ঢাকা ১০ আষাঢ় ১৪৩২, মঙ্গলবার, ২৪ জুন ২০২৫
English

আবারও হালদায় ভেসে উঠল ১২ কেজি ওজনের কাতলা

প্রকাশ: ০৮ জুলাই ২০২৪, ০১:১৯ পিএম
আপডেট: ০৮ জুলাই ২০২৪, ০৩:৩৮ পিএম
আবারও হালদায় ভেসে উঠল ১২ কেজি ওজনের কাতলা
ছবি : খবরের কাগজ

এশিয়ার একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদায় আবারও ১২ কেজি ওজনের মৃত মা কাতলা মাছ ভেসে উঠে। পরে মাছটি উদ্ধার করে মাটিচাপা দেওয়া হয়। 

রবিবার (৭ জুলাই) উরকিরচর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে থেকে মাছটি উদ্ধার করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) পরামর্শে মাটিচাপা দেওয়া হয়। 

৭নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সাজ্জাদ শাহ বিষয়টি খবরের কাগজকে নিশ্চিত করেন। 

এ মাছের ছবি দিয়ে মহিউদ্দিন চৌধুরী নামের একজন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে লিখেন, ‘কিছু অমূল্য সম্পদ আছে যা একবার হারিয়ে গেলে আর ফিরে পাওয়া সম্ভব নয়। তেমনই একটি অমূল্য সম্পদ এই মা মাছ। এক সময়ে এই হালদার পোনার ওপর নির্ভর করে অনেক পরিবার বছরে কয়েক মাস সচ্ছলভাবে চলতে। হালদাপাড়ের কিছু মানুষের জীবিকাই ছিল পোনা কেন্দ্রিক। সরকার অনেক উদ্যোগ নেওয়ার পরও কার্যকর কোনো সুফল আসছে না। শিকারি আর কলকারখানার বর্জ্যে হালদা আজ বিপন্ন।’

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের চেয়ারম্যান ও চবির হালদা গবেষণাগারের সমন্বয়ক মনজুরুল কিবরিয়া খবরের কাগজকে বলেন, ‘এ নিয়ে ছয়টি মরা মাছ ও দুটি ডলফিন উদ্ধার হয়েছে। মা মাছের ময়নাতদন্ত করা হচ্ছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাবে। মূলত দূষণের কারণেই হালদায় মা মাছ মারা যাচ্ছে। দূষণ কী জন্য হচ্ছে সেটি বের করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি আমরা।’ 

আবদুস সাত্তার/জোবাইদা/অমিয়/

লাউয়াছড়ায় পর্যটকদের উচ্ছ্বাসে বন্যপ্রাণীদের অস্বস্তি

প্রকাশ: ২২ জুন ২০২৫, ০৯:২৭ এএম
আপডেট: ২২ জুন ২০২৫, ০৯:৩১ এএম
লাউয়াছড়ায় পর্যটকদের উচ্ছ্বাসে বন্যপ্রাণীদের অস্বস্তি
লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে দর্শনার্থীরা ঘুরে বেড়াচ্ছেন। খবরের কাগজ

জীববৈচিত্র্যের অফুরন্ত ভাণ্ডার মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান। অবসরে কিংবা ছুটিতে বেড়াতে যাওয়ার জন্য পর্যটকদের কাছে অন্যতম জনপ্রিয় গন্তব্য এই লাউয়াছড়া বন। সংরক্ষিত বনটি বিরল প্রজাতির নানা জাতের উদ্ভিদ ও প্রাণীতে ভরপুর। তবে পর্যটকের অনিয়ন্ত্রিত ভিড় ও হইহুল্লোড়ে অস্বস্তির মধ্যে পড়ছে এখানে বসবাস করা বন্যপ্রাণীরা।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, লাউয়াছড়ায় বিলুপ্তপ্রায় ও বিরল প্রজাতির প্রাণী এবং উদ্ভিদবৈচিত্র্য রয়েছে। পর্যটকদের অবাধ বিচরণ ও বনের ভেতর দিয়ে যাওয়া শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ সড়কে এই সময় যানবাহনের অনেক ভিড় দেখা যায়। গাড়ির তীব্র শব্দ, হর্ন, দ্রুত বেগে যানবাহনের ছুটে চলা প্রাকৃতিক নীরবতাকে ভেঙে দেয়।

