ঢাকা ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪

পিসার হেলানো টাওয়ারের ইতিহাস

প্রকাশ: ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ০৩:৪৭ পিএম
আপডেট: ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ০৩:৪৮ পিএম
পিসার হেলানো টাওয়ারের ইতিহাস
ছবি: সংগৃহীত

এ পর্যন্ত এমন কোনো স্থাপনার কথা শুনেছেন, যা পৃথিবী-বিখ্যাত কিন্তু তার কারিগর কে, তা কেউ জানে না? আজ আপনাদের তেমনই একটা স্থাপনার গল্প শোনাব।স্থাপনাটি বিশ্বের সপ্তম আশ্চর্যের একটি। বলছিলাম, ইতালির পশ্চিমের ছোট্ট শহর ‘পিসা’র হেলানো টাওয়ারের কথা। আজ থেকে প্রায় ১ হাজার বছর আগের কথা।

ব্যবসাবাণিজ্যে সমৃদ্ধ হতে শুরু করেছে পিসা শহরটি। নগরবাসী অনুভব করল, শহরে একটা ক্যাথিড্রাল থাকা প্রয়োজন। না হলে আশপাশের অন্যান্য শহরের তুলনায় তারা কোথাও না কোথাও পিছিয়ে থাকবে। সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হওয়ার পর নগরবাসী একটি ক্যাথিড্রাল তৈরি করে ফেলল। ১০৬৩ থেকে ১০৯২, ক্যাথিড্রালটি তৈরি করতে সময় লাগল পাক্কা ২৯ বছর। পাহাড় থেকে আনা বিখ্যাত সাদা মার্বেল পাথর দিয়ে বানানো ক্যাথিড্রালটি অনিন্দ্য সুন্দর হয়ে ধরা দিল। ২৯ বছরের সাধনা যেন সার্থক হলো।

ক্যাথিড্রাল তৈরির পর কেটে গেল ৫০ বছর। কিন্তু ততদিনেও তেরি হয়নি ক্যাথিড্রালের ঘণ্টা বাজানোর জন্য কোনো ঘণ্টা টাওয়ার। ১১৭৩ সাল। টাওয়ারের নকশা তৈরি করা হয়ে গেল। ঘণ্টা টাওয়ারের নির্মাণকাজের প্রয়োজনে ডোনা বার্তা নামের এক ধনী নারী অনেকগুলো রুপার মুদ্রা দান করলেন। তার দেওয়া অর্থ দিয়ে যতগুলো পাথর কেনা সম্ভব হলো, তা দিয়েই ঘণ্টা টাওয়ারের কাজ শুরু করা হলো। সেই অপর্যাপ্ত পাথর দিয়ে পুরো ফাউন্ডেশনটি মাত্র ৩ মিটার গভীর করা সম্ভব হলো। এত গুরুত্বপূর্ণ একটি স্থাপনা, অথচ কারও মাথাতেই এল না এই মস্ত বড় টাওয়ারটি মাত্র ৩ মিটার গভীরতা নিয়ে কীভাবে ঠিকঠাক দাঁড়িয়ে থাকবে। ভুলের শুরুটা তখন থেকেই। আর সেই ভুলের মাশুল টেনে নিয়ে যেতে হচ্ছে আজও। যদিও একসময় এই ভুলই শাপে বর হয়েছে। এই ভুলের জন্যই টাওয়ারটি বিশ্বের সপ্তম আশ্চর্য়ের একটি হতে পেরেছিল!

ফাউন্ডেশনের পর টাওয়ারের কাজ চলতে থাকল। তিনতলা পর্যন্ত কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর দেখা গেল, টাওয়ারটি আর ঠিকমতো দাঁড়িয়ে থাকতে পারছে না। একপাশে হেলে পড়ছে। তার পর টাওয়ারের কাজ বন্ধ হয়ে গেল। লজ্জায় ঘণ্টা টাওয়ারের কনস্ট্রাকশনের সঙ্গে জড়িত সবাই প্রোজেক্ট থেকে নিজেদের নাম সরিয়ে নিল। নকশা আর হিসাবের কাগজপত্র সব নষ্ট করে দেওয়া হলো। কেউ যেন কখনো আর জানতে না পারে, এই গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার এমন ভুলভাল কাজ কারা করেছিল।

