ঢাকা ৮ চৈত্র ১৪৩১, শনিবার, ২২ মার্চ ২০২৫
English

গ্রেপ্তার কবি সোহেল হাসান গালিব কারাগারে

প্রকাশ: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০২:৫০ পিএম
গ্রেপ্তার কবি সোহেল হাসান গালিব কারাগারে
ছবি: সংগৃহীত

ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া কবি সোহেল হাসান গালিবকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের নির্দেশে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।

গতকাল শুক্রবার বিকেলে এ নির্দেশ দেন আদালত। গত বৃহস্পতিবার রাতে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ওই রাতেই তাকে ঢাকার মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে আনা হয়।

গ্রেপ্তারের পর শুক্রবার বিকেলে গালিবকে ঢাকার সিএমএম আদালতে হাজির করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিন রিমান্ড আবেদন করে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা (ডিবি) লালবাগ বিভাগ। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) হুমায়ুন কবির আদালতকে লিখিতভাবে জানান, আসামি সোহেল হাসান গালিব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে মহানবীকে (সা.) নিয়ে কটূক্তি করেন। তার লেখা একটি গ্রন্থেও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার মতো কবিতা ছাপা হয়েছে। আসামি কোন উদ্দেশ্যে এ ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড করেছেন, সেটি জানার জন্য তাকে ১০ দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা জরুরি।

অন্যদিকে আসামিপক্ষ থেকে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন নাকচ করে জামিনের আবেদন করা হয়। উভয় পক্ষের শুনানির পর আদালত রিমান্ড আবেদন নাকচ করেন এবং সোহেল হাসান গালিবকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। ধর্মীয় অবমাননার বিষয়ে আগামী সাত দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

জানা গেছে, এবারের বইমেলায় প্রকাশিত একটি বইয়ে গালিবের লেখা একটি কবিতা ঘিরে সমালোচনা শুরু হয়। তার বিরুদ্ধে ‘মহানবীকে কটাক্ষ’ করার অভিযোগ ওঠে। বইটি প্রকাশ করেছে প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান ‘উজান’। নিরাপত্তার শঙ্কায় স্টলটি বন্ধ রাখা হয়েছে।

মামলার বোঝা থেকে এখন মুক্ত তারেক রহমান

প্রকাশ: ২১ মার্চ ২০২৫, ০৯:০২ এএম
আপডেট: ২১ মার্চ ২০২৫, ০৯:০৩ এএম
মামলার বোঝা থেকে এখন মুক্ত তারেক রহমান
তারেক রহমান

বসুন্ধরা গ্রুপের তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ সাব্বির আহমেদ হত্যা মামলার আসামিদের বাঁচাতে ২১ কোটি টাকা ঘুষ গ্রহণের মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ আটজনকে খালাস দিয়েছেন আদালত। 

গতকাল বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৩-এর বিচারক আবু তাহেরের আদালত এ রায় দেন। এর মধ্য দিয়ে সব মামলার বোঝা থেকে মুক্ত হলেন তারেক রহমান। 

খালাস পাওয়া অন্যরা হলেন- বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান ওরফে শাহ আলম ও তার দুই ছেলে সাফিয়াত সোবহান এবং সাদাত সোবহান, আবু সুফিয়ান, কাজী সালিমুল হক কামাল ওরফে ইকোনো কামাল, তারেক রহমানের সাবেক একান্ত সহকারী সচিব (এপিএস) মিয়া নুরুদ্দিন অপু। 

মামলার রায়ের পর তার আইনজীবী ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা বোরহানউদ্দিন খবরের কাগজকে বলেন, তারেক রহমানের বিরুদ্ধে দেশে আর কোনো মামলা নেই। মিথ্যা মামলার বোঝা থেকে তিনি সম্পূর্ণভাবে মুক্ত হয়েছেন। এখন তিনি দেশে ফেরার অপেক্ষায় আছেন। দেশবাসীও তাকে সাদরে বরণ করার অপেক্ষায় রয়েছে। 

আদালত সূত্রে জানা গেছে, মামলার রায় ঘোষণার আগে কাজী সলিমুল হক কামাল ও আবু সুফিয়ান এজলাসে হাজির ছিলেন। জামিনে থাকা অপর আসামিদের পক্ষে সময়ের আবেদন করা হয়।

