বর্তমান সময়ে আলোচিত একটি প্রাণীর নাম হচ্ছে কৃষ্ণ হরিণ। ১৯৯৮ সালের অক্টোবরে বলিউড অভিনেতা সালমান খানসহ একটি শুটিং ইউনিটের আরও কয়েকজনের বিরুদ্ধে দুটি কৃষ্ণ হরিণ যা চিংকার নামেও পরিচিত- হত্যার অভিযোগে মামলা করে ভারতের রাজস্থান রাজ্যের বিষ্ণোই সম্প্রদায়। তখন থেকেই কৃষ্ণ হরিণ চলে আসে আলোচনার শীর্ষে।
ভগবান বিষ্ণুর পূজারি সম্প্রদায় কয়েক শ বছর ধরে ২৯টি রীতি অক্ষরে অক্ষরে মানার চেষ্টা করে। আর সেসব রীতির মূল কথা হচ্ছে- প্রকৃতির সুরক্ষা, বৃক্ষ রক্ষা ও জঙ্গলের প্রাণী রক্ষা।
বিশেষ করে কৃষ্ণ হরিণকে বিষ্ণোই সম্প্রদায় পবিত্র হিসেবে গণ্য করে। এই হরিণকে বলতে গেলে তারা পূজা করে। ভগবান কৃষ্ণের রথ টানত কৃষ্ণ হরিণ, প্রাচীন হিন্দু পুরানে এমনটাই উল্লেখ আছে। কৃষ্ণ হরিণ বা চিংকারকে মানা হয় বাতাস এবং চাঁদের বাহন হিসেবেও।
কোথায় মেলে কৃষ্ণ হরিণ?
কৃষ্ণ হরিণের সংখ্যা দিন দিন কমলেও ভারত, পাকিস্তান এবং নেপালে এই হরিণ দেখা যায়। ভারতের রাজস্থান এবং গুজরাটের মরু এলাকায় এগুলো চোখে পড়ে বেশি। পুরুষ কৃষ্ণ হরিণের ওজন সর্বোচ্চ ৪৫ কেজি পর্যন্ত হয়। উচ্চতা ৭৪-৮৮ সেমি। আর মাদি কৃষ্ণ হরিণ অপেক্ষাকৃত আকারে ছোট হয়।
রং বদলায় কৃষ্ণ হরিণ
চিংকারের প্রধান বৈশিষ্ট্য এটি রং বদলায়। বর্ষার শেষে পুরুষ চিংকারের রং থাকে কালো। কিন্তু শীতের সঙ্গে সঙ্গে রং হালকা হতে হতে এপ্রিল নাগাদ বাদামি হয়ে যায়। বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞ আরাফ তাহসিন বলেন, ব্রিটিশদের সময়ে উদয়পুরে ঝাঁকে ঝাঁকে চিংকার দেখা যেত, কিন্তু এখন সেই দৃশ্য বিরল। এরা ঘন জঙ্গলের প্রাণী নয়, সমতলে খোলা জায়গা এদের পছন্দ। যেহেতু এ ধরনের জায়গা দ্রুত মানুষের দখলে চলে যাচ্ছে, ফলে এরা বিপদে পড়েছে।
২০০ বছর আগে যেখানে ভারতে এই হরিণের সংখ্যা ছিল ৪০ লাখের মতো, ২০১০ সালে সেটি নেমে আসে মাত্র ৫০ হাজারে। কৃষ্ণ হরিণ রয়েছে ভারতের সংরক্ষিত প্রাণীর তালিকায়। ফলে, দেশটিতে কৃষ্ণ হরিণ শিকার পুরোপুরি নিষিদ্ধ।
তারেক