পরবর্তী ১০০ বছর কাজ বন্ধ থাকল। টাওয়ারটি ওরকমভাবেই রয়ে গেল। ততদিনে পিসা শহরের ওপর দিয়ে বয়ে গেল নানান যুদ্ধবিগ্রহ। ১০০ বছর পর পরিস্থিতি মোটামুটি স্থিতিশীল হলে নগর কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিল, টাওয়ারের কাজ এবার ঠিকঠাক মতো শেষ করা হোক। স্থপতি জিওভান্নি ডি সিমিওনিকে দেওয়া হলো এর গুরুভার। কিন্তু ভুল যেন পিছু ছাড়ছিল না। টাওয়ারের হেলে যাওয়া যেন বোঝা না যায়, তাই তিনি প্রতি তলার একপাশ আরেক পাশ থেকে উঁচু করে নির্মাণ করতে লাগলেন। এবং আরও বেশি ঘনত্বের মার্বেল পাথর ব্যবহার করলেন। ফলে, পাথরের ভারে এবং উচ্চতার অসামঞ্জস্যতায় টাওয়ার আরও হেলে পড়ল। স্বাভাবিকভাবে এবারও কাজ বন্ধ হয়ে গেল।
তার পর কেটে গেল আরও ৫০ বছর। আবার নতুন উদ্যমে কাজ শুরু করা হলো। সাত তলা পর্যন্ত কাজ সম্পন্ন করে ঝুলিয়ে দেওয়া হলো ঘণ্টা। ১৩৭২ সালে ঘণ্টা টাওয়ারটি তার কাঙ্ক্ষিত ঘণ্টর ছোঁয়া পেল।

গল্প এখানেই শেষ নয়। টাওয়ারটির কপালে দুর্ভোগের অন্ত নেই। ১৮৩৮ সালে আলেসান্দ্রো ডেল্লা নামের একজন স্থপতি টাওয়ারের ফাউন্ডেশন কিছুটা খুঁড়ে বের করে প্ল্যাটফর্ম তৈরি করতে যান। এতে পুরো টাওয়ারটি অনেকখানি হেলে যায়। তিনি তখনই ফাউন্ডেশনটি আবার মাটি সিমেন্ট দিয়ে ভরাট করে ফেলেন। নিরাপত্তার কথা ভেবে ১৯৯০ সালে এটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। তার পর শুরু হয় সংস্কারের কাজ। কাজ শেষে ২০০১ সালে তা পুনরায় দর্শনার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া হয় এবং স্থপতিরা নিশ্চয়তা দেন যে, আগামী ১০০ বছর এটি নিরাপদ থাকবে।

বিখ্যাত বিজ্ঞানী গ্যালিলিও ১৫৯০ সালে এই টাওয়ারে বস্তুর ভরের ওপর পৃথিবীর ত্বরণের পরীক্ষাটি চালান। যার মাধ্যমে তিনি ২ হাজার বছর আগে দেওয়া অ্যারিস্টটলের থিওরি প্রমাণ করেন।

পিসা শহরটি ছোট হলেও শুধুমাত্র এই আশ্চর্যজনক টাওয়ারটি দেখতে প্রতি বছর লাখ লাখ পর্যটক আসেন এ শহরে। বলা বাহুল্য, এ টাওয়ারের জন্যই পৃথিবীসুদ্ধ মানুষ ইতালির ছোট্ট পিসা শহরটিকে চেনে।

কী অদ্ভুত না! যারা এই টাওয়ারের নকশা ও নির্মাণকাজের সঙ্গে জড়িত ছিলেন তারা যদি জানতেন একদিন তাদের ভুলভাল কাজই টাওয়ারটিকে বিশ্বজুড়ে সমাদৃত করবে, তাহলে তারা লজ্জায় নিজেদের গুটিয়ে নিতেন না বরং সগৌরবে লিখে রাখতেন টাওয়ারের ইতিহাস-সংবলিত কোনো সাইন বোর্ডে বা বইয়ের পাতায়। সময়ের অতল স্রোতে তারা হারিয়ে গেলেন নীরবে। তাদের কাজ রয়ে গেল কালের সাক্ষী হয়ে।

 কলি 

আলোচিত প্রাণী কৃষ্ণ হরিণ

প্রকাশ: ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০:০৫ পিএম
আলোচিত প্রাণী কৃষ্ণ হরিণ
ছবি: কৃষ্ণ হরিণ

