ঢাকা ২৫ আষাঢ় ১৪৩২, বুধবার, ০৯ জুলাই ২০২৫
English

বোদায় স্ত্রী হত্যার দায়ে ১০ বছর পর স্বামীর যাবজ্জীবন, খালাস ১০

প্রকাশ: ০২ জুন ২০২৫, ০৫:৫৩ পিএম
বোদায় স্ত্রী হত্যার দায়ে ১০ বছর পর স্বামীর যাবজ্জীবন, খালাস ১০
ছবি: খবরের কাগজ

পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলায় স্ত্রী মমতাজ বেগমকে হত্যার দায়ে স্বামী সফিকুল ইসলামকে (৪৬) যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। তবে মামলার অন্য ১০ আসামিকে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে।

সোমবার (২ জুন) দুপুরে পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ-২ আদালতের বিচারক কামরুজ্জামান এ রায় ঘোষণা করেন।

দণ্ডপ্রাপ্ত সফিকুল ইসলাম জেলার বোদা উপজেলার কাজলদিঘী তরঙ্গীপাড়া এলাকার বাসিন্দা।

আদালত সূত্র জানায়, প্রায় ১৬-১৭ বছর আগে সফিকুল ইসলামের সঙ্গে একই এলাকার আব্দুল মান্নানের মেয়ে মমতাজ বেগমের বিয়ে হয়। সংসারে তাদের দুই কন্যা ও এক পুত্র সন্তান রয়েছে। বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই সফিকুল প্রতিবেশী এক নারীর সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। বিষয়টি নিয়ে দাম্পত্য কলহ ও নির্যাতন শুরু হলে স্থানীয়ভাবে একাধিকবার সালিশ বসে। কিন্তু তাতে নির্যাতন থামেনি। সফিকুল ও তার পরিবারের সদস্যরা প্রায়ই মমতাজকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করতেন। পরে ২০১৫ সালের ৮ জুলাই রাতে সফিকুল ও মমতাজের মধ্যে আবারও তুমুল ঝগড়া হয়। অভিযোগ আছে, ওই সময় মমতাজকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়। পরদিন ৯ জুলাই সকালে নিজ ঘরে মমতাজের নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয়রা। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায়। পরে প্রাথমিকভাবে বোদা থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা করা হয়।

এরপর নিহতের বাবা আব্দুল মান্নান ১৪ জুলাই ২০১৫ সালে ১১ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন। মামলার তদন্ত শেষে ২০১৮ সালের ৩১ জানুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়। দীর্ঘ বিচারিক কার্যক্রম শেষে সোমবার মামলার রায় ঘোষণা করা হলো।

রাষ্ট্রপক্ষের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) অ্যাডভোকেট ইয়াসিনুল হক দুলাল বলেন, ময়নাতদন্তে প্রমাণিত হয়েছে যে, মমতাজ বেগমকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। আমরা সন্দেহাতীতভাবে অভিযোগ প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি। আদালত তাই মূল আসামি সফিকুল ইসলামকে দোষী সাব্যস্ত করেছেন।

অন্যদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদ বলেন, 'আমরা এই রায়ে ন্যায়বিচার পাইনি। উচ্চ আদালতে আপিল করার প্রস্তুতি নিচ্ছি।'

রনি/মেহেদী/

হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ, পঞ্চদশ সংশোধনীর আংশিক বাতিল

প্রকাশ: ০৯ জুলাই ২০২৫, ০৮:৩৮ এএম
হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ, পঞ্চদশ সংশোধনীর আংশিক বাতিল
খবরের কাগজ ইনফোগ্রাফ

তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিলসংক্রান্ত সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর কয়েকটি বিধান বাতিল করেছেন হাইকোর্ট। এ বিষয়ে হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (৮ জুলাই) ১৩৯ পৃষ্ঠার এই রায় সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়।

গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর এই রায়ের ঘোষণা দেন বিচারপতি ফারাহ মাহবুব (বর্তমানে আপিল বিভাগের বিচারপতি) ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ। 

প্রসঙ্গত পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানের ৫৪টি ক্ষেত্রে সংযোজন, পরিমার্জন ও প্রতিস্থাপন আনা হয়েছিল। হাইকোর্টের ঘোষিত রায়ে বলা হয়েছে, পঞ্চদশ সংশোধনী আইন পুরোটা বাতিল করা হচ্ছে না। বাকি বিধানগুলোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার দায়িত্ব আগামী জাতীয় সংসদের ওপর ছেড়ে দিয়েছেন আদালত। 

