
মহান মুক্তিযুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা এ টি এম আজহারুল ইসলামের রিভিউ আবেদন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের আগামীকাল বৃহস্পতিবারের কার্যতালিকায় এসেছে। মৃত্যুদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে তার করা রিভিউ আবেদনটি বৃহস্পতিবারের কার্যতালিকায় ৯ নম্বর ক্রমিকে আছে। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চের কার্যতালিকায় এসেছে মামলাটি।
বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত আপিল বিভাগের আজকের কার্যতালিকা থেকে এ তথ্য জানা যায়।
জামায়াত নেতা এ টি এম আজহারুল ইসলামের পক্ষে শুনানি করবেন সিনিয়র আইনজীবী ও জামায়াতের সাবেক নেতা ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক। দীর্ঘদিন প্রবাসে থেকে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশে ফেরেন তিনি।
মুক্তিযুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে এ টি এম আজহারুল ইসলামকে মৃত্যুদণ্ড দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। ২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর ওই রায় দেন ট্রাইব্যুনাল। পরে ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন আজহার। আপিল আবেদনের ওপর শুনানি শেষে তার মৃত্যুদণ্ডের রায় বহাল রেখে ২০১৯ সালের ২৩ অক্টোবর রায় দেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। পরে ওই রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ আবেদন করেন তিনি। গত ২৩ জানুয়ারি আপিল বিভাগ শুনানির জন্য ২০ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, মুক্তিযুদ্ধে রংপুর অঞ্চলে ১ হাজার ২৫৬ ব্যক্তিকে গণহত্যা, হত্যা, ১৭ জনকে অপহরণ, একজনকে ধর্ষণ, ১৩ জনকে আটক, নির্যাতন ও গুরুতর জখম এবং শত শত বাড়ি-ঘরে লুণ্ঠন ও অগ্নিসংযোগের মতো ৯ ধরনের ছয়টি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয় এ টি এম আজহারের বিরুদ্ধে। এসব অভিযোগের মধ্যে প্রথমটি ছাড়া বাকি পাঁচটি অপরাধে ট্রাইব্যুনাল মৃত্যুদণ্ড দেন। তবে একে প্রহসনের রায় বলে আখ্যায়িত করে আসছে তার দল জামায়াতে ইসলামী।
জামায়াত নেতার দ্রুত মুক্তির দাবিতে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি সারা দেশে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন দলটির নেতা-কর্মীরা। তাদের দাবি, অন্যায়ভাবে এ টি এম আজহারকে ১৩ বছর ধরে কারাগারে রেখেছে আওয়ামী লীগ সরকার। আওয়ামী লীগের পতনের পর ছয় মাস পার হলেও তার মুক্তি না মেলায় তারা বাধ্য হয়ে রাজপথে নেমেছেন। সেই সঙ্গে তার মুক্তি না হওয়া পর্যন্ত রাজপথে থাকারও ঘোষণা দিয়েছেন জামায়াতের নেতা-কর্মীরা।