বর্তমান সময়ে আলোচিত একটি প্রাণীর নাম হচ্ছে কৃষ্ণ হরিণ। ১৯৯৮ সালের অক্টোবরে বলিউড অভিনেতা সালমান খানসহ একটি শুটিং ইউনিটের আরও কয়েকজনের বিরুদ্ধে দুটি কৃষ্ণ হরিণ যা চিংকার নামেও পরিচিত- হত্যার অভিযোগে মামলা করে ভারতের রাজস্থান রাজ্যের বিষ্ণোই সম্প্রদায়। তখন থেকেই কৃষ্ণ হরিণ চলে আসে আলোচনার শীর্ষে। 

ভগবান বিষ্ণুর পূজারি  সম্প্রদায় কয়েক শ বছর ধরে ২৯টি রীতি অক্ষরে অক্ষরে মানার চেষ্টা করে। আর সেসব রীতির মূল কথা হচ্ছে- প্রকৃতির সুরক্ষা, বৃক্ষ রক্ষা ও জঙ্গলের প্রাণী রক্ষা।

বিশেষ করে কৃষ্ণ হরিণকে বিষ্ণোই সম্প্রদায় পবিত্র হিসেবে গণ্য করে। এই হরিণকে বলতে গেলে তারা পূজা করে। ভগবান কৃষ্ণের রথ টানত কৃষ্ণ হরিণ, প্রাচীন হিন্দু পুরানে এমনটাই উল্লেখ আছে। কৃষ্ণ হরিণ বা চিংকারকে মানা হয় বাতাস এবং চাঁদের বাহন হিসেবেও।

কোথায় মেলে কৃষ্ণ হরিণ?

কৃষ্ণ হরিণের সংখ্যা দিন দিন কমলেও ভারত, পাকিস্তান এবং নেপালে এই হরিণ দেখা যায়। ভারতের রাজস্থান এবং গুজরাটের মরু এলাকায় এগুলো চোখে পড়ে বেশি। পুরুষ কৃষ্ণ হরিণের ওজন সর্বোচ্চ ৪৫ কেজি পর্যন্ত হয়। উচ্চতা ৭৪-৮৮ সেমি। আর মাদি কৃষ্ণ হরিণ অপেক্ষাকৃত আকারে ছোট হয়।

রং বদলায় কৃষ্ণ হরিণ

চিংকারের প্রধান বৈশিষ্ট্য এটি রং বদলায়। বর্ষার শেষে পুরুষ চিংকারের রং থাকে কালো। কিন্তু শীতের সঙ্গে সঙ্গে রং হালকা হতে হতে এপ্রিল নাগাদ বাদামি হয়ে যায়। বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞ আরাফ তাহসিন বলেন, ব্রিটিশদের সময়ে উদয়পুরে ঝাঁকে ঝাঁকে চিংকার দেখা যেত, কিন্তু এখন সেই দৃশ্য বিরল। এরা ঘন জঙ্গলের প্রাণী নয়, সমতলে খোলা জায়গা এদের পছন্দ। যেহেতু এ ধরনের জায়গা দ্রুত মানুষের দখলে চলে যাচ্ছে, ফলে এরা বিপদে পড়েছে।

২০০ বছর আগে যেখানে ভারতে এই হরিণের সংখ্যা ছিল ৪০ লাখের মতো, ২০১০ সালে সেটি নেমে আসে মাত্র ৫০ হাজারে। কৃষ্ণ হরিণ রয়েছে ভারতের সংরক্ষিত প্রাণীর তালিকায়। ফলে, দেশটিতে কৃষ্ণ হরিণ শিকার পুরোপুরি নিষিদ্ধ।

 

তারেক

বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল আবাসন

প্রকাশ: ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ০১:১৫ পিএম
আপডেট: ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ০১:১৮ পিএম
বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল আবাসন
ছবি: হ্যাংঝো রিজেন্ট ইন্টারন্যাশনাল অ্যাপার্টমেন্ট

পরিকল্পনা ছিল বিলাসবহুল হোটেলের। পরে সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে এটিকে একটি আবাসনের রূপ দেওয়া হয়। তবে সাধারণ আবাসন নয়, বিলাসবহুল আবাসন। বাড়িটির নাম হ্যাংঝো রিজেন্ট ইন্টারন্যাশনাল। অনেকের মতে, চীনের হ্যাংঝো রিজেন্ট ইন্টারন্যাশনাল অ্যাপার্টমেন্টই বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল আবাসন।

