ঢাকা ২৫ আষাঢ় ১৪৩২, বুধবার, ০৯ জুলাই ২০২৫
English

আইসক্রিম ছিল অভিজাতদের খাবার

প্রকাশ: ১৯ অক্টোবর ২০২৪, ০৪:২০ পিএম
আপডেট: ১৯ অক্টোবর ২০২৪, ০৪:২১ পিএম
আইসক্রিম ছিল অভিজাতদের খাবার
আইসক্রিমের রয়েছে বিভিন্ন ধরনের ফ্লেভার। অনেকের মতে, পৃথিবীতে প্রায় এক হাজার ফ্লেভারের আইসক্রিম পাওয়া যায় । ছবি: সংগৃহীত

আইসক্রিমের স্বাদ জীবনে একবারও নেননি, এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া কঠিন। ছোটবেলায় গ্রামের পথ ধরে আইসক্রিমের গাড়ি চলে যেত। সেই গাড়ির টুংটাং শব্দ আর আইসক্রিমওয়ালার ‘এই মালাই, কুলফি মালাই, আইসক্রিম’ ইত্যাদি হাঁকডাক শুনে সবার ছুটে যাওয়া, আইসক্রিম খেয়ে পোশাক নষ্ট করে মায়ের বকুনি খাওয়া, এসবই মধুর স্মৃতি। কিন্তু অবাক করা তথ্য হচ্ছে, একসময় তা ছিল শুধু অভিজাতদের খাবার। সাধারণ মানুষের সাধ্য বা হাতের নাগালের বাইরে ছিল আইসক্রিম।

আইসক্রিম আবিষ্কারের নির্দিষ্ট কোনো তারিখ বা আবিষ্কারকের নাম নেই। আইসক্রিমের ইতিহাস নিয়ে একটি প্রচলিত গল্প শোনা যায়। আর এই গল্পের সূচনা ধরা হয় ৬২ খ্রিষ্টাব্দে। রোমের রাজা নিরো বাবুর্চির কাছে নতুন মুখরোচক কিছু খেতে চাইলেন। বাবুর্চি তখন রাজার এক কর্মচারীকে পাঠালেন অ্যাপেনাইন পাহাড় থেকে কিছু বরফ নিয়ে আসতে। বাবুর্চি বরফের সঙ্গে বাদাম আর মধু মিশিয়ে রাজাকে পরিবেশন করলেন সেই নতুন খাবার। রাজা কিছুটা ভয়ে ভয়ে মুখে দিলেন এক চামচ। মুখে দিতেই কিছুক্ষণ চোখ বন্ধ করে রইলেন। তার পর চোখ খুলেই পরম তৃপ্তি নিয়ে বললেন, ‘ওহে, কোথা পেলে এমন মজাদার জিনিস!’

আইসক্রিমের জন্মস্থান ধরা হয় মূলত চীনকে। চীনের শাং সাম্রাজ্যের রাজা টাঙের সময়কালে আইসক্রিমের মতোই বরফে তৈরি এক ধরনের খাবারের প্রচলন ছিল; যা বানাতে মহিষের দুধ, আটা এবং কর্পূর ব্যবহার করা হতো। টাঙের ৯৪ জন আইসম্যান ছিল, যারা সেই খাবারটি বানাতে সহায়তা করতেন।

ইতালীয় পর্যটক মার্কো পোলো আইসক্রিম তৈরির কৌশলটি চীন থেকে ইউরোপে নিয়ে আসেন। মার্কো পোলো খাবারটি খেয়ে পছন্দ করেন এবং এর কৌশল শিখে নেন। এ খাবারের নাম পরে হয় আইসক্রিম। ১৫৩৩ সালে আইসক্রিম ইতালি থেকে প্রথম ফ্রান্সে আসে এবং সেখান থেকে যায় ইংল্যান্ডে। এরপর আমেরিকাসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে আইসক্রিম ছড়িয়ে পড়ে। ১৯০০ সাল থেকে আইসক্রিমের বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হয়।

