরোধ করেন। আসামিরা বাদী এবং ভিকটিমসহ অন্য ছাত্র-জনতাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলিবর্ষণ করেন। তারা তাদের লক্ষ্য করে হাতবোমা, পেট্রলবোমা ও ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটান। মিছিল ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশের কাঁদানে গ্যাস, পিপার স্প্রে ও ছররা গুলিতে মামলার ২ নং সাক্ষী এবং ভিকটিমের ডান চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তার ডান চোখের ভেতরে ছররা গুলি ঢোকে। ভিকটিম আহত চোখ নিয়ে রাস্তায় লুটিয়ে পড়লে অজ্ঞাতনামা ছাত্রলীগ, যুবলীগ এবং পুলিশ সদস্যরা তাকে বেদম মারধর করে। গুলি ও মারধরের দৃশ্য কাছ থেকে প্রত্যক্ষ করেন মামলার বাদী। তিনি আহত ভিকটিমকে উদ্ধার করে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তির জন্য যোগাযোগ করলে তাকে ভর্তি করাতে অপারগতা প্রকাশ করেন। ভিকটিম চিকিৎসাবঞ্চিত হয়ে ডান চোখের দৃষ্টিশক্তি হারান। অবস্থার আরও অবনতি ঘটলে বাদীর সহযোগিতায় তাকে গোপনে চট্টগ্রাম নিয়ে যান। পরবর্তী সময়ে হাসিনার পতনের সংবাদ জানতে পেরে ৫ আগস্ট তিনি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন। বাদী শাহবাগ থানায় মামলা করতে গেলে থানা কর্তৃপক্ষ তাকে আদালতে মামলা করার পরামর্শ দেয়।