 

হোটেলের বদলে বাসভবন তৈরির পরিকল্পনার পর ওই ইমারতের অভ্যন্তরীণ নকশাও বদলে ফেলা হয়। ছোট ছোট অসংখ্য কক্ষ তৈরি হয় আবাসনের প্রতিটি তলায়।

 

একটি আবাসনের নিচেই যেন আস্ত একটা শহর। কী নেই সেখানে! ৬৭৫ ফুট লম্বা এই আবাসনে একসঙ্গে ২০ হাজার মানুষ বাস করতে পারেন। ইংরেজি ‘এস’ আকৃতির বিশাল ঝাঁ-চকচকে ইমারত। দূর থেকে দেখলে নজরে পড়ে শুধু জানালা আর বারান্দা। ২ লাখ ৬০ হাজার বর্গমিটারেরও বেশি জায়গাজুড়ে অবস্থিত এ অ্যাপার্টমেন্টটি ২০১৩ সালে উদ্বোধন করা হয়। 

 

আবাসনটিতে মোট ৩৯টি তলা রয়েছে। আর তাতে কয়েক হাজার উচ্চ মানের বিলাসবহুল ফ্ল্যাট রয়েছে বলে সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। শুধু তা-ই নয়, এখানে রয়েছে নানা বিপণিকেন্দ্র, রেস্তোরাঁ, স্কুল এমনকি হাসপাতালও। অত্যাধুনিক ফিটনেস সেন্টার, খাবারের দোকান, সুইমিং পুল, সেলুন সবই রয়েছে এর চৌহদ্দির মধ্যেই।

 

বিভিন্ন প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই বাসভবনে বাস করেন চিনের ‘হ্যাং পিয়াও’রা। চিনের তরুণ পেশাদার, সমাজমাধ্যমের তারকা এবং প্রভাবশালীদের ‘হ্যাং পিয়াও’ বলা হয়।

 

চীনা সংবাদ সংস্থা সিনার একটি নিবন্ধ অনুসারে, জানালা ছাড়া ছোট অ্যাপার্টমেন্টগুলো সাধারণত প্রতি মাসে প্রায় ১৫০০ আরএমবি (২২০ ডলার) ভাড়া নেয়। অন্যদিকে বারান্দাসহ বড় ইউনিটগুলোর ভাড়া ৪০০০ আরএমবি (৫৫০ ডলার) পর্যন্ত বা তারও বেশি হতে পারে।

 

তারেক

পাঠকের গল্প: পাগলিটাও মা হয়েছে

প্রকাশ: ০৩ নভেম্বর ২০২৪, ০১:২০ পিএম
আপডেট: ০৩ নভেম্বর ২০২৪, ০১:২১ পিএম
পাঠকের গল্প: পাগলিটাও মা হয়েছে

হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার একটি গ্রাম চৌকি। চারদিকে সবুজে ঘেরা গ্রামটি। গ্রামের প্রতিটি মানুষের জীবনধারা খুবই সহজ-সরল। অধিকাংশ মানুষই কৃষিজীবী। খুব একটা শিক্ষিত নয় বৃদ্ধ বা মধ্যবয়সী লোকগুলো। তবে নিজেদের সন্তানদের লেখাপড়া চালিয়ে যায় শত অভাবের মাঝে। চৌকি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শুরু হয় তাদের হাতেখড়ি। অনেকে কলেজের গণ্ডি পেরিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে পা রাখেন।

হাজার অভাবের মাঝেও গ্রামের লোকজন খুব অতিথিপরায়ণ। এ গ্রামের সবাইকে এক সুতোয় বেঁধে রেখেছেন যিনি তিনি হলেন রাজপ্রতাপ চৌধুরী। তাকে এই গ্রামের মধ্যমণি বলা যায়। প্রচুর অর্থ-সম্পদের মালিক হলেও নিরহংকারী মানুষ তিনি। গ্রামের প্রতিটি মানুষ তাকে শ্রদ্ধা ও সম্মান করেন। রাজপ্রতাপ চৌধুরীর স্ত্রী মায়া। স্বামীর মতোই উদার মন। তাদের এই বিশাল অট্টালিকার একমাত্র উত্তরাধিকারী তাদের সন্তান দীপায়ন চৌধুরী দ্বীপ। তবে সম্পদ নিয়ে তার বিশেষ কোনো মাথাব্যথা নেই, অনেকটাই উড়নচণ্ডী স্বভাবের। বাউন্ডুলের মতো এদিক সেদিক ছুটে চলা তার কাজ। 

