
রাজধানীর রমনা পার্কে বাংলা নববর্ষের অনুষ্ঠানে বোমা হামলার ঘটনায় করা হত্যা মামলায় আসামিদের ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন) ও আপিলের ওপর যেকোনো দিন রায় ঘোষণা (সিএভি) করা হবে।
মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) এ নির্দেশ দেন আদালত।
আদালতে আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী এস এম শাহজাহান, সরওয়ার আহমেদ ও মোহাম্মদ শিশির মনির। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল (ডিএজি) সুলতানা আক্তার রুবী ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসিফ ইমরান জিসান। আদালত থেকে বের হওয়ার পর আইনজীবীরা এ তথ্য জানান।
হাইকোর্টে রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি নাসরিন আক্তারের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
প্রায় দুই যুগ আগে ২০০১ সালের ১৪ এপ্রিল রমনার বটমূলে পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠানে বোমা হামলার ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় ঘটনাস্থলেই ৯ জন নিহত হন, পরে হাসপাতালে মারা যান আরও একজন।
হাইকোর্টে ওই ঘটনায় করা হত্যা মামলায় পেপারবুক (মামলার বৃত্তান্ত) প্রস্তুতসহ আনুষঙ্গিক প্রক্রিয়ার পর ডেথ রেফারেন্স ও আসামিদের আপিল ২০১৬ সালে হাইকোর্টের একটি দ্বৈত বেঞ্চে প্রথম শুনানির জন্য ওঠে। পরে যথারীতি এ মামলার শুনানিও শুরু হয়। তবে পরে কার্যতালিকা থেকে মামলাটি বাদ দেওয়া হয়। আলোচিত এ মামলায় এ নিয়ে আট আসামির ডেথ রেফারন্স (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন) ও আপিল হাইকোর্টের তিনটি বেঞ্চের কার্যতালিকায় উঠলেও শুনানি শেষে মামলাটি নিষ্পত্তি হয়নি। এরপর আসামিদের ডেথ রেফারেন্স ও আপিল শুনানির জন্য হাইকোর্টের ওই দ্বৈত বেঞ্চে ২০২৪ সালের ৮ ডিসেম্বর কার্যতালিকায় ওঠে। পেপারবুক উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে শুনানি শুরু হয়, যা শুনানি শেষে রায়ের জন্য সিএভি রেখে মঙ্গলবার আদেশ দেন উচ্চ আদালত।
২০১৪ সালের ২৩ জুন ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ রুহুল আমিন রাজধানীর রমনা বটমূলে বোমা হামলার ঘটনায় করা হত্যা মামলায় রায় দেন। রায়ে আটজনের মৃত্যুদণ্ড এবং ছয়জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। মৃত্যুদণ্ডের রায় হওয়া আসামিরা হলেন, মুফতি হান্নান, আকবর হোসেন, আরিফ হাসান সুমন, সাবেক উপমন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টুর ভাই মো. তাজউদ্দিন, হাফেজ জাহাঙ্গীর আলম বদর, আবু বকর ওরফে হাফেজ সেলিম হাওলাদার, আবদুল হাই ও শফিকুর রহমান। সিলেটে গ্রেনেড হামলার মামলায় মুফতি হান্নানের মৃত্যুদণ্ড ইতোমধ্যে কার্যকর হয়েছে।
আর বিচারিক আদালতের রায়ে যাবজ্জীবন দণ্ডিতরা হলেন, শাহাদাতউল্লাহ জুয়েল, সাব্বির, শেখ ফরিদ, আবদুর রউফ, ইয়াহিয়া ও আবু তাহের।
বিচারিক আদালতের রায়ের পর আসামিদের মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের (ডেথ রেফারেন্স) জন্য রায়সহ নথিপত্র হাইকোর্টে আসে, যা ২০১৪ সালে ডেথ রেফারেন্স মামলা হিসেবে নথিভুক্ত হয়। এরপর শুনানির পূর্বপ্রস্তুতি হিসেবে পেপারবুক (মামলার বৃত্তান্ত) তৈরি করা হয়। অন্যদিকে কারাগারে থাকা আসামিরা পৃথক আপিল ও জেল আপিল করেন। ডেথ রেফারেন্স, আপিল ও জেল আপিলের শুনানি শেষে রায়ের জন্য মামলাটি সিএভি রেখে মঙ্গলবার আদেশ দেন হাইকোর্ট।