হাইকোর্ট রায়ে বলেছেন, জাতীয় সংসদ আইন অনুসারে জনগণের মতামত নিয়ে বিধানগুলো সংশোধন, পরিমার্জন ও পরিবর্তন করতে পারবে। রায়ে আরও বলা হয়েছে, গণভোটের বিধান বিলুপ্ত করা হয়, যেটি সংবিধানের ১৪২ অনুচ্ছেদের অংশ ছিল। এটি ১৯৯১ সালে দ্বাদশ সংশোধনীতে যুক্ত হয়। সংবিধানের ১৪২ অনুচ্ছেদের গণভোটের বিধান বিলুপ্তিসংক্রান্ত পঞ্চদশ সংশোধনী আইনের ৪৭ ধারা সংবিধানের মৌলিক কাঠামোর সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়ায় বাতিল করা হলো। ফলে দ্বাদশ সংশোধনীর ১৪২ অনুচ্ছেদ পুনর্বহাল করা হলো।

২০১১ সালে পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানের ৫৪টি ক্ষেত্রে সংযোজন, পরিমার্জন ও প্রতিস্থাপন আনা হয়েছিল। এর মধ্যে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলুপ্তি-সংক্রান্ত পঞ্চদশ সংশোধনী আইনের ২০ ও ২১ ধারা সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ও বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে রায়ে।

তা ছাড়া পঞ্চদশ সংশোধনী আইনের মাধ্যমে সংবিধানে যুক্ত ৭ক, ৭খ, ৪৪ (২) অনুচ্ছেদ বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে। এর মধ্যে ৭ (ক) অনুচ্ছেদে অসাংবিধানিকভাবে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলকে রাষ্ট্রদ্রোহ অপরাধ বিবেচনায় নিয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে রাষ্ট্রদ্রোহের অপরাধে দোষী করে সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান যুক্ত করা হয়েছিল। ৭ (খ) সংবিধানের মৌলিক বিধানাবলি সংশোধন অযোগ্য করার কথা বলা ছিল। আর সংবিধানের ৪৪ অনুচ্ছেদে মৌলিক অধিকার বলবৎকরণ বিষয়ে বলা ছিল এবং ৪৪ (২) অনুচ্ছেদে বলা ছিল, “এই সংবিধানের ১০২ অনুচ্ছেদের অধীন হাইকোর্ট বিভাগের ক্ষমতার হানি না ঘটাইয়া সংসদ আইনের দ্বারা অন্য কোনো আদালতকে তাহার এখতিয়ারের স্থানীয় সীমার মধ্যে ঐ সকল বা উহার যেকোনো ক্ষমতা প্রয়োগের ক্ষমতা দান করিতে পারিবেন।”

রায়ে হাইকোর্ট বলেছেন, সংবিধানের ১৪২ অনুচ্ছেদে গণভোটের কথা ছিল, যা পঞ্চদশ সংশোধনীতে বাতিল করা হয়। এ বিধান বিলুপ্তি-সংক্রান্ত পঞ্চদশ সংশোধনী আইনের ৪৭ ধারা সংবিধানের মৌলিক কাঠামোর সঙ্গে ‘অসামঞ্জস্যপূর্ণ’ বিবেচনায় তা বাতিল ঘোষণা করা হলো এবং দ্বাদশ সংশোধনীর ১৪২ অনুচ্ছেদ পুনর্বহাল করা হলো।

হাইকোর্ট রায়ের পর্যবেক্ষণে বলেছেন, পঞ্চদশ সংশোধনী আইন পুরোটা বাতিল করা হচ্ছে না। বাকি বিধানগুলোর বিষয়ে আগামী জাতীয় সংসদ আইন অনুসারে জনগণের মতামত নিয়ে সংশোধন, পরিমার্জন ও পরিবর্তন করতে পারবে।

সংবিধানের ১০২ অনুচ্ছেদের অধীন হাইকোর্ট বিভাগের ক্ষমতার হানি না ঘটিয়ে সংসদ আইনের দ্বারা অন্য কোনো আদালতকে তার এখতিয়ারের স্থানীয় সীমার মধ্যে ওই সব বা এর যেকোনো ক্ষমতা প্রয়োগের ক্ষমতা দান করতে পারবেন। এই অনুচ্ছেদটি বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে রায়ে।