বাউন্ডুলে ছেলেকে সংসারের মায়ায় বাঁধতে বিয়ের সিদ্ধান্ত নেয় বাবা-মা। ধুমধাম করে বিয়ে হয় একমাত্র ছেলের। সিলেটের হবিগঞ্জ শহরের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী অসীম রায়ের একমাত্র মেয়ে রুপার সঙ্গে বিয়ে হয় দীপায়নের। ছেলে-বৌমা নিয়ে সুখে শান্তিতে দিন যাচ্ছে চৌধুরী পরিবারের। শ্বশুর-শাশুড়িকে দেখে মুগ্ধ হয় রুপা। কত দয়ালু তারা। নিজেদের থেকেও অন্যের কথা বেশি ভাবে। গ্রামের সবাইকে সাহায্য করে। সব পূজায় ভালো রান্না হয় গ্রামবাসীর জন্য। পেট পুরে খায় পঞ্চব্যঞ্জন। দীপায়ন এখন অনেকটাই ঘরমুখো। দিনশেষে ঠিকই ঘরে ফেরে। মাঝে মাঝে রুপাকে সঙ্গে নিয়ে ঘুরে বেড়ায় গ্রাম। সবই ঠিক যাচ্ছিল। বছর ঘুরতেই বউয়ের কাছে আবদার করে বসে মায়া দেবী। এবার তারা দাদু, ঠাম্মা হতে চান। রুপাও অমত করেনি। কিন্তু বিধাতা বিরূপ হলো তাদের প্রতি। বিধাতা বোধহয়, ভালো মানুষের কপালে খারাপই লেখেন সবসময়। বহু চেষ্টার পরও তারা বাবা-মা ডাক শোনা থেকে বঞ্চিত। অনেক ডাক্তার দেখানো হলো। কিন্তু তাতে কোনো লাভ হয়নি। দ্বীপ কখনোই বাবা হতে পারবে না। রুপাকে ছেড়ে দিতে বলে দ্বীপ। অন্যত্র বিয়ে হলে মা হতে পারবে। রুপা ছেড়ে যাওয়ার কথা কল্পনায়ও আনে না। শুধু ঈশ্বরের কাছে দুহাত পেতে এক সন্তানের জন্য ব্যাকুল হয়ে অশ্রু ঝরায়। বেশ কিছুদিন পর গ্রামে কোথা থেকে যেন এক পাগলি এসে পড়ে। কেউই চেনে না মেয়েটাকে। কোনো এক চাষি খেতে কাজ করতে গিয়ে শুনতে পায় কে যেন কোঁকড়াচ্ছে যন্ত্রণায়। একটু এগোতেই দেখে এক পাগলিকে। তখন দেখতে পায় মেয়েটি অন্তঃসত্ত্বা। তাড়াতাড়ি লোক জড়ো করে নিয়ে যায় চৌধুরীদের বাড়ির সামনে। গিন্নি মাকে বিষয়টা জানানো দরকার খুব। এই গ্রামে মায়া দেবীর মতো দয়ালু মমতাময়ী আর কে আছেন! গিন্নি মা খবর পেয়ে অতিথিশালায় নিয়ে যান পাগলিকে। মেয়েটির অবস্থা দেখে খুবই মায়া হয় গিন্নি মায়ের। আহা! পাগলিটাকেও ছাড় দিল না সমাজের হিংস্র জানোয়ারগুলো। মুখে কিছুই বলতে পারে না, কত যন্ত্রণা পাচ্ছে দেখেই বোঝা যায়। খাবার খাইয়ে দিল নিজ হাতে মেয়েটাকে। রাতে প্রসব ব্যথায় যখন কাতরাচ্ছিল সেসময় মায়া দেবী পাশেই বসা ছিল। কিছুক্ষণের ভেতর জন্ম হলো এক ফুটফুটে কন্যাসন্তানের। সে যেন এক ফুটন্ত পদ্ম। মায়া দেবী কোলে তুলেই নাম দিল পদ্ম। আমার পদ্ম। বিধাতার কী নির্মম খেলা। কেউ চেষ্টা করেও সন্তান পায় না, কেউ রাস্তায় পড়ে পাগল হয়ে ঘুরে সন্তান পায়। যেহেতু সদ্য জন্ম নেওয়া মেয়েটার মা পাগলি তাই তার যত্ন কে করবে এই ভেবে মায়া দেবী সদ্য ফোটা পদ্মকে নিয়ে তুলে দেয় নিজ পুত্রবধূর কোলে। পরম মমতায় বুকে জড়িয়ে নেয় পদ্মকে। 

এদিকে সদ্য মা হওয়া মেয়েটা দুগ্ধ যন্ত্রণায় যেন মরে যায়। এক ফোঁটা বুকের দুধ দিতে ব্যাকুল হয়ে পৌঁছে যায় চৌধুরীর গৃহে। কীভাবে যেন রুপার পাশ থেকে ছোঁ মেরে তুলে নেয় তার মেয়েকে। মেয়ে মাকে পেয়ে তাকিয়ে হাসছে কেমন, হঠাৎ চোখ মেলে এমন দৃশ্যে রুপা অঝোরে কাঁদতে লাগল। আহা মাতৃত্ব! বড়ই মধুর যন্ত্রণাময়! আবার ফিরে যায় সে অতিথিশালায়। এভাবেই যখনই দুগ্ধ যন্ত্রণা হয় তখনই ছুটে আসে মেয়েকে স্তন পান করাতে। বিষয়টা মায়া দেবী জানতে পারেন। এভাবে চলতে থাকলে পদ্মরও যে বড় ক্ষতি হবে। মেয়েটা সমাজে কোন পরিচয়ে থাকবে! তাই তিনি সিদ্ধান্ত নিলেন এই পাগলিকে দূরে কোথাও পাঠিয়ে দেবে। একটি ট্রাকে করে কয়েকজন লোক দিয়ে অনেক দূরে রেখে আসলেন পাগলিকে। 

এদিকে রাতের বেলা পাগলি ঠিকই চলে এল মাতৃত্বের টানে। আবার মেয়েকে কোলে নিয়ে দুধ পান করে আবার ফিরে যায়। এভাবেই দুদিন পর পাগলি এসে ঘুমন্ত রুপার পাশ থেকে ছোঁ নিয়ে পদ্মকে তুলে দেয় এক ছুট। রুপার চিৎকার শুনে ছুটে গিয়ে দেখে নিজ সন্তান কোলে নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছে পাগলিটা। মায়া দেবী দীর্ঘশ্বাস ফেলে ভাবেন, মাতৃত্ব বড়ই অদ্ভুত! পাগলি তো কী হয়েছে, মা তো!


মুনমুন চক্রবর্তী 
ঠাকুরবাড়ি 
বড়ালিয়া, চন্দ্রগঞ্জ
লক্ষ্মীপুর

 

তারেক

বিচিত্র সব গাছ

প্রকাশ: ০২ নভেম্বর ২০২৪, ০১:০৩ পিএম
বিচিত্র সব গাছ
ছবি: সংগৃহীত

বিচিত্র পৃথিবীতে বিচিত্রতার শেষ নেই। অদ্ভুত সব রহস্য এখন নিত্যদিনের ঘটনা। বিচিত্র পৃথিবীর কিছু অদ্ভুত গাছ সম্পর্কে জেনে নিই চলুন। যেসব গাছ শুধু একটা করেই আছে।


উল্টো ডুমুর গাছ

ইতালির শহর বাকোলির চীন রোমান আর্চওয়ের ছাদ বেয়ে উলটো করে ঝুলে আছে এক ডুমুর গাছ। অদ্ভুতভাবে বেড়ে ওঠা এই গাছে ফলও ধরে। এই গাছ আক্ষরিকভাবেই উল্টো। মাটি ফুঁড়ে নয় বরং ছাদ থেকে মাটির দিকে নেমে এসেছে এটি। ডুমুর গাছ সাধারণত শুষ্ক এবং রৌদ্রোজ্জ্বল জায়গা পছন্দ করে, তবে তারা শক্তিশালী শিকড় এবং অল্প পানিতেও বেড়ে ওঠে। তবে পারকো আর্কিওলজিকো দেলে তের্মে ডি বাইয়ার একটি গুহার ছাদ থেকে, একটি ডুমুর গাছ ভুল পথে কীভাবে বেড়ে উঠেছে তা অজানা।

