
ধর্ষণ মামলায় গায়ক নোবেলকে জামিন দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৪ জুন) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহেরা মাহবুব এ জামিন মঞ্জুর করেন।
ইসলামী শরিয়াহ অনুযায়ী বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হওয়ায় এবং উভয় পক্ষের মধ্যে আপোষের কারণে তাকে জামিন দেওয়া হয়েছে বলে জানান নোবেলের আইনজীবী খলিলুর রহমান।
তিনি জানান, বাদীর সঙ্গে যেহেতু বিয়ে হয়ে গেছে। সেহেতু তার কারামুক্তিতে আর কোনো বাধা নেই। পরবর্তীতে বাদীর অনুমতি সাপেক্ষে আমরা মামলা প্রত্যাহারের জন্য আদালতে আবেদন করব।
গত রবিবার (২২ জুন) নোবেলের পক্ষে জামিন আবেদন করা হয়। ওই দিন আদালত এ মামলার বাদী ও নোবেলের উপস্থিতিতে শুনানির জন্য মঙ্গলবার (২৪ জুন) দিন ধার্য করেন।
শুনানির সময় নোবেলকে কারাগার থেকে হাজির করা হয়। অন্যদিকে বাদী আদালতে উপস্থিত হন।
আদালতে শুনানির সময় বাদী বলেন, জামিনে তার আপত্তি নেই। আসামি পক্ষ থেকে বলা হয় ইতিমধ্যে বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে তবে রেজিস্ট্রি হয়নি। জামিন পাওয়ার পর বিবাহ রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হবে।
এর আগে গত ১৯ জুন কারা কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারে নোবেল ও প্রিয়ার বিয়ে হয়। আগের দিন গত ১৮ জুন তাদের কাবিনমূলে বিয়ের ব্যবস্থা করার জন্য কারা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন আদালত।
গত ১৯ মে নোবেলের বিরুদ্ধে ধর্ষণ, নির্যাতন ও পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা করেন ইডেন মহিলা কলেজের সাবেক শিক্ষার্থী ইসরাত জাহান প্রিয়া। মামলা দায়েরের পরই নোবেলকে ডেমরা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
আদালতে হাজির করার পর জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। এর পর থেকে কারাগারেই ছিলেন।
মামলার বিবরণে বলা হয়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভুক্তভোগী ইডেন কলেজের ছাত্রী প্রিয়ার সঙ্গে নোবেলের পরিচয় হয়। এরপর তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। গত বছরের ১২ নভেম্বর গায়ক নোবেল তার স্টুডিও দেখানোর কথা বলে ভুক্তভোগীকে ডেমরা থানাধীন তার বাসায় নিয়ে যায় আসামি নোবল। এর পর কয়েকজন আসামির সহায়তায় তাকে আটকে রাখে। তার মোবাইল নিয়ে নেয়। বাদী তার পরিবারের সঙ্গে কথা বলার জন্য আসামিকে মোবাইল ফোন ফেরত দেওয়ার জন্য বললে নোবেল ওই ছাত্রীর ২৬ হাজার টাকার রেডমি ১০ প্রো মোবাইল ফোন ভেঙে ফেলে।
এর পর আসামি নোবেল তার বসতঘরে আটক রেখে ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করে এবং ধর্ষণের ভিডিও তার মোবাইল ফোনে ধারণ করে। নোবেলের কথামতো বাসায় না থাকলে মোবাইল ফোনে ধারণকৃত ধর্ষণের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেবে বলে জানায়। তাই বাদী আসামির ভয়ে কাউকে কোনো কিছু বলার সাহস পাননি।
মামলায় আরও বলা হয়, এর পর আসামি নেশাগ্রস্ত অবস্থায় বিভিন্ন তারিখ ও সময়ে বাদীকে মারধর করতেন। আসামি তার সহযোগী অজ্ঞাতনামা আরও ২/৩ জনের সহায়তায় বাদীকে নির্যাতন করে একটি কক্ষে আটক করে রাখে।
ওই ঘটনার একটি ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বাদীর বাবা-মা তাকে চিনতে পারে। এর পর তারা জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কল দিলে গত ১৯ মে রাত সাড়ে ৯টায় নোবেলকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং ভুক্তভোগী ছাত্রীকে উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় ডেমরা থানায় অপহরণপূর্বক ধর্ষণের অভিযোগে নোবেলের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।
জলিল/মেহেদী/