আমেরিকার মতো দেশেও ১৮০০ সালের আগে সাধারণ মানুষ আইসক্রিম খাওয়ার সুযোগ পাননি। দেশটিতে আইসক্রিমের প্রথম বিজ্ঞাপন বের হয় ১৭৭৭ সালে, নিউইয়র্ক গেজেটে। ১৭৯০ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ওয়াশিংটন আইসক্রিমের পেছনে প্রায় ২০০ ডলার খরচ করেছিলেন।

১৭ শতকের দিকে ইংল্যান্ডে যখন আইসক্রিম এসেছিল, তখন ইংল্যান্ডের রাজা প্রথম চার্লস তার রাঁধুনিকে ৫০০ পাউন্ড করে উপহার দিতেন, যাতে সে আইসক্রিমের রেসিপি ইংল্যান্ডবাসীর কাছ থেকে লুকিয়ে রাখে।

আইসক্রিমের ইতিহাস নিয়ে তথ্যে ভিন্নতা থাকলেও ইতিহাস গবেষক হাশেম সুফি এক গণমাধ্যমে বলেছিলেন, ‘মোগলরাই পৃথিবীকে আইসক্রিম উপহার দিয়েছে’। সম্রাট আকবরের রাজকীয় রান্নাঘরে কোনাকৃতির ধাতব ছাঁচের ভেতর জন্ম হয়েছিল কুলফির। সে থেকে তার আমির-ওমরাহ সবাই কুলফি দিয়ে শরীর জুড়াতে পছন্দ করতেন। মোগলদের বাড়ি বাড়ি কুলফি আইসক্রিম বানানো হতো। এখনকার ভারতেও সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয় কুলফি। আমাদের দেশেও এর জনপ্রিয়তা লক্ষ করার মতো।

আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানের জনক হিপোক্রেটিস আইসক্রিম খাওয়াকে বেশ উৎসাহিত করেছিলেন আর কারণ হিসেবে দেখিয়েছিলেন, ‘আইসক্রিম জীবনে প্রাণের সঞ্চার করে আর বেঁচে থাকার উদ্যমতা জোগায়।’ আলেকজান্ডার দ্য গ্রেট ফুলের মধুর সঙ্গে বরফ দিয়ে খেতে ভালোবাসতেন। এদিকে বাইবেলের রেফারেন্সে রয়েছে, রাজা সোলায়মান ফসল কাটার মৌসুমে বরফ পানীয় খেতে ভালোবাসতেন।

আইসক্রিমের রয়েছে বিভিন্ন ধরনের ফ্লেভার। অনেকের মতে, পৃথিবীতে প্রায় এক হাজার ফ্লেভারের আইসক্রিম পাওয়া যায়। ১৮ শতকে এসে আমেরিকার হাত ধরে আইসক্রিমের ব্যাপক পরিবর্তন সাধিত হয়। দুধ, ক্রিম, ভ্যানিলা, স্ট্রবেরি, চকলেট, ম্যাঙ্গো- এমন নতুন নতুন ফ্লেভার মিশিয়ে আধুনিক আইসক্রিম তৈরি করা শুরু হয়। তবে রোমান সম্রাট নিরোর জন্য বাদাম, মধু, বরফ হিমায়িত করে প্রথম আইসক্রিম ফ্লেভার তৈরি করা হয়েছিল।

‘The Art of Making Frozen Desserts’ নামে আইসক্রিমের রেসিপি বই আকারে প্রথম বের হয় ১৭৬৮-৬৯ সালে। ২৪০ পৃষ্ঠার বইটিতে শুধু আইসক্রিমের রেসিপিই ছিল না, এর ধর্মীয় ও দার্শনিক ব্যাখ্যাও ছিল।

