ঢাকা ২২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, শনিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪

বাংলাদেশের একমাত্র ছাতিঘুরুনি

প্রকাশ: ১২ অক্টোবর ২০২৪, ১১:৩৭ এএম
বাংলাদেশের একমাত্র ছাতিঘুরুনি
ছাতিঘুরুনি। ছবি: লেখক

পাখির নাম ছাতিঘুরুনি! এ নাম শুনে শহুরে মানুষ অবাক হলেও গাঁয়ের লোকের কাছে নামটি বেশ পরিচিত এবং পাখিটিও চেনা। গ্রামের বাঁশঝাড়ে ঢুকলে মশা, জাবপোকা, হাতিপোকা, অশ্রুচোষা ইত্যাদি কীটপতঙ্গ যদি আপনাকে ঘিরে ওড়াউড়ি করতে থাকে তো দুদণ্ড স্থির থাকুন। দেখবেন, পতঙ্গের টানে ছাতিঘুরুনি পাখি এসে আপনার মাথার ওপরে কঞ্চিতে বসেছে। যেসব উড়ুক্কু পোকামাকড় উষ্ণ রক্তের প্রাণির পিছু নেয়, তা শিকার করাই এ পাখির প্রতিদিনের কাজ। তবে কাছে এসে বসলেও পাখিটিকে ঠাহর করা অনভিজ্ঞ দর্শকের জন্য কঠিন এক কাজ। চোখের সামনে এসেও অদৃশ্য থাকার সব ব্যবস্থা রয়েছে এ পাখির। কিন্তু দেখতে না পেলেও পাখিটির তীক্ষ্ণকণ্ঠ ‘চিক-চিক-চি-চি-হুইচ’ গানটি আপনি নিশ্চয়ই শুনতে পাবেন। 

বন, বাগান ও ঝোপঝাড়ের অন্ধকারে মিশে থাকলে পতঙ্গ শিকারে সুবিধা হয় বলে ছাতিঘুরুনির গায়ের প্রায় সব পালকই কালো। অন্ধকার বনকোণে ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র পোকামাকড় খুঁজে পাওয়ার জন্য এর কালো, বিস্ফারিত ও বিশাল একজোড়া চোখ আছে। মিশকালো এই পাখির দর্শনীয় সাজসজ্জার মধ্যে আছে শুধু সরু একজোড়া সাদা ভ্রু ও ধবল একটি গলাবন্দ। এই গলাবন্দের জন্যই পাখিটির পোশাকি নাম ‘ধলাগলা ছাতিঘুরুনি’ এবং ইংরেজি নাম ‘হোয়াইট-থ্রোটেড ফ্যানটেইল’। ছাতিঘুরুনি পাখির দেহের সবচেয়ে আকর্ষণীয় অংশ হলো এর লেজ- ৭ ইঞ্চি লম্বা দেহের ৪ ইঞ্চিই লেজ। লম্বা-চওড়া ১২টি পালকে গড়া এই লেজ সে বারবার মেলে ধরে আর গুটিয়ে নেয় জাপানি পাখার মতো। এক মুহূর্ত কোথাও স্থির থাকে না। অতি চঞ্চল এই পাখি। এক দণ্ড দাঁড়ালেও সে দেহটিকে অনবরত ডানে-বাঁয়ে ঘোরাতে থাকে। এ জন্যই ছাতিঘুরুনির অহমীয়া নাম ‘নাচনি চড়াই’। ভারতের আসাম, মেঘালয়, পশ্চিমবঙ্গ ও বিহার এবং বাংলাদেশ, মায়ানমার, মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ায় এ পাখির বসবাস সীমিত। 

‘ছাতিঘুরুনি’ বা ‘ফ্যানটেইল’ কিন্তু একটিমাত্র পাখির নাম নয়, ৬৬ প্রজাতির একটি বৃহৎ পরিবারের নাম। এ পরিবারের পাখিরা ভারতবর্ষ থেকে শুরু করে পুবে চীন ও দক্ষিণে অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ড হয়ে ভানুয়াটুর মতো প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপে বসবাস করে। কিন্তু এই একটি অঞ্চল ছাড়া বিশ্বের অপর পাঁচটি মহাদেশের কোথাও কোনো প্রজাতির ছাতিঘুরুনি পাখির চিহ্নমাত্র নেই। দুঃখের কথা, আমাদের দেশেও ‘ধলাগলা ছাতিঘুরুনি’ নামে এই একটিমাত্র প্রজাতি ছাড়া আর কোনো ছাতিঘুরুনি নেই। দক্ষিণ ভারতে আবার ‘ধলাগলা ছাতিঘুরুনি’ নেই, আছে অপর একটি প্রজাতি, যার নাম ‘ধলাবুটি ছাতিঘুরুনি’। এ পরিবারের যে সদস্য ম্যানগ্রোভ বা নোনাবনে বাস করে তার নাম ‘নোনাবন-ছাতিঘুরুনি’। এ ক্ষেত্রে আবার দুঃখ করে বলতে হচ্ছে যে, এই প্রত্যাশিত প্রজাতিটিও সুন্দরবনে অনুপস্থিত। উত্তর অস্ট্রেলিয়ার নোনাবনে গিয়ে সম্প্রতি আমরা এই প্রজাতির দেখা পেয়েছি। তবে বাংলাদেশে একটিমাত্র প্রজাতির বসবাস হলেও এখনো দেশের সর্বত্র এ পাখির দেখা পাবেন। এককালে গ্রামের খোলা শৌচাগারগুলোই ছিল ছাতিঘুরুনির জন্য অন্তহীন আহার্যের ভাণ্ডার। গ্রামাঞ্চলে স্যানিটারি শৌচাগার জনপ্রিয় হওয়ায় আহার্যের সেই সাপ্লাই-চেইন এখন ভেঙে পড়েছে। ফলে এ পাখির সংখ্যা কিছুটা কমেছে বটে কিন্তু শঙ্কিত হওয়ার মতো কিছু নয়। এ দেশে যত দিন মশা, জাবপোকা ইত্যাদি খুদে পতঙ্গের বসতি টিকে আছে ছাতিঘুরুনি পাখিরা ততদিন অভুক্ত থাকবে না।

মনোমুগ্ধকর গোলাপি দোলনচাঁপা

প্রকাশ: ০৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৩৪ এএম
আপডেট: ০৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৩৫ এএম
মনোমুগ্ধকর গোলাপি দোলনচাঁপা
মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে সুলতানপুর গ্রামে ফোটা গোলাপি দোলনচাঁপা। ছবি: লেখক

বাংলা সাহিত্যের কোথায় না দোলনচাঁপা আছে? জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থের নামটাই ছিল দোলনচাঁপা, আজ থেকে ১০১ বছর আগে সেটি প্রকাশিত হয় কলকাতার আর্য পাবলিশিং হাউস থেকে। শরৎ-হেমন্তের বৃষ্টি আর শিশিরে ভেজা দোলনচাঁপার শুভ্র-স্নিগ্ধ রূপ আর সুগন্ধ প্রকৃতিমনাদের যেমন বিমোহিত করে, তেমনি প্রেমিকদের করে ব্যথিত। কাজী নজরুল ইসলামের অভিশাপ কবিতায় দোলনচাঁপা ফুটে আছে সেই ব্যথার ফুল হয়ে- ‘ফুটবে আবার দোলন চাঁপা চৈতী-রাতের চাঁদনী, আকাশ-ছাওয়া তারায় তারায় বাজবে আমার কাঁদ্নী।’ দোলনচাঁপা ফুলগুলো যেন জ্যোৎস্নাধোয়া বিধবার সাদা শাড়ি পরা কোনো বিরহী প্রেমিকা, যার নিশ্বাসে মেখে আছে বিরহের আতরগন্ধ। ছোটবেলা থেকেই দেখে আসছি দোলনচাঁপা ফুলের সেই সাদা স্বরূপ। হঠাৎ দেখলাম এক বাগানে ফুটেছে গোলাপি রঙের দোলনচাঁপা।

কয়েক দিন আগে মানিকগঞ্জের হরিরামপুরের সুলতানপুর গ্রামে গিয়েছিলাম। সেখানে তরুরসিক তানভীর আহমেদের বাগানে গিয়ে চিরচেনা বিধবা দোলনচাঁপাকে দেখলাম বর্ণিল সাজে। যেন সে হঠাৎ করে কোনো জাদুর ছোঁয়ায় পেয়ে গেছে প্রেমের রং। গোলাপি পাঁপড়িগুলো যেন প্রজাপতির মতো ডানা মেলে উড়তে চাইছে নীল আকাশে। প্রথম দেখাতেই মুগ্ধতা, কেননা বিরল রঙে রাঙানো এই দোলনচাঁপা আমাদের দেশে এসেছে বিদেশ থেকে অতিথি হয়ে। তানভীর বললেন, ২০১৬ সালে তিনি নেটে এই গোলাপি দোলনচাঁপার ছবি দেখে তার খোঁজ শুরু করেন। নানা দেশ ও স্থান থেকে নতুন নতুন গাছপালা সংগ্রহ করা তার নেশা। খুঁজতে খুঁজতে তিনি থাইল্যান্ড থেকে এই গোলাপি রঙের দোলনচাঁপাসহ ১০ জাতের দোলনচাঁপা সংগ্রহ করেন। এর মধ্যে সোনালি হলুদ ফুলের জাতটিও চমৎকার! তার সংগ্রহে ছিল লাল দোলনচাঁপার জাতটিও। দুর্ভাগ্য যে সে গাছটি চুরি হয়ে গেছে। তার পরও তিনি দমে যাননি। তার বাগানে বর্তমানে প্রায় ২০০ প্রজাতির প্রায় সাড়ে ৭০০ গাছ রয়েছে। এর মধ্যে তার সংগ্রহে আছে প্রায় ৪০ জাতের বাহারি কচু ও ৫০ জাতের জলজ ফুলগাছ। তবে এই গোলাপি দোলনচাঁপা তার কাছে অত্যন্ত প্রিয়। যেমন এর রং, তেমনি মিষ্টি সুগন্ধ।

আফসোস যে তানভীর আহমেদের বাগানে গিয়ে যখন সেই দুই ঝাড় গোলাপি দোলনচাঁপা ফুলগাছের কাছে গিয়ে দাঁড়ালাম, তখন তার যৌবন ঢলে গেছে। হেমন্ত শেষে ফুল ফোটাও শেষের পথে। কয়েকটা গোলাপিরঙা দোলনচাঁপা ফুল কেবল সে গাছের সাক্ষ্য হয়ে আছে। শীতে সেসব গাছে আর ফুল ফুটবে না, অনেক ফোটা ফুল শুকিয়ে গেছে, গাছও মরে যাবে। পরের বর্ষায় সেসব গাছ আবার ঝোপালো ও তাগড়া হয়ে বর্ষা থেকে হেমন্ত পর্যন্ত ফুল দেবে।

গোলাপি দোলনচাঁপা গাছ দেখতে অনেকটা আদাগাছের মতো, গাছ দেখতে হুবহু সাদা দোলনচাঁপা গাছের মতোই। এ গাছ প্রায় ৯০ থেকে ১২০ সেন্টিমিটার লম্বা হয়, ঝোপ দেখতে বেশ সুন্দর। এর ফুল বড় আকারের ধবধবে সাদা এবং মিষ্টি সুগন্ধযুক্ত। গাছ যখন বেশ ঝাড়ালো হয়, তখন প্রতিটি গাছ থেকে ডাঁটির মাথায় অনেকগুলো ফুল ফোটে। দোলনচাঁপা প্রধানত বর্ষা ও শরৎকালের ফুল, বিকেলের দিকে ফুল ফোটে এবং সারা রাত বহুদূর থেকেও ফুলের মধুর গন্ধ পাওয়া যায়। শীতকালে মাটির ওপরে গাছ যখন শুকিয়ে যায়, তখন এর কন্দ বা রাইজোম তুলে সংরক্ষণ করা যায় অথবা মাটির নিচেই রেখে দেওয়া যায়। প্রতিবছর নতুন নতুন জায়গায় গাছ রোপণ করা ভালো। দোলনচাঁপা চাষের জন্য বেশি পানির দরকার হয়। তাই রোপণের পর নিয়মিত পানির ব্যবস্থা করতে হয়। এ গাছ আবার অতিরিক্ত পানি বা জলাবদ্ধতা সহ্য করতে পারে না। 

সাধারণত জুলাই থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত ফুল ফোটে, তবে নভেম্বরের শেষ পর্যন্তও এর কিছু ফুল দেখা যায়। দোলনচাঁপার আদি নিবাস ভারতবর্ষ, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও মাদাগাস্কার। আদাগোত্রীয় গাছ, গোত্র জিঞ্জিবারেসি। দোলনচাঁপার ইংরেজি নাম বাটারফ্লাই লিলি বা জিঞ্জার লিলি। দোলনচাঁপা হেডিকিয়াম গণের একটি গাছ। সারা পৃথিবীতে হেডিকিয়াম গণের ৭০ থেকে ৮০টি প্রজাতির গাছ আছে, বাংলাদেশে এ গণের আছে ১৫ প্রজাতির গাছ। ধবধবে সাদা ফুলের প্রজাতি হলো Hedychium coronarium, হলুদাভ সাদা রঙের ফুলের প্রজাতি Hedychium flavum, যার নাম রাঙা আদা। এ দেশে লাল বা গোলাপি ফুলের দোলনচাঁপার মতো ফুল লাল বা কমলা রঙের ফুল ফোটে ভুঁই আদাগাছেও, তার প্রজাতি Hedychium coccineum. লাল, কমলা ও গোলাপিরঙা দোলনচাঁপার আদি নিবাস দক্ষিণ চীন।

শোভাময় দুপুরমণি ফুল

প্রকাশ: ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:৫১ এএম
আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:৫২ এএম
শোভাময় দুপুরমণি ফুল
বাসার টবে ফোটা দুপুরমণি। ছবি: লেখক

দুপুরে ফোটে এবং পরের দিন সকালে ঝরে পড়ে দুপুরমণি ফুল। এ জন্যই হয়তো এই ফুলের নাম ‘দুপুরমণি’। এর বৈজ্ঞানিক নাম Pentapetes phoenicea, এটি Malvaceae পরিবারের একবর্ষজীবী গুল্মজাতীয় উদ্ভিদ। Pentapetes-দের একমাত্র প্রজাতি এটি। এর ইংরেজি নামগুলোর মধ্যে Midday Floower, Scarlet Mallow, Copper Cups, Noon Flower, Scarlet Pentapetes, Scarlet Phoenician ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। এর অন্য বাংলা নামগুলো হলো কটলতা, বন্ধুলী, বন্ধুক, দুপুরচণ্ডী, বনদুলি, বন্দুকা, বাধুলিপুষ্প, দুপুর মালতি ইত্যাদি। 

দুপুরমণি ফুল খুব সুন্দর। শ্রীলঙ্কা ও ভারত থেকে উত্তর অস্ট্রেলিয়া ও ফিলিপিন্স পর্যন্ত গ্রীষ্মমণ্ডলীয় দক্ষিণ এশিয়ার বিস্তৃত অঞ্চল উদ্ভিদটির আদি নিবাস। পরে এটি সারা বিশ্বে বিস্তার লাভ করেছে। এটি বর্ষার মৌসুমি ফুল। তবে হেমন্ত পর্যন্ত ফুল ফোটা অব্যাহত থাকে। গাছ লম্বা, খাড়া হয়। ডালপালা থাকে কম। পাতা বেশ লম্বা, মরিচ পাতার মতো। পাতার কিনারা করাতের মতো খাঁজকাটা ও আগা সরু। পাতার কক্ষে ফুল ফোটে। ফুল দুই সেন্টিমিটার চওড়া হয়। ফুলে পাপড়ি পাঁচটি, চ্যাপ্টা। পাপড়ির রং সিঁদুরে লাল, কখনো হালকা গোলাপি বা সাদা হতে পারে। ফুল ২ দশমিক ৩ থেকে ৩ দশমিক ৫ সেন্টিমিটার প্রশস্ত হয়। পাপড়িগুলো নরম আর কোমল। ফুলের কেন্দ্র থেকে কয়েকটি উপাঙ্গ পরাগদণ্ডকে ঘিরে পাপড়ির বাইরে বেরিয়ে থাকে। সেগুলোয় রঙের পরাগরেণু লেগে থাকে। সব মিলিয়ে ফুলটির রূপ যেন আরও বেড়ে যায়। এই ফুলে কোনো গন্ধ নেই, দেখতে জেলি ফিশের মতো। 

এর কাণ্ড অর্ধকাষ্ঠল, উদ্ভিদ শূন্য দশমিক ৫ থেকে এক মিটার পর্যন্ত উচ্চতাবিশিষ্ট হয়। শাখাগুলো লম্বা এবং ছড়ানো। পাতাগুলো ৬ থেকে ১০ সেন্টিমিটার লম্বা হয়। এই উদ্ভিদে পাঁচ প্রকোষ্ঠবিশিষ্ট গোলাকৃতি ফল হয়। ফল গোলাকার, লোমযুক্ত ক্যাপসুল। প্রতিটি প্রকোষ্ঠে ৮-১২টি করে বীজ থাকে। বীজ থেকে খুব সহজেই চারা জন্মে। আগস্ট থেকে নভেম্বর মাসে এতে ফুল ফোটে। এটি টবে ও বাগানের শোভাবর্ধনের জন্য লাগানো হয়। 

তবে অনেক দেশে এই ফুল ভেষজ চিকিৎসার জন্য ব্যবহৃত হয়। ভেষজ চিকিৎসায় দুপুরমণি গাছের পাতা, মূল, ফুল ব্যবহার হয়। উদ্ভিদের কাণ্ড, পাতা এবং মূলের নির্যাসের ফাইটোকেমিক্যাল বিশ্লেষণে অ্যালকালয়েড, ফ্ল্যাভোনয়েড, স্যাপোনিন, স্টেরয়েড, ফেনোলিকস, কুমারিন এবং ট্রাইটারপেনয়েড পাওয়া যায়। পাতার নির্যাসে ট্যানিন, ফ্ল্যাভোনয়েড, স্টেরল, স্যাপোনিন, কার্বোহাইড্রেট এবং অ্যালকালয়েডের চিহ্ন পাওয়া যায়। দুপুরমণির মূলে জীবাণুনাশক, কামোদ্দীপক, সংকোচক, পাকস্থলীর বায়ুনাশক, প্রশান্তিদায়ক, বিষমুক্তকারী, রেচক ও বিশোধক, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও ডায়াবেটিসরোধী গুণাগুণ রয়েছে। 