উল্লেখ্য, ২০১১ সালের ৩০ জুন আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে জাতীয় সংসদে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী আইন পাস হয়। ওই বছর ৩ জুলাই এ-সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশ করা হয়। ২০২৪ সালের ১৮ আগস্ট পঞ্চদশ সংশোধনী আইন চ্যালেঞ্জ করে সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচজন বিশিষ্ট ব্যক্তি রিট করেন। ওই রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট গত ১৯ আগস্ট রুল দেন। এতে পঞ্চদশ সংশোধনী আইন কেন সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়। রুলের ওপর চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে রায় দেন হাইকোর্ট।

তত্ত্বাবধায়ক বৃত্তান্ত
১৯৯০ সালে গণ-অভ্যুত্থানে এরশাদ সরকারের পতনের পর একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠিত হয়। ওই সরকারের তত্ত্বাবধানেই হয় সাধারণ নির্বাচন। যদিও তখন বিষয়টি সংবিধানে ছিল না।

পরবর্তী সময়ে ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে বিরোধী দলগুলো তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আন্দোলন করে। আন্দোলনের মুখে বিএনপি তখন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান এনে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী সংসদে পাস করে। পরে আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে ওই সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ১৯৯৮ সালে এম সলিম উল্লাহসহ তিন আইনজীবী উচ্চ আদালতে রিট করেন। পরবর্তী সময়ে বিএনপি সরকারের আমলে ২০০৪ সালের ৪ আগস্ট ওই রিট খারিজ হয়। ফলে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বৈধই থাকে।

উচ্চ আদালতের ওই রায়ের বিরুদ্ধে পরের বছর ২০০৫ সালে আপিল করেন রিটকারীরা। এর পরের বছর ২০০৬ সালে রাজনৈতিক সংকটের প্রেক্ষাপটে জরুরি অবস্থা জারির পর গঠিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার দুই বছর ক্ষমতায় থাকে। এত লম্বা সময় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় থাকায় এ পদ্ধতির দুর্বলতা সামনে আসে।

আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ফিরলে ২০১০ সালের ১ মার্চ আপিল বিভাগে ত্রয়োদশ সংশোধনী মামলার শুনানি শুরু হয়। শুনানিতে আপিল আবেদনকারী এবং রাষ্ট্রপক্ষ ছাড়াও অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে শীর্ষস্থানীয় ৮ আইনজীবী বক্তব্য দেন। তৎকালীন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম এবং অ্যামিকাস কিউরিদের প্রায় সবাই তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বহাল রাখার পক্ষে মত দেন।

২০১১ সালের ১০ মে তৎকালীন প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হকের নেতৃত্বে সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠের মতামতের ভিত্তিতে ওই আপিল মঞ্জুর করে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল ঘোষণা করে রায় দেন। পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ হওয়ার আগেই ওই বছর ৩০ জুন তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থার বিলুপ্তিসহ ৫৫টি সংশোধনীসহ সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী প্রস্তাব জাতীয় সংসদে পাস হয়। একই বছরের ৩ জুলাই তাতে অনুমোদন দেন রাষ্ট্রপতি।

সংবিধানের ওই সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল করা হয়। আগে মেয়াদ শেষ হওয়ার পরবর্তী ৯০ দিনে নির্বাচন করার বিধান থাকলেও ওই সংশোধনীতে পূর্ববর্তী ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করার বিষয়টি সংযোজন করা হয়।

গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা ফেরানোর দাবি আবার জোরালো হয়। এর মধ্যে পঞ্চদশ সংশোধনী চ্যালেঞ্জ করে ২০২৪ সালের ১৮ আগস্ট রিট আবেদন করেন সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচ ব্যক্তি। পরে বিএনপি, গণফোরাম, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীসহ কয়েকটি সংগঠন এবং কয়েকজন ব্যক্তি এ রিট মামলায় পক্ষভুক্ত হয়, তাদের পক্ষে আইনজীবীরা শুনানিতে অংশ নেন। সব পক্ষের শুনানি নিয়ে রায় দেন উচ্চ আদালত।

জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ মালয়েশিয়াফেরত চারজন রিমান্ডে

