ঢাকা ১১ বৈশাখ ১৪৩২, বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫
English
বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ১১ বৈশাখ ১৪৩২

মামলার বোঝা থেকে এখন মুক্ত তারেক রহমান

প্রকাশ: ২১ মার্চ ২০২৫, ০৯:০২ এএম
আপডেট: ২১ মার্চ ২০২৫, ০৯:০৩ এএম
মামলার বোঝা থেকে এখন মুক্ত তারেক রহমান
তারেক রহমান

বসুন্ধরা গ্রুপের তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ সাব্বির আহমেদ হত্যা মামলার আসামিদের বাঁচাতে ২১ কোটি টাকা ঘুষ গ্রহণের মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ আটজনকে খালাস দিয়েছেন আদালত। 

গতকাল বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৩-এর বিচারক আবু তাহেরের আদালত এ রায় দেন। এর মধ্য দিয়ে সব মামলার বোঝা থেকে মুক্ত হলেন তারেক রহমান। 

খালাস পাওয়া অন্যরা হলেন- বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান ওরফে শাহ আলম ও তার দুই ছেলে সাফিয়াত সোবহান এবং সাদাত সোবহান, আবু সুফিয়ান, কাজী সালিমুল হক কামাল ওরফে ইকোনো কামাল, তারেক রহমানের সাবেক একান্ত সহকারী সচিব (এপিএস) মিয়া নুরুদ্দিন অপু। 

মামলার রায়ের পর তার আইনজীবী ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা বোরহানউদ্দিন খবরের কাগজকে বলেন, তারেক রহমানের বিরুদ্ধে দেশে আর কোনো মামলা নেই। মিথ্যা মামলার বোঝা থেকে তিনি সম্পূর্ণভাবে মুক্ত হয়েছেন। এখন তিনি দেশে ফেরার অপেক্ষায় আছেন। দেশবাসীও তাকে সাদরে বরণ করার অপেক্ষায় রয়েছে। 

আদালত সূত্রে জানা গেছে, মামলার রায় ঘোষণার আগে কাজী সলিমুল হক কামাল ও আবু সুফিয়ান এজলাসে হাজির ছিলেন। জামিনে থাকা অপর আসামিদের পক্ষে সময়ের আবেদন করা হয়।

২০০৭ সালের ৪ অক্টোবর এ মামলাটি করে দুদক। পরের বছরের ২৪ এপ্রিল আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা। একই বছরের ১৪ জুলাই আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। ফলে শুরু হয় মামলার আনুষ্ঠানিক বিচার।

অভিযোগপত্রে বলা হয়, বসুন্ধরা গ্রুপের তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ সাব্বির হত্যা মামলার ঘটনা ধামাচাপা দিতে তারেক, বাবর ও শাহ আলমের মধ্যে বাবরের বেইলি রোডের সরকারি বাসায় একটি বৈঠক হয়। বৈঠকে শাহ আলমের কাছে ১০০ কোটি টাকা দাবি করেন তারেক ও বাবর। ৫০ কোটি টাকার বিনিময়ে এই হত্যা রহস্য ধামাচাপা দেওয়ার জন্য তারেক ও বাবরের সঙ্গে শাহ আলমের চুক্তি হয়। চুক্তি অনুসারে শাহ আলমের কাছ থেকে বাবর ২১ কোটি টাকা গ্রহণ করেন। এ টাকার মধ্যে বাবরের নির্দেশে বসুন্ধরা গ্রুপের পরিচালক আবু সুফিয়ান ২০০৬ সালের ২০ আগস্ট হাওয়া ভবনে ১ কোটি টাকা তারেকের এপিএস অপুকে বুঝিয়ে দেন। বাবর ৫ কোটি টাকা আবু সুফিয়ানের মাধ্যমে নগদ গ্রহণ করে কাজী সালিমুল হক কামালের কাছে জমা রাখেন। বাকি ১৫ কোটি টাকা বাবরের নির্দেশে আবু সুফিয়ান প্রাইম ব্যাংকের বিভিন্ন শাখায় সালিমুল হক কামালকে ২০টি চেকের মাধ্যমে প্রদান করেন। 

