হত্যা মামলায় আসামি মো. মাহাথির হাসান (বায়ে), প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের খুন হওয়া শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম পারভেজ। ছবি: সংগৃহীত
প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম পারভেজ (২৪) হত্যা মামলায় আসামি আল কামাল শেখ ও মো. মাহাথির হাসান দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তারা জবানবন্দি দেন। এর মধ্যে গত বুধবার আল কামাল শেখ ও বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) মো. মাহাথির হাসান জবানবন্দি দেন। ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. মিনহাজুর রহমান খাসকামরায় আসামিদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করেন।
আদালত সূত্র জানায়, গত বুধবার শেষ বিকেলে কামাল শেখকে আদালতে হাজির করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বনানী থানার পরিদর্শক এ কে এম মঈন উদ্দিন। এরপর আসামি স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে সম্মত মর্মে তিনি আদালতের কাছে জবানবন্দি রেকর্ড করার আবেদন করেন। আদালত জবানবন্দি শেষে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এদিকে বৃহস্পতিবার শেষ বিকেলে আসামি মাহাথিরকে একই আদালতে হাজির করা হয়। এরপর স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে সম্মত হওয়ায় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জবানবন্দি রেকর্ড করার আবেদন করেন। আদালত জবানবন্দি শেষে তাকেও কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
গত ২৩ এপ্রিল সকালে চট্টগ্রামের হালিশহর থানাধীন আজাদ টাওয়ার এলাকার একটি বাসা থেকে মাহাথিরকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আদালত সূত্র আরও জানায়, এ মামলায় গত ২১ এপ্রিল কামাল শেখসহ তিন আসামির সাত দিন রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়। অন্যরা হলেন আলভী হোসান জুনায়েদ ও আল আমিন সানি। তারা রিমান্ডে আছেন।
মামলার নথি থেকে জানা গেছে, প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের টেক্সটাইল বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন জাহিদুল ইসলাম পারভেজ। তার মিডটার্ম পরীক্ষা চলছিল। পরীক্ষা শেষে ১৯ এপ্রিল বেলা ৩টায় বন্ধু তরিকুল, সুকর্ণ, ইমতিয়াজসহ কয়েকজন মিলে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপরীতে পাশের একটি শিঙাড়ার দোকানে দাঁড়িয়ে কথাবার্তা বলছিলেন। হাসাহাসি করছিলেন। তাদের পেছনেই দাঁড়ানো ছিলেন ইউনিভার্সিটি অব স্কলারসের দুজন ছাত্রী। পারভেজ তাদের নিয়ে হাসাহাসি করেছেন কি না, সেটি জানতে আসেন মেহেরাজ ইসলাম, আবু জহর গিফফারি পিয়াস ও মাহাথির হাসান নামের তিনজন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে তর্ক-বিতর্ক শুরু হয়। এ ঘটনা প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিস পর্যন্ত গড়ায়। শিক্ষকদের মধ্যস্থতায় বিষয়টি মীমাংসা হওয়ার পরও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের হওয়ার সময় গেটের সামনে পারভেজের ওপর হামলা হয়। ছুরিকাঘাতে তিনি মারা যান। এ ঘটনায় ১৯ এপ্রিল দিবাগত রাতে তার মামাতো ভাই হুমায়ুন কবীর বাদী হয়ে বনানী থানায় হত্যা মামলা করেন।
সেই দুই নারী শিক্ষার্থীকে ধরতে কাজ করেছে র্যাব
জাহিদুল ইসলাম পারভেজ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দুই নারী শিক্ষার্থীর বিষয়ে তথ্য সংগ্রহে নেমেছে র্যাব। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী সেই দুই শিক্ষার্থীকে ধরতে কাজ শুরু করেছে র্যাব। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর উত্তরায় র্যাব-১-এর কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাব-১ অধিনায়ক (সিও) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ জাহিদুল করিম।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-১-এর অধিনায়ক বলেন, ‘আদালতও বলেছেন, দুই নারী শিক্ষার্থীকে হাজির করতে হবে। ইতোমধ্যে তাদের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। তাদের ধরতে র্যাবের কার্যক্রম শুরু হয়েছে।’