
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হত্যাকাণ্ডে জড়িত আওয়ামী লীগ নেতাদের বাদ দিয়ে পুলিশ নিরপরাধ সাধারণ মানুষকে হয়রানি করছে। বিভিন্ন এলাকার ব্যবসায়ী, সাধারণ চাকরিজীবী, শ্রমিক কাউকে হয়রানি থেকে বাদ দেওয়া হচ্ছে না। তাদের ভয়ভীতি দেখিয়ে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে মামলা থেকে বাদ দেওয়ার জন্যও চাপ দেওয়া হচ্ছে।
সোমবার (১৭ মার্চ) চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে কারাভোগ করে জামিনে বের হয়ে এসব কথা বলেন ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী নুর মোহাম্মদ সাহেদ।
চট্টগ্রামে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন ব্যবসায়ী নুর মোহাম্মদ সাহেদ। অথচ তাকে ডবলমুড়িং থানা অজ্ঞাতপরিচয় আসামির তালিকায় ঢুকিয়ে কারাভোগ করান মামলার বাদী মো. এরশাদ।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘আমাকে আটক করার পর আমার ম্যানেজারকে ডাকা হয়েছিল। ১২ লাখ টাকা দিলে আমাকে কোনো মামলা দেওয়া হবে না জানানো হয়। কিন্তু আমি অন্যায় না করেও কেন আমাকে মামলা দেওয়া হবে? সে জন্য আমি কোনো টাকা দিইনি। তাই আমাকে ২২ দিন কারাগার ভোগ করতে হয়। তারা শুধু আমার একটা অপরাধ খুঁজে পায়, সেটা হলো, আমার অফিসে শেখ মুজিবুর রহমান এবং শেখ হাসিনার ছবি ছিল। এখন আমার কথা হচ্ছে, শেখ মুজিবুর রহমান এবং শেখ হাসিনার ছবি রাখা তো সব সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে বাধ্যতামূলক ছিল। তাহলে এখানে সবাই অপরাধী।’
তিনি আরও বলেন, ‘ইতোমধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ৬ হাজার ২০২টি মামলা প্রত্যাহার করতে বলা হয়েছে। এ থেকে বোঝা যায়, দেশে কী পরিমাণ মামলা বাণিজ্য হয়েছে এবং হচ্ছে।’
প্রধান উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি বলেন, ‘দেশের বিভিন্ন সেক্টরে এখনো আওয়ামী লীগের দোসররা বহাল তবিয়তে রয়েছে। তাদের জন্য এখনো দেশ নিরাপদ নয়। তারা দেশের ক্ষতি করে দিচ্ছে। বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি সংস্থায় ভালোমানের কর্মকর্তাদের পদায়ন করুন। তাতেই দেশের উন্নতি সাধন হবে। আমি শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলা করায়, একাধিকবার হামলা এবং অপহরণের শিকার হয়েছি। মামলা করেও সুরাহা পাইনি। বরং শেষমেষ আমাকে বৈষম্যবিরোধীর মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। এরকম যেন কোনো সাধারণ মানুষ বা ব্যবসায়ীকে হয়রানি করা না হয়। মিথ্যা মামলায় দিয়ে ফাঁসানো না হয়।’
সংবাদ সম্মেলনে চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতের সহকারী পিপি অ্যাডভোকেট আবুল মনছুর সিকদার এবং বৈষম্যবিরোধীর হালিশহর থানার ছাত্র প্রতিনিধি ও পাহাড়তলী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ আরাফাত রহমান উপস্থিত ছিলেন।