২০০৭ সালের ৪ অক্টোবর এ মামলাটি করে দুদক। পরের বছরের ২৪ এপ্রিল আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা। একই বছরের ১৪ জুলাই আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। ফলে শুরু হয় মামলার আনুষ্ঠানিক বিচার।

অভিযোগপত্রে বলা হয়, বসুন্ধরা গ্রুপের তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ সাব্বির হত্যা মামলার ঘটনা ধামাচাপা দিতে তারেক, বাবর ও শাহ আলমের মধ্যে বাবরের বেইলি রোডের সরকারি বাসায় একটি বৈঠক হয়। বৈঠকে শাহ আলমের কাছে ১০০ কোটি টাকা দাবি করেন তারেক ও বাবর। ৫০ কোটি টাকার বিনিময়ে এই হত্যা রহস্য ধামাচাপা দেওয়ার জন্য তারেক ও বাবরের সঙ্গে শাহ আলমের চুক্তি হয়। চুক্তি অনুসারে শাহ আলমের কাছ থেকে বাবর ২১ কোটি টাকা গ্রহণ করেন। এ টাকার মধ্যে বাবরের নির্দেশে বসুন্ধরা গ্রুপের পরিচালক আবু সুফিয়ান ২০০৬ সালের ২০ আগস্ট হাওয়া ভবনে ১ কোটি টাকা তারেকের এপিএস অপুকে বুঝিয়ে দেন। বাবর ৫ কোটি টাকা আবু সুফিয়ানের মাধ্যমে নগদ গ্রহণ করে কাজী সালিমুল হক কামালের কাছে জমা রাখেন। বাকি ১৫ কোটি টাকা বাবরের নির্দেশে আবু সুফিয়ান প্রাইম ব্যাংকের বিভিন্ন শাখায় সালিমুল হক কামালকে ২০টি চেকের মাধ্যমে প্রদান করেন। 

প্রসঙ্গত, বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকারের সময় (২০০১-২০০৬) তারেক বেশ প্রভাব বিস্তার করেছিলেন। তার রাজনৈতিক কার্যালয় হাওয়া ভবন বিকল্প শক্তির কেন্দ্র হয়ে উঠেছিল।

তবে, সেনা-সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দুর্নীতিবিরোধী অভিযানের সময় ২০০৭ সালের ৭ মার্চ দুর্নীতি ও চাঁদাবাজির অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়ার পর দৃশ্যপট বদলে যায়।

২০০৮ সালের সেপ্টেম্বরে সেনা-সমর্থিত এক-এগারোর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলের একাধিক দুর্নীতির মামলা থেকে জামিনে মুক্তি পেয়ে চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্যের উদ্দেশে দেশ ছাড়েন তারেক। ওই সময় তিনি সক্রিয় রাজনীতি থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছিলেন। পরে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দলের নেতৃত্বের হাল ধরেন তিনি।

এক-এগারো সরকার এবং পরবর্তী আওয়ামী লীগ সরকার তারেকের বিরুদ্ধে প্রায় ৮৫টি মামলা করেছিল।

এদিকে, তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া চিকিৎসার জন্য চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি লন্ডনে যাওয়ার পর থেকে তারেকের বাড়িতেই অবস্থান করছেন। সেখানে ঈদের ছুটি কাটিয়ে মা ও ছেলে দুজনে একসঙ্গে ফিরবেন বলে জল্পনা থাকলেও বিএনপি নেতারা এই সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দিয়েছেন।

মনিটরিং কমিটি ফর সাবঅর্ডিনেট কোর্টস

প্রকাশ: ২১ মার্চ ২০২৫, ১২:১৫ এএম
মনিটরিং কমিটি ফর সাবঅর্ডিনেট কোর্টস
ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি দেশের ৮টি বিভাগের জন্য হাইকোর্ট বিভাগের একজন বিচারপতিকে প্রধান করে পৃথক ৮টি Monitoring Committee for Subordinate Courts পুনর্গঠন করেন। বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট, হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি মো. জাহাঙ্গীর হোসেনকে ঢাকা-১ বিভাগের দায়িত্ব প্রদান করা হয়। গত ১১/১২/২০২৪ তারিখের ৩৪/২০২৪ জে নং এক বিজ্ঞপ্তিতে এ বিষয়টি জানানো হয়।

