
অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে যারা ব্যবসা করেন, তাদের জন্য ৯ নির্দেশনা দিয়েছেন হাইকোর্ট। আলোচিত নারী উদ্যোক্তা রোবাইয়াত ফাতেমা তনির মালিকাধীন শোরুম ‘সানভিস বাই তনি’ খুলে দেওয়ার নির্দেশনা-সংক্রান্ত রুল নিষ্পত্তি করে এ রায় দেন আদালত। বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি এস এম মাসুদ হোসেন দোলনের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
সোমবার (১০ মার্চ) মামলার অন্যতম আইনজীবী লুবনা ইয়াসমিন দৈনিক খবরের কাগজকে এসব তথ্য জানান।
রায়ে ‘সানভিস বাই তনি’র ব্যবসা পরিচালনা করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। আইন অনুসারে যথাযথ পর্যবেক্ষণের জন্য প্রতি মাসে অন্তত একবার রোবাইয়াত ফাতেমা তনির ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করার নির্দেশ দেওয়া হয়।
আদালতে তনির পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. খালেকুজ্জামান। অপরপক্ষে ছিলেন আইনজীবী লুবনা ইয়াসমিন। তিনি ‘সানভিস বাই তনি’র বিরুদ্ধে দেশে তৈরি পোশাক পাকিস্তানি বলে বেশি দামে বিক্রির অভিযোগ আনেন।
তার আনা প্রতারণার এই অভিযোগে গুলশানের ‘সানভিস বাই তনি’ শোরুম বন্ধ করে দেয় জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। অধিদপ্তরের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আবেদন করেন ‘সানভিস বাই তনি’র মালিক। ওই আবেদনের ওপর শুনানি নিয়ে এই ৯ দফা নির্দেশনাসহ আদেশ দেন আদালত।
আদালতের দেওয়া নির্দেশনা হলো-
১. সবাইকে বাংলাদেশের প্রচলিত আইন মেনে চলতে হবে। অনলাইন মালিক এবং ভোক্তাদের মধ্যে সম্পর্ক বজায় রাখতে হবে।
২. অনলাইন ব্যবসা পরিচালনায় আইন লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে, ক্ষতিগ্রস্ত পক্ষ আইনের সমান সুরক্ষা লাভের অধিকারী হবে।
৩. প্রত্যেক নাগরিকের যেকোনো বৈধ ব্যবসা পরিচালনার অধিকার থাকবে। আইনের যথাযথ প্রক্রিয়া ছাড়া তার ব্যবসা বন্ধ করা যাবে না।
৪. ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ বিভাগের উচিত সব অনলাইন ব্যবসায়ী/মালিক/সদস্যকে নিবন্ধনের আওতায় আনার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা এবং তাদের অনলাইন ব্যবসা পরিচালনার জন্য অনুমোদন দেওয়া।
৫. এটি নিশ্চিত করতে হবে যে, কেউ কোনো অনলাইন প্ল্যাটফর্মে তাদের অননুমোদিত অনলাইন ব্যবসা চালাতে, এমনকি শুরু করতেও পারবে না। এটি নিশ্চিত করা অপরিহার্য যে কোনো পোশাক বিক্রেতা বিদেশি আসল পণ্য নকল না করতে পারে এবং নকল পণ্য আসল হিসেবে বিক্রি করতে অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার না করে।
৬. এই আইনি পরিকল্পনায় নিশ্চিত করতে হবে যে, সব ধরনের অনলাইন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানকে তাদের প্রশাসক, মালিক এবং ভোক্তাদের ব্যক্তিগত জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে যাচাই করা উচিত।
৭. বিটিআরসির মতো সংশ্লিষ্ট সরকারি নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষকে অনলাইন ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মগুলোর সঙ্গে সহযোগিতা করে অনলাইন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলোর তথ্য সংরক্ষণ করতে হবে।
৮. সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে যে, তারা অনলাইন গ্রাহকদের সচেতন করে তুলবে, যেন অনলাইন ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে প্রতারণার শিকার না হয়। গ্রাহকদের অনুমোদন/নিবন্ধন ছাড়া অনলাইন দোকান বা অনলাইন উদ্যোগ বা অনলাইন সরবরাহকারীদের কাছ থেকে কোনো পণ্য ক্রয় করা উচিত নয়।
৯. ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ বিভাগের উচিত প্রতারণা করা অনলাইন ব্যবসায়ীদের তাদের অপরাধের জন্য বিচার করার জন্য ভোক্তা অধিকার সুরক্ষা আইন, ২০০৯-এর প্রয়োজনীয় আইনের বিধান সন্নিবেশ করানো।