অপেক্ষা
রুহুল আমিন
সন্ধ্যার মায়াবী আধারের গন্ধ বুক নিয়ে
রাত আসে আমাদের পৃথিবীতে
ক্লান্ত নক্ষত্ররা জেগে থাকে
কোনো এক অবোধ্য মায়ার জগতে।
তোমার চুলের সুবাস
দুরন্ত ঘূর্ণিপাক হয়ে আসে
আমার বুকের ভেতর।
বিকেলের রোদ একচিলতে হাসির মতো
লেগে থাকে তোমার চোখের পাপড়িতে।
অবসন্ন নদী বয়ে চলে সাপের মতো
এঁকেবেঁকে একাকিত্বে।
কালো নদী বিকেলের গন্ধ বুকে নিয়ে
রাত্রির গায়ে মিলে যায়
তুমি চেয়ে থাকো অপলক...
ও চোখে জল নয় কাজল মানায়।
আমি তৃষ্ণার্ত চাতক অপেক্ষায় থাকি
দেখা হবেই নতুন কোনো এক মোহনায়।
তোমার ঠোঁটের উত্তাপে প্রিয় আলিঙ্গন
রিমঝিম বৃষ্টিতে ভেজাবে আমার বুকের জমিন।
গভীর স্তব্ধতা
মোখতারুল ইসলাম মিলন
নিস্তব্ধতার অতল গহ্বরে একাকী পথিক,
সময় যেন থমকে দাঁড়ায় অজানা প্রতীক্ষায়।
সঙ্গীহীন জীবনের অব্যক্ত ভার,
প্রতিটি শ্বাসে বাজে নিস্তব্ধতার ঝংকার।
অন্তর্হিত আলোর শেষ রেখা,
ক্লান্ত হৃদয়ে বুনে দেয় শূন্যতার আঁকিবুঁকি।
প্রতিধ্বনিত হয় মর্মস্পর্শী নিঃসঙ্গতা,
যেন সমুদ্রের অতল তলে হারানো নাবিকের আর্তনাদ।
সময়ের করাল গ্রাসে বিলীন হয় প্রত্যাশা,
একমাত্র সাথী হয় নিস্তরঙ্গ নীরবতা।
তবু অজানা অভিমানে বেঁচে থাকে আত্মার গভীর স্তব্ধতা,
যেখানে শব্দেরও থাকে না আর কোনো অস্তিত্ব।
নক্ষত্রের পথে
রোমানুর রোমান
কিছু মানুষের পথ থেকে দূরে সরে যেতে হয়,
কখনো কষ্ট, কখনো একাকিত্বের গভীর জলে।
ভালোবাসা পরিণত করে এক সুদূর নক্ষত্র,
যার আলো থেকে আসে অন্ধকারের ছায়া।
স্মৃতি কাব্যের মতো অমলিন,
মনের আকাশে জ্বলে দীপের মতন।
তবে বিদায়ের দিন আসে,
অধিক অপেক্ষা প্রাপ্তির ক্ষণ, বিষণ্ন মনে।
একটি ভাঙা প্রেরণা, ভাঙা আশা,
সারি সারি দিন চলে যায় দূরের দেশে।
যতদূর চলে যাই, ভালোবাসার চিহ্ন রেখে যায় অন্তরে।
কষ্টের পথে ভালোবাসার স্মৃতি, প্রিয়তার পথ দেখায়,
প্রিয় মানুষ থেকে সরে গিয়ে, তার জীবনের সূচনা দেখতে হয়।
প্রেমসন্ধি
পবিত্র মহন্ত জীবন
অসীম নীলাকাশ শুভ্রতা খুঁজে পায় কাশফুল
কবিতা সে-ও ভালোবাসে তাঁকে
উদয় শরৎ ঝলমলে হাসে শিশিরবিন্দু, হৃদয়ে
সংলাপ, দুচোখ তাকিয়ে দেখি তোকে
সবুজ অরণ্যশৈশব দিগন্তে পৌঁছে দেয় প্রেম
ছুঁয়ে যায় হৃদয় স্নিগ্ধ ভালোবাসা, সত্যি সুখে।
জলাশয় হাওর-বিল শাপলা ফুলও পাপড়ি মেলে
শুক্ল শরৎ, শুদ্ধ আকাশ নীলে-
সুন্দর, অপরূপ ফুল বাগানে শিউলি হাসে
অপূর্ব ছোঁয়া, শরতে প্রেমসন্ধি মেলে।