প্রিজন ট্রি

বোয়াব প্রিজন ট্রি প্রায় দেড় হাজার বছর পুরোনো। গায়ে বড় ফাঁপাওয়ালা এ অদ্ভুত গাছ অস্ট্রেলিয়ায় অবস্থিত। পশ্চিম অস্ট্রেলিয়া থেকে ৬ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত এই গাছের পরিধি প্রায় ১৪ মিটার। বলা হয় এই গাছে বন্দিদের রাখা হতো। তাই এর নাম প্রিজন গাছ। অর্থাৎ গাছের কুটুরি বা ফাঁপা অংশে বন্দিদের রাখা হতো। যদিও এর সুনির্দিষ্ট প্রমাণ নেই। গাছের অস্বাভাবিক কাণ্ডের আকৃতি এবং স্থানীয় ইতিহাসের সঙ্গে মিশ্রণে এটিকে ভয়ংকর এবং অনন্য করে তোলে। বিশাল কাণ্ডের এই গাছের আশপাশে হাড়গোড় দেখতে পাওয়া যায়। ধারণা করা হয় এখানকার আদিবাসীরা গাছটিকে মৃতদেহ সৎকারের কাজে ব্যবহার করত।

লাহাইনার বটবৃক্ষ

১৮৭৩ সালে রোপণ করা এই বিশাল বটগাছটির একাধিক কাণ্ড রয়েছে, যা একটি গাছ থেকে একটি ছোটখাটো বন তৈরি করে। যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াইয়ে অবস্থিত এ গাছটি যেন শহরজুড়ে বিস্তৃত। প্রথম আমেরিকান প্রোটেস্ট্যান্ট মিশনের আগমনের ৫০তম বার্ষিকী উপলক্ষে ১৮৭৩ সালের ২৪ এপ্রিল হাওয়াইয়ের লাহাইনায় গাছটি রোপণ করা হয়েছিল। ১ দশমিক ৯৪ একর জুড়ে, গাছটি লাহেনা বেনিয়া কোর্ট পার্কে অবস্থিত। প্রায় ৬০ ফুট উচ্চতার এই গাছ কাণ্ড ব্যতীত ১৬টি প্রধান শিকড়সহ বিস্তৃত, যা প্রায় শূন্য দশমিক ৬৬ একর এলাকাজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। এটি রাজ্য এবং দেশের বৃহত্তম বটগাছ হিসেবে বিবেচিত হয়।

 

তারেক

পৃথিবীর সেরা বিমানবন্দর

প্রকাশ: ২৯ অক্টোবর ২০২৪, ১২:২০ পিএম
পৃথিবীর সেরা বিমানবন্দর
কাতারের হামাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর

বিশ্বের সেরা বিমানবন্দর কোনটি এ প্রশ্নের উত্তরে অকপটে সবাই বলে দেবে সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি বিমানবন্দর। আধুনিক সুযোগ-সুবিধার কোনো কমতি নেই এ বিমানবন্দরে, তাই তো একটানা ১২ বার পৃথিবীর সেরা বিমানবন্দরের খেতাব অর্জন করেছে। তবে চলতি বছরে এ বিমানবন্দরকে পেছনে ফেলে বিশ্বের শীর্ষ বিমানবন্দরের খেতাব অর্জন করেছে কাতারের হামাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরটি। গতবার এর অবস্থান ছিল দ্বিতীয়।

ব্রিটেনের অ্যাভিয়েশন শিল্প সমালোচক প্রতিষ্ঠান স্কাইট্র্যাক্স প্রতিবারের মতো এবারও বিশ্বের সেরা ১০০টি বিমানবন্দরের তালিকা প্রকাশ করে। তাদের এই তালিকায় সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি বিমানবন্দরকে হারিয়ে বিশ্বসেরার মুকুট অর্জন করেছে কাতারের হামাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরটি। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের যাত্রীদের ভোটে ওয়ার্ল্ড এয়ারপোর্ট অ্যাওয়ার্ডস সেরা বিমানবন্দরের তালিকা ঘোষণা করে থাকে প্রতিষ্ঠানটি। ২০২৩ সালের আগস্ট থেকে ২০২৪ সালের মার্চ পর্যন্ত শতাধিক ভ্রমণকারীর কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করে এই তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। গত ১৭ এপ্রিল জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্টে বিম্নবন্দরের এই র‌্যাংকিংয়ের ঘোষণা দেওয়া হয়। এবারের তাদের তালিকায় প্রথম দশের মধ্যে এশিয়ারই ছিল ছয়টি বিমানবন্দর।

