ঢাকা ৫ বৈশাখ ১৪৩২, শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫
English
শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ৫ বৈশাখ ১৪৩২

ডিপ্লোমা সনদধারীরা নামের আগে ডাক্তার ব্যবহার করতে পারবেন না

প্রকাশ: ১২ মার্চ ২০২৫, ০১:২০ পিএম
ডিপ্লোমা সনদধারীরা নামের আগে ডাক্তার ব্যবহার করতে পারবেন না
ফাইল ছবি

অন্ততপক্ষে এমবিবিএস অথবা বিডিএস ডিগ্রিপ্রাপ্ত না হলে কেউ ডাক্তার পদবি ব্যবহার করতে পারবেন না বলে রায় দিয়েছেন উচ্চ আদালত। মেডিকেল ও ডেন্টাল কাউন্সিল আইনের এমন বিধান প্রশ্নে জারি করা রুলের ওপর শুনানি নিয়ে এই রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। 

বুধবার (১২ মার্চ) বিচারপতি রাজিক আল জলিল ও বিচারপতি সাথীকা হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।

তবে এ যাবত যারা এ পদবি ব্যবহার করেছেন তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে না বলে রায়ে উল্লেখ করেছেন হাইকোর্ট। রায়ের পর ব্যবহার করলে এখন থেকে শাস্তির ব্যবস্থা করতে পারবে বলেও উল্লেখ করেছেন আদালত।

এর আগে মেডিকেল ও ডেন্টাল কাউন্সিল আইনের বিধান- ন্যূনতম এমবিবিএস অথবা বিডিএস ডিগ্রিপ্রাপ্ত ছাড়া অন্য কেউ তাদের নামের আগে ডাক্তার পদবি ব্যবহার করতে পারবেন না বিষয়ে রুলের ওপর শুনানি নেন আদালত।

উল্লেখ্য 'ডিএমএফ’ ডিগ্রিধারীদের নামের আগে ডাক্তার ব্যবহারকে কেন্দ্র করে আইনটির বৈষম্যমূলক প্রয়োগ নিয়ে এক যুগ আগে করা অপর রিটেরও শুনানি সম্পন্ন হয়। দুটি পৃথক রিটের ওপর একসঙ্গে শুনানি শেষে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট একই বেঞ্চ রায়ের জন্য আজ ১২ মার্চ দিন ধার্য করেছেন।

এর আগে ২০১০ সালের ডিসেম্বরে বাংলাদেশ মেডিকেল ও ডেন্টাল কাউন্সিল আইন হয়। ‘ডিএমএফ’ ডিগ্রিধারীদের (ডিপ্লোমাধারী হিসেবে নিবন্ধিত) ক্ষেত্রে আইনটির বৈষম্যমূলক প্রয়োগের অভিযোগ নিয়ে বাংলাদেশ ডিপ্লোমা মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের তৎকালীন আহ্বায়ক শামসুল হুদাসহ অন্যরা ২০১৩ সালে একটি রিট করেন। ওই আইনের ২৯ ধারার বৈধতা নিয়ে বাংলাদেশ ডিপ্লোমা মেডিকেল অ্যাসোসিশনের সভাপতি ও সেক্রেটারি গত বছর অপর একটি রিট করেন।

প্রথম রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২০১৩ সালের ১১ মার্চ হাইকোর্ট রুলসহ অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ দেন। দ্বিতীয় রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত বছরের ২৫ নভেম্বর হাইকোর্ট রুল দেন। রুলে আইনের ২৯ ধারা কেন সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়। রুলের ওপর একসঙ্গে শুনানি হয়।

আদালতে রিটের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির ও মোহাম্মদ সাদ্দাম হোসেন শুনানি করেন। আর প্রথম রিটের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী মো. সাইদুর রহমান। রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল (ডিএজি) এ এফ এম সাইফুল করিম শুনানি করেন। বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের পক্ষে আইনজীবী কাজী এরশাদুল আলম শুনানি করেন।

