ঢাকা ৯ মাঘ ১৪৩১, বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারি ২০২৫

সাংবাদিকদের নতুন সংগঠন ‘অনলাইন এডিটরস অ্যালায়েন্স‘

প্রকাশ: ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:০১ পিএম
আপডেট: ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:০২ পিএম
সাংবাদিকদের নতুন সংগঠন ‘অনলাইন এডিটরস অ্যালায়েন্স‘
৩৫টি গণমাধ্যমের সংশ্লিষ্ট প্রধানদের এক সভায় সর্বসম্মতিক্রমে এ সংগঠনের পথচলা শুরু হয়। ছবি : সংগৃহীত

যাত্রা শুরু হলো দেশের প্রথম সারির অনলাইন সংবাদমাধ্যম, পত্রিকা ও টেলিভিশনের অনলাইন ও ডিজিটাল বিভাগের প্রধানদের সংগঠন ‘অনলাইন এডিটরস অ্যালায়েন্স'। ১২ ডিসেম্বর রাতে ৩৫টি গণমাধ্যমের সংশ্লিষ্ট প্রধানদের এক সভায় সর্বসম্মতিক্রমে এ সংগঠনের পথচলা শুরু হয়।

এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সংগঠনের প্রথম কার্যনির্বাহী কমিটিতে আগামী এক বছরের জন্য দৈনিক নয়াদিগন্তের অনলাইন সম্পাদক হাসান শরীফকে সভাপতি ও দৈনিক ভোরের কাগজের হেড অব অনলাইন মিজানুর রহমান সোহেলকে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

১৩ সদস্য বিশিষ্ট কমিটিতে সহ-সভাপতি বাংলানিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের সম্পাদক লুৎফর রহমান হিমেল ও জাগো নিউজের সম্পাদক কেএম জিয়াউল হক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আরটিভির ডিজিটাল প্রধান এম এ এইচ এম কবির আহমেদ ও ডিবিসি টেলিভিশনের ডিজিটাল প্রধান কামরুল ইসলাম রুবেল, সাংগঠনিক সম্পাদক দৈনিক কালবেলার অনলাইন এডিটর পলাশ মাহমুদ, সহসাংগঠনিক সম্পাদক দৈনিক ইত্তেফাকের অনলাইন প্রধান সারাফত হুসাইন, অর্থ সম্পাদক দৈনিক আমাদের সময়ের হেড অব অনলাইন মঈন বকুল, অফিস সম্পাদক দীপ্ত টিভির অনলাইন প্রধান মাসুদ বিন আব্দুর রাজ্জাক এবং সদস্য হিসেবে দৈনিক কালের কণ্ঠের উপবার্তা সম্পাদক ও অনলাইন ইনচার্জ আনিসুর রহমান বুলবুল, দ্য ডেইলি স্টারের অনলাইন প্রধান আজাদ বেগ ও বার্তা২৪.কম'র নিউজরুম কো-অর্ডিনেটর মানসুরা চামেলীকে মনোনিত করা হয়েছে। 

কমিটিতে উল্লেখিত ব্যক্তিরাসহ প্রথম সভায় অনলাইন ও ডিজিটাল বা মাল্টিমিডিয়া প্রধান হিসেবে ‘অনলাইন এডিটরস অ্যালায়েন্স‘ এর সদস্য হয়েছেন দৈনিক মানবকণ্ঠের ফরহাদ হোসেন, দৈনিক খবরের কাগজের হেড অব ডিজিটাল গোলাম রাব্বানী, একুশে টেলিভিশনের রিয়াজ উদ্দীন, দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিনের অনলাইন প্রধান সামসুল হক রাসেল, কালের কণ্ঠের ডিজিটালের হেড জাকারিয়া ইবনে ইউসুফ, যায়যায়দিন অনলাইন হেড সাইফুল ইসলাম, গাজী টেলিভিশনের মাহমুদ সোহেল, ডেইলি সানের মৌদুদ সুজন, বে অব বেঙ্গল পোস্টের গোলাম জাকারিয়া, এশিয়ান টিভির আরিফুর রহমান, দেশ রুপান্তরের আপেল মাহমুদ, মানবজমিনের সাজিদ হক, দেশ টিভির মনিরুজ্জামান, আরটিভির বিপুল হাসান, দেশ রুপান্তরের মাহতাব হোসেন, এটিএন বাংলার মো: রাশেদ সিদ্দিক, দৈনিক ইনকিলাবের এস এ রহমান গালিব, বাংলাভিশনের রিয়াজুল আলম রাব্বী, দৈনিক প্রতিদিনের বাংলাদেশের এস.এম. আমিনুর রহমান, কালের কণ্ঠের সাকিব শিকদার, ভোরের কাগজের এইচ এম নাহিয়ান, ডেইলি বাংলাদেশের রনি রেজা, নাগরিক টেলিভিশনের মবিন হোসেন, নয়া দিগন্তের যুবরাজ ফয়সাল, বার্তা বাজারের নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী, দৈনিক ইত্তেফাকের একেএম ইমরানুল হক, দ্য নিউজ টুয়েন্টিফোরের রুদ্র মিজান, দৈনিক যুগান্তরের যোবায়ের আহসান জাবের ও আতাউর রহমান। 