সবার জন্য প্রথম বিপুল পরিমাণে আইসক্রিম তৈরি করা হয় ১৮৫১ সালে; যা মেরিল্যান্ডের নাগরিক জ্যাকব ফুসেল নিজের কারখানায় তৈরি করেছিলেন। উনবিংশ শতাব্দীর শেষে আইসক্রিমের সহজলভ্যতা তুঙ্গে চলে যায়। ১৯৪৫ সালে পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরের নাবিকদের জন্য প্রথম ভাসমান আইসক্রিম পার্লার তৈরি হয়। একসময় আইসক্রিম এত জনপ্রিয় হয়ে পড়ল যে, ১৯৮৪ সালে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগান পুরো জুলাই মাসকেই ‘ন্যাশনাল আইসক্রিম মান্থ’ হিসেবে ঘোষণা করেছিলেন।

আইসক্রিমের মতো এর ইতিহাসও অনেক আকর্ষণীয়। এটি এমন একটি খাবার, যা খেতে প্রায় সবাই ভালোবাসেন। আইসক্রিমের সঙ্গে যেন আনন্দের যোগসূত্র রয়েছে। আইসক্রিম খেলে মন কেমন ফুরফুরে হয়ে যায়।

 কলি 

ভিন্নধর্মী চিঠির উৎসব ‘ডাকপিয়ন’

প্রকাশ: ২৫ এপ্রিল ২০২৫, ০৬:৩৩ পিএম
আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০২৫, ০৬:৪৬ পিএম
ভিন্নধর্মী চিঠির উৎসব ‘ডাকপিয়ন’
চিঠি উৎসব চলবে আগামীকাল পর্যন্ত

সাল ১৯৮৩। পত্র লেখক রফিক তখন শীতে তুষার আবৃত দেশ তুরস্কে। সেখান থেকে বাংলাদেশের প্রিয়জন শিরীনকে বসন্তের শুভেচ্ছা জানাতে না পারার আক্ষেপ জানিয়েছিলেন চিঠিতেই। আবার লেখক বুদ্ধদেব বসুর তিথিডোর পড়ে বন্ধুর কাছে নীল কাগজে চিঠি পাওয়ার বায়না জানাতেই চিঠি লিখেছিলেন মাইশা।

আবেগ ও ভালোবাসা মিশ্রিত এমন সব চিঠি নিয়েই রাজধানীর বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের চিত্রশালায় শুরু হয়েছে দুই দিনব্যাপী চিঠি প্রদর্শনী উৎসব । 
তৃতীয় বারের মতো ডাকপিয়ন নামে এই উৎসবের আয়োজন করেছে নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের ভক্ত সংগঠন হিমু পরিবহণ। ২৫ ও ২৬ এপ্রিল এই উৎসবটি চলবে বিকাল ৩ টা থেকে রাত ৯ টা পর্যন্ত।

বেশ কিছুদিন আগে প্রদর্শনীর উদ্দেশ্যে ফেসবুক ইভেন্টের মাধ্যমে চিঠি সংগ্রহ করতে শুরু করে হিমু পরিবহণের তরুণ সংগঠকরা। তাতে সাড়া দিয়ে দেশ-বিদেশ থেকে নিজের সংগ্রহে থাকা চিঠি পাঠায় অনেকে। সেখান থেকে নির্বাচিত ৭০ টি চিঠি নিয়ে আয়োজন করা হয়েছে এবারের উৎসব ।পরিবার, বন্ধুজনকে লেখা চিঠির সঙ্গে প্রদর্শনীতে রয়েছে মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে জেনারেল মুহাম্মদ আতাউল গণি ওসমানীর হাতে লেখা ব্যক্তিগত চিঠিও।

ডাকপিয়ন উৎসবের প্রথম দিনে দর্শনার্থীরা

 


হিমু পরিবহণের সমন্বয়কারী আহসান হাবিব মুরাদ জানান, প্রযুক্তির ছোঁয়ায় যোগাযোগ অনেক সহজ হলেও হাতে লেখা চিঠি এখনো মানুষের আবেগের জায়গা। এই আবেগকে আমরা আবার অভ্যাসে জাগিয়ে তুলতে চাই। তাছাড়া ইতিহাস, সাহিত্যেও রয়েছে চিঠির অবস্থান। তাই এই প্রদর্শনীর আয়োজন।

