মানুষ নিজের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্যই যুদ্ধ করে। আর তার জন্য চাই সেনাবাহিনী। নিজেদের আত্মরক্ষার জন্য বিশ্বের প্রায় সব দেশেরই সেনাবাহিনী রয়েছে। আধুনিক সমাজের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে সেনাবাহিনী। তবে জানেন কি, বিশ্বের অনেক দেশেই কোনো সেনাবাহিনী নেই। দেশের নিরাপত্তার দায়িত্বে আছে অন্য কোনো সংস্থা। চলুন এমন কয়েকটি দেশ সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক-
কোস্টারিকা
সামরিক বাহিনী নেই বিশ্বের বুকে এমন প্রথম দেশ হলো কোস্টারিকা। দেশটিতে রয়েছে ৫ মিলিয়নেরও বেশি বাসিন্দা। কোস্টারিকার একমাত্র আইন প্রয়োগকারী সংস্থা হলো জাতীয় পুলিশ, যা সামরিক-গ্রেডের অস্ত্রে সজ্জিত। ১৯৪৯ সালে কোস্টারিকা তার সামরিক বাহিনী বন্ধ করার সাহসী পদক্ষেপ নিয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকার কারণে দেশটি পারস্পরিক সহায়তার আন্তঃআমেরিকান চুক্তির সদস্য। সুতরাং বহিরাগত আগ্রাসনের সম্মুখীন হলে কোস্টারিকার প্রতিরক্ষার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সবার আগে এগিয়ে আসবে।
ভ্যাটিকান সিটি
পৃথিবীর ক্ষুদ্রতম রাষ্ট্র হলো ভ্যাটিকান সিটি। এটি ইতালির রাজধানী রোম শহরের ভেতরে অবস্থিত একটি স্বাধীন রাষ্ট্র। অতীতে নিরাপত্তার জন্য এখানে বাহিনী থাকলেও ১৯৭০ সালে সব বাহিনী বাতিল করে দেওয়া হয়। ভ্যাটিকানের সশস্ত্র বাহিনী, যার নাম প্যালাটাইন গার্ড এবং নোবেল গার্ড ভেঙে দেন পোপ পল ষষ্ঠ। এরপর ভ্যাটিকান সিটির নিরপেক্ষতা এবং নিরাপত্তার দায়িত্ব নেয় ইতালি।
পালাউ
পালাউয়ে কোনো সেনাবাহিনী নেই। তবে রয়েছে অনুমতিপ্রাপ্ত পুলিশ বাহিনী। অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তায় রয়েছে ৩০ জনের মেরিটাইম সার্ভিল্যান্স ইউনিট। প্রতিরক্ষার ক্ষেত্রে পালাউকে সহায়তা করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
আইসল্যান্ড
সশস্ত্রবাহিনী বিহীন আরেকটি দেশ আইসল্যান্ড। যদিও এ দেশে নিয়মিত সামরিক বাহিনী নেই, তবে এর প্রাথমিক আইন প্রয়োগকারী সংস্থা রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে আইসল্যান্ডিক ন্যাশনাল পুলিশ, আইসল্যান্ডিক কোস্টগার্ড এবং নয়টি আঞ্চলিক পুলিশ বাহিনী। তবে আইসল্যান্ডও ন্যাটোর সদস্য, যা তার নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দেয়। ন্যাটো সদস্য দেশগুলো আইসল্যান্ডের এয়ার পুলিশিংয়ের অধীনে ঘূর্ণায়মান ভিত্তিতে আইসল্যান্ডের আকাশসীমা রক্ষা করে।
পানামা
দেশে আইনশৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে, নিরাপত্তাকর্মী হিসেবে পানামানিয়ান পাবলিক ফোর্সের প্রায় ২৭ হাজার সদস্য রয়েছে। যদিও এটিতে সশস্ত্র বাহিনী নেই, তবে পানামানিয়ান ন্যাশনাল পুলিশ সন্ত্রাসবিরোধী এবং মাদকবিরোধী ইউনিটের পাশাপাশি দ্রুত অ্যাকশন এবং সামুদ্রিক অভিযানের জন্য বিশেষ বাহিনী দিয়ে সজ্জিত। পানামা সংবিধান সংশোধনের পর ১৯৯৪ সালে তার সামরিক বাহিনীকে ভেঙে দেয়।
সলোমন দ্বীপপুঞ্জ
৭ লাখের বেশি জনসংখ্যা রয়েছে সলোমন দ্বীপপুঞ্জে। সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী বা বিমানবাহিনী কোনোটিই নেই এ দেশের। রয়্যাল সলোমন আইল্যান্ডস পুলিশ ফোর্স দেশের অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করে। দেশটির পুলিশ বাহিনী অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড থেকে নিয়মিত প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে। তবে চীন এবং অস্ট্রেলিয়া গত কয়েক বছরে সামুদ্রিক টহল অভিযানে সহায়তা করার জন্য সলোমন দ্বীপপুঞ্জে টহল বোট সরবরাহ করেছে।
নাউরু
সেনাবাহিনী নেই- এমন আরও একটি দেশের নাম হলো নাউরু। প্রশান্ত মহাসাগরে অবস্থিত এই দ্বীপরাষ্ট্রে মাত্র ১০ হাজার লোকের বসবাস। এটি মাইক্রোনেশিয়ার অংশ। এই দেশে কোনো পুলিশ বা নিরাপত্তা বাহিনী নেই।
তারেক