শুধুমাত্র দেশের প্রথম শ্রেণির যেকোনো সংবাদমাধ্যমের অনলাইন এবং ডিজিটাল বা মাল্টিমিডিয়ার প্রধানরা এই সংগঠনের সদস্য হতে পারবেন বলে সভায় সিদ্ধান্ত হয়।

'অনলাইন এডিটরস অ্যালায়েন্স'। অনলাইন সাংবাদিকতায় সমন্বয় বৃদ্ধি, অভিজ্ঞতা বিনিময় এবং দক্ষতা উন্নয়নের লক্ষ্যে এই অ্যালায়েন্স এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

মারা গেছেন প্রবীণ সাংবাদিক নৃপেন্দ্রনাথ মন্ডল

প্রকাশ: ২০ জানুয়ারি ২০২৫, ০১:০৪ পিএম
মারা গেছেন প্রবীণ সাংবাদিক নৃপেন্দ্রনাথ মন্ডল
নৃপেন্দ্রনাথ মন্ডল। ছবি: খবরের কাগজ

জয়পুরহাটের প্রবীণ সাংবাদিক, জয়পুরহাট প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি, আইনজীবী ও আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাড. নৃপেন্দ্রনাথ মন্ডল মারা গেছেন। 

সোমবার (২০ জানুয়ারি) সকালে জয়পুরহাট শহরের আরাফাতনগরের নিজ বাসভবনে তিনি শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭২ বছর।

নৃপেন্দ্রনাথ মন্ডল দীর্ঘদিন ধরে উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস ও লিভার জটিলতায় ভুগছিলেন। দুই ছেলে এক মেয়েসহ অসংখ্য গুনাগ্রহী রেখে গেছেন তিনি। সোমবার দুপুর ২টায় শহরের খনজনপুর মহাশ্মশানে তার শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে।

নৃপেন্দ্রনাথ মন্ডল জয়পুরহাট প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ছাড়াও জয়পুরহাট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি, জজ কোর্টের সাবেক পাবলিক প্রসিকিউটর ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি ছিলেন।

এছাড়া তিনি প্রায় ৮০ দশকে বাংলার বাণী পত্রিকার মাধ্যমে সাংবাদিকতা শুরু করেন। এরপর তিনি উত্তরবার্তা, দৈনিক করতোয়া পত্রিকায় কাজ করেন। সর্বশেষ তিনি জয়পুরহাট থেকে প্রকাশিত দৈনিক মায়ের আঁচল পত্রিকার সম্পাদক ও ঢাকার জাতীয় দৈনিক ভোরের কাগজের স্টাফ রিপোর্টার ছিলেন।

তার মৃত্যুতে শোকাহত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছে শোক প্রকাশ করেছেন জয়পুরহাট প্রেসক্লাবের সভাপতি আবুবকর সিদ্দিক ও সাধারণ সম্পাদক মাসুদ রানা।