রিট আবেদনকারীদের আইনজীবী মোহাম্মদ সাদ্দাম হোসেন এসব তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, আইনের ২৯ ধারার বৈধতা নিয়ে একটি রিট করা হয়। আর নামের আগে ডাক্তার ব্যবহার করার কারণে ডিপ্লোমা ইন মেডিকেল ফ্যাকাল্টি (ডিএমএফ) ডিগ্রিধারী নিবন্ধিতদের হয়রানি করার অভিযোগ তথা আইনের বৈষম্যমূলক প্রয়োগ নিয়ে এর আগে আরেকটি রিট হয়। দুটি রিটের ওপর একসঙ্গে চূড়ান্ত শুনানি শেষে হাইকোর্ট রায়ের জন্য ১২ মার্চ দিন ধার্য করেন।

বাংলাদেশ মেডিকেল ও ডেন্টাল কাউন্সিল আইনের ২৯(১) ধারায় বলা হয়েছে, এই আইনের অধীন নিবন্ধন করা কোনো মেডিকেল চিকিৎসক বা ডেন্টাল চিকিৎসক এমন কোনো নাম, পদবি, বিবরণ বা প্রতীক এমনভাবে ব্যবহার বা প্রকাশ করবেন না, যার ফলে তার কোনো অতিরিক্ত পেশাগত যোগ্যতা আছে বলে কেউ মনে করতে পারে, যদি না তা কোনো স্বীকৃত মেডিকেল চিকিৎসা-শিক্ষা যোগ্যতা বা স্বীকৃত ডেন্টাল চিকিৎসা-শিক্ষা যোগ্যতা হয়ে থাকে।
ন্যূনতম এমবিবিএস অথবা বিডিএস ডিগ্রিপ্রাপ্তরা ব্যতীত অন্য কেউ তাদের নামের পূর্বে ডাক্তার পদবি ব্যবহার করতে পারবেন না। ২৯ (২) 

ধারায় বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি উপ-ধারা (১) এর বিধান লঙ্ঘন করলে তা হবে একটি অপরাধ এবং সে জন্য তিনি ৩ (তিন) বছর কারাদণ্ড বা ১ (এক) লাখ টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডণীয় হবেন এবং ওই অপরাধ অব্যাহত থাকলে প্রতিবার এর পুনরাবৃত্তির জন্য অন্যূন ৫০ (পঞ্চাশ) হাজার টাকা অর্থদণ্ডে, বর্ণিত দণ্ডের অতিরিক্ত হিসাবে, দণ্ডণীয় হবেন।

মাহমুদুল আলম/মেহেদী/

আদালতে মডেল মেঘনা সৌদি রাষ্ট্রদূতের সঙ্গেই আমার সম্পর্ক, অন্য কারো সঙ্গে নয়

প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:৩৭ পিএম
আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:৫৯ পিএম
সৌদি রাষ্ট্রদূতের সঙ্গেই আমার সম্পর্ক, অন্য কারো সঙ্গে নয়
ধানমন্ডি থানার প্রতারণা ও চাঁদাবাজির মামলায় অভিনেত্রী মেঘনার আলমকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। ছবি: খবরের কাগজ

প্রতারণা ও চাঁদাবাজির অভিযোগে রাজধানীর ধানমণ্ডি থানায় দায়ের করা মামলায় মডেল মেঘনা আলমকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। একই মামলায় এজাহারভুক্ত প্রধান আসামি দেওয়ান সামীরকে পাঁচ দিন রিমান্ডে নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাসুম মিয়া মেঘনাকে ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ দেন। একই সঙ্গে সামীরের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এর আগে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের পরিদর্শক মোরশেদ আলম মডেল মেঘনাকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেন। অন্যদিকে সামীরকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে সাত দিন রিমান্ডে নেওয়ার অনুমতি চেয়ে আবেদন করেন।

রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী উভয় আবেদনের উপর শুনানি করেন।

শুনানিতে তিনি বলেন, এই আসামিরা অভিনব কৌশল অবলম্বন করে বিদেশি রাষ্ট্রদূতসহ দূতাবাসগুলোতে কর্মরত বিদেশি নাগরিকদের হানিট্র‍্যাপে ফেলে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার জন্য চক্র দাঁড় করিয়েছেন। তারা দীর্ঘদিন ধরে এসব প্রতারণা করে আসছেন। সবশেষ সৌদি রাষ্ট্রদূত ইসাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করেন। এবং তার কাছ থেকে ৫ মিলিয়ন ডলার দাবি করেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

শুনানিতে মেঘনা আলমকে 'মেঘলা আলম' সম্বোধন করলে তার নাম ঠিকভাবে উচ্চারণ করতে বলেন। এরপর বিচারক আসামিদের পক্ষে কোন আইনজীবী আছেন কিনা জানতে চান।

মেঘনার কোন আইনজীবী নেই জানিয়ে নিজে বলার অনুমতি চান। বিচারক অনুমতি দিলে বলেন, ‘আমার নাম মেঘনা, মেঘলা নয়। সৌদি রাষ্ট্রদূতের কথা বলা হচ্ছে। আমার প্রশ্ন যে, কেউ চাইলেই কি সৌদি রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে দেখা করতে পারে? আপনারা কি তার কাছে যেতে পারবেন?’

বিচারক তাকে থামিয়ে দিয়ে মামলা সম্পর্কে কিছু বলার আছে কিনা জানতে চান।

এরপর মেঘনা বলেন, ‘আমাকে বিনা বিচারে জেলে পাঠানো হয়েছে।’

‘আমাকে বলা হয়েছে, আমি কোনো আইনজীবী পাবো না। সৌদি রাষ্ট্রদূত ইসার সঙ্গেই শুধু আমার সম্পর্ক, অন্য কারো সঙ্গে না। তার সঙ্গে আমার বিয়ে হয়েছে। ইসা অভিযোগ করেন আমি নাকি তার বাচ্চা নষ্ট করে ফেলেছি। এটা মোটেও সত্য না। এ বিষয়ে আমি তার সঙ্গে কথা বলেছি। এসব মিথ্যা তথ্য ছড়ানো বন্ধ করতে বলি। এসব বিষয় নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ডিজি শফিকুরের সঙ্গে কথা বলি। এরপরেই পুলিশ আমাকে গ্রেপ্তার করে।’