Monitoring Committee for Subordinate Courts-এর ঢাকা-১ বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিচারপতি মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) ঢাকা জেলার জেলা ও দায়রা জজ আদালত, ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতসহ অন্যান্য আদালত মনিটরিং/পরিদর্শন করেন এবং দিক নির্দেশনামূলক বক্তব্য দেন।

বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত চলে এবং সব বিচারকে নিয়ে বিকাল সাড়ে ৩টায় শহিদ জগন্নাথ-সোহেল স্মৃতি  মিলনায়তনে সব বিচারকদের উপস্থিতিতে সমাপনী বক্তব্যের মধ্য দিয়ে শেষ হয়।

এতে উপস্থিত ছিলেন- ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ মো. হেলাল উদ্দিন,মহানগর দায়রা জজ মো. জাকির হোসেন গালিব, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নূরে আলম ভূইয়া, চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমানসহ অন্যান্য বিচারকরা।

এসময় বিচারপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন ঢাকা আইনজীবী সমিতির সভাপতি খোরশেদ মিয়া আলম, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ নজরুল ইসলাম ও  ঢাকা জেলার পাবলিক প্রসিকিউটর ইকবাল হোসেন।

টি স্পোর্টস, নাগরিক টিভি ও টফির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হাইকোর্টের নির্দেশ

প্রকাশ: ২০ মার্চ ২০২৫, ১০:০৬ পিএম
আপডেট: ২০ মার্চ ২০২৫, ১০:৩৬ পিএম
টি স্পোর্টস, নাগরিক টিভি ও টফির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হাইকোর্টের নির্দেশ
ছবি: সংগৃহীত

বিচারপতি ফাহমিদা কাদের এবং বিচারপতি মুবিনা আসাফের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ টি স্পোর্টস, নাগরিক টিভি এবং বাংলালিংকের টফির চ্যানেলে অবৈধভাবে ক্রিকেটের প্রচার সত্ব ক্রয় ও সম্প্রচারের বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। দুবাইভিত্তিক কোম্পানি টোটাল স্পোর্টস মার্কেটিং (টিএসএম) এবং পলাতক ডিআইজি সৈয়দ নুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে অর্থ পাচার, কর ফাঁকির অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত এই আদেশ দেন।

ডিআইজি নুরুল, জুলাই গণহত্যায় জড়িত পলাতক একজন পুলিশ কর্মকর্তা, তার ঘনিষ্ঠ আত্মীয় মইনুল হক চৌধুরীকে দিয়ে দুবাইতে টোটাল স্পোর্টস মার্কেটিং নামে একটি কোম্পানি (TSM) প্রতিষ্ঠা করেন। টিএসএম ডিআইজি নুরুলের দুর্নীতির অবৈধ অর্থ ব্যবহার করে বিভিন্ন ক্রিকেট টুর্নামেন্টের সম্প্রচার স্বত্ব অর্জন করেছিলেন, যার মধ্যে রয়েছে উল্লেখযোগ্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ওয়েস্ট ইন্ডিজ অনুষ্ঠিত আইসিসি বিশ্বকাপ ২০২৪ এবং দুবাই, পাকিস্তানে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ২০২৫। 

বাংলাদেশ থেকে অবৈধভাবে এইসব তহবিল স্থানান্তর করে আইসিসিকে প্রদান করা হয়েছিল মূলত হুন্ডির মাধ্যমে এবং আংশিকভাবে তা করা হয়েছিল আন্ডার-ইনভয়েসিংয়ের মাধ্যমে, ব্যাংকিং চ্যানেল এবং সরকারি কর এড়িয়ে। দুবাইভিত্তিক টিএসএম, যা নিয়ন্ত্রকদের ফাঁকি দিতেই বাংলাদেশে তাদের নাম পরিবর্তন করে টোটাল স্পোর্টস ম্যানেজমেন্ট নাম দিয়ে বাংলাদেশি সম্প্রচারকদের কাছে এই সব খেলার সত্ব সরবরাহ করেছিল। বাংলালিংক, টি স্পোর্টস এবং নাগরিক টিভি ডিআইজি নুরুলের দুর্নীতির অর্থের অবৈধ উৎস নিয়ে বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রকাশিত সংবাদ জানা সত্ত্বেও এই অনুষ্ঠানগুলি সম্প্রচার করেছিল। আদালত বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) কে বিষয়টি অবিলম্বে তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছে।