তারা জানান, দিনে কতসংখ্যক পর্যটকের প্রবেশ ও উপস্থিতি বন্যপ্রাণী এবং পরিবেশের জন্য সহনীয়, এখনো তা নির্ধারণ করা হয়নি। যে কারণে ভিড় নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হচ্ছে না। এতে বন্যপ্রাণীরা দিশাহারা হয়ে পড়ে। ডাক থেমে যায় উল্লুকের, পাখির। তখন বনের গভীরে নিরাপদ দূরত্বে অবস্থান করে সব প্রাণী।

বন বিভাগের সূত্রে জানা গেছে, লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের আয়তন ১ হাজার ২৫০ হেক্টর। সরকার ১৯৯৬ সালে লাউয়াছড়াকে জাতীয় উদ্যান হিসেবে ঘোষণা করে। উদ্যানটি ১৬৭ প্রজাতির গাছ, ২৪৬ প্রজাতির পাখি, ২০ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী, ৫৯ প্রজাতির সরীসৃপ (৩৯ প্রজাতির সাপ, ১৮ প্রজাতির লিজার্ড, দুই প্রজাতির কচ্ছপ), ২২ প্রজাতির উভচরসহ অসংখ্য বিরল ও বিপন্ন প্রজাতির বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল ও প্রজননক্ষেত্র।

লাউয়াছড়া উদ্যানের টিকিট কাউন্টার সূত্রে জানা যায়, এবারের দীর্ঘ ছুটিতে ৭ থেকে ১৪ জুন পর্যন্ত সাত দিনে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে ৭ হাজার ৫৮১ জন দর্শনার্থী ঘুরতে গেছেন। এতে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৮ লাখ ৪৫ হাজার ১৩৫ টাকা।

লাউয়াছড়ায় অনিয়ন্ত্রিত পর্যটক ও কোলাহলের কারণে প্রাণীর জন্ম, বিচরণ, প্রজনন ও বসবাসের অসুবিধা হয়, সেটা স্বীকার করেন পর্যটক শিমুল ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, ‘ছুটির সময় অনেক পর্যটকের সমাগমে বন্যপ্রাণীরা অনেকটাই আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। এ সময় তারা গভীর বনে আত্মগোপনে চলে যায়। তাদের স্বাভাবিক চলাফেরায় বাধা দেওয়া হয়।’

পরিবেশকর্মী ও লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান ইকো ট্যুর গাইড সাজু মারছিয়াং বলেন, ‘ছুটির দিনগুলোতে মানুষের বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাসের কারণে বন্যপ্রাণীরা অস্বস্তিতে থাকে। এখনই পর্যটক নিয়ন্ত্রণের প্রয়োজন। তা না হলে বনের প্রাণ-প্রকৃতি বিপজ্জনক পর্যায়ে চলে যাবে। শুধু চিৎকারই করা হচ্ছে, তা নয়। পলিথিন, প্লাস্টিক ফেলে পরিবেশকেও ধ্বংস করা হচ্ছে।’

বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও উদ্ধারের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সিউ’র সমন্বয়ক সোহেল শ্যাম বলেন, ‘আমরা বারবার বলি, লাউয়াছড়ায় প্রতিদিন কতজন পর্যটক প্রবেশ করবেন তা নির্ধারণ করা হোক। পর্যটকদের অবাধ প্রবেশ সীমিত করা হোক। লাউয়াছড়া আসলে বন্যপ্রাণীর জায়গা। তাদের জায়গায় গিয়ে হইহুল্লোড় করা কতটুকু সঠিক? মানুষের ভিড়, হইহুল্লোড়ে অনেক প্রাণীর প্রজনন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে কি না, এটা গবেষণার বিষয়।’

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) জাতীয় পরিষদ সদস্য আ স ম সালেহ সোহেল বলেন, ‘বনের ভেতর দিয়ে যাওয়া শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ সড়কে পর্যটকদের যানবাহনের ভিড় লেগে থাকে। গাড়ির শব্দ, হর্ন ও মানুষের আনাগোনায় প্রাণীদের প্রাকৃতিক নীরবতা ভাঙে, তারা বিরক্ত হয়। বনের ভেতর দিয়ে যাওয়া ঢাকা-সিলেট রেললাইনে ও বনের ভেতরের বিভিন্ন স্থানে ভিড় করে পর্যটকরা হইহুল্লোড় করেন। পরিবেশ, প্রাণ-প্রকৃতির জন্য যা অনুচিত।’

মানুষের বিচরণে বন্যপ্রাণীরা একটু আড়ালে থাকে জানিয়ে বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ শ্রীমঙ্গলের রেঞ্জার কাজী নাজমুল হক বলেন, ‘লাউয়াছড়ায় পর্যটক সীমিত করতে টিকিটের ফি বাড়ানো হয়েছে। কীভাবে পর্যটক সীমিত করা যায়, বিকল্প কী- তা নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের মধ্যে চিন্তাভাবনা আছে।’