আলোচিত প্রাণী কৃষ্ণ হরিণ

প্রকাশ: ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০:০৫ পিএম
আলোচিত প্রাণী কৃষ্ণ হরিণ
ছবি: কৃষ্ণ হরিণ

বর্তমান সময়ে আলোচিত একটি প্রাণীর নাম হচ্ছে কৃষ্ণ হরিণ। ১৯৯৮ সালের অক্টোবরে বলিউড অভিনেতা সালমান খানসহ একটি শুটিং ইউনিটের আরও কয়েকজনের বিরুদ্ধে দুটি কৃষ্ণ হরিণ যা চিংকার নামেও পরিচিত- হত্যার অভিযোগে মামলা করে ভারতের রাজস্থান রাজ্যের বিষ্ণোই সম্প্রদায়। তখন থেকেই কৃষ্ণ হরিণ চলে আসে আলোচনার শীর্ষে। 

ভগবান বিষ্ণুর পূজারি  সম্প্রদায় কয়েক শ বছর ধরে ২৯টি রীতি অক্ষরে অক্ষরে মানার চেষ্টা করে। আর সেসব রীতির মূল কথা হচ্ছে- প্রকৃতির সুরক্ষা, বৃক্ষ রক্ষা ও জঙ্গলের প্রাণী রক্ষা।

বিশেষ করে কৃষ্ণ হরিণকে বিষ্ণোই সম্প্রদায় পবিত্র হিসেবে গণ্য করে। এই হরিণকে বলতে গেলে তারা পূজা করে। ভগবান কৃষ্ণের রথ টানত কৃষ্ণ হরিণ, প্রাচীন হিন্দু পুরানে এমনটাই উল্লেখ আছে। কৃষ্ণ হরিণ বা চিংকারকে মানা হয় বাতাস এবং চাঁদের বাহন হিসেবেও।

কোথায় মেলে কৃষ্ণ হরিণ?

কৃষ্ণ হরিণের সংখ্যা দিন দিন কমলেও ভারত, পাকিস্তান এবং নেপালে এই হরিণ দেখা যায়। ভারতের রাজস্থান এবং গুজরাটের মরু এলাকায় এগুলো চোখে পড়ে বেশি। পুরুষ কৃষ্ণ হরিণের ওজন সর্বোচ্চ ৪৫ কেজি পর্যন্ত হয়। উচ্চতা ৭৪-৮৮ সেমি। আর মাদি কৃষ্ণ হরিণ অপেক্ষাকৃত আকারে ছোট হয়।

রং বদলায় কৃষ্ণ হরিণ

চিংকারের প্রধান বৈশিষ্ট্য এটি রং বদলায়। বর্ষার শেষে পুরুষ চিংকারের রং থাকে কালো। কিন্তু শীতের সঙ্গে সঙ্গে রং হালকা হতে হতে এপ্রিল নাগাদ বাদামি হয়ে যায়। বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞ আরাফ তাহসিন বলেন, ব্রিটিশদের সময়ে উদয়পুরে ঝাঁকে ঝাঁকে চিংকার দেখা যেত, কিন্তু এখন সেই দৃশ্য বিরল। এরা ঘন জঙ্গলের প্রাণী নয়, সমতলে খোলা জায়গা এদের পছন্দ। যেহেতু এ ধরনের জায়গা দ্রুত মানুষের দখলে চলে যাচ্ছে, ফলে এরা বিপদে পড়েছে।

২০০ বছর আগে যেখানে ভারতে এই হরিণের সংখ্যা ছিল ৪০ লাখের মতো, ২০১০ সালে সেটি নেমে আসে মাত্র ৫০ হাজারে। কৃষ্ণ হরিণ রয়েছে ভারতের সংরক্ষিত প্রাণীর তালিকায়। ফলে, দেশটিতে কৃষ্ণ হরিণ শিকার পুরোপুরি নিষিদ্ধ।

 

তারেক

বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল আবাসন

প্রকাশ: ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ০১:১৫ পিএম
আপডেট: ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ০১:১৮ পিএম
বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল আবাসন
ছবি: হ্যাংঝো রিজেন্ট ইন্টারন্যাশনাল অ্যাপার্টমেন্ট

