পুলিশ হেফাজতে হৃদয় মিয়াজী। ছবি: সংগৃহীত
প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম পারভেজ হত্যা মামলায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বনানী থানার যুগ্ম সদস্যসচিব হৃদয় মিয়াজীকে (২৩) সাত দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। বুধবার (২৩ এপ্রিল) ঢাকার অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. ছানাউল্যাহ শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।
এদিন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বনানী থানার পুলিশ পরিদর্শক এ কে এম মাইন উদ্দিন আসামিকে আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেন। অন্যদিকে আসামির আইনজীবী রিমান্ড আবেদন বাতিল করে জামিন চান।
শুনানিতে আসামির আইনজীবী তাসলিমা মিনু বলেন, ‘আমার মক্কেল ফার্মেসি ডিপার্টমেন্টের, তারা অন্য ডিপার্টমেন্টের। এ হত্যার সঙ্গে তার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। পারভেজ তার ডিপার্টমেন্টের কেউ ছিলেন না। তা ছাড়া মেয়েদেরও তিনি চেনেন না।’
পরে বিচারক মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে জিজ্ঞেস করেন, মেয়েরা কোথায়? তাদের ধরেননি কেন?
তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, ‘এ মামলায় সন্দেহ করার মতো যৌক্তিক কারণ খুঁজে পাইনি। সিসি ক্যামেরায় তাদের দেখা যায়নি। আবুজর পিয়াস অর্গানাইজ করেছেন। আমরা তাকে খুঁজছি।’ এরপর বিচারক বলেন, মামলার সঙ্গে তাদের সংশ্লিষ্টতা আছে। তারা স্পটে ছিল, মেয়েগুলোর ভূমিকা ছিল। তাদের খুঁজে বের করেন।
আসামির আইনজীবী আবার বলেন, সিসিটিভি ক্যামেরায় তার (হৃদয়) কোনো ভূমিকার কথা বলা নাই। রাজনৈতিকভাবে তাকে এ মামলায় জড়ানো হয়েছে। রাষ্ট্রপক্ষের পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী রিমান্ড মঞ্জুর করার পক্ষে শুনানি করেন। শুনানিতে তিনি বলেন, হৃদয় এজাহারনামীয় আসামি। সিসিটিভি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ দেখেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গত ২১ এপ্রিল সোমবার রাতে কুমিল্লার তিতাস উপজেলার মনাইরকান্দি গ্রাম থেকে হৃদয় মিয়াজীকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-১১। গত ২০ এপ্রিল ভোরে প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও বহিরাগতসহ আটজনের নাম উল্লেখ করে বনানী থানায় মামলা করেন পারভেজের ভাই হুমায়ুন কবির।
এজাহারে বিশ্ববিদ্যালয়ের এলএলবি ও ইংরেজি বিভাগের তিন ছাত্র মাহাথি, মেহেরাব, আবুজর ছাড়া আরও পাঁচজনকে আসামি করা হয়েছে। এরা সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।
গত ১৯ এপ্রিল বিকেল সাড়ে ৪টায় ইউনিভার্সিটি অব স্কলার্সের দুই ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করার অভিযোগে পারভেজের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থীর তর্কাতর্কি হয়। একপর্যায়ে দুই পক্ষকে নিয়ে মীমাংসার জন্য বসে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ক্যাম্পাস থেকে বের হওয়ার পর টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং ২২৩ ব্যাচের শিক্ষার্থী জাহিদুলকে এক দল যুবক ছুরিকাঘাত করেন। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এম এ জলিল উজ্জ্বল/মাহফুজ