প্রকাশ: ০৯ জুলাই ২০২৫, ০৮:২৩ এএম
জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ মালয়েশিয়াফেরত চারজন রিমান্ডে
ছবি: সংগৃহীত

জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে মালয়েশিয়া থেকে ফেরত পাঠানো চারজনকে রিমান্ডে নিয়ে চার দিন জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দিয়েছেন আদালত।

মঙ্গলবার (৮ জুলাই) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মিনহাজুর রহমান ওই আদেশ দেন। একই সঙ্গে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা মেনে আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য তদন্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

রিমান্ডে নেওয়া আসামিরা হলেন, নজরুল ইসলাম সোহাগ, মোহাম্মদ রেদোয়ানুল ইসলাম, জাহেদ আহমেদ এবং মাহফুজ।

বিমানবন্দর থানায় করা সন্ত্রাসবিরোধী আইনে করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোসহ তাদের সাত দিন রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করা হয়েছিল। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের এন্টি টেররিজম ইউনিটের পরিদর্শক কে এম তারিকুল ইসলাম ওই আবেদন করেন। ওই আবেদনের শুনানির জন্য কারাগারে থাকা আসামিদের গতকাল আদালতে হাজির করা হয়।

আবেদনে বলা হয়, আসামিরা পর্যায়ক্রমে বাংলাদেশে এসে সন্ত্রাসবাদে জড়িত হয়ে উগ্রবাদী কার্যক্রম পরিচালনা করে দেশের অখণ্ডতা, সংহতি, স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব, জননিরাপত্তা, জনসাধারণের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টির উদ্দেশ্যে কার্যক্রম পরিচালনা করে যেকোনো সময় দেশের বিভিন্ন স্থানে সন্ত্রাসী হামলা করার সমূহ শঙ্কা রয়েছে। আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে বাংলাদেশের নাগরিক হয়ে বৈধ পথে মালয়েশিয়া গিয়ে জননিরাপত্তা, জনসাধারণের কোনো অংশে আতঙ্ক সৃষ্টির উদ্দেশ্যে আন্তর্জাতিকভাবে নিষিদ্ধ সংগঠনের কার্যক্রমের সঙ্গে নিজেদের সম্পৃক্ত হয়ে সেই দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র, উগ্রবাদী কনটেন্ট আদান-প্রদান, উগ্রবাদ ও সন্ত্রাসবাদী কার্যক্রমে যুক্ত থেকে কার্যক্রম পরিচালনার জন্য অর্থ সংগ্রহ করে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে অপরাধ করেছে মর্মে প্রাথমিকভাবে সত্যতা পাওয়া যায়। মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে আসামিদের ব্যাপক ও নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের পুলিশ রিমান্ড প্রয়োজন।

আদালতে রিমান্ড মঞ্জুর করার পক্ষে শুনানিতে প্রসিকিউশন কর্মকর্তা বলেন, বিদেশ থেকে বাংলাদেশে হাজার হাজার কোটি টাকা রেমিট্যান্স আসে। অথচ আসামিরা বিদেশ গিয়ে সেই পথ বন্ধ করার চেষ্টা করেছে। দেশের সুনাম নষ্ট করার চেষ্টা করছে। এদের জন্য দেশ বিপদে পড়েছে। ঘটনা বিষয়ে আরও ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন। 

বিচারক কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে থাকা আসামিদের বক্তব্য জানতে চাইলে তারা জঙ্গিবাদের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয় বলে নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন। আসামিদের আইনজীবী রিমান্ড বাতিল করে জামিন চেয়ে আবেদন করেন।

বিচারক শুনানি শেষে জামিন নামঞ্জুর করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। 

প্রসঙ্গত, মালয়েশিয়া থেকে ফেরত পাঠানোর পর গত শুক্রবার তাদের ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে হাজির করা হয়। পরে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।

প্রসঙ্গত, মালয়েশিয়ায় জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া ৩৫ প্রবাসীর বিরুদ্ধে এন্টি টেররিজম ইউনিটের পুলিশ পরিদর্শক মো. আব্দুল বাতেন বাদী হয়ে গত ৫ জুলাই ঢাকার বিমানবন্দর থানায় এ মামলা করেন।

মামলায় নজরুল ইসলাম সোহাগ, মোহাম্মদ রেদোয়ানুল ইসলাম, জাহেদ আহমেদ, পারভেজ মাহমুদ পাবেল, শরীফ উদ্দিন, রহমান মোহাম্মদ হাবিবুর, সালেহ আহমেদ, মো. আব্দুস সহিদ মিয়া, মো. মতিন, ফয়সাল আলম, রায়হান আহমেদ, মো. রাজ, মো. মনসুরুল হক, ইমন মহিদুজ্জামান, আকরাম মো. ওয়াসিম, শেখ সালাম, মোহাম্মদ রাজ মাহমুদ মণ্ডল, আশরাফুল ইসলাম, মোহাম্মদ ফয়সাল উদ্দিন, মাহফুজ, রবিউল হাসান, মোহাম্মদ সোহেল রানা, মো. আফসার ভূঁইয়া, হোসাইন সাহেদ, মো. আশিকুর বিশ্বাস, মো. শাওন শেখ, ইয়াসিন আলী, মোহাম্মদ পারভেজ মোশারফ, মহিউদ্দিন, সাব্বির হোসাইন, আব্দুল্লাহ আল মামুন, মো. রফিকুল ইসলাম, মো. শাকিল মিয়া, আসাদুজ্জামান হোসাইন এবং মো. সোহাগ রানাকে আসামি করা হয়েছে। 

উল্লেখ্য, গত ২৭ জুন মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দাতুক সেরি সাইফুদ্দিন নাসুতিওন ইসমাইল উগ্র জঙ্গি আন্দোলনের সঙ্গে সরাসরি জড়িত থাকার অভিযোগে মালয়েশিয়ায় ৩৬ বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তারের তথ্য দেয়।

সালমান এফ রহমান ও তার ছেলেসহ ১৩ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

প্রকাশ: ০৮ জুলাই ২০২৫, ০৮:১৫ পিএম
আপডেট: ০৮ জুলাই ২০২৫, ০৮:২০ পিএম
সালমান এফ রহমান ও তার ছেলেসহ ১৩ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
ছবি: সংগৃহীত

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাণিজ্য উপদেষ্টা ও আইএফআইসি ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান ও তার ছেলেসহ ১৩ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। 

মঙ্গলবার (৮ জুলাই) ঢাকার মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ জাকির হোসেন গালিব দুদকের আবেদন মঞ্জুর করে এ আদেশ দেন। 

দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা তানজির আহমেদ এ তথ্য জানান।

সালমান এফ রহমান ছাড়া নিষেধাজ্ঞা দেওয়া ব্যাক্তিরা হলেন- সালমান এফ রহমানের ছেলে আহমেদ শায়ান ফজলুর রহমান, আইএফআইসি ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ শাহ আলম সারোয়ার, সাবেক পরিচালক রাবেয়া জামালী, এ.আর. এম নাজমুস সাকিব, কামরুন নাহার আহমেদ, মো. জাফর ইকবাল, সাবেক উপ ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহ মো. মঈনুদ্দিন, মো. নুরুল হাসনাত, বেক্সিমকো গ্রুপের ডেপুটি ম্যানেজার কৌশিক কান্তি পন্ডিত, সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী, সার্ভ কনট্রাকশন লিমিটেডের পরিচালক সারওয়াত সুলতানা মনামী ও একই প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনিরুল ইসলাম।

দুদকের উপপরিচালক মো. ইয়াছির আরাফাত নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করেন।

আবেদনে বলা হয়, ঋণের নামে আইএফআইসি ব্যাংক প্রিন্সিপাল শাখার অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে আইএফআইসি ব্যাংক পিএলসির সাবেক চেয়ারম্যান সালমান ফজলুর রহমান এবং আইএফআইসি ব্যাংক পিএলসি, প্রিন্সিপাল শাখার গ্রাহক সার্ভ কনট্রাকশন অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের কথিত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মনিরুল ইসলামসহ অন্যান্যদের বিরুদ্ধে করা মামলা তদন্তাধীন। 
তদন্তকালে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, এজাহারনামীয় এ আসামিরা দেশ ছেড়ে পলায়ন করতে পারেন। এতে তদন্ত কার্যক্রম বিঘ্নিত হতে পারে। মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তাদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া একান্ত প্রয়োজন।