পরিকল্পনা ছিল বিলাসবহুল হোটেলের। পরে সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে এটিকে একটি আবাসনের রূপ দেওয়া হয়। তবে সাধারণ আবাসন নয়, বিলাসবহুল আবাসন। বাড়িটির নাম হ্যাংঝো রিজেন্ট ইন্টারন্যাশনাল। অনেকের মতে, চীনের হ্যাংঝো রিজেন্ট ইন্টারন্যাশনাল অ্যাপার্টমেন্টই বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল আবাসন।

 

হোটেলের বদলে বাসভবন তৈরির পরিকল্পনার পর ওই ইমারতের অভ্যন্তরীণ নকশাও বদলে ফেলা হয়। ছোট ছোট অসংখ্য কক্ষ তৈরি হয় আবাসনের প্রতিটি তলায়।

 

একটি আবাসনের নিচেই যেন আস্ত একটা শহর। কী নেই সেখানে! ৬৭৫ ফুট লম্বা এই আবাসনে একসঙ্গে ২০ হাজার মানুষ বাস করতে পারেন। ইংরেজি ‘এস’ আকৃতির বিশাল ঝাঁ-চকচকে ইমারত। দূর থেকে দেখলে নজরে পড়ে শুধু জানালা আর বারান্দা। ২ লাখ ৬০ হাজার বর্গমিটারেরও বেশি জায়গাজুড়ে অবস্থিত এ অ্যাপার্টমেন্টটি ২০১৩ সালে উদ্বোধন করা হয়। 

 

আবাসনটিতে মোট ৩৯টি তলা রয়েছে। আর তাতে কয়েক হাজার উচ্চ মানের বিলাসবহুল ফ্ল্যাট রয়েছে বলে সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। শুধু তা-ই নয়, এখানে রয়েছে নানা বিপণিকেন্দ্র, রেস্তোরাঁ, স্কুল এমনকি হাসপাতালও। অত্যাধুনিক ফিটনেস সেন্টার, খাবারের দোকান, সুইমিং পুল, সেলুন সবই রয়েছে এর চৌহদ্দির মধ্যেই।

 

বিভিন্ন প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই বাসভবনে বাস করেন চিনের ‘হ্যাং পিয়াও’রা। চিনের তরুণ পেশাদার, সমাজমাধ্যমের তারকা এবং প্রভাবশালীদের ‘হ্যাং পিয়াও’ বলা হয়।

 

চীনা সংবাদ সংস্থা সিনার একটি নিবন্ধ অনুসারে, জানালা ছাড়া ছোট অ্যাপার্টমেন্টগুলো সাধারণত প্রতি মাসে প্রায় ১৫০০ আরএমবি (২২০ ডলার) ভাড়া নেয়। অন্যদিকে বারান্দাসহ বড় ইউনিটগুলোর ভাড়া ৪০০০ আরএমবি (৫৫০ ডলার) পর্যন্ত বা তারও বেশি হতে পারে।

 

তারেক

পাঠকের গল্প: পাগলিটাও মা হয়েছে

প্রকাশ: ০৩ নভেম্বর ২০২৪, ০১:২০ পিএম
আপডেট: ০৩ নভেম্বর ২০২৪, ০১:২১ পিএম
পাঠকের গল্প: পাগলিটাও মা হয়েছে

হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার একটি গ্রাম চৌকি। চারদিকে সবুজে ঘেরা গ্রামটি। গ্রামের প্রতিটি মানুষের জীবনধারা খুবই সহজ-সরল। অধিকাংশ মানুষই কৃষিজীবী। খুব একটা শিক্ষিত নয় বৃদ্ধ বা মধ্যবয়সী লোকগুলো। তবে নিজেদের সন্তানদের লেখাপড়া চালিয়ে যায় শত অভাবের মাঝে। চৌকি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শুরু হয় তাদের হাতেখড়ি। অনেকে কলেজের গণ্ডি পেরিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে পা রাখেন।