নোটিশে ২০১৪ সালে পরিবেশ কর্মী ও বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের স্বামী আবু বাকের সিদ্দিকের অপহরণের ঘটনায় ডিআইজি নুরুলের জড়িত থাকার বিষয়টিও প্রকাশ করা হয়েছে। ডিআইজি নুরুলের অবৈধ কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ওমর ফারুক অনিক একটি ন্যায়বিচার দাবির নোটিশ দাখিল করার পর আদালতের এই নির্দেশনা আসে।

মাহফুজ

আমু ও তার পরিবারের সদস্যের বিরুদ্ধে দুদকের ৩ মামলা

প্রকাশ: ২০ মার্চ ২০২৫, ০৯:৪৭ পিএম
আপডেট: ২০ মার্চ ২০২৫, ১০:০৬ পিএম
আমু ও তার পরিবারের সদস্যের বিরুদ্ধে দুদকের ৩ মামলা
আমির হোসেন আমু

অবৈধ উপায়ে প্রায় ৩৯ কোটি টাকার সম্পদ অর্জন ও ৪৫টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অন্তত ১৪২ কোটি টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের অভিযোগে সাবেক শিল্পমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আমির হোসেন আমু এবং তার পরিবারের তিন সদস্যের বিরুদ্ধে তিনটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। 

বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১-এ পৃথকভাবে মামলাগুলো করা হয়। অপর দুই মামলায় আসামি হলেন আমির হোসেন আমুর মেয়ে সুমাইয়া হোসেন ও শ্যালিকা সৈয়দা হক মেরী। দুদকের মুখপাত্র ও মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) আক্তার হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। 

আমির হোসেন আমুর বিরুদ্ধে করা মামলায় বলা হয়েছে, তিনি ক্ষমতার অপব্যবহার ও ঘুষ-দুর্নীতির মাধ্যমে ২৬ কোটি ২৭ লাখ ৮১ হাজার ৪৬১ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন। এ ছাড়া তার নিজের ১৪টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ৩১ কোটি ৪৭ লাখ ৯২ হাজার ৭০৮ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন করা হয়েছে। তিনি এসব অর্থ-সম্পদ গোপনে স্থানান্তর, রূপান্তর ও হস্তান্তর করেছেন, যা দুদকের আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
 
আমুর মেয়ে সুমাইয়া হোসেনের বিরুদ্ধে করা মামলায় বলা হয়, তিনি তার বাবার সহযোগিতায় ক্ষমতার অপব্যবহার করে ঘুষ-দুর্নীতির মাধ্যমে ৪ কোটি ৪৩ লাখ ৫২ হাজার ৮১ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন। তার নিজের ১৮টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ৪৮ কোটি ৪৯ লাখ ৫৯ হাজার ৬৪২ টাকা সন্দেহজনক লেনদেন করা হয়েছে। এই অর্থ-সম্পদ গোপনে স্থানান্তর, রূপান্তর ও হস্তান্তর করেছেন। এ মামলায় আমির হোসেন আমুকেও আসামি করা হয়েছে।
 
এদিকে আমির হোসেন আমুর শ্যালিকা সৈয়দা হক মেরীও ৭ কোটি ৬৬ লাখ ৯১ হাজার ৬৭০ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন উল্লেখ করে আরেকটি মামলা করা হয়েছে। তার নিজের ১৩টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ৬২ কোটি ৬৮ লাখ ৪১৭ টাকা সন্দেহজনক লেনদেন করা হয়েছে। মেরী তার ভগ্নিপতি আমির হোসেন আমুর সহযোগিতায় এই অর্থ-সম্পদের মালিক হয়েছেন। এসব অর্থ-সম্পদ গোপনে স্থানান্তর, রূপান্তর ও হস্তান্তর করা হয়েছে। ফলে এ মামলাতেও আমির হোসেন আমুকে সহযোগী আসামি করা হয়েছে।

