ঢাকা ৩ আশ্বিন ১৪৩১, বুধবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

বাংলাদেশ নারী সাংবাদিক কেন্দ্রের চতুর্থ জাতীয় সম্মেলন

প্রকাশ: ০২ জুন ২০২৪, ১১:১২ পিএম
বাংলাদেশ নারী সাংবাদিক কেন্দ্রের চতুর্থ জাতীয় সম্মেলন
ছবি : সংগৃহীত

নারীর বিরুদ্ধে সকল প্রকার বৈষম্য, নির্যাতন ও অত্যাচার দূরীকরণে যুথবদ্ধ হয়ে নারী সাংবাদিকদের বলিষ্ঠ ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।

রবিবার (২ জুন) ‘নারী পুরুষের সমতা অর্জনে কলম হোক হাতিয়ার’ শীর্ষক বাংলাদেশ নারী সাংবাদিক কেন্দ্রের চতুর্থ জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। রাজধানীর রমনায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে আয়োজিত এবারের সম্মেলনে সারাদেশ আসা কেন্দ্রের শতাধিক সদস্য অংশ নেন।

স্পিকার বলেন, গত কোভিডের সময় নানা ধরনের প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ফলে নারীরা সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগের শিকার হন। বিশেষ করে চাকরি চলে যাওয়া, আর্থিক সংকটসহ নানা সমস্যার সম্মুখীন হন নারী সাংবাদিকরা। ওই সময়কার দুর্ভোগের কথা বিবেচনা করে নারী সাংবাদিকদের জন্য জীবনবীমা ব্যবস্থা চালুর প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেন তিনি।

বাংলাদেশ নারী সাংবাদিক কেন্দ্রের বিভিন্ন কার্যক্রমের ভূয়সী প্রশংসা করে ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, সারা দেশের নারী সাংবাদিকরা সাংবাদিকতার মতো মহান পেশাকে গ্রহণ করে যে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছেন এটা সত্যিই প্রশংসনীয়। আপনারা দেশ ও জাতির কল্যাণে যেসব কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে আসছেন এটা নারী হিসেবে আমাদের অনেক গর্বের ও সম্মানের। আমি আশা করছি নারী সাংবাদিক কেন্দ্র আগামীতে আরও সময়োপযোগী বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করবেন।  

জাতীয় সংসদের স্পিকার বলেন, নারী সাংবাদিকরা দেশের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা ও চ্যালেঞ্জ নিয়ে লেখালেখি করেন। কিন্তু নিজেদের যত সমস্যা ও চ্যালেঞ্জে রয়েছে সেগুলো নিয়ে লেখা ও বলার সুযোগ তাদের হয় না।  যেকোনো সমস্যা সাংগঠনিকভাবে একত্রিত হয়ে যথার্থ কর্তৃপক্ষকে জানালে সে সমস্যার সমাধান সহজ হয়।

তিনি আরও বলেন, শুধু সাংবাদিকতা নয় সব পেশাতেই নারীকে নানা প্রতিবন্ধকতা ও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হয়। কাজেই দক্ষতা বৃদ্ধিতে প্রশিক্ষণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পেশাগত প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে তথ্য প্রযুক্তি জ্ঞানেও নারীর দক্ষতা জরুরি।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ নারী সাংবাদিক কেন্দ্রের সভাপতি নাসিমুন আরা হক মিনু। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন বাংলাদেশ নারী সাংবাদিক কেন্দ্রের  সাধারণ সম্পাদক পারভীন সুলতানা ঝুমা। শোক প্রস্তাব পেশ করেন কেন্দ্রের কোষাধ্যক্ষ আখতার জাহান মালিক। 

বাংলাদেশ নারী সাংবাদিক কেন্দ্রের সভাপতি নাসিমুন আরা হক মিনু বলেন, ২০০১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় বাংলাদেশ নারী সাংবাদিক কেন্দ্র। তখন থেকেই সদস্যরা দেশের নারীদের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছেন। বর্তমানে বাংলাদেশ  নারী সাংবাদিক কেন্দ্রের সদস্য সংখ্যা প্রায় চারশত। যাদের মধ্যে অনেকে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের প্রতিকূলতার মধ্যেও সাংবাদিকতা করে যাচ্ছেন। নারী সাংবাদিকদের দক্ষতা বৃদ্ধিসহ কর্মক্ষেত্র সুরক্ষা বৈষম্য দূর করার জন্য কেন্দ্র প্রায় ২৪ বছর ধরে কাজ করে যাচ্ছে। নারী সাংবাদিক কেন্দ্র স্বল্পপরিসরে নারী সাংবাদিকদের জন্য কল্যাণ ফান্ড গঠন করেছে।