হাজার অভাবের মাঝেও গ্রামের লোকজন খুব অতিথিপরায়ণ। এ গ্রামের সবাইকে এক সুতোয় বেঁধে রেখেছেন যিনি তিনি হলেন রাজপ্রতাপ চৌধুরী। তাকে এই গ্রামের মধ্যমণি বলা যায়। প্রচুর অর্থ-সম্পদের মালিক হলেও নিরহংকারী মানুষ তিনি। গ্রামের প্রতিটি মানুষ তাকে শ্রদ্ধা ও সম্মান করেন। রাজপ্রতাপ চৌধুরীর স্ত্রী মায়া। স্বামীর মতোই উদার মন। তাদের এই বিশাল অট্টালিকার একমাত্র উত্তরাধিকারী তাদের সন্তান দীপায়ন চৌধুরী দ্বীপ। তবে সম্পদ নিয়ে তার বিশেষ কোনো মাথাব্যথা নেই, অনেকটাই উড়নচণ্ডী স্বভাবের। বাউন্ডুলের মতো এদিক সেদিক ছুটে চলা তার কাজ। 

বাউন্ডুলে ছেলেকে সংসারের মায়ায় বাঁধতে বিয়ের সিদ্ধান্ত নেয় বাবা-মা। ধুমধাম করে বিয়ে হয় একমাত্র ছেলের। সিলেটের হবিগঞ্জ শহরের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী অসীম রায়ের একমাত্র মেয়ে রুপার সঙ্গে বিয়ে হয় দীপায়নের। ছেলে-বৌমা নিয়ে সুখে শান্তিতে দিন যাচ্ছে চৌধুরী পরিবারের। শ্বশুর-শাশুড়িকে দেখে মুগ্ধ হয় রুপা। কত দয়ালু তারা। নিজেদের থেকেও অন্যের কথা বেশি ভাবে। গ্রামের সবাইকে সাহায্য করে। সব পূজায় ভালো রান্না হয় গ্রামবাসীর জন্য। পেট পুরে খায় পঞ্চব্যঞ্জন। দীপায়ন এখন অনেকটাই ঘরমুখো। দিনশেষে ঠিকই ঘরে ফেরে। মাঝে মাঝে রুপাকে সঙ্গে নিয়ে ঘুরে বেড়ায় গ্রাম। সবই ঠিক যাচ্ছিল। বছর ঘুরতেই বউয়ের কাছে আবদার করে বসে মায়া দেবী। এবার তারা দাদু, ঠাম্মা হতে চান। রুপাও অমত করেনি। কিন্তু বিধাতা বিরূপ হলো তাদের প্রতি। বিধাতা বোধহয়, ভালো মানুষের কপালে খারাপই লেখেন সবসময়। বহু চেষ্টার পরও তারা বাবা-মা ডাক শোনা থেকে বঞ্চিত। অনেক ডাক্তার দেখানো হলো। কিন্তু তাতে কোনো লাভ হয়নি। দ্বীপ কখনোই বাবা হতে পারবে না। রুপাকে ছেড়ে দিতে বলে দ্বীপ। অন্যত্র বিয়ে হলে মা হতে পারবে। রুপা ছেড়ে যাওয়ার কথা কল্পনায়ও আনে না। শুধু ঈশ্বরের কাছে দুহাত পেতে এক সন্তানের জন্য ব্যাকুল হয়ে অশ্রু ঝরায়। বেশ কিছুদিন পর গ্রামে কোথা থেকে যেন এক পাগলি এসে পড়ে। কেউই চেনে না মেয়েটাকে। কোনো এক চাষি খেতে কাজ করতে গিয়ে শুনতে পায় কে যেন কোঁকড়াচ্ছে যন্ত্রণায়। একটু এগোতেই দেখে এক পাগলিকে। তখন দেখতে পায় মেয়েটি অন্তঃসত্ত্বা। তাড়াতাড়ি লোক জড়ো করে নিয়ে যায় চৌধুরীদের বাড়ির সামনে। গিন্নি মাকে বিষয়টা জানানো দরকার খুব। এই গ্রামে মায়া দেবীর মতো দয়ালু মমতাময়ী আর কে আছেন! গিন্নি মা খবর পেয়ে অতিথিশালায় নিয়ে যান পাগলিকে। মেয়েটির অবস্থা দেখে খুবই মায়া হয় গিন্নি মায়ের। আহা! পাগলিটাকেও ছাড় দিল না সমাজের হিংস্র জানোয়ারগুলো। মুখে কিছুই বলতে পারে না, কত যন্ত্রণা পাচ্ছে দেখেই বোঝা যায়। খাবার খাইয়ে দিল নিজ হাতে মেয়েটাকে। রাতে প্রসব ব্যথায় যখন কাতরাচ্ছিল সেসময় মায়া দেবী পাশেই বসা ছিল। কিছুক্ষণের ভেতর জন্ম হলো এক ফুটফুটে কন্যাসন্তানের। সে যেন এক ফুটন্ত পদ্ম। মায়া দেবী কোলে তুলেই নাম দিল পদ্ম। আমার পদ্ম। বিধাতার কী নির্মম খেলা। কেউ চেষ্টা করেও সন্তান পায় না, কেউ রাস্তায় পড়ে পাগল হয়ে ঘুরে সন্তান পায়। যেহেতু সদ্য জন্ম নেওয়া মেয়েটার মা পাগলি তাই তার যত্ন কে করবে এই ভেবে মায়া দেবী সদ্য ফোটা পদ্মকে নিয়ে তুলে দেয় নিজ পুত্রবধূর কোলে। পরম মমতায় বুকে জড়িয়ে নেয় পদ্মকে। 