এদিকে, সামীরের পক্ষে তার আইনজীবী রিমান্ড আবেদন বাতিল করে জামিন চান। বিচারক তা নাকচ করে রিমান্ডে নেওয়ার আদেশ দেন।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে যে, আসামিরা একটি প্রতারক চক্রের সক্রিয় সদস্য। আসামিরা বিভিন্ন সুন্দরী মেয়েদের দিয়ে বাংলাদেশে কর্মরত বিভিন্ন বিদেশি রাষ্ট্রের কূটনীতিক, প্রতিনিধি ও দেশীয় ধনাঢ্য ব্যবসায়ীদেরকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে অবৈধ সম্পর্ক স্থাপন করে সুকৌশলে বিভিন্ন উপায়ে অবৈধ পন্থা অবলম্বনের মাধ্যমে তাদের সম্মানহানির ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায় করে আসছে এক নম্বর আসামি দেওয়ান সমীর kAWAII Group  নামক একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সিইও এবং সানজানা ইন্টারন্যাশনাল নামক একটি মানবপাচার প্রতিষ্ঠানের মালিক মর্মে জানা যায়। এছাড়া ইতোপূর্বে মিরআই ইন্টারন্যাশনাল ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড নামক তার একটি প্রতিষ্ঠান ছিল, যেখানে দুই নম্বর আসামি মেঘনা আলম চাকরি করতো মর্মে জানা যায়। এ চাকরির সুবাদে এক নম্বর ও দুই নম্বর আসামির মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ২০২৩ সালে ২ নম্বর আসামি মেঘনা আলম মিশার্থ বাংলাদেশ ২০২০ খেতাবে ভূষিত হলে বিনোদন জগত ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার পরিচিতি বাড়ে এবং কূটনৈতিক পাড়ায় ও ধনাঢ্য ব্যবসায়ী মহলে তার সখ্যতা গড়ে ওঠার পাশাপাশি যাতায়াত বৃদ্ধি পায়। মেঘনা আলমের সৌন্দর্য স্মার্টনেস ও পরিচিতি কাজে লাগে বিদেশি কূটনীতিক ও ধনাঢ্য ব্যবসায়ীদের কাছে সহজে যাতায়াত নিশ্চিত করা দেওয়ান সমীর আর ম্যানপাওয়ার ও অন্যান্য ব্যবসাকে আরো লাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে দাঁড় করানোর লক্ষ্যে চক্রান্তের অংশ হিসেবে অসৎ উদ্দেশ্যে দেওয়ান সমীর দুই নম্বর আসামি মেঘনা আলমকে কাউয়াই গ্রুপ KAWAII Group এর ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হিসেবে নিযুক্ত করে। চক্রান্তের অংশ হিসেবে ও অসৎ উদ্দেশ্যে বিভিন্ন কূটনীতিকে টার্গেট করে মেঘনা-আলম মেলামেশা শুরু করে এবং এই মেলামেশার সুযোগ নিয়ে জনৈক কূটনীতিককে ব্ল্যাকমেইল করে বড় অংকের টাকা দাবি করে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে টাকা আদায়ের কৌশল ও পরিমাণ নির্ধারণ করার জন্য গত ২৯-৩-২০২৫ খ্রিস্টাব্দে তারিখ রোজ শনিবার রাত অনুমান ৫টা হতে সাড়ে ৯টা পর্যন্ত ধানমন্ডির সাত মসজিদ রোডস্থ রওশন আরা টাওয়ারের লেভেল নয় এ অবস্থিত IZAKAYA নামক একটি জাপানি রেস্টুরেন্টের ক্যাশ কাউন্টারের সম্মুখের টেবিলে ১ । মো. দেওয়ান সমীর ২। মেঘনা আলম ৩। মোহাম্মদ দেওয়ান সমীরের পরিচিত লুৎফুর রহমান ৪। লুৎফর রহমানের ভাগিনা সম্পর্কিত শাওন সহ আরও চার অবলিক পাঁচজন উপস্থিত ছিলেন। নিয়ম অনুযায়ী খাবার অর্ডার করা হয় এবং তিনজন ওয়েটার খাবার পরিবেশন করেন। ইফতারের কিছু সময় পূর্বে বাংলাদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা পরিচয় দানকারী জনৈক ভদ্রলোককে লুৎফর রহমান তার পূর্ব পরিচিত হিসেবে টেবিলে আপ্যায়নের আহ্বান করেন। কিন্তু উক্ত ভদ্রলোক বৈঠকের পরিবেশ দেখে তার নিকট বৈঠকটি অসৎ উদ্দেশ্যে কোন প্রতারণামূলক কার্যসাধনের নিমিত্তে আয়োজন করা হয়েছে মর্মে প্রতীয়মান হওয়ায় তিনি তড়িৎ গতিতে উক্ত স্থান হতে প্রস্থান করেন। দেওয়ান সমীর ও মেঘনা আলম মিটিং অব্যাহত রাখে এবং রেস্টুরেন্টের বিভিন্ন টেবিলে আলাদা আলাদাভাবে খোলা বৈঠক করে। চলমান বৈঠকের একপর্যায়ে জনৈক কূটনীতিকের নিকট ৫ মিলিয়ন ডলার দাবি ও আদায় করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। তাদের এরূপ কথোপকথন চলাকালে লুৎফর ও শাওন মিটিং স্থল ত্যাগ করে চলে যায়। মিটিং শেষে দেওয়ান সমীর খাবারের বিল তার ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে পরিশোধ করে।