প্রসঙ্গত, বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকারের সময় (২০০১-২০০৬) তারেক বেশ প্রভাব বিস্তার করেছিলেন। তার রাজনৈতিক কার্যালয় হাওয়া ভবন বিকল্প শক্তির কেন্দ্র হয়ে উঠেছিল।

তবে, সেনা-সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দুর্নীতিবিরোধী অভিযানের সময় ২০০৭ সালের ৭ মার্চ দুর্নীতি ও চাঁদাবাজির অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়ার পর দৃশ্যপট বদলে যায়।

২০০৮ সালের সেপ্টেম্বরে সেনা-সমর্থিত এক-এগারোর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলের একাধিক দুর্নীতির মামলা থেকে জামিনে মুক্তি পেয়ে চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্যের উদ্দেশে দেশ ছাড়েন তারেক। ওই সময় তিনি সক্রিয় রাজনীতি থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছিলেন। পরে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দলের নেতৃত্বের হাল ধরেন তিনি।

এক-এগারো সরকার এবং পরবর্তী আওয়ামী লীগ সরকার তারেকের বিরুদ্ধে প্রায় ৮৫টি মামলা করেছিল।

এদিকে, তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া চিকিৎসার জন্য চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি লন্ডনে যাওয়ার পর থেকে তারেকের বাড়িতেই অবস্থান করছেন। সেখানে ঈদের ছুটি কাটিয়ে মা ও ছেলে দুজনে একসঙ্গে ফিরবেন বলে জল্পনা থাকলেও বিএনপি নেতারা এই সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দিয়েছেন।

শিক্ষার্থী পারভেজ হত্যা মাহাথির ও কামালের দায় স্বীকার

প্রকাশ: ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:৪২ পিএম
মাহাথির ও কামালের দায় স্বীকার
হত্যা মামলায় আসামি মো. মাহাথির হাসান (বায়ে), প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের খুন হওয়া শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম পারভেজ। ছবি: সংগৃহীত

প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম পারভেজ (২৪) হত্যা মামলায় আসামি আল কামাল শেখ ও মো. মাহাথির হাসান দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তারা জবানবন্দি দেন। এর মধ্যে গত বুধবার আল কামাল শেখ ও বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) মো. মাহাথির হাসান জবানবন্দি দেন। ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. মিনহাজুর রহমান খাসকামরায় আসামিদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করেন।

আদালত সূত্র জানায়, গত বুধবার শেষ বিকেলে কামাল শেখকে আদালতে হাজির করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বনানী থানার পরিদর্শক এ কে এম মঈন উদ্দিন। এরপর আসামি স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে সম্মত মর্মে তিনি আদালতের কাছে জবানবন্দি রেকর্ড করার আবেদন করেন। আদালত জবানবন্দি শেষে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

এদিকে বৃহস্পতিবার শেষ বিকেলে আসামি মাহাথিরকে একই আদালতে হাজির করা হয়। এরপর স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে সম্মত হওয়ায় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জবানবন্দি রেকর্ড করার আবেদন করেন। আদালত জবানবন্দি শেষে তাকেও কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

গত ২৩ এপ্রিল সকালে চট্টগ্রামের হালিশহর থানাধীন আজাদ টাওয়ার এলাকার একটি বাসা থেকে মাহাথিরকে গ্রেপ্তার করা হয়।

আদালত সূত্র আরও জানায়, এ মামলায় গত ২১ এপ্রিল কামাল শেখসহ তিন আসামির সাত দিন রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়। অন্যরা হলেন আলভী হোসান জুনায়েদ ও আল আমিন সানি। তারা রিমান্ডে আছেন।