লেখক: অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান, উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগ, মুমিনুন্নিসা সরকারি মহিলা কলেজ, ময়মনসিংহ

ভরত পাখির সুরেলা গান

প্রকাশ: ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৩৬ এএম
ভরত পাখির সুরেলা গান
বাংলা ঝাড়ভরত, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঠ থেকে তোলা। ছবি: লেখক

‘ভোরের বেলায় তুমি আমি
নীল আকাশের ভরত পাখির গানে
কবে যে এই ধুলোমাটির পৃথিবীতে
প্রথম দেখেছিলাম’

-    জীবনানন্দ দাশ

বসন্তের দুপুর, খোলা মাঠে বসন্তের হাওয়া বইছে। আকাশে ঝলমলে রোদ। এমন সময় মাঠের ওপর ছোট্ট এক পাখি ডানা ঝাপ্টাচ্ছে অনবরত, সেই সঙ্গে গাইছে সুরেলা কণ্ঠে। এমন গানের সুর আকুল করে তোলে মানুষের মন। বসন্তের বাতাসে তার মিষ্টি ও সুরেলা গানের সুরের মূর্ছনা ছড়িয়ে পড়ছে চারদিকে। পাখিটি অনবরত ডেকে যাচ্ছে কয়েক মিনিট ধরে। একসময় গাইতে গাইতে সে ঘাসের মাঠে নেমে গেল। নামার গতির সঙ্গে সঙ্গে গানের সুরও নরম হতে থাকে। গানের শেষ পর্যায়ে প্যারাস্যুটের মতো ডানা মেলে ধরে ভূমিতে ল্যান্ড করে পাখিটি। ভূমিতে নামার পর হেঁটে হেঁটে ঘাসের মধ্যে পোকা খোঁজে। ঘাসের মাঠে ভরত পাখিটি হাঁটতে পারে। তবে বিপদ বুঝলে থেমে গিয়ে অনড় হয়ে বসে থাকে। বাংলার মেঠো ফসলের মাঠে, ঘাসের মাঠে হেঁটে বেড়ানো এ পাখিটির পোশাকী নাম ‘বাংলা ঝাড়ভরত’। তবে এরা গ্রাম-বাংলায় ভরত পাখি নামেই সর্বাধিক পরিচিত। পাখিটি তার গায়কীর জন্য বিখ্যাত। কবিরাও করেছেন ভরত পাখির জয়গান। 

ছেলেবেলায় ভরত পাখির বাসা খুঁজেছি। কিন্তু কখনোই খোঁজ পাইনি তাদের বাসার। বিশাল ঘাসের মাঠে বাসা খুঁজে পাওয়া মুশকিল। তা ছাড়া ভরত পাখি বাসার কাছাকাছি পৌঁছে গেলেও হয়তো আমাদের দিকভ্রান্ত করে অন্যদিকে নিয়ে যেত আকাশে ডেকে ডেকে। কিছুটা হট্টিটি পাখির মতো কৌশলে। ছোট্ট এ পাখির দৈর্ঘ্য মাত্র ১৪ সেন্টিমিটার এবং ওজন ২৯ গ্রাম। পেট ও ডানার পালক লাল। বুকে কালচে তিলা থাকে এবং চোখের রং বাদামি। ভরত ছোট আকারের ভূচর গায়ক পাখি। বাংলাদেশে সাত প্রজাতির ভরত পাখি আছে, তার মধ্যে ‘বাংলা ঝাড়ভরত’ ও ‘বালি ভরত’ আমাদের আবাসিক পাখি। 

বাংলা ঝাড়ভরত পোকা শিকারি পাখি। প্রধানত আবাদি ভূমি, মুক্ত তৃণভূমি ও পতিত জমিতে বিচরণ করে। সচরাচর একা কিংবা জোড়া বেঁধে চলে এই পাখি। দেশের সব বিভাগের প্রত্যন্ত এলাকায় পাখিটি দেখা যায়। সিলেট ও সুনামগঞ্জের হাওরে শুষ্ক মৌসুমে গেলে চারদিকে এ পাখির গান শোনা যায়। বাংলা ঝাড়ভরতের ইংরেজি নাম ‘বেঙ্গল বুশলার্ক’। এই সুরেলাকণ্ঠী পাখিটি ভারতীয় উপমহাদেশ এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, ভুটান, মায়ানমার ও নেপালে দেখা যায়।

লেখক: নিসর্গী ও পরিবেশবিদ, জার্মান অ্যারোস্পেস সেন্টার

গাঁয়ের পথে তেউড়ি লতা

প্রকাশ: ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ১০:০৫ এএম
গাঁয়ের পথে তেউড়ি লতা
মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে ফোটা তেউড়ি ফুল। ছবি: লেখক

হেমন্ত ফুরিয়ে আসছে, মাঠগুলোও ধানশূন্য হয়ে পড়েছে। এ রকম শূন্যতার মাঝেও পূর্ণতার খোঁজে ঢাকা থেকে মানিকগঞ্জে চলেছি প্রকৃতি দর্শনে। বাংলাদেশ নেচার কনজারভেশন কাউন্সিলের একদল প্রকৃতিপ্রেমিক, আমরা চলেছি হরিরামপুর থেকে ঘিওরে। পথে ভাটুরা গ্রামের মধ্য দিয়ে যাওয়ার সময় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আব্দুর রহিম ভাই হঠাৎ গাড়ি থামাতে বললেন। কারণ কী? বললেন, কী একটা গাছ দেখলাম, মনে হলো তেউড়ি। নেমে ভালো করে দেখতে হবে। সে গাছের ঝোপ পেরিয়ে গাড়ি কিছুটা সামনে গিয়ে দাঁড়াল। রাস্তার ঢালে নানা রকমের ঝোপঝাড়, এরপর দিগন্তবিস্তৃত ধানখেত, শূন্য মাঠ। ঝোপঝাড়ে কয়েকটা ডুমুরগাছকে চেপে ধরেছে সে গাছের লতাপাতা।

আশ্রয়দাতা গাছগুলো কী তা ভালো করে না দেখলে বোঝা যাচ্ছে না। সাদা দুধরঙা ফুল ফুটে রয়েছে বেশ কয়েকটা। দূর থেকে ভেবেছিলাম তেলাকুচা ফুল। কাছে গিয়ে রহিম ভাই নিশ্চিত হয়ে জানালেন, এটাই সেই গাছ, যেটা আমরা দেখব বলে ভেবে রেখেছিলাম, এটাই সেই তেউড়িগাছ। এ পথে বেশ কয়েকবার যাওয়ার সময় এ গাছ দেখছি, আরও একটা গাছ চোখে পড়ে, তার নাম মুন ফ্লাওয়ার। তার ফোটা ফুল দেখতে হলে আসতে হবে রাতের বেলায় বা খুব ভোরে। তেউড়িগাছের ফুলগুলো দেখে কলমি বলে মনে হলো, আবার কখনো মনে হলো মর্নিং গ্লোরি। 

রহিম ভাই পাশের বাড়ি থেকে একটা লম্বা কুটা এনে ফুলসমেত লতা টেনে নামিয়ে বললেন, এ গাছকে সঠিকভাবে শনাক্তকরণের চাবিকাঠি হলো এর লতা। কলমির লতা নলাকার ও বেলুনাকার, ফাঁপা। আর তেউড়ি মূলের লতা তিনটি শিরবিশিষ্ট, মোচড় খাওয়া। সাদা কলমির মতোই ফুল, তাই এর আরেক নাম দুধকলমি। পাতা দেখতে অনেকটা পানপাতার মতো, বোঁটার কাছে হৃৎপিণ্ডের মতো খাঁজকাটা, অগ্রভাগ ক্রমশ সরু হয়ে সুচালো। কলমির চেয়ে এর পাতা বড়। ফলগুলো দেখতে অনেকটা গম্বুজের মতো, পেট ফোলা, মাথা চোখা, গোলাপি-বাদামি রং।

গাছ-দর্শন শেষে ঢাকায় ফিরে এসে বইপত্র নিয়ে বসলাম ওর তেউড়ি নামের রহস্য খুঁজতে। বাংলাদেশে উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষের সপ্তম খণ্ডে গাছটির বর্ণনা পেলাম তার প্রজাতিগত নামের সূত্র ধরে। তবে সেখানে কোথাও এর নাম তেউড়ি বলে উল্লেখ করা হয়নি, স্থানীয় নাম হিসেবে এর নাম লেখা হয়েছে দুধকলমি। দুধের মতো সাদা ফুলের রং, তাই এরূপ নাম। লতা ও পাতার বোঁটা ভাঙলেও সেখান থেকে সাদা দুধের মতো আঠালো পাতলা কষ বের হয়। অন্য আরও বইপত্র ও অন্তর্জাল ঘেঁটে কোথাও এর তেউড়ি নামটা পেলাম না। শেষে আয়ুর্বেদাচার্য শিবকালী ভট্টাচার্যের চিরঞ্জীব বনৌষধি বইয়ের পঞ্চম খণ্ডে পেলাম এই তেউড়ি নাম, যার প্রজাতিগত নাম Operculina turpethum ও গোত্র কনভলভুলেসি। তার মানে গাছটা কলমি গোত্রীয়। তেউড়ি নামটা ওর আয়ুর্বেদিক নাম, সংস্কৃত নাম ত্রিবুৎ থেকে এর নাম হয়েছে তেউড়ি। 