বাংলাদেশ নারী সাংবাদিক কেন্দ্রের  সাধারণ সম্পাদক পারভীন সুলতানা ঝুমা বলেন, বাংলাদেশ নারী সাংবাদিক কেন্দ্র একটি স্বচ্ছ ও সৎ সংগঠন। সদস্যদের আন্তরিকতা ও ভালোবাসা নিয়ে সংগঠনটি দীর্ঘ ২৪ বছর নানা রকমের বাধা-বিপত্তির মধ্য দিয়েও সদস্যদের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছে। গুণগত মান বজায় রেখে সাংবাদিকতায় নারীদের অংশগ্রহণ বাড়াতে হবে। নীতি নির্ধারণী পদগুলোতে নারীর সংখ্যা খুবই কম। সাংবাদিকতাকে এখনও নারীর পেশা মনে করা হয় না। যোগ্যাতার ভিত্তিতে নারীদের কর্মস্থলে পদোন্নতির দাবি জানান তিনি।

সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে বাংলাদেশ সাংবাদিক কেন্দ্র নাসিমুন আর হক আরা হক মিনুকে সভাপতি ও শাহনাজ সিদ্দীকি সোমা (বাসস) কে সাধারণ সম্পাদক করে নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়। 

১৯ সদস্য বিশিষ্ট কার্যনির্বাহী কমিটির অন্যান্যের মধ্যে রয়েছেন- সিনিয়র সহ-সভাপতি পারভীন সুলতানা ঝুমা, সহ-সভাপতি মুনিমা সুলতানা (ফিনান্সিয়াল এক্সপ্রেস), সহ- সম্পাদক নাজনীন নাহার (টেকওয়ালর্ড বাংলাদেশ), লতিফা আনসারী রুনা (দীপ্ত টিভি), মাশরেখা মনা (বিটিভি), কোষাধ্যক্ষ আখতার জাহান মালিক (সিনিয়র সাংবাদিক), সাংগঠনিক সম্পাদক শাহনাজ পারভীন এলিস (দৈনিক খবরের কাগজ) প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক দিলরুবা খানম (ইত্তেফাক), দপ্তর সম্পাদক আহমেদ মুশফিক নাজনীন (একুশে টিভি), প্রশিক্ষণ সম্পাদক নাসরিন শওকত (ফ্রিল্যান্সার)। 

কার্যনির্বাহী সদস্যরা হলেন- ডেইজি মউদুদ ( দৈনিক বাংলা), অদিতি রহমান ( সিনিয়র সাংবাদিক), বিলকিস সুমি (জিটিভি), ইয়াসমিন রিমা (ডেইলি সান), লাইলী ইয়াসমিন (বৈশাখী টিভি), জাহিদা পারভেজ ছন্দা (সংবাদ) ও রুপম আক্তার (টাইম ওয়াচ)।

এলিস/এমএ/

সাংবাদিক আজমল হোসেন খাদেম আর নেই

প্রকাশ: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:২৪ এএম
সাংবাদিক আজমল হোসেন খাদেম আর নেই
প্রয়াত আজমল হোসেন খাদেম

রেডিও বাংলাদেশের সংবাদপ্রবাহ গ্রন্থণাকার, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক সভাপতি আজমল হোসেন খাদেম আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজেউন)।

সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) রাতে রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন। তার বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর।

তিনি তিন মেয়ে, নাতি, নাতনী রেখে গেছেন।

আজ মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বাদ জোহর বনানী মসজিদে নামাজে জানাজা শেষে মরহুমের মরদেহ বনানী কবরস্থানে দাফন করা হবে।

মরহুম আজমল হোসেন খাদেম দীর্ঘদিন বাংলার বাণী পত্রিকার সাংবাদিকতা করেছেন। পাশাপাশি তিনি রেডিও বাংলাদেশ এর সংবাদ পর্যালোচনা ভিত্তিক কথিকা ‘সংবাদ প্রবাহ’ গ্রন্থণা করে খ্যাতি অর্জন করেন। রাত ৯টায় প্রচারিত সংবাদ প্রবাহ অনুষ্ঠানটি ছিল আশিরদশকের জনপ্রিয় সংবাদ পর্যালোচনা অনুষ্ঠান।

আজমল হোসেন খাদেম ১৯৯৮ সালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি নির্বাচিত হন। তিনি জাতীয় প্রেসক্লাবসহ সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠনের স্থায়ী সদস্য।