মামলার নথি থেকে জানা গেছে, প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের টেক্সটাইল বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন জাহিদুল ইসলাম পারভেজ। তার মিডটার্ম পরীক্ষা চলছিল। পরীক্ষা শেষে ১৯ এপ্রিল বেলা ৩টায় বন্ধু তরিকুল, সুকর্ণ, ইমতিয়াজসহ কয়েকজন মিলে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপরীতে পাশের একটি শিঙাড়ার দোকানে দাঁড়িয়ে কথাবার্তা বলছিলেন। হাসাহাসি করছিলেন। তাদের পেছনেই দাঁড়ানো ছিলেন ইউনিভার্সিটি অব স্কলারসের দুজন ছাত্রী। পারভেজ তাদের নিয়ে হাসাহাসি করেছেন কি না, সেটি জানতে আসেন মেহেরাজ ইসলাম, আবু জহর গিফফারি পিয়াস ও মাহাথির হাসান নামের তিনজন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে তর্ক-বিতর্ক শুরু হয়। এ ঘটনা প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিস পর্যন্ত গড়ায়। শিক্ষকদের মধ্যস্থতায় বিষয়টি মীমাংসা হওয়ার পরও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের হওয়ার সময় গেটের সামনে পারভেজের ওপর হামলা হয়। ছুরিকাঘাতে তিনি মারা যান। এ ঘটনায় ১৯ এপ্রিল দিবাগত রাতে তার মামাতো ভাই হুমায়ুন কবীর বাদী হয়ে বনানী থানায় হত্যা মামলা করেন।

সেই দুই নারী শিক্ষার্থীকে ধরতে কাজ করেছে র‍্যাব

জাহিদুল ইসলাম পারভেজ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দুই নারী শিক্ষার্থীর বিষয়ে তথ্য সংগ্রহে নেমেছে র‍্যাব। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী সেই দুই শিক্ষার্থীকে ধরতে কাজ শুরু করেছে র‍্যাব। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর উত্তরায় র‍্যাব-১-এর কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‍্যাব-১ অধিনায়ক (সিও) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ জাহিদুল করিম।

সংবাদ সম্মেলনে র‍্যাব-১-এর অধিনায়ক বলেন, ‘আদালতও বলেছেন, দুই নারী শিক্ষার্থীকে হাজির করতে হবে। ইতোমধ্যে তাদের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। তাদের ধরতে র‍্যাবের কার্যক্রম শুরু হয়েছে।’

শাহরিয়ার আলমের সন্দেহজনক লেনদেন ২৬১ কোটি টাকা

প্রকাশ: ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:০৪ পিএম
শাহরিয়ার আলমের সন্দেহজনক লেনদেন ২৬১ কোটি টাকা
ফাইল ছবি।

সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলমের ৬টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে প্রায় ২৬১ কোটি টাকার সন্দেহজনক লেনদেন করা হয়েছে। এ ছাড়া তিনি ২৭ কোটি ১৮ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন। এ বিষয়ে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১-এ মামলাটি দায়ের করা হয়। দুদকের মুখপাত্র ও মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মামলায় বলা হয়, শাহরিয়ার আলম প্রতিমন্ত্রী থাকার সময় ক্ষমতার অপব্যবহার ও ঘুষ-দুর্নীতির মাধ্যমে ২৭ কোটি ১৮ লাখ ৪২ হাজার ৫৮৫ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন। এ ছাড়া তার নিজের ছয়টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ২৬০ কোটি ৯৪ লাখ ৯৬ হাজার ৭৩০ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন হয়েছে।

এসব অর্থ-সম্পদ তিনি গোপনে স্থানান্তর, হস্তান্তর ও রূপান্তর করেছেন। যা দুদকের তফসিলভুক্ত ২০০৪ সালের দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০১২ সালের মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ও ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

সিফাত/

শেখ হাসিনার তিন চাচাতো ভাই ও ভাতিজার দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

প্রকাশ: ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ০৬:১৫ পিএম
শেখ হাসিনার তিন চাচাতো ভাই ও ভাতিজার দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
ছবি: সংগৃহীত

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তিন চাচাতো ভাই খুলনা-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শেখ সালাহউদ্দিন জুয়েল, শেখ সোহেল ও শেখ জালাল উদ্দিন রুবেল ও ভাতিজা শেখ হেলালের ছেলে বাগেরহাট-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শেখ সারহান নাসের তন্ময়ের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) ঢাকার মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ জাকির হোসেন গালিব ওই আদেশ দেন।

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম এ তথ্য জানিয়েছেন।

সূত্র জানায়, দুদকের উপ-পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান তাদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞার আদেশ চেয়ে আবেদন করেন।