সুরেলা কণ্ঠী তিলা ঘুঘু

প্রকাশ: ২১ জুন ২০২৫, ১১:২২ এএম
সুরেলা কণ্ঠী তিলা ঘুঘু
ঢাকার রমনা পার্কে খাবারের সন্ধানে তিলা ঘুঘু। ছবি: লেখক

গ্রাম-বাংলার কোনো পথ দিয়ে হেঁটে গেলে অনেক পাখির সুরেলা কণ্ঠ কানে আসে। সেসব পাখির মধ্যে তিলা ঘুঘু অতি পরিচিত সুরেলা কণ্ঠের পাখি। গ্রামের মাঠে-ঘাটে, শস্যভিটায়, সুনিবিড় কোনো পথে একাকী বা জোড়ায় হেঁটে হেঁটে মাথা দুলিয়ে শস্যদানা খুঁজে বেড়ায় তিলা ঘুঘু।

মানুষের উপস্থিতি টের পেলে একটু থমকে দাঁড়ায়, তারপর দেখেশুনে আবারও হাঁটতে শুরু করে। মানুষের দূরত্ব যদি নিরাপদ সীমার বাইরে চলে যায় তখন ডানা ঝাপ্টিয়ে উড়াল দেয়। তিলা ঘুঘু শান্ত পাখি। গ্রামে মানুষের বসতির কাছেই এরা জীবনচক্র চালিয়ে যায়। দেশের বিভিন্ন শহরের আবাসিক এলাকাতে কম করে হলেও একজোড়া তিলা ঘুঘু দেখা যায়। 

গ্রাম-বাংলায় সহজেই তিলা ঘুঘুর দেখা মেলে। ছেলেবেলায়  গ্রামে দেখতাম কাউবয় হ্যাট পরে অনেক শহুরে সাহেব এয়ারগান নিয়ে গ্রামে পাখি শিকারে আসতেন। তারা যেসব পাখি শিকার করতেন তার মধ্যে তিলা ঘুঘু থাকত সবচেয়ে বেশি। এখন গ্রামের মানুষ অনেক সচেতন, এয়ারগানও নিষিদ্ধ। তাই তিলা ঘুঘুর সংখ্যা দেশে ভালোই আছে। তবে বনের এ ঘুঘু পাখিকে পাখির দোকানসহ দেশের অধিকাংশ পাখি ফেরিওলাদের খাঁচায় দেখা যায়।  এ বিষয়টি বন্ধের জন্য আইনের সঠিক প্রয়োগ দরকার।

তিলা ঘুঘু লোকালয়ের সুপরিচিত পাখি। মাথার চাঁদি ও কান-ঢাকনি ধূসর। ঘাড়ের পেছনের উপরিভাগ পাটল বর্ণের।  ঘাড়ের পেছনের নিচের ভাগ ও ঘাড়ের পাশ সাদা-কালো তিলার পট্টি।  বাদামি পিঠ ও ডানায় পীতাভ  তিলা রয়েছে। চোখ ফিকে লালচে বাদামি, চোখের পাতা ও চোখের গোলকের মুক্ত পট্টি অনুজ্জ্বল গাঢ় লাল।  ঠোঁট কালচে শিং রাঙা। পা ও পায়ের পাতা লালে মেশানো এবং নখ বাদামি। ছেলে ও মেয়ে পাখির চেহারা অভিন্ন। 

তিলা ঘুঘু আর্দ্র পাতাঝরা বন, বাগান, কুঞ্জবন, আবাদি জমি, গ্রাম ও শহরে বিচরণ করে। সচরাচর জোড়ায় বা ছোট দলে থাকে। ছেলে পাখি ডাকতে পছন্দ করে।  প্রজনন মৌসুমে, এপ্রিল-জুলাই মাসে ছেলে পাখি মেয়ে পাখির পাশে মাথা নাচিয়ে অবিরাম ডাকে। কোমল সুরের ডাক, ক্রক... ক্রকু...ক্র..। কাঁটাওয়ালা ঝোপ, বাঁশঝাড়, খেজুর ও অন্যান্য ছোট গাছে কাঠি বিছিয়ে বাসা বানিয়ে এরা ডিম পাড়ে। ডিমগুলো সাদা বর্ণের। ১৩ দিনে ডিম ফোটে।  

পাখিটি বাংলাদেশ, ভারত ছাড়াও দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশে দেখা যায়। সারা পৃথিবীতে এক বিশাল এলাকাজুড়ে এদের আবাস, প্রায় ১ কোটি ৩ লাখ বর্গকিলোমিটার।
লেখক: নিসর্গী ও পরিবেশবিদ, জার্মান অ্যারোস্পেস সেন্টার

বৃষ্টিভেজা মেহেদি ফুল

প্রকাশ: ২০ জুন ২০২৫, ১২:২৯ পিএম
বৃষ্টিভেজা মেহেদি ফুল
ফুটেছে মেহেদি ফুল। ছবি: লেখক

বৃষ্টির মধ্যে মেহেদির গুণের কথা লিখতে বসে ভাবছি, প্রাচীনকালে বৈদ্যরা রাজা-বাদশাহদের কী সুখেই না রাখতেন! রাতে রাজার ঘুম আসছে না, বিছানায় শুয়ে রাজা অনিদ্রায় ছটফট করছেন। ব্যাস, বৈদ্যদেরও ঘুম ছুটে গেল। কী করলে রাজার ঘুম আসবে? খোঁজা শুরু হলো মেহেদি গাছের থোক ধরা ফুলের। অনেক ফুল সংগ্রহ করে তা দিয়ে বালিশ বানিয়ে সেই বালিশে রাজাকে শুতে বলা হলো। বালিশ থেকে ভেসে এল এক অদ্ভুত ঘ্রাণ। যার তুলনা করা যায় ইউরোপের লাইলাক ফুলের ঘ্রাণের সঙ্গে। সে ঘ্রাণের মাদকতায় রাজা ঘুমিয়ে পড়লেন। আর বৈদ্যরাও শান্তি পেলেন। 

এবারের গ্রীষ্মকালটা যেন একটু অন্য রকম। গরমের সঙ্গে থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। তাতে কিছুটা শান্তি এসেছে। দেশের বাগানে বাগানে মেহেদি গাছগুলোয় থোকা ধরে ফুটে চলেছে সুরভিত ফুল। তা দেখেও শান্তি পাচ্ছি। 

মেহেদি পাতা ও গাছ এ দেশে মোটেই দুর্লভ নয়। বাজারে তা আঁটি ধরে কিনতে পাওয়া যায়। সাভারে এখন মেহেদি বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে। মেহেদিগাছে সুন্দর ও সুগন্ধি ফুল ফোটে, তা কজন জানেন? কিন্তু জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম ঠিকই তা জানতেন, লিখেছেন- হেনার সুবাস ফেলে নিশ্বাস। তার বেশ কিছু গানে, গল্পে ও কবিতায় মেহেদি বা হেনার উল্লেখ পাওয়া যায়। সেনাজীবনে লেখা ‘হেনা’ নামে কাজী নজরুল ইসলামের একটি চমৎকার গল্প আছে। সে গল্পে যেদিন নায়িকা বিদেশি কিশোরী হেনা তার কস্তুরীর মতো কালো পশমিনা অলকগোছা দুলিয়ে দুলিয়ে সে গল্পের নায়ক সোহরাবকে বলেছিল, ‘সোহরাব, আমি যে এখনো তোমায় ভালোবাসতে পারিনি!’ সেদিন জাফরানের ফুলে যেন খুন-খোশরোজ খেলা হচ্ছিল বেলুচিস্তানের ময়দানে!... ‘আমার হাতের মুঠোয় হেনার হেনারঞ্জিত হাত দুটি কিশলয়ের মতো কেঁপে কেঁপে উঠল।... তার মেহেদি-ছোপানো হাতের চেয়েও লাল হয়ে উঠেছিল তার মুখটা!’ 

সে গল্পের আর এক জায়গায় দেখি, হেনা গাছের বৈশিষ্ট্যের এক অদ্ভুত রূপকথা, ‘আমার রেজিমেন্টের লোকগুলো মনে করে আমার মতো এত মুক্ত, এত সুখী আর নেই! কারণ আমি বড্ড বেশি হাসি। হায়, মেহেদি পাতার সবুজ বুকে যে কত ‘খুন’ লুকানো থাকে, কে তার খবর নেয়!’ 

মেহেদিগাছের পাতা ব্যবহার করা হয় প্রধানত হলদে বা লালচে রং তৈরির জন্য। সেই লালচে রংই যেন গাছের রক্ত বা খুন। সে রং দিয়ে বস্ত্র ও চুল রাঙানো হয়। হাতে ও পায়ে মেহেদি নকশা তৈরি করা হয় এবং বিভিন্ন প্রসাধনসামগ্রী তৈরি করা হয়। প্রাচীনকাল থেকে ইসলামিক সংস্কৃতিতে মেহেদি দিয়ে চুল, দাড়ি, ত্বক ও নখ রং করার রেওয়াজ চলে আসছে। মেহেদির রং তৈরির রাসায়নিক উপাদান হলো লসোন। দেহের প্রোটিনের সঙ্গে লসোন দ্রুত যুক্ত হতে পারে। এর ফলে দ্রুত রং তৈরি হয়। মেহেদি রঙের এ রহস্য নিশ্চয়ই কবি নজরুলও জানতেন। পুবের হাওয়া কাব্যগ্রন্থের বিরহ-বিধুরা কবিতায় সে আভাস স্পষ্ট, ‘লাল-রঙিলা করব না কর মেহেদী-হেনার ছাপ ঘষে/ গুলফ চুমি কাঁদবে গো কেশ চিরুণ-চুমার আপশোশে!’ 

মেহেদির ইংরাজি নাম হেনা (Henna) আর উদ্ভিদতাত্ত্বিক নাম Lawsonia inermis ও গোত্র Lythraceae. মেহেদি একটি বহুবর্ষজীবী চিরসবুজ গুল্ম বা ছোট বৃক্ষ। গাছ সাড়ে সাত মিটার পর্যন্ত লম্বা হতে পারে। বহু শাখায়িত ও ঝোপালো, ডালের অগ্রভাগ কণ্টকিত। ডালে বিপরীতমুখীভাবে উপবৃত্তাকার ছোট ছোট পাতা জন্মে, পাতার আগা তীক্ষ্ণ। ফুল সাদাটে ঘিয়া রঙের, পাপড়ি চারটি, থোকা ধরে ফোটে, সুগন্ধি।  ছোট্ট ছোট্ট মটরের মতো থোকায় প্রচুর ফল ধরে।

কাঁচা ফল সবুজ, পাকলে হয় বাদামি। প্রতিটি ফলের ভেতরে ৩২-৪৯টি ক্ষুদ্র বীজ থাকে। পাকা ফল শুকিয়ে ফেটে গেলে বীজগুলো ছড়িয়ে পড়ে। বীজ ও শাখা কলম থেকে চারা হয়। মাথাব্যথা, অনিদ্রা, কটিবাত বা লুম্বাগো, ডায়রিয়া, ক্যানসার, প্লীহার বৃদ্ধি, পাকস্থলী ও অন্ত্রের ক্ষত, খুসকি, একজিমা, দাদ, ছত্রাক সংক্রমণ, জন্ডিস ইত্যাদি রোগ নিরাময়ে মেহেদি ব্যবহৃত হয়। মেহেদি ব্যথা-বেদনা ও প্রদাহ কমাতে পারে। মাথায় মেহেদি দিলে উকুন মরে। ওষুধ হিসেবে মেহেদির পাতা, ফুল, মূল ও ফল ব্যবহার করা হয়।

মেহেদিতে হাত রাঙানো বা ত্বকে নকশা তৈরি সুপ্রাচীন কাল থেকে এ উপমহাদেশে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। বিশেষ করে বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানে আজ থেকে প্রায় ৯০০০ বছর আগে প্রসাধনী ও রং হিসেবে মেহেদি ব্যবহারের তথ্য জানা যায়। ধারণা করা হয়, মেহেদিগাছের উৎপত্তি আফ্রিকা ও এশিয়া অঞ্চলে।

সুন্দর পাতাবুলবুলির কথা

প্রকাশ: ১৯ জুন ২০২৫, ০৯:৫০ এএম
সুন্দর পাতাবুলবুলির কথা
চুয়াডাঙ্গায় সেগুনগাছ থেকে উড়ে যাচ্ছে পুরুষ পাতাবুলবুলি। ছবি: মো. মারুফ রানা

ছয় বছর আগের কথা। ২০১৯ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন মেহেরপুর পৌর ডিগ্রি কলেজের (বর্তমান ছহিউদ্দিন ডিগ্রি কলেজ) সহকারী অধ্যাপক মাসুদ রেজা ভাইয়ের আমন্ত্রণে বিরল এক পাখির সন্ধানে মেহেরপুর শহরে পৌঁছালাম। তখন ভোর ৪টা বেজে ২০ মিনিট। বাস থেকে নেমেই দেখি টং-দোকানে চা-বিক্রেতা গরম গরম চা বানাচ্ছেন। শীতের ভোরে চায়ের কাপে ধোঁয়া তুলতে মন্দ লাগল না। তবে চা পান শেষ করার আগেই মাসুদ ভাই চলে এলেন। ঘুটঘুটে অন্ধকারেই ওনার সঙ্গে কলেজের দিকে রওনা হলাম।

মেহেরপুর জেলা বার্ড ক্লাবের সভাপতি মুহিত ভাই এলেন ভোরের আলো ফোটার পর। এরপর আমরা সবাই রক্তলাল ফুলে ভরা পলাশগাছটির কাছে গেলাম। কয়েক বছর ধরে এ গাছটিতেই একজোড়া বিশেষ প্রজাতির বিরল পাখি আসছে। মাসুদ ভাই বললেন, বসন্তে যখন কলেজের পলাশগাছটি ফুলে ফুলে ভরে ওঠে, তখন ওদের আনাগোনা বাড়ে। সচরাচর ভোর ও বিকেলে বেশি দেখা যায়। তাই তো সারা রাত বাস জার্নি করে বুকভরা আশা নিয়ে পাখিজোড়ার সন্ধানে এতদূর আসা!

ক্যামেরা হাতে কিছুটা টেনশন নিয়ে দাঁড়িয়ে আছি, ‘যদি পাখিগুলো না আসে’? মাসুদ ও মুহিত ভাই দুজনেই অভয় দিলেন, ‘ওরা আসবে’। ৬টা ৪০ মিনিটে প্রথমে পুরুষটি এল। পলাশের রাঙা ফুলের ভেতর চমৎকারভাবে চঞ্চু ঢুকিয়ে অমৃত সুধা পান করল যেন! এক সেকেন্ড দেরি না করে ওর একটি সাক্ষী ছবি তুললাম। স্ত্রীটি আশপাশে এলেও ছবি তোলার দূরত্বে আসতে ১২ মিনিট সময় নিল।

পাখি দুটিকে অত্যন্ত ভীতু মনে হলো। তখনো সূর্যের আলো ভালোভাবে না ফোটায় ঝকঝকে ছবি পেলাম না। সকাল ৭টা ১ মিনিটে হঠাৎই পলাশগাছে একটি খুঁড়লে প্যাঁচার আগমন ঘটল। আর তাতেই ভীতু পাখিগুলো সেই যে পালাল, আর এল না। তবে ভালো ছবি না পেলেও বিরল পাখি দেখার আনন্দ নিয়ে শহরের দিকে এগোলাম।

শহরে গিয়ে নাশতা সারার পর চুয়াডাঙ্গার স্কুলশিক্ষক ও প্রকৃতি সংরক্ষক বখতিয়ার হামিদ এলে ওর সঙ্গে বেলগাছি গ্রামে গেলাম ওখানকার পাখি-প্রাণীদের খোঁজখবর নিতে। এর দু-তিন বছর পর একদিন বখতিয়ায় তার বাসার গেটের সামনের গাছে একই প্রজাতির পাখির দেখা পেল। কয়েক বছর ধরে চুয়াডাঙ্গার বেলগাছি গ্রামে এই পাখি নিয়মিত দেখা যাচ্ছে। ওরা নিয়মিত ডিম-ছানাও তুলছে।

গত ২৪ মে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ঝিনাইদহ ভেটেরিনারি ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত এক আন্তর্জাতিক কর্মশালায় ‘বন্য প্রাণী কল্যাণ ও সংরক্ষণ’ বিষয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন শেষে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জালাল উদ্দিন সরদারের আমন্ত্রণে হঠাৎ করেই রাজশাহী যেতে হলো। ঝিনাইদহ থেকে রাজশাহী যাওয়ার সহজ উপায় হলো চুয়াডাঙ্গা গিয়ে ট্রেন ধরা। তখন বিকেল সাড়ে ৪টা বাজে। পৌনে ৬টায় একটি ট্রেন খুলনা থেকে চুয়াডাঙ্গা হয়ে রাজশাহী যাবে। জালাল ভাই দ্রুত অনলাইনে টিকিটের ব্যবস্থা করলেন। ক্যাম্পাসের গেট থেকে বাসে চড়ে আধা ঘণ্টায় চুয়াডাঙ্গা রেলস্টেশনে চলে গেলাম। তবে পৌঁছে শুনি ট্রেন আসতে দেরি হবে। সময় কম, সঙ্গে ভালো ক্যামেরা নেই। বখতিয়ারের বাসা রেলস্টেশন থেকে বেশি দূরে নয়। ওকে ফোন দিলাম, কিন্তু ও ফোন ধরল না।

সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসছে। এর মধ্যেই পক্ষী আলোকচিত্রী মারুফ রানার কথা মনে হলো। ওকে ফোন দিতেই বলল সে মাত্রই ঝিনাইদহ থেকে আসছে। রেলস্টেশনের পাশ দিয়ে যাচ্ছে। আমার ফোন পেয়ে ১০ মিনিটের মধ্যে স্টেশনে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরল। বহুদিন পর ওর সঙ্গে দেখা। মারুফ চুয়াডাঙ্গার বেলগাছি থেকে এই পাখিটির চমৎকার সব ছবি তুলেছে। তার মধ্যে গত বছরের তোলা উড়ন্ত ছবিটি বেশ হয়েছে। ট্রেন আসার আগ পর্যন্ত পাখিটি নিয়ে ওর সঙ্গে গল্প করলাম। শেষ পর্যন্ত সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় ট্রেন এলে ওর কাছ থেকে বিদায় নিয়ে রাজশাহী রওনা হলাম।

মেহেরপুর ও চুয়াডাঙ্গার অতি বিরল ও সুন্দর এই পাখিটি এ দেশের আবাসিক পাখি জারডনের পাতাবুলবুলি বা হরবোলা। ইংরেজি নাম জারডন’স লিফবার্ড। ক্লোরোপসিডি গোত্রের পাখিটির বৈজ্ঞানিক নাম Chloropsis jerdoni (ক্লোরোপসিস জারডনি)। এরা ভারত ও শ্রীলঙ্কাজুড়ে বিস্তৃত।

এটি ছোট আকারের পাখি। দেহের দৈর্ঘ্য ১৬ দশমিক ৫ থেকে ১৮ দশমিক ৫ সেন্টিমিটার। ওজন ৫০ গ্রামেরও কম। অন্যান্য হরবোলার মতো দেহের মূল রং পাতা-সবুজ। দেহের নিচের পালকের রং হালকা সবুজ। স্ত্রী ও পুরুষ পাখির পালকের রঙে পার্থক্য থাকে। পুরুষের কপাল হলদে-সবুজ। গাল-গলা কালো, নীলচে গোঁফ ও গলার কালোর চারদিকে হলদে-সবুজ আভা থাকে। 

অন্যদিকে স্ত্রীর গাল-গলা সবুজাভ-নীল ও গোঁফ নীলচে। স্ত্রী-পুরুষ নির্বিশেষে চোখ ও চঞ্চু কালো; পা নীলচে-ধূসর। অপ্রাপ্তবয়স্ক পাখির পুরো দেহ সবুজে মোড়ানো; গলায় কালো বা নীল রং নেই।
এখন পর্যন্ত মেহেরপুরের ছহিউদ্দিন ডিগ্রি কলেজ ক্যাম্পাস ও চুয়াডাঙ্গার বেলগাছি গ্রাম ছাড়া এ দেশের অন্য কোথাও এই পাখির দেখা মেলেনি। দিবাচর পাখিগুলো বন-বাগান ও গাছপালাসম্পন্ন এলাকায় বাস করে। সচরাচর জোড়ায় থাকে। ফুলের নির্যাস, পোকামাকড় ও ছোট ফল প্রিয় খাবার। অন্যান্য প্রজাতির হরবোলার মতো এদের কণ্ঠেও রয়েছে বিভিন্ন পাখির ডাকের মিশ্রণ।

মার্চ থেকে সেপ্টেম্বর প্রজননকাল। গাছের উঁচু ডালে বা মগডালে কঠি, পাতা, ঘাস ও মস দিয়ে বাটির মতো পরিপাটি বাসা বানায়। ডিম পাড়ে দুই থেকে তিনটি। ডিমের রং গোলাপি, যা প্রায় ১৪ দিনে ফোটে। ছানারা প্রায় দুই সপ্তাহে বড় হয়। আয়ুষ্কাল চার বছরের বেশি।

লেখক: পাখি ও বন্যপ্রাণী প্রজনন ও চিকিৎসা বিশেষজ্ঞ

ফুটেছে কাঠগোলাপ ফুল

প্রকাশ: ১৭ জুন ২০২৫, ১১:৪৪ এএম
ফুটেছে কাঠগোলাপ ফুল
ছবি: লেখক

কাঠগোলাপ তরুণদের কাছে এক নান্দনিক ফুল হিসেবে জনপ্রিয়। কবিতা, গানের কলি কিংবা সাহিত্যের বই থেকে গুলাচির সঙ্গে অনেকের প্রথম পরিচয় ঘটে। এ ছাড়া এ ফুল গোলাইচ, গোলকচাঁপা, চালতাগোলাপ, গরুড়চাঁপা ইত্যাদি বিভিন্ন নামে পরিচিত।  

রবীন্দ্রনাথ এ ফুলের সৌন্দর্য দেখেই লিখেছেন 
     ‘একলা বসে হেরো তোমার ছবি
     তপ্ত হাওয়ায় শিথিল মঞ্জরী
     গোলকচাঁপা একটি দুটি করি
     পায়ের কাছে পড়িছে ঝরি
     ঝরি তোমারে নন্দিয়া।’