মরহুমের বড় মেয়ে ও জামাতা ঢাকায় থাকেন। অন্য দুই মেয়ে যুক্তরাজ্যে বসবাস করেন।

অমিয়/

সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ঢালাও মামলা স্বাধীন মত প্রকাশের অন্তরায়

প্রকাশ: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬:৪৮ পিএম
সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ঢালাও মামলা স্বাধীন মত প্রকাশের অন্তরায়
ল’ রিপোর্টার্স ফোরাম

সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ঢালাও মামলা করার বিষয়টি আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা ও স্বাধীন মত প্রকাশের অন্তরায় বলে মনে করে আইন, বিচার ও মানবাধিকারবিষয়ক সাংবাদিকদের সংগঠন ল’ রিপোর্টার্স ফোরাম (এলআরএফ)। 

রবিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সংগঠনটির পাঠানো এক বিবৃতিতে অভিমত ব্যক্ত করা হয়েছে। 

সংগঠনের সদস্য শেখ মুহাম্মদ জামাল হোসাইন ও আবু সালেহ রনিসহ সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া মামলা দায়েরের ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে সংগঠনের পক্ষে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হাসান জাবেদ ও সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মিশন বলেন, ‘সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া হত্যা মামলা কোনোভাবেই কাম্য নয়। এই ধরনের মামলা আইনের শাসন ও স্বাধীন সাংবাদিকতার পরিপন্থী। তাই সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের আগে অভিযোগ যাচাই-বাছাই করার অনুরোধ জানাচ্ছি। এ ছাড়া দায়ের করা মামলাগুলোতে কোনো সংশ্লিষ্টতা পাওয়া না গেলে এসব মামলা থেকে সাংবাদিকদের অব্যাহতি দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।’

মতলু মল্লিক/সালমান/

সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ঢালাও হত্যা মামলা অন্তর্বর্তী সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করছে

প্রকাশ: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:৩৯ পিএম
আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:২৮ পিএম
সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ঢালাও হত্যা মামলা অন্তর্বর্তী সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করছে
সম্পাদক পরিষদ (লোগো)

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ঢালাওভাবে হত্যা মামলা দেওয়ার নিন্দা জানিয়ে সম্পাদক পরিষদ বলেছে, এ ধরনের মামলা দেওয়ার প্রবণতা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অন্তর্বর্তী সরকারের ভাবমূর্তিকে ক্ষুণ্ন করছে। সংগঠনটির নেতারা একই সঙ্গে অভিযুক্ত সাংবাদিকদের কোনো সংশ্লিষ্টতা না পাওয়া গেলে এসব মামলা থেকে দ্রুত তাদের অব্যাহতি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) পরিষদের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এই প্রতিবাদ জানানো হয়। 

পরিষদের সভাপতি মাহফুজ আনাম ও সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ বিবৃতিতে বলেন, ‘ঢালাও অভিযোগের ভিত্তিতে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলার ঘটনা এখনো অব্যাহত রয়েছে। সম্পাদক পরিষদ দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে বলতে চায়, এ ধরনের মামলা প্রচলিত আইনের অপব্যবহারের শামিল। একই সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের স্বাধীন সাংবাদিকতার প্রতিশ্রুতিরও লঙ্ঘন।’ 

সাংবাদিকরা কোনো অপরাধ করে থাকলে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে যথাযথ ধারা অনুসরণ করে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে। সম্পাদক পরিষদ আরও জোর দিয়ে বলতে চায় যে পেশাদারত্ব বাদ দিয়ে নীতিবিবর্জিত ও লেজুড়বৃত্তির সাংবাদিকতা বর্জনীয়। যেসব সাংবাদিক বিগত সরকারের নানা নিপীড়নমূলক কর্মকাণ্ডে সাংবাদিকতার নামে সমর্থন দিয়েছেন, প্রেস কাউন্সিলে একটি কমিটি গঠন করে তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত ও অনুসন্ধান হতে পারে। সেখানে দোষী সাব্যস্ত হলে প্রেস কাউন্সিল আইনে তাদের সাজা হতে পারে। তাদের অন্যান্য অপরাধের ক্ষেত্রে প্রেস কাউন্সিলের সুপারিশের ভিত্তিতে প্রচলিত আইনে তাদের বিচার চলতে পারে।

সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ঢালাও মামলা অন্তর্বর্তী সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করবে মন্তব্য করে তারা বলেন, ‘বিগত সরকারের সময়ে ডিএসএ/সিএসএসহ নিবর্তনমূলক বিভিন্ন আইন ও হয়রানিমূলক আটক-গ্রেপ্তারের মাধ্যমে সাংবাদিকদের কণ্ঠরোধের যে প্রয়াস চালানো হয়েছিল, তা বৈশ্বিক পরিমণ্ডলে অত্যন্ত নিন্দিত ও সমালোচিত হয়েছিল। আর বর্তমানে সাংবাদিকদের নামে এভাবে ক্রমাগত হত্যা মামলা দেওয়ার প্রবণতাও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অন্তর্বর্তী সরকারের ভাবমূর্তিকে ক্ষুণ্ন করছে।’

এ অবস্থায় যথাযথভাবে যাচাই-বাছাই করে অভিযুক্ত সাংবাদিকদের কোনো সংশ্লিষ্টতা না পাওয়া গেলে এসব মামলা থেকে দ্রুত তাদের অব্যাহতি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন সম্পাদক পরিষদের নেতারা।

সাংবাদিকদের ভালোবাসায় সিক্ত মুশফিকুল ফজল আনসারী

প্রকাশ: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:০৩ পিএম
সাংবাদিকদের ভালোবাসায় সিক্ত মুশফিকুল ফজল আনসারী
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিচ্ছেন সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারী। ছবি : সংগৃহীত

জাতীয় প্রেসক্লাবে সহকর্মীদের উচ্ছ্বাস ও ভালোবাসায় সিক্ত হয়েছেন দীর্ঘ এক দশক নির্বাসনে থাকা সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারী।

শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাব, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন, ঢাকা সাংবাদিক সমবায় সমিতি লিমিটেডসহ বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠনসহ নানা ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে তাকে বিশেষ সংবর্ধনা দেওয়া হয়।

সংবর্ধনা আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক সৈয়দ আবদাল আহমদের সভাপতিত্বে সদস্যসচিব শফিউল আলম দোলনের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে রাজনৈতিক নেতা, সাংবাদিক, মানবাধিকারকর্মী, কবি, সাহিত্যিক, শিক্ষক, আইনজীবী, কৃষিবিদ, চিকিৎসকসহ নানা পেশার মানুষ অনুষ্ঠানে অংশ নেন।

মুশফিকুল ফজল আনসারী বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের সৌভাগ্য যে, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মতো একজন নোবেল লরিয়েটকে সরকারপ্রধান হিসেবে পেয়েছেন। তিনি আপাদমস্তক একজন নির্লোভ ব্যক্তি। তিনি নিঃসন্দেহে বাংলাদেশ এবং দেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করবেন।’ একইসঙ্গে সরকারের উপদেষ্টাদের প্রতি দেশের জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী সুবিচার প্রতিষ্ঠা করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। 

দেশের গণমাধ্যম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘কোনো গণমাধ্যম বন্ধ হোক এটা আমরা চাই না। তবে পতিত স্বৈরাচারের সুবিধাভোগী দোসররাই এখনো বেশিরভাগ মিডিয়া চালাচ্ছে। এক্ষেত্রে জনগণের পক্ষের এবং বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকদের দায়িত্ব দিতে হবে। যাতে সত্যিকার অর্থেই দেশের মানুষের চাওয়া-পাওয়া, আশা-আকাঙ্ক্ষার ভাষা প্রতিফলিত হয়।’

শেখ হাসিনা সরকারের আমলে নির্যাতনের শিকার অনেক সাংবাদিক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন। সেই সাথে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে মুশফিকুল ফজল আনসারীর ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করেন তারা।

এদিকে অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে দেশের গণতন্ত্র, বাকস্বাধীনতা ও ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের পেছনে সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারীর অনন্য ভূমিকা ছিল বলে উল্লেখ করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি তাকে বাংলাদেশের রিয়েল হিরো বলে আখ্যা দেন।

এ সময় সাংবাদিকদের পেশাদারিত্ব বজায় রেখে নীতি-নৈতিকতার সঙ্গে সংবাদ সংগ্রহ, তৈরি ও পরিবেশনের আহ্বান জানান মির্জা ফখরুল। 

অনুষ্ঠানে উপস্থিত সাংবাদিক নেতারা বলেন, ‘স্বৈরাচার শেখ হাসিনার আমলে বিশ্বের বাংলাভাষীদের কাছে প্রতীক্ষার আরেক নাম ছিল মুশফিকুল ফজল আনসারী। জাতিসংঘ, হোয়াইট হাউস, পেন্টাগন, স্টেট ডিপার্টমেন্টসহ গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক দপ্তরগুলোতে শেখ হাসিনার অপশাসনের কথা তুলে ধরার মাধ্যমে অসামান্য, অনন্য ও অতুলনীয় ভূমিকা রেখেছেন তিনি। সাংবাদিক সমাজ তাকে নিয়ে গর্বিত এবং তাকে সংবর্ধনা দিতে পেরে আনন্দিত।’

বিভিন্ন সংগঠনের দেওয়া ফুলেল সংবর্ধনা শেষে মুশফিকুল ফজল আনসারী বলেন, ‘অনেকটা নিরাপদ স্থানে থেকেই আমরা হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলে গেছি। যদিও নানাভাবে আমাদের পরিবারকে হেনস্থা করা হয়েছিল। তবে আমাদের ত্যাগের চেয়েও দেশে অবস্থান করে যারা লড়াই করে গেছেন তাদের অবদান ভোলার মতো নয়।’ 

তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনা সরকার নানাভাবে আমাকে প্রভাবিত করতে চেষ্টা করেছিল। প্রলোভন দেখিয়েছিল। কিন্তু নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করাটাই নিজের ব্রত মনে করেছি।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘সময়টা আনন্দ-উৎসবের নয়। দয়া করে এসব ছবি দিয়ে শহিদি পরিবারগুলোর মনের কষ্ট বাড়িয়ে দেবেন না। এটা আপনাদের কাছে বিশেষ অনুরোধ। আল্লাহ যেন তাদের সবাইকে শহিদি মর্যাদা দান করেন।’ 

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর ড. কামরুল আহসান, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. আব্দুল লতিফ মাসুম, মানবাধিকারকর্মী নূর খান লিটন, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট রেজাউল করিম রেজা, সরকারি কর্মকর্তা কল্যাণ সমিতির নেতা নেয়ামত উল্লাহ, গণধিকার পরিষদ নেতা তারেক রহমান, বিশিষ্ট কবি উদ্দিন স্টালিন, সাংবাদিক নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কামাল উদ্দিন সবুজ, সাংবাদিক নেতা কবি আবদুল হাই শিকদার, ইলাহি নেওয়াজ খান সাজু, ইলিয়াস খান, কাদের গণি চৌধুরী, ডিআরইউর সাবেক সভাপতি মুরসালিন নোমানী, শহিদুল ইসলাম, খুরশিদ আলম, জাহাঙ্গীর আলম প্রধান প্রমুখ।

মিজানুর রহমান/সালমান/

ইউএনবির চেয়ারম্যান আমানউল্লাহ খান আর নেই

প্রকাশ: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৩:০১ পিএম
ইউএনবির চেয়ারম্যান আমানউল্লাহ খান আর নেই
ইউএনবির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান আমানউল্লাহ খান গতকাল বিকেল পাঁচটায় ইন্তেকাল করেছেন

ইউনাইটেড নিউজ অব বাংলাদেশের (ইউএনবি) প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান আমানউল্লাহ খান আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তার বয়স হয়েছিল ৮০ বছর। 

বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে বিকেল ৫টার দিকে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন কসমস গ্রুপ অব কোম্পানির চেয়ারম্যান আমানউল্লাহ খান। বার্ধক্যজনিত জটিলতায় ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। তিনি স্ত্রী, ভাই, আত্মীয়স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। খবর ইউএনবির।

আজ শুক্রবার বাদ জুমা গুলশানের আজাদ মসজিদে জানাজা শেষে বনানী কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।

ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশের ফেলো ছিলেন তিনি। ১৯৬৯ সালে ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব পাকিস্তান থেকে চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস হিসেবে ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি ইউএনবির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান। ইউএনবি দেশের শীর্ষস্থানীয় সংবাদ সংস্থা, যা ১৯৮৮ সালে অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) সঙ্গে সংবাদ বিনিময়ের প্রধান অংশীদার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।

তিনি কসমস প্রিন্টিং অ্যান্ড পাবলিশিং লিমিটেডের চেয়ারম্যানও ছিলেন। এটি বাংলাদেশের অন্যতম পুরোনো ইংরেজি সাপ্তাহিক ঢাকা কুরিয়ারসহ নানা ধরনের বই প্রকাশ করে। পেশাগত কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি তিনি জাতীয় দৈনিক ও সংবাদ ম্যাগাজিনে বিভিন্ন বিষয়ে নিবন্ধ লেখার জন্য পরিচিত ছিলেন।