আবেদনে বলা হয়, বিগত সরকারের সাবেক মন্ত্রী ও বিভিন্ন নির্বাচনি এলাকার এমপিদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে অকল্পনীয় অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে অনুসন্ধান কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা তাদের নামে অবৈধভাবে অর্জিত সম্পত্তি হস্তান্তর করে বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। তারা পালিয়ে গেলে কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া আবশ্যক।

এম এ জলিল উজ্জ্বল/এমএ/

হারুন ও জিয়াউলের সম্পত্তি জব্দের আদেশ

প্রকাশ: ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:৪৯ পিএম
আপডেট: ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ০৬:১৯ পিএম
হারুন ও জিয়াউলের সম্পত্তি জব্দের আদেশ
ফাইল ছবি।

ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) সাবেক মহাপরিচালক জিয়াউল আহসানের ৯৯ দশমিক ৯৩ বিঘা জমি, তিনটি ফ্ল্যাট ও পাঁচটি বাড়ি জব্দ এবং নয়টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সাবেক ডিবিপ্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদের নামে রাজধানীর উত্তরায় থাকা একটি ফ্ল্যাট ও মোট ১৮ কাঠার তিনটি প্লট জব্দ করার আদেশ দেওয়া হয়েছে। 

বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) দুদকের দুই কর্মকর্তার করা পৃথক আবেদনের প্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন ঢাকার মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ জাকির হোসেন গালিব। 

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

সূত্র জানায়, দুদকের উপ-পরিচালক রেজাউল করিম জিয়াউল আহসানের সম্পদ জব্দ ও অবরুদ্ধ করার আদেশ চেয়ে আবেদন করেন। জব্দ করা ফ্ল্যাট ও বাড়ির মধ্যে মিরপুর ডিওএইচএসের ১ হাজার ৪৬০ ও ২ হাজার ১১০ বর্গফুটের ফ্ল্যাট ও উত্তরার ২ হাজার ৬০০ বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাট। বরিশালের কোতোয়ালি থানার পৈত্রিক সম্পত্তিতে নির্মিত ৮ তলা নতুন বাড়ি, একই জেলার সদরে থাকা বাগান বাড়ি, পুকুরসহ বাড়ি ও ১ হাজার ২৭০ বর্গফুটের একতলা পুরাতন বাড়ি ও নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ৮ শতাংশ জমিতে নির্মিত ৮ তলা ভবন রয়েছে। আর নয়টি ব্যাংক হিসাবে জমা রয়েছে ১ কোটি ২৮ লাখ ৯০ হাজার ৫১১ টাকা। 

জব্দ ও অবরুদ্ধ করার আবেদনে বলা হয়, আসামি জিয়াউল আহসান স্থাবর সম্পদ বিক্রয় ও ব্যাংক হিসাব থেকে টাকা উত্তোলন এবং স্থানান্তর করার পরিকল্পনা করছেন। মামলাটি সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে এসব সম্পত্তি জব্দ এবং ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করা প্রয়োজন।

এদিকে, সাবেক ডিবি প্রধান হারুনের সম্পদ জব্দ করার আবেদন করেন দুদকের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ জয়নাল আবেদীন। হারুনের নামে থাকা পৃথক তিনটি প্লট রাজধানীর উত্তরায় অবস্থিত। এছাড়াও জব্দের আদেশ দেওয়া ১ হাজার ৫৭০ বর্গফুটের ফ্ল্যাটটিও উত্তরার ১০ নম্বর সেক্টরে অবস্থিত।

আবেদনে বলা হয়, ক্ষমতার অপব্যবহার ও দুর্নীতির মাধ্যমে সাবেক ডিবি প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদের বিরুদ্ধে দেশে-বিদেশে শত শত কোটি টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে অনুসন্ধান চলছে। বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, তিনি এসব সম্পদ বিক্রয় বা হস্তান্তরের চেষ্টা করছেন। সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে হারুনের এসব সম্পদ জব্দ করা প্রয়োজন।