বিলাসবহুল ও জাঁকজমকপূর্ণ হামাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বর্তমানে বিশ্বের সেরা সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার পাশাপাশি কানেক্টিং ফ্লাইট থাকা যাত্রীদের জন্য বিনামূল্যে শহর ভ্রমণ, থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করে থাকে। এ ছাড়া একটি ভিআইপি ট্রান্সফার সেবাও রয়েছে তাদের, যার অংশ হিসেবে বিমানবন্দরে নামার পর এয়ারলাইন্সের কর্মীরা দর্শনার্থীদের গাইড করেন এবং পরবর্তী ফ্লাইটে পৌঁছে দেন।

বিমানবন্দরটি কাতারের রাজধানী দোহা থেকে মাত্র ১৮ কিলোমিটার দূরে সমুদ্রের একদম পাশেই অবস্থিত। এটি ২ হাজার ২০০ হেক্টর কিংবা ৫ হাজার ৫০০ একর জায়গাজুড়ে বিস্তৃত। ২০০৩ সালে বিমানবন্দর তৈরি করার পরিকল্পনা করা হয়। ২০০৫ সালে এর কাজ শুরু হয়। ২০০৯ সালে এয়ারপোর্টের কাজ শেষ করে চালুর কথা থাকলেও বেশ কিছু কারণে তা পিছিয়ে অবশেষে ২০১৪ সালের ৩০ এপ্রিল চালু করা হয়। পুরো এয়ারপোর্টের সব কার্যক্রম পরিচালনা করে কাতার এয়ারওয়েজ। বর্তমান বার্ষিক যাত্রী ধারণক্ষমতা ২ কোটি ৯০ লাখ। কর্তৃপক্ষ আশা করছে, বিমানবন্দরটি আরও আধুনিকায়ন করলে এই এয়ারপোর্টে প্রতি বছর ৩ লাখ ২০ হাজার বিমান ওঠানামা করতে পারবে। 

হামাদ ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টের দেওয়া তথ্যানুযায়ী গত ২০২৩ সালে বিমানবন্দরে মোট ৪ দশমিক ৫৯২ কোটি যাত্রী যাতায়াত করেন। একই সময়ে বিমান ওঠানামা করেছে ২৫ হাজার ৫৯টি এবং পণ্য বহন করেছে ২ দশমিক ৩৪১ মিলিয়ন টন। বিমানবন্দরটি তৈরি করতে কাতারের আল থানি সরকার প্রায় ১৭ বিলিয়নেরও বেশি অর্থ ব্যয় করেছে। ২০২৩ সালে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ প্রায় ৯০০ মিলিয়ন কোটি টাকার বেশি রাজস্ব অর্জন করে।

 

তারেক

'), descriptionParas[2].nextSibling); } if (descriptionParas.length > 6 && bannerData[arrayKeyTwo] != null) { if (bannerData[arrayKeyTwo].type == 'image') { descriptionParas[0].parentNode.insertBefore(insertImageAd(bannerData[arrayKeyTwo].url, ('./uploads/ad/' + bannerData[arrayKeyTwo].file)), descriptionParas[5].nextSibling); } else { descriptionParas[0].parentNode.insertBefore(insertDfpCodeAd(bannerData[arrayKeyTwo].custom_code), descriptionParas[5].nextSibling); } } if (descriptionParas.length > 9 && bannerData[arrayKeyThree] != null) { if (bannerData[arrayKeyThree].type == 'image') { descriptionParas[0].parentNode.insertBefore(insertImageAd(bannerData[arrayKeyThree].url, ('./uploads/ad/' + bannerData[arrayKeyThree].file)), descriptionParas[8].nextSibling); } else { descriptionParas[0].parentNode.insertBefore(insertDfpCodeAd(bannerData[arrayKeyThree].custom_code), descriptionParas[8].nextSibling); } } });