কাঠগোলাপ ক্ষুদ্র থেকে মাঝারি আকারের মাংসল ও ভঙ্গুর কাণ্ডধারী পত্রঝরা ছোট বৃক্ষ বা গুল্ম। গাছটি ৮-১০ মিটার পর্যন্ত উঁচু হতে পারে। ডালপালা ছড়ানো কিন্তু ঊর্ধ্বমুখী পাতা স্থূল, মসৃণ, লম্বা এবং ঘন সবুজ, ২৫-৩০ সেমি লম্বা ও ১০-১২ সেমি চওড়া। পুষ্পমঞ্জরী নিয়ত, প্রান্তিক। ফুল চ্যাপ্টা ও সুগন্ধিযুক্ত। ফুলের রং সাদা, বেগুনি বা হলুদ। ফুলের পাপড়ি পাঁচটি, ফল লম্বা ও বাঁকা। গুলাচির ছাল ধূসর বর্ণ, কাঠ শ্বেত বর্ণ ও নরম। গাছে যখন পাতা থাকে না, তখন এর পুষ্পদণ্ড বের হয়। একটি পুষ্পদণ্ডে অনেক ফুল হয়। গুলাচি বিচিত্র গড়নের হয়ে থাকে। ফুলের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো কোনো কোনো ফুল দুধের মতো সাদা, কোনোটি সাদা পাপড়ির ওপর হলুদ দাগ, আবার কোনোটি লালচে গোলাপি রঙের। আবার সাদা রঙের কিছু ফুল দীর্ঘ মঞ্জরীদণ্ডের আগায় ঝুলে থাকে।  

কাঠগোলাপের বৈজ্ঞানিক নাম Plumeria rubra, এটি Apocynaceae পরিবারের একটি উদ্ভিদ। ওয়েস্ট ইন্ডিজ এর আদি জন্মস্থান। কারও কারও মতে সাদা গুলাচির আবাসস্থল মেক্সিকো। ফুল ফোটার সময় গ্রীষ্ম থেকে হেমন্ত।  

কাঠগোলাপ মেক্সিকো, মধ্য আমেরিকা, ভেনেজুয়েলা ও দক্ষিণ ভারতের স্থানীয় ফুল। বিস্তৃতি বাংলাদেশ, ভারত ও মায়ানমারে। ঢাকায় বলধা গার্ডেন ও সচিবালয়ের সামনে দেয়ালের ভেতর ও ময়মনসিংহের জুবিলী ঘাটে এক বাসার সামনে এ উদ্ভিদটি আছে। 

সাদা গুলাচি গৌরচাঁপা নামেও পরিচিত। সংস্কৃতে এর নাম কানন করবী। এর পাতা বেশ লম্বা হয়। প্লুমেরিয়া গণে প্রজাতির সংখ্যা সাত এবং ইংরেজিতে একে প্যাগোডা ট্রি বা টেম্পল ট্রি বলা হয়। ফরাসি উদ্ভিদবিদ চার্লস প্লুমেয়ারের   নামানুসারে এ গণের নামকরণ করা হয়েছে।

এ গাছ হিন্দুদের কাছে পবিত্র। বৌদ্ধদের কাছে এ গাছ মৃত্যুহীন প্রাণের প্রতীকরূপে চিহ্নিত। এর ফুল পূজার উপকরণ। বাগান, মসজিদ, মন্দির ও বাড়ির উঠানে এ গাছ আকর্ষণীয়। গুলাচির ভেষজগুণ রয়েছে। এর ছাল পানিতে কিছুক্ষণ ভিজিয়ে পরে ছেঁকে পানিটা সকাল-বিকেল দু-তিন দিন খেলে কফের অসুবিধা দূর হয়। গনোরিয়া ও কুষ্ঠরোগে এর ব্যবহার রয়েছে। এর সাদা আঠা আদার রস ও কাঁচা দুধের সঙ্গে মিশিয়ে খেলে বাতের ব্যথার উপশম হয়। যক্ষ্মা রোগের জীবাণুর বৃদ্ধিও এটি প্রতিহত করে।     

এশিয়ার নানান দেশে শোভাবর্ধনকারী উদ্ভিদ হিসেবে কাঠগোলাপের আগমন ঘটেছে। 

বাংলাদেশের মূলত শহর এলাকায় বিশেষ করে শহরের পার্ক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে এ ফুলগাছটি রোপণ করা হয়েছে। এর বংশবৃদ্ধি হয় শাখা কলমের মাধ্যমে।