জলিল/মেহেদী/

ঝিনাইদহে পুলিশ কর্মকর্তা হত্যায় ৪ জনের মৃত্যুদণ্ড, ৪ জনের যাবজ্জীবন

প্রকাশ: ০৮ জুলাই ২০২৫, ১২:৪৮ পিএম
আপডেট: ০৮ জুলাই ২০২৫, ০২:০৩ পিএম
ঝিনাইদহে পুলিশ কর্মকর্তা হত্যায় ৪ জনের মৃত্যুদণ্ড, ৪ জনের যাবজ্জীবন
আমজাদ হোসেন ।

ঝিনাইদহে পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মিরাজুল ইসলাম হত্যা মামলায় চারজনের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়া এ মামলায় চারজনকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। রায়ে সাতজনকে খালাস দেওয়া হয়। উপ-পরিদর্শক মিরাজুল সদর উপজেলার ডাকবাংলা পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ ছিলেন।

সোমবার (৭ জুলাই) দুপুর ১২টার দিকে ঝিনাইদহের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক মাহাবুব আলম এ রায় দেন।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ২০১১ সালের ২৩ আগস্ট রাতে জেলা শহরের বাস মালিক সমিতির কার্যালয়ের সামনে একটি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় পড়ে। পরে ঘটনাস্থলে পুলিশ এলে আরোহীরা পালিয়ে যান। সে সময় দেখা যায়, মোটরসাইকেলটি পুলিশের উপ-পরিদর্শক মিরাজুল ইসলামের। কিন্তু তখন তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

পরদিন সকালে সদর উপজেলার ভেটেরিনারি কলেজের পাশের ডোবা থেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় এসআই মিরাজুলের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পুলিশ ওইদিনই ঝিনাইদহ সদর থানায় একটি হত্যা মামলা করে। পুলিশ ২০১২ সালের জানুয়ারি মাসে ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দেয়।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- রাজবাড়ি জেলার নিমতলার লিয়াকত হোসেন, আমজাদ হোসেন, দক্ষিণ দৌলতদিয়া গ্রামের আক্কাস আলী ও ফরিদপুর জেলার ভাটি লক্ষ্মীপুর গ্রামের আলম শেখ।

যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন-  ফরিদপুর জেলার গোয়ালচামট গ্রামের মোহাম্মদ সাগর, টাপাখোলা গ্রামের নুরু খা, শোভারামপুর গ্রামের শাহীন ও যশোরের শেখহাটি খা পাড়ার মনির হোসেন। আসামিদের মধ্যে আমজাদ হোসেন ছাড়া বাকিরা পলাতক।

সন্ত্রাসীরা এসআইয়ের কাছে থাকা পিস্তল, গুলি, মোটরসাইকেল ছিনতাইয়ের জন্য তাকে হত্যা করে থাকতে পারে বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়। রায়ে তার সহকর্মী ও পরিবার সন্তোষ প্রকাশ করেন।

ঝিনাইদহ কোর্ট পরিদর্শক মোক্তার হোসেন খবরের কাগজ বলেন, গ্রেপ্তার থাকা মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি আমজাদ হোসেনকে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

মাহফুজুর/রিফাত/

পিডিবির সাবেক প্রধান প্রকৌশলী হযরত আলীর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

প্রকাশ: ০৭ জুলাই ২০২৫, ০৬:৪৭ পিএম
পিডিবির সাবেক প্রধান প্রকৌশলী হযরত আলীর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
খবরের কাগজ গ্রাফিকস

বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) অবসরপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. হযরত আলীর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত। 

সোমবার (৭ জুলাই) ঢাকার মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ জাকির হোসেন গালিব দুদকের আবেদন মঞ্জুর করে এ আদেশ দেন। 

দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা তানজির আহমেদ এ তথ্য জানান।

দুদকের উপ-পরিচালক নাজমুল ইসলাম নিষেধাজ্ঞার আদেশ চেয়ে আবেদন করেন। 

আবেদনে বলা হয়, পিডিবির সাবেক ওই প্রধান প্রকৌশলী ব্যাপক দুর্নীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন মর্মে অভিযোগে অনুসন্ধান কার্যক্রম চলমান রয়েছে। তিনি দেশ ছেড়ে বিদেশে পালিয়ে যেতে পারেন। সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে তার দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া একান্ত প্রয়োজন। 

উজ্জ্বল/সালমান/