প্রসঙ্গত, চলতি বছরের গত ১৯ ফেব্রুয়ারি হারুন অর রশীদের ১০০ বিঘা জমি, পাঁচটি ভবন ও দুটি ফ্ল্যাট জব্দ করা হয়। একই সঙ্গে বিভিন্ন ব্যাংকের ১০টি হিসাবে তার নামে থাকা ১ কোটি ২৬ লাখ ৯০ হাজার ৪৬৮ টাকা অবরুদ্ধ করা  হয়।

একইসঙ্গে তার ভাই এবিএম শাহরিয়ারের ৩০ বিঘা জমি জব্দ, ১১টি ব্যাংক হিসাব এবং তিনটি কোম্পানির শেয়ার অবরুদ্ধ করার আদেশ দেয় একই আদালত।

এম এ জলিল উজ্জ্বল//সিফাত/

চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির বিরুদ্ধে ৪৫ জনের মামলা

প্রকাশ: ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ১০:২৮ এএম
চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির বিরুদ্ধে ৪৫ জনের মামলা
চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির বিরুদ্ধে অবৈধভাবে সদস্যপদ বাতিলের অভিযোগে ৪৫ জনের মামলা। ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির বিরুদ্ধে নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করে বেআইনিভাবে ৮৬৭ জনের সদস্যপদ বাতিলের অভিযোগে চট্টগ্রাম প্রথম জেলা যুগ্ম জেলা জজ আদালতে মামলা ও নিষেধাজ্ঞা চাওয়া হয়েছে। প্রথম যুগ্ম জেলা জজ বেলাল উদ্দিন মামলাটি গ্রহণ করে ৮ মে শুনানির জন্য দিন ধার্য করেছেন। গত মঙ্গলবার অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ আরিফ উদ্দিন এবং বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ৪৪ শিক্ষক মামলাটি করেন। তবে মামলার বাদীর পক্ষ থেকে গতকাল বুধবার একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠানো হলে তা প্রকাশ্যে আসে। 

এর আগে তাদের (বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও আইন কর্মকর্তা) চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতি কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন। ওই নোটিশে অভিযোগ করা হয়, আইনের শিক্ষকেরা আইন পেশা ছাড়া অন্য পেশায় নিয়োজিত থেকেও আইনজীবী পেশা ও সমিতির বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা আদায় করছেন।
জানা যায়, বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের বিধান এবং চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সংবিধান অনুযায়ী, কোনো আইনজীবী অন্য পেশা, ব্যবসা বা চাকরিতে নিযুক্ত থাকতে পারেন না। এই বিধান অনুযায়ী, সমিতির এডহক কমিটি তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে দেখতে পায়, ৮৬৭ জন আইনজীবী বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে, যেমন- ব্যাংক, বিশ্ববিদ্যালয়, পুলিশ প্রশাসন, বিচার বিভাগসহ অন্যান্য খাতে চাকরিরত রয়েছেন। তাদের ‘নন-প্র্যাকটিশনার’ হিসেবে চিহ্নিত করে ওই কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করা হয়। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অনেকে কোনো জবাব দেননি এবং অনেকের জবাব গ্রহণযোগ্য বিবেচিত হয়নি। পরে ৯ এপ্রিল সাধারণ সভায় তাদের সদস্যপদ বাতিলের সিদ্ধান্ত হয়। 

এদিকে বাদীপক্ষের মতে, বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে শিক্ষকতা করাকে ‘আইন পেশা ছাড়া অন্য পেশা’ হিসেবে অভিহিত করা একটি ভুল ব্যাখ্যার ফল। আইন শিক্ষা আইন পেশারই একটি সম্প্রসারিত অংশ, যা এই পেশার জ্ঞানভিত্তিক ভিতকে মজবুত করে। আইন শিক্ষকতা আইন পেশার মূল উদ্দেশ্য ও চেতনার সঙ্গে সাংঘর্ষিক নয়। বরং এ দুটি পরস্পর-সম্পূরক সম্পর্ক বিচার বিভাগ ও আইনি কাঠামোকে বিকশিত এবং শক্তিশালী করে থাকে। আইন শিক্ষকতা আইন পেশার অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং বিশ্বব্যাপী বিচারব্যবস্থায় স্বীকৃত।