গোপন মিটিং এর উদ্দেশ্য ছিল ব্ল্যাকমেইল করে অর্থ আদায় করা। আসামিদের উত্তরপ কার্যক্রম বাংলাদেশ সরকারের ভাবমূর্তি মারাত্মকভাবে বিনষ্টসহ আন্তঃরাষ্ট্রীয় সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে এবং যা পেনাল কোডের ৪২০/৩৮৫/১০৯ ধারার অপরাধ হওয়ায় আসামি দেওয়ান সমীর, এখানে আলমসহ অজ্ঞাতনামা দুই তিনজন অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা রজ্জু করার অনুরোধ জানাচ্ছি।

গত ১৫ এপ্রিল ধানমন্ডি মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আব্দুল আলীম এ মামলাটি দায়ের করেন।

প্রসঙ্গত, গত ৯ এপ্রিল রাতে মডেল মেঘনা আলমকে রাজধানীর ভাটারা এলাকার বাসা থেকে আটক করে  ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। পরেরদিন বিশেষ ক্ষমতা আইনে ৩০ দিনের আটকাদেশ দিয়ে মেঘনা আলমকে কারাগারে পাঠানো হয়।

অন্যদিকে, ১১ এপ্রিল বসুন্ধরা এলাকা থেকে সামীরকে গ্রেপ্তার করা হয়।

চাঁদাবাজির অভিযোগে রাজধানীর ভাটারা থানায় করা একটি মামলায় পরেরদিন আদালতে হাজির করে ১০ দিন রিমান্ড চাওয়া হলে তার ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়।

এম এ জলিল উজ্জ্বল/এমএ/

পুলিশ কর্মকর্তা মামুন হত্যা: আরাভ খানসহ ৮ আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ০২:৪৭ পিএম
পুলিশ কর্মকর্তা মামুন হত্যা: আরাভ খানসহ ৮ আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
রবিউল ইসলাম ওরফে আরাভ খান। ছবি: সংগৃহীত

পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) পরিদর্শক মামুন ইমরান খান হত্যা মামলায় দুবাইয়ে পলাতক সোনা ব্যবসায়ী রবিউল ইসলাম ওরফে আরাভ খানসহ আটজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. জাকির হোসেন এই রায় ঘোষণা করেন।

দণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে পলাতক রয়েছেন আরাভ খান ও তার স্ত্রী সুরাইয়া আক্তার কেয়া। এ ছাড়া আন্নাফী (মেহেরুন নেছা স্বর্ণ) ও মাইশা (ফারিয়া বিনতে মীম) নামের দুই কিশোরী জামিনে আছেন। তারা দুজনে অপ্রাপ্তবয়স্ক।

অন্যদিকে রহমত উল্লাহ, স্বপন সরকার, দিদার পাঠান, মিজান শেখ, আতিক হাসান ও সারোয়ার হোসেন বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন।

ঘটনার বিবরণ অনুযায়ী, ২০১৮ সালের ৭ জুলাই রাজধানীর বনানীতে খুন হন এসবি পরিদর্শক মামুন ইমরান খান। পরে ৯ জুলাই গাজীপুরের একটি জঙ্গল থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় মামুনের ভাই জাহাঙ্গীর আলম খান বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা করেন।

তাওফিক/ 

প্রতারণার মামলায় গ্রেপ্তার মডেল মেঘনা

প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ১১:৫৮ এএম
আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ১২:০৩ পিএম
প্রতারণার মামলায় গ্রেপ্তার মডেল মেঘনা
ছবি : সংগৃহীত

বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের প্রেমের ফাঁদে ফেলে তাদের সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগে করা মামলায় মডেল মেঘনা আলমকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। রাজধানীর ধানমন্ডি থানায় এই মামলাটি করা হয়।

রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত করা এবং গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি সম্পর্কে মিথ্যাচার ছড়ানোর মাধ্যমে আন্তঃরাষ্ট্রীয় সম্পর্ক অবনতির অপচেষ্টা করার অভিযোগে পুলিশের হেফাজতে রাখা মডেল মেঘনা আলমকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। রাজধানীর ধানমন্ডি থানার প্রতারণার এক মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে তাঁকে। 

বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) সকালে মেঘনা আলমকে আদালতে হাজির করে এই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তাকে গ্রেপ্তার দেখানোর জন্য আবেদন করেন।

পরে রাষ্ট্রপক্ষে মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর তাকে গ্রেপ্তার দেখানোর পক্ষে শুনানি করেন। শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাসুম মিয়া তাকে গ্রেপ্তার দেখান।

এর আগে, গত বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) রাতে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মডেল মেঘনা আলমকে ৩০ দিনের আটকাদেশের আদেশ দেন ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত।

এরপর শুক্রবার ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজের এক পোস্টে বলা হয়, ‘রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত করা, গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি সম্পর্ক মিথ্যাচার ছড়ানোর মাধ্যমে আন্তঃরাষ্ট্রীয় সম্পর্ক অবনতির অপচেষ্টা করা এবং দেশকে অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকার অভিযোগে মেঘনা আলমকে সকল আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে নিরাপত্তা হেফাজতে রাখা হয়েছে।’

পোস্টে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘তাঁকে (মেঘনা আলম) অপহরণ করার অভিযোগ সঠিক নয়। তথাপি আইনের আশ্রয় নেওয়ার অধিকার তাঁর রয়েছে।’

অমিয়/

চুয়াডাঙ্গায় কিশোরী মেয়েকে ধর্ষণের দায়ে বাবার মৃত্যুদণ্ড

প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ১১:২০ এএম
আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ১১:৫৪ এএম
চুয়াডাঙ্গায় কিশোরী মেয়েকে ধর্ষণের দায়ে বাবার মৃত্যুদণ্ড
চুয়াডাঙ্গায় কিশোরী মেয়েকে ধর্ষণের দায়ে বাবার মৃত্যুদণ্ড। ছবি: খবরের কাগজ

চুয়াডাঙ্গায় নিজের কিশোরী মেয়েকে ধর্ষণের দায়ে আলতাপ হোসেন (৪৬) নামের এক পিতার মৃত্যুদণ্ডের রায় দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে ২ লাখ টাকা অর্থদণ্ড করা হয়েছে।

বুধবার (১৬ এপ্রিল) দুপুরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল, চুয়াডাঙ্গার বিচারক এবং জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক সৈয়দ হাবিবুল ইসলাম এই রায় ঘোষণা করেন।

দণ্ডিত আলতাপ হোসেন সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর উপজেলার মুন্সিগঞ্জ গ্রামের মৃত সাদেক আলী মৃধার ছেলে। তিনি ঘরজামাই হিসেবে চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার চিৎলা হুদাপাড়া গ্রামে বসবাস করছিলেন।

আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০২৩ সালের ৫ ডিসেম্বর রাতে আলতাপ হোসেনের স্ত্রী বাড়িতে না থাকার সুযোগে মেয়েকে ভয়ভীতি দেখিয়ে ধর্ষণ করেন। এর পর তাকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে একাধিকবার এ কাজ চালিয়ে যান। ২০২৪ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি কিশোরীর বিয়ের কয়েক দিন পর শারীরিক অসুস্থতা দেখা দিলে চিকিৎসার মাধ্যমে জানা যায় সে ২-৩ মাসের অন্তঃসত্ত্বা।