এদিকে সদ্য মা হওয়া মেয়েটা দুগ্ধ যন্ত্রণায় যেন মরে যায়। এক ফোঁটা বুকের দুধ দিতে ব্যাকুল হয়ে পৌঁছে যায় চৌধুরীর গৃহে। কীভাবে যেন রুপার পাশ থেকে ছোঁ মেরে তুলে নেয় তার মেয়েকে। মেয়ে মাকে পেয়ে তাকিয়ে হাসছে কেমন, হঠাৎ চোখ মেলে এমন দৃশ্যে রুপা অঝোরে কাঁদতে লাগল। আহা মাতৃত্ব! বড়ই মধুর যন্ত্রণাময়! আবার ফিরে যায় সে অতিথিশালায়। এভাবেই যখনই দুগ্ধ যন্ত্রণা হয় তখনই ছুটে আসে মেয়েকে স্তন পান করাতে। বিষয়টা মায়া দেবী জানতে পারেন। এভাবে চলতে থাকলে পদ্মরও যে বড় ক্ষতি হবে। মেয়েটা সমাজে কোন পরিচয়ে থাকবে! তাই তিনি সিদ্ধান্ত নিলেন এই পাগলিকে দূরে কোথাও পাঠিয়ে দেবে। একটি ট্রাকে করে কয়েকজন লোক দিয়ে অনেক দূরে রেখে আসলেন পাগলিকে। 

এদিকে রাতের বেলা পাগলি ঠিকই চলে এল মাতৃত্বের টানে। আবার মেয়েকে কোলে নিয়ে দুধ পান করে আবার ফিরে যায়। এভাবেই দুদিন পর পাগলি এসে ঘুমন্ত রুপার পাশ থেকে ছোঁ নিয়ে পদ্মকে তুলে দেয় এক ছুট। রুপার চিৎকার শুনে ছুটে গিয়ে দেখে নিজ সন্তান কোলে নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছে পাগলিটা। মায়া দেবী দীর্ঘশ্বাস ফেলে ভাবেন, মাতৃত্ব বড়ই অদ্ভুত! পাগলি তো কী হয়েছে, মা তো!