প্রাচীনকালে চিকিৎসক বা কবিরাজরে বলা হতো বৈদ্য। বৈদ্য হলো সে, যার মধ্যে বেরে তথা অথর্ববেদের জ্ঞান থাকে। সেই বেদে তেউড়িকে সম্বোধন করে লেখা হয়েছে ‘তুমি ত্রিবৃৎ, অর্থাৎ ত্রি স্বভাবে বর্তমান ঔষধি। তেজ, জল ও অন্নের প্রকৃতি বিকারে আক্রমণ হলে তুমি তেজ প্রকাশ করে আক্রমণ করো জলের স্বভাবের মতো, সংক্রমিত হয়ে আবার সংশমন করো ক্ষুৎ পিপাসা সংশমনে।’ তিন মহাগুণের অথর্ববেরে তেজী ত্রিবৃৎ বাংলাদেশে এসে নাম ধারণ করেছে তেউড়ি, যার অভিজাত নাম দুধকলমি। হিন্দু ধর্মে ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও শিবকে বলা হয় ত্রিদেব। তারা একটি ত্রিকোণ মুদ্রা উদ্ভাবন করেছিলেন, যা সৃষ্টি করেছিল অনেক সমস্যার, সেই পৌরাণিক কাল থেকে দেবতা ও অসুরদের যুদ্ধ, রামের সঙ্গে রাবণের যুদ্ধ, পাণ্ডবদের সঙ্গে কৌরবদের যুদ্ধ। ভাবি, তেউড়ির বীজটাও তো ত্রিকোণ। এই বীজ আবার কোন সমস্যা তৈরি করে তা কে জানে?

তেউড়ি ভূমিতে ও অন্য গাছের ওপর লতিয়ে চলা লতা। এ লতার কাণ্ড তিন থেকে পাঁচটি শিরবিশিষ্ট। লতায় কোনো পশম নেই, শাখা আছে। ফুল দেখতে অনেকটা মাইকের চোঙের মতো, পাঁপড়ি পাঁচটি যুক্ত ও সাদা। ফুল ফোটে অক্টোবর থেকে মে মাস পর্যন্ত। ফল ক্যাপসিউল প্রকৃতির, চাপা গোলাকার, মসৃণ। বীজ ত্রিকোণাকার বা গোলাকার, কালচে। রহিম ভাই বললেন, তেউড়ি এক দারুণ ভেষজগুণের প্রাচীন ঔষধি গাছ। অম্লপিত্ত, জন্ডিজ, আমবাত, কোষ্ঠকাঠিন্য, খোসপাঁচড়া, এমনকি মনোরোগের চিকিৎসাতেও তেউড়ির মূল ব্যবহার করা হয়। এ দেশে ঘন ঝোপ ও রাস্তার ধারে এ গাছ চোখে পড়ে।

চা-বাগান লেকে শাপলার মুগ্ধতা

প্রকাশ: ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৫৭ এএম
আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৫৮ এএম
চা-বাগান লেকে শাপলার মুগ্ধতা
হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার দেওন্দি চা-বাগানে লেকটি স্থানীয়ভাবে ‘লাল শাপলা বিল’ নামে পরিচিত। ছবি: খবরের কাগজ

কুয়াশায় মোড়া সবুজ চা-বাগানের মাঝে এক মনোমুগ্ধকর লেক। এর বুকে ফুটে থাকা লাল শাপলার অপূর্ব সৌন্দর্য। এ যেন প্রকৃতির নিজস্ব ক্যানভাসে আঁকা এক শিল্পকর্ম। লেকের পানিতে সাদা বকের ডানার ঝাপট আর হাঁসের দল যোগ করেছে রাজসিক আভিজাত্য। এমন মনোমুগ্ধকর পরিবেশ যেকোনো প্রকৃতিপ্রেমীর হৃদয় ছুঁয়ে যাবে

হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার দেওন্দি চা-বাগানে অবস্থিত এই লেকটি স্থানীয়ভাবে ‘লাল শাপলা বিল’ নামে পরিচিতি পেয়েছে। ভোরের আলো ফুটতেই লেকের সৌন্দর্য উপভোগে ভিড় জমাচ্ছেন প্রকৃতিপ্রেমীরা। তরুণ-তরুণী, শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে নানা বয়সের মানুষের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে লেকের চারপাশ। পরিবার-পরিজনের সঙ্গে প্রকৃতির এই মোহনীয় রূপ উপভোগে সবাই মুগ্ধ।

সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান ও রঘুনন্দন গভীর অরণ্যের কাছাকাছি হওয়ায় লেকটি সহজেই পর্যটকদের নজর কাড়ে। গত বছর এই লেকের খবর প্রথমবারের মতো প্রকাশ্যে আসে। তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কল্যাণে লেকের সৌন্দর্যের খবর ছড়িয়ে পড়ায় এবার ভ্রমণপিপাসুদের আগমন বেড়েছে অনেক। প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত হাজার হাজার পর্যটক এই লেকে ভিড় করছেন।

মাধবপুর থেকে পরিবার নিয়ে লেকে ঘুরতে আসছেন আব্দুল মতিন। তিনি বলেন, ‘চা-বাগানের মধ্যে লেক থাকলে এমনিতেই এর সৌন্দর্য অনেক বেশি থাকে। তার মধ্যে লাল শাপলা থাকায় এখানখান পরিবেশ যেমন স্বর্গের মতো। কিছুদিন ধরেই ফেসবুকে এটিকে দেখছি। তাই আজ পরিবারের সবাইকে নিয়ে এলাম।’
বাহুবলের শাবানা আক্তার বলেন, ‘অনেক শাপলা বিল দেখেছি। কিন্তু এর সৌন্দর্য অন্যগুলোর চেয়ে কয়েক গুণ বেশি। কারণ এর চারপাশে সবুজ চা-বাগান। দিনের চেয়ে সকালে এর সৌন্দর্য বেশি থাকে। কারণ তখন চা-বাগানের চারপাশে কুয়াশা থাকে।’

হবিগঞ্জ সদর উপজেলা থেকে বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরতে যাওয়া নার্গিস আক্তার বলেন, ‘কুয়াশায় ঢাকা চা-বাগান দেখতে দেখতে আঁকাবাঁকা পথ ধরে এখানে এলাম। এখানে আসার পর আমি মুগ্ধ হয়ে গেছি। কী নেই এখানে? চা-বাগান, লাল শাপলা, সাদা বক, হাঁসের পালের ছুটাছুটি। এক কথায় অসাধারণ!’

এদিকে পর্যটকদের এমন ভিড়ের মাঝে লেকের পরিবেশ রক্ষায় কিছু সমস্যাও দেখা দিচ্ছে। অনেকেই শাপলা ফুল ছিঁড়ে নিয়ে যাচ্ছেন, পাশাপাশি প্লাস্টিকের বোতল ও খাদ্যপণ্যের মোড়ক ফেলে লেকের পরিবেশ দূষিত করছেন। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন প্রকৃতিপ্রেমীরা। শায়েস্তাগঞ্জ জহুরচাঁন বিবি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘বাড়ির পাশে এমন সুন্দর লেক। তাই দেখতে এলাম। তবে একটা জিনিস খুব খারাপ লাগল। অনেকেই যাওয়ার সময় ফুল ছিঁড়ে নিয়ে যাচ্ছেন। এ ছাড়া যাতায়াতব্যবস্থা ভালো নয়, নিরাপত্তাও কম। প্রশাসনের উচিত এটিকে পর্যটনবান্ধব হিসেবে গড়ে তোলা।’

স্থানীয় প্রশাসন লেকটিকে পর্যটনবান্ধব করে গড়ে তোলার উদ্যোগ নিচ্ছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আয়েশা আক্তার। তিনি বলেন, ‘লেকের পরিবেশ রক্ষা ও পর্যটকদের নিরাপত্তা জোরদারে আমরা কাজ করছি। এরই মধ্যে সেখানে গ্রামপুলিশ নিযুক্ত করা হয়েছে। বাগান কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা হয়েছে। তাদের সঙ্গে মিলে পরিবেশ স্বাভাবিক রাখতে কাজ শুরু হবে।’

লাল শাপলা প্রতীক হতে পারে ভালোবাসা, পবিত্রতা ও নির্মলতার। এটি একদিকে প্রকৃতির প্রতি মানুষের মুগ্ধতা বাড়াচ্ছে, অন্যদিকে পর্যটন খাতকে সমৃদ্ধ করছে।