এ ঘটনায় ২০২৪ সালের ৭ মার্চ ভুক্তভোগীর মা বাদী হয়ে আলমডাঙ্গা থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধিত ২০২০)-এর ৯ (১) ধারায় মামলা করেন। তদন্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক (তদন্ত) বাবর আলী মামলার তদন্ত শেষে ১১ ডিসেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

মোট ৮ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত দোষী সাব্যস্ত করে আলতাপ হোসেনকে মৃত্যুদণ্ড ও ২ লাখ টাকা জরিমানার আদেশ দেন। আদালত রায়ে উল্লেখ করেন, ‘জরিমানার অর্থ দণ্ডিতের জীবদ্দশায় কিংবা মৃত্যুর পর তার সম্পত্তি থেকে আদায়যোগ্য হবে এবং তা ভুক্তভোগীকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে প্রদান করা হবে।’

রাষ্ট্রপক্ষের বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর (স্পেশাল পিপি) এমএম শাহজাহান মুকুল বলেন, ‘এই ঘৃণ্য অপরাধে আদালত সর্বোচ্চ শাস্তি দিয়েছেন। মাত্র ৪৫ দিনের মধ্যে মামলাটির বিচারিক কার্যক্রম শেষ করে রায় দেওয়া একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। সমাজে এমন অপরাধ প্রতিরোধে এই রায় একটি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।’

মিজানুর/তাওফিক/  

সাবেক দুই এমপি-আইজিপি-ওসি রিমান্ডে

প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ১০:৪৯ এএম
আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ১১:৪০ এএম
সাবেক দুই এমপি-আইজিপি-ওসি রিমান্ডে
নবী নেওয়াজ, আব্দুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব, চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন ও আবুল হাসান

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পৃথক তিন মামলায় ঝিনাইদহ-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) নবী নেওয়াজ, ভোলা-৪ আসনের সাবেক এমপি আব্দুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব, পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন এবং রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসানের বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়েছে।

গতকাল বুধবার ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মিনহাজুর রহমান শুনানি শেষে আসামিদের বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। সংশ্লিষ্ট আদালতের কৌঁসুলি কামরুজ্জামান স্বপন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। 

সূত্র জানায়, গত বছর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় রাজধানীর ভাটারা থানার নতুন বাজার এলাকায় হোটেল কর্মচারী রোহানকে হত্যাচেষ্টার মামলায় জ্যাকবের তিন দিন রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়েছে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ভাটারা থানার উপপরিদর্শক হাফিজুর রহমান তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিন রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন। 

রাজধানীর রমনা এলাকায় গৃহকর্মী লিজা আক্তারকে গুলি করে হত্যার মামলায় নবী নেওয়াজকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়েছে। তদন্ত কর্মকর্তা রমনা থানার পুলিশ পরিদর্শক পায়েল হেসেন সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক পাঁচ দিন রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

মামলার বিবরণে জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত ১৮ জুলাই রাজধানীর রমনা থানাধীন এলাকায় গৃহকর্মী লিজা আক্তার গুলিতে আহত হন। ২২ জুলাই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। এ ঘটনায় ৫ সেপ্টেম্বর লিজা আক্তারের বাবা মো. জয়নাল শিকদার বাদী হয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৭৪ জনের নাম উল্লেখ করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। নবী নেওয়াজ এ মামলায় ১৭০ নম্বর আসামি। 

আন্দোলনে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে শাওন তালুকদার হত্যা মামলায় সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিন দিন এবং যাত্রাবাড়ী থানার সাবেক অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবুল হাসানকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়েছে। 

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা যাত্রাবাড়ী থানার উপপরিদর্শক মেহেদী হাসান তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিন রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন। 

যাত্রাবাড়ী থানার সাবেক ওসি আবুল হাসানের পক্ষে আদালতে কোনো আইনজীবী ছিলেন না। অন্যদের পক্ষে আইনজীবীরা জামিন চেয়ে আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক জামিন আবেদন নাকচ করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।