মুনমুন চক্রবর্তী 
ঠাকুরবাড়ি 
বড়ালিয়া, চন্দ্রগঞ্জ
লক্ষ্মীপুর

 

তারেক

বিচিত্র সব গাছ

প্রকাশ: ০২ নভেম্বর ২০২৪, ০১:০৩ পিএম
বিচিত্র সব গাছ
ছবি: সংগৃহীত

বিচিত্র পৃথিবীতে বিচিত্রতার শেষ নেই। অদ্ভুত সব রহস্য এখন নিত্যদিনের ঘটনা। বিচিত্র পৃথিবীর কিছু অদ্ভুত গাছ সম্পর্কে জেনে নিই চলুন। যেসব গাছ শুধু একটা করেই আছে।


উল্টো ডুমুর গাছ

ইতালির শহর বাকোলির চীন রোমান আর্চওয়ের ছাদ বেয়ে উলটো করে ঝুলে আছে এক ডুমুর গাছ। অদ্ভুতভাবে বেড়ে ওঠা এই গাছে ফলও ধরে। এই গাছ আক্ষরিকভাবেই উল্টো। মাটি ফুঁড়ে নয় বরং ছাদ থেকে মাটির দিকে নেমে এসেছে এটি। ডুমুর গাছ সাধারণত শুষ্ক এবং রৌদ্রোজ্জ্বল জায়গা পছন্দ করে, তবে তারা শক্তিশালী শিকড় এবং অল্প পানিতেও বেড়ে ওঠে। তবে পারকো আর্কিওলজিকো দেলে তের্মে ডি বাইয়ার একটি গুহার ছাদ থেকে, একটি ডুমুর গাছ ভুল পথে কীভাবে বেড়ে উঠেছে তা অজানা।

প্রিজন ট্রি

বোয়াব প্রিজন ট্রি প্রায় দেড় হাজার বছর পুরোনো। গায়ে বড় ফাঁপাওয়ালা এ অদ্ভুত গাছ অস্ট্রেলিয়ায় অবস্থিত। পশ্চিম অস্ট্রেলিয়া থেকে ৬ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত এই গাছের পরিধি প্রায় ১৪ মিটার। বলা হয় এই গাছে বন্দিদের রাখা হতো। তাই এর নাম প্রিজন গাছ। অর্থাৎ গাছের কুটুরি বা ফাঁপা অংশে বন্দিদের রাখা হতো। যদিও এর সুনির্দিষ্ট প্রমাণ নেই। গাছের অস্বাভাবিক কাণ্ডের আকৃতি এবং স্থানীয় ইতিহাসের সঙ্গে মিশ্রণে এটিকে ভয়ংকর এবং অনন্য করে তোলে। বিশাল কাণ্ডের এই গাছের আশপাশে হাড়গোড় দেখতে পাওয়া যায়। ধারণা করা হয় এখানকার আদিবাসীরা গাছটিকে মৃতদেহ সৎকারের কাজে ব্যবহার করত।

লাহাইনার বটবৃক্ষ

১৮৭৩ সালে রোপণ করা এই বিশাল বটগাছটির একাধিক কাণ্ড রয়েছে, যা একটি গাছ থেকে একটি ছোটখাটো বন তৈরি করে। যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াইয়ে অবস্থিত এ গাছটি যেন শহরজুড়ে বিস্তৃত। প্রথম আমেরিকান প্রোটেস্ট্যান্ট মিশনের আগমনের ৫০তম বার্ষিকী উপলক্ষে ১৮৭৩ সালের ২৪ এপ্রিল হাওয়াইয়ের লাহাইনায় গাছটি রোপণ করা হয়েছিল। ১ দশমিক ৯৪ একর জুড়ে, গাছটি লাহেনা বেনিয়া কোর্ট পার্কে অবস্থিত। প্রায় ৬০ ফুট উচ্চতার এই গাছ কাণ্ড ব্যতীত ১৬টি প্রধান শিকড়সহ বিস্তৃত, যা প্রায় শূন্য দশমিক ৬৬ একর এলাকাজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। এটি রাজ্য এবং দেশের বৃহত্তম বটগাছ হিসেবে বিবেচিত হয়।

 

তারেক