মাহফুজ/

হাসিনা-জয়সহ ২০১ জনের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টার মামলা

প্রকাশ: ২০ মার্চ ২০২৫, ০৮:৪৫ পিএম
হাসিনা-জয়সহ ২০১ জনের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টার মামলা
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়

সরকারি আলিয়া মাদ্রাসার শিক্ষার্থী সাইফুদ্দিন মোহাম্মদ এমদাদ হত্যাচেষ্টার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়সহ ২০১ জনের বিরুদ্ধে নালিশি (সিআর) মামলার আবেদন করা হয়েছে।

মামলার অন্য আসামির তালিকায় সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, শেখ রেহানা, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, ওবায়দুল কাদের, সালমান এফ রহমান, আসাদুজ্জামান খান কামাল, শেখ ফজলে নূর তাপস, সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ, মনিরুল ইসলাম, শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, মসিউর রহমান, ড. গওহর রিজভী, ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী, ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী, হারুন অর রশিদ, বিপ্লব কুমার সরকার, নাঈমুল ইসলাম খান, নঈম নিজাম, শ্যামল দত্ত, সুভাষ সিংহ রায়ের নাম রয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বাদী হয়ে মামলাটি করেন ফ্যাসিস্ট উৎখাত আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির প্রধান সমন্বয়ক ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কমিশন বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের সভাপতি এম এ হাশেম রাজু। 

শুনানি শেষে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মনিরুল ইসলাম বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করেন। একই সঙ্গে এ ঘটনার বিষয়ে শাহবাগ থানায় কোনো নিয়মিত মামলা চলমান আছে কি না, তা জানতে চেয়ে আগামী সাত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দেন।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গত ৪ আগস্ট বেলা সাড়ে ১১টায় স্বৈরাচার শেখ হাসিনার বিদায়ের লক্ষ্যে সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলন এক দফায় রূপ নেয়। এক দফা বাস্তবায়নের দাবিতে মামলার বাদীর নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার থেকে মামলার ঘটনাস্থল পরীবাগ হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনের মোড়ে এসে পৌঁছালে ওত পেতে থাকা মামলার আসামি ছাত্রলীগ, যুবলীগ, আওয়ামী লীগের বিভিন্ন স্তরের নেতা-কর্মীরা ফ্যাসিস্ট হাসিনার সহযোগী পুলিশসহকারে ভিকটিম ও তার সঙ্গীদের অবরোধ করেন। আসামিরা বাদী এবং ভিকটিমসহ অন্য ছাত্র-জনতাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলিবর্ষণ করেন। তারা তাদের লক্ষ্য করে হাতবোমা, পেট্রলবোমা ও ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটান। মিছিল ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশের কাঁদানে গ্যাস, পিপার স্প্রে ও ছররা গুলিতে  মামলার ২ নং সাক্ষী এবং ভিকটিমের ডান চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তার ডান চোখের ভেতরে ছররা গুলি ঢোকে। ভিকটিম আহত চোখ নিয়ে রাস্তায় লুটিয়ে পড়লে অজ্ঞাতনামা ছাত্রলীগ, যুবলীগ এবং পুলিশ সদস্যরা তাকে বেদম মারধর করে। গুলি ও মারধরের দৃশ্য কাছ থেকে প্রত্যক্ষ করেন মামলার বাদী। তিনি আহত ভিকটিমকে উদ্ধার করে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তির জন্য যোগাযোগ করলে তাকে ভর্তি করাতে অপারগতা প্রকাশ করেন। ভিকটিম চিকিৎসাবঞ্চিত হয়ে ডান চোখের দৃষ্টিশক্তি হারান। অবস্থার আরও অবনতি ঘটলে বাদীর সহযোগিতায় তাকে গোপনে চট্টগ্রাম নিয়ে যান। পরবর্তী সময়ে হাসিনার পতনের সংবাদ জানতে পেরে ৫ আগস্ট তিনি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন। বাদী শাহবাগ থানায় মামলা করতে গেলে থানা কর্তৃপক্ষ তাকে আদালতে মামলা করার পরামর্শ দেয়।