সাগর কুমার/মেহেদী/ 

বনশ্রী আফতাবনগর প্রেসক্লাবের নবনির্বাচিত সভাপতি বাবলু , সম্পাদক জহির

প্রকাশ: ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ০৯:০১ পিএম
বনশ্রী আফতাবনগর প্রেসক্লাবের নবনির্বাচিত সভাপতি বাবলু , সম্পাদক জহির
মো. মোসলেহ উদ্দিন বাবলু পন্ডিত ও জহুরুল ইসলাম। ছবি : সংগৃহীত

বনশ্রী আফতাবনগর প্রেসক্লাবের নবনির্বাচিত সভাপতি হয়েছেন মো. মোসলেহ উদ্দিন বাবলু পন্ডিত ও সাধারণ সম্পাদক জহুরুল ইসলাম। রাজধানীর দক্ষিণ বনশ্রী আমাজন রেস্টুরেন্টে ১৮ জানুয়ারি সন্ধ্যায় ১৩  সদস্য বিশিষ্ট ২ বছর মেয়াদী এই কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়। জহুরুল ইসলাম এর পরিচালনায় এক জরুরি সভায় সবার সম্মতিক্রমে কণ্ঠভোটের মাধ্যমে সভাপতি হিসেবে মো. মোসলেহ উদ্দিন বাবলু পন্ডিত ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে জহুরুল ইসলামকে মনোনিত করা হয়। 

পরবর্তীতে একই মাধ্যমে সিনিয়র সহ সভাপতি মো. আবুল হাসিম, সহ-সভাপতি মো. মনিরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আল মামুন,  যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইমরান খান, সাংগঠনিক সম্পাদক জহিরুল ইসলাম রাসেল,  দপ্তর সম্পাদক রাসেল মাহমুদ, কোষাধ্যক্ষ মো. কবির হোসেন, প্রচার সম্পাদক এস এম ওয়ালিদুজ্জামান শুভ, মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা সোনিয়া হক, এক নম্বর সদস্য মাহমুদুল আলম খান, দুই নাম্বার সদস্য রাকিব হোসেনকে মনোনিত করা হয়। 

এর আগে বাবলু পন্ডিতের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন ব্যবসায়ী ও সমাজসেবক ইকবাল খান জাহিদ। এছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্যবসায়ী ও সমাজ সেবক মো. মনিরুজ্জামান।

এসময় বনশ্রী আফতাবনগরের বাসিন্দাসহ  প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার সাংবাদিকরাও উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠান শেষে নবনির্বাচিত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ সকল নবনির্বাচিত নেতৃবৃন্দকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান সকল সদস্যরা।

গ্লোবাল স্টার অ্যাওয়ার্ড পেলেন সাংবাদিক মিজানুর রহমান সোহেল

প্রকাশ: ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ০৬:৩৮ পিএম
গ্লোবাল স্টার অ্যাওয়ার্ড পেলেন সাংবাদিক মিজানুর রহমান সোহেল
মিজানুর রহমান সোহেল। ছবি : সংগৃহীত

অনলাইন সাংবাদিকতায় বিশেষ অবদানের জন্য ‘গ্লোবাল স্টার অ্যাওয়ার্ড ২০২৪’ পেয়েছেন দৈনিক ভোরের কাগজের অনলাইন বিভাগের প্রধান মিজানুর রহমান সোহেল। ১৭ জানুয়ারি রাজধানীর একটি পাঁচ তারকা হোটেলে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সাবেক বিচারপতি ফয়সাল মাহমুদ ফয়েজীর হাত থেকে তিনি পুরস্কারটি গ্রহণ করেন।  

গ্লোবাল স্টার কমিউনিকেশনের আয়োজনে এবার সিজন-২ অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে ২০২৩ সালের সেরা চলচ্চিত্র, টেলিভিশন নাটক, ওটিটি, গান, নাচ, সাংবাদিকতায় সেরাদের পুরস্কার প্রদান করা হয়। এছাড়া বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি অভিনেত্রী আনোয়ারা, উপমহাদেশের কিংবদন্তি নজরুল সংগীতশিল্পী ফেরদৌস আরা ও এনটিভির পরিচালক নুর উদ্দিন আহমেদকে গ্লোবাল স্টার অ্যাওয়ার্ড আজীবন সম্মাননা প্রদান করা হয়। 
 
এবার জুরি বোর্ডের দায়িত্ব পালন করেছেন তথ্য মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব সৈয়দ মার্গুব মোর্শেদ, চিত্রনায়িকা রোজিনা, এটিএন বাংলার উপদেষ্টা তাশিক আহমেদ, টেলিভিশন রিপোর্টার্স ইউনিটি অব বাংলাদেশ (ট্রাব) সভাপতি সালাম মাহমুদ, কোরিওগ্রাফার ইভান শাহরিয়ার সোহাগ, গ্লোবাল স্টার কমিউনিকেশনের চেয়ারম্যান মাশায়েদ রহমান মুন এবং বিনোদন সাংবাদিক মাসিদ রণ। 

মিজানুর রহমান সোহেল দুই দশকের বেশি সময় ধরে সাংবাদিকতা করছেন। দৈনিক ভোরের কাগজের অনলাইন বিভাগের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেন ২০২৩ সালে। এর আগে ৭ বছর তিনি দৈনিক যুগান্তরের অনলাইন বিভাগের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তার দায়িত্ব নেওয়ার পর যুগান্তর অনলাইনের র‍্যাংক ও রেভিনিউ গ্রোথ দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়াতে তিনি ব্যাপক আলোচনায় চলে আসেন। দেশের প্রথম সারির অনলাইন সংবাদমাধ্যম, পত্রিকা ও টেলিভিশনের অনলাইন ও ডিজিটাল বিভাগের প্রধানদের ফ্ল্যাগশিপ সংগঠন ‘অনলাইন এডিটরস অ্যালায়েন্স’-এর সাধারণ সম্পাদক হিসেবে তিনি দায়িত্ব পালন করছেন। সাংবাদিকতার পাশাপাশি আত্মউন্নয়ন, ব্র্যান্ডিং ও মার্কেটিং, শিক্ষা ও তথ্যপ্রযুক্তি নিয়ে এখন পর্যন্ত তাঁর ২৭টি বই প্রকাশিত হয়েছে।

মুক্তি পেয়ে বৈশাখী টিভি কার্যালয়ে রফিকুল আমীন

প্রকাশ: ১৬ জানুয়ারি ২০২৫, ১১:৩৬ এএম
আপডেট: ১৬ জানুয়ারি ২০২৫, ১১:৫০ এএম
মুক্তি পেয়ে বৈশাখী টিভি কার্যালয়ে রফিকুল আমীন
ডেসটিনি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রফিকুল আমীন

ডেসটিনি ট্রি প্ল্যান্টেশন লিমিটেডের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রফিকুল আমীন ও চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হোসেনসহ ১৯ জনকে ১২ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি তাদের ৪ হাজার ৫১৫ কোটি ৫৭ লাখ ৫৪ হাজার ৪৫৪ টাকা অর্থদণ্ডও দেওয়া হয়েছে। তবে কারামুক্তিতে কোনো বাধা না থাকায় সন্ধ্যায় মুক্তি পান রফিকুল আমীন। পরে তিনি বৈশাখী টিভি কার্যালয়ে যান। তিনি প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক।

আসামিদের প্রধান আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী খবরের কাগজকে বলেন, ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৫(এ) ধারার বিধানমোতাবেক আসামির হাজতবাস সাজার মেয়াদ থেকে বাদ যাবে। উভয়ের হাজতবাস প্রদত্ত সাজার মেয়াদ থেকে তিন মাস বেশি। ফলে তাদের কারামুক্তিতে কোনো বাধা নেই। 

এদিকে দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রসিকিউটর মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর এ রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন। 

অর্থদণ্ডের টাকা পরিশোধ না করে কারামুক্তির বিষয়ে তিনি বলেন, রায় প্রকাশের পর থেকে ছয় মাসের মধ্যে তা পরিশোধ করতে হবে। যদি তা না করেন সে ক্ষেত্রে ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৮৬ ধারা অনুসারে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 

বুধবার (১৫ জানুয়ারি) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪-এর বিচারক মো. রবিউল আলম জনাকীর্ণ এজলাসে রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার আগে কারাগারে থাকা আসামিদের আদালতে হাজির করা হয়। জামিনে থাকা আসামি লে. জেনারেল (অব.) এম হারুন অর রশিদ হাজির ছিলেন। রায় ঘোষণার পর সাজা পরোয়ানামূলে তাদের জেলহাজতে পাঠানো হয়। পলাতক থাকা অপর ১৫ আসামির বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানাসহ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। পলাতকরা গ্রেপ্তার বা আত্মসমর্পণ করার তারিখ থেকে সাজা কার্যকর হবে বলে রায়ের আদেশে বলা হয়েছে। 

রায়ের আদেশে আরও বলা হয়েছে, রায় প্রচারের তারিখ থেকে ছয় মাসের মধ্যে অর্থদণ্ডের সমুদয় টাকা রাষ্ট্রের অনুকূলে জমা প্রদানের জন্য আসামিদের নির্দেশ প্রদান করা হলো। সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা এই মামলায় ইতোপূর্বে হাজতবাস ভোগ করে থাকলে ওই হাজতবাসকালে ফৌজদারি কার্যবিধির বিধান অনুযায়ী প্রদত্ত সাজার মেয়াদ থেকে বাদ যাবে। আসামি মোহাম্মদ রফিকুল আমীন ও মোহাম্মদ হোসেন এই মামলাসংক্রান্তে বিগত ১৪/১০/২০১২ তারিখ থেকে আজ পর্যন্ত জেলহাজতে আটক থাকায় আসামিরা

তাদের ওপর আরোপিত কারাদণ্ড পূর্ণ করেছে মর্মে গণ্য হওয়ায় কারা কর্তৃপক্ষকে তাদের মুক্তি প্রদানের বিষয়ে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হলো। 

আসামি লে. জেনারেল (অব.) এম হারুন অর রশিদ, বিপিকে কারাগারে ডিভিশন-১-এর সুযোগ-সুবিধা প্রদানের জন্য কারা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। 

এ রায়কে ঘিরে আদালতপাড়া এলাকা ছিল সরগরম। সকাল থেকেই জড়ো হতে থাকেন ডেসটিনির গ্রাহকরা। এ ছাড়া উপস্থিত হন দেশের বিভিন্ন জেলার ডেসটিনি পত্রিকার প্রতিনিধিরা। তারা সবাই এ রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে বলেন, ‘সাজার মেয়াদ থেকে হাজতবাস বেশি। এমডি তাদের মাঝে ফিরে আসবেন। এতেই আমরা খুশি। গ্রাহকরা তাদের বিনিয়োগকৃত অর্থ ফেরত চান না। তারা এমডিকে মুক্ত দেখতে চান।’ ডেসটিনির এমডির পক্ষে এদের বক্তব্য শুনে সাধারণ আইনজীবী ও বিচার প্রার্থীদের অনেকেই তাদের পেইড এজেন্ট বলেও সমালোচনা করেন। 

সাজাপ্রাপ্ত অপর আসামিরা হলেন ডেসটিনির পরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) হারুন অর রশিদ, প্রধান কার্যালয়ের চেয়ারম্যান মো. হোসেন, ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ গোফরানুল হক, মো. সাইদ-উর রহমান, মেজবাহ উদ্দিন স্বপন, ইঞ্জিনিয়ার শেখ তৈয়েবুর রহমান ও গোপাল চন্দ্র বিশ্বাস, পরিচালক সৈয়দ সাজ্জাদ হোসেন, ইরফান আহমেদ সানী, মিসেস ফারহা দিবা ও জামসেদ আরা চৌধুরী, প্রফিট শেয়ারিং ডিস্ট্রিবিউটর মো. জসিম উদ্দীন ভূঁইয়া, ডেসটিনি মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেডের সাধারণ সম্পাদক মো. জাকির হোসেন ও সদস্য মো. আবুল কালাম আজাদ, ডায়মন্ড এক্সিকিউটিভ এস এম আহসানুল কবির বিপ্লব, জোবায়ের সোহেল ও আব্দুল মান্নান এবং ক্রাউন এক্সিকিউটিভ মোসাদ্দেক আলী খান।

আসামিদের মধ্যে কারাগারে আছেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. রফিকুