রূপকথার মতো বাস্তবেও বছরের পর বছর ঘুমিয়ে আছে এক রাজপুত্র। যার ঘুম ভাঙানোর জন্য কোটি কোটি টাকা খরচ করেও তার ঘুম ভাঙানো যায়নি। দু-এক বছর নয় প্রায় ১৯ বছর ঘুমিয়ে আছেন তিনি। বিশ্বের কাছে তিনি পরিচিত ‘ঘুমন্ত রাজপুত্র’ (স্লিপিং প্রিন্স) হিসেবে। মারাত্মক দুর্ঘটনার শিকার হয়ে কোমায় আছেন। আর কোমায় থাকা মানে এক প্রকার ঘুমিয়ে থাকা। এ কারণে তাকে ‘স্লিপিং প্রিন্স’ বা ‘ঘুমন্ত যুবরাজ’ বলে অভিহিত করা হয়।
সৌদি রাজপরিবারের একজন যুবরাজ তিনি। তার নাম আল ওয়ালিদ বিন খালিদ বিন তালাল আল সৌদ। তিনি সৌদি রাজপরিবারের সদস্য খালিদ বিন তালাল আল সৌদের ছেলে এবং সৌদি ধনকুবের ব্যবসায়ী আল ওয়ালিদ বিন তালালের ভাইয়ের ছেলে।
যুবরাজ আল ওয়ালিদ মূলত ২০০৫ সালে মাত্র ১৮ বছর বয়সে রিয়াদে গাড়ি দুর্ঘটনার মুখোমুখি হন এতে মাথায় আঘাতের ফলে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়। তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন, মস্তিষ্কে আঘাত লাগার কারণে তিনি কোমায় চলে গেছেন। তখনই তাকে লাইফ সাপোর্ট দেওয়া হয়। ২০০৫ সাল থেকে ওয়ালিদের অবস্থার কোনো রকম উন্নতি হয়নি। চিকিৎসকরা অনেকবার ওয়ালিদকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছেন।
এমনও সময় হয়েছিল তারা সব আশা ত্যাগ করে লাইফ সাপোর্ট বন্ধ করে দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তার বাবা খালিদের আশা ছেড়ে দেননি। রিয়াদে একটি হাসপাতালে ১১ বছরের রাখার পর ২০১৬ সালে ওয়ালিদকে বাড়িতে নিয়ে গিয়ে তার চিকিৎসা করানো হচ্ছে। ওয়ালিদকে দেখাশোনার জন্য দশেক কর্মচারী রাখা হয়েছে। এর জন্য খরচ হচ্ছে কোটি কোটি টাকা।
দ্য নিউ আরবের খবর অনুযায়ী, দীর্ঘ ১৯ বছর কেটে গেলেও খালেদ বিন তালাল ছেলের লাইফ সাপোর্ট খুলতে দেননি। তিনি এখনো আশা করেন, তার ছেলে একদিন জেগে উঠবে। কোমা থেকে বেরিয়ে সুস্থ হয়ে উঠবে। কোমায় থাকলেও যুবরাজ আল ওয়ালিদ মাঝে মধ্যেই সাড়া দেন বলে দাবি করেছেন আত্মীয়-স্বজনরা। মাঝে মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পরিবারের সদস্যরা তার অবস্থা নিয়ে পোস্ট করেন। ২০১৫ সালে আঙুল নাড়াতে দেখা গিয়েছিল। ২০২০ সালে অক্টোবরে আশাব্যঞ্জক পরিস্থিতিও তৈরি হয়েছিল। সেখানে তাকে হাত নাড়তে দেখা যায়। ভিডিওতে দেখা যায়, যুবরাজ তালাল নিজের হাত সরিয়ে নিচ্ছেন। এ সময় তার বিছানার পাশে স্বজনরা কথা বলছিলেন।
এরপর ২০২২ সালে যুবরাজের একটি ছবি প্রকাশ করে দোয়া চেয়েছেন যুবরাজের ফুফু রাজকুমারী রিমা বিনতে তালাল। রাজকুমারী তার ভাগনের ভিডিও শেয়ার করে তার আরোগ্যের জন্য সবার কাছে দোয়া চেয়েছিলেন।
কলি