
রাজধানীর উত্তরার বাড়িতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাবেক প্রসিকিউটর তুরিন আফরোজের মা শামসুন্নাহার বেগম এবং ভাই শিশির আহমেদ শাহনেওয়াজের বসবাস নিয়ে বিচারিক আদালতের একটি স্থিতাবস্থার আদেশ ছিল। ওই আদেশ বাতিল করে বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) রায় দিয়েছেন উচ্চ আদালত।
আইনজীবীরা জানিয়েছেন, হাইকোর্টের এই রায়ের ফলে ওই বাড়িতে ব্যারিস্টার তুরিনের মা শামসুন্নাহার বেগম ও ভাই শিশির আহমেদের বসবাসের ক্ষেত্রে আর কোনো আইনি বাধা নেই।
বিচারপতি মো. সেলিমের একক হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন। এ বিষয়ে জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করে এই রায় দেন আদালত।
আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন চার আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, বি এম ইলিয়াস কচি, মনজুর রাব্বী ও আতিকুল হক। আর তুরিন আফরোজের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মোহাম্মদ সাইফুল করিম।
আদালত থেকে বের হওয়ার পর গণমাধ্যমকে আতিকুল হক বলেন, ২০০২ সাল থেকে উত্তরার ১১ নম্বর সড়কের ৩ নম্বর সেক্টরের ১৫ নম্বর প্লটের পাঁচতলা বাড়িতে বসবাস করে আসছিলেন শামসুন্নাহার বেগম এবং তার ছেলে শিশির আহমেদ শাহনেওয়াজ। তবে নিজের ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে শামসুন্নাহার বেগম ও শাহনেওয়াজকে ওই বাড়ি থেকে ২০১৭ সালে বের করে দেন তুরিন আফরোজ। পরে ওই বাড়ির ভোগদখল ও মালিকানা দাবি করে শাহনেওয়াজ ও তুরিন আফরোজ ঢাকার যুগ্ম জেলা জজ আদালতে দুটি দেওয়ানি মামলা করেন। পরের বছর ২০১৮ সালের ১১ অক্টোবর দুই পক্ষের আবেদনের শুনানি নিয়ে ওই বাড়ি ভোগদখলের ক্ষেত্রে স্থিতাবস্থা জারি করেন ঢাকার পঞ্চম যুগ্ম জেলা জজ আদালত। এরপর যুগ্ম জেলা জজ আদালতের আদেশের বিরুদ্ধে জেলা জজ আদালতে আবেদন করেন শাহনেওয়াজ। পরে ২০২৩ সালের ১৯ জানুয়ারি যুগ্ম জেলা জজ আদালতের আদেশ বহাল রাখেন জেলা জজ আদালত। ওই বছর মার্চে জেলা জজ আদালতের স্থিতাবস্থার আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে সিভিল রিভিশন দায়ের করেন শাহনেওয়াজ। পরে ওই বছরের ২ এপ্রিল হাইকোর্টের একটি একক বেঞ্চ উত্তরায় ওই বাড়ি ভোগদখলের ক্ষেত্রে স্থিতাবস্থার আদেশ কেন অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন। পরবর্তী সময়ে মামলাটি হাইকোর্টের বিচারপতি মো. সেলিমের একক বেঞ্চে আসে। ওই রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে একক বেঞ্চ রুল যথাযথ (অ্যাবসুলেট) ঘোষণা করে স্থিতাবস্থা বাতিল করে বুধবার রায় দেন।
আইনজীবীরা জানান, এর ফলে ওই বাড়িতে শাহনেওয়াজ ও তার মা শামসুন্নাহার বেগমের বসবাসের ক্ষেত্রে আইনহত কোনো বাধা নেই। বাড়ির ভোগদখল ও মালিকানা দাবি করে দায়ের করা দুটি মামলা বিচারিক আদালতে স্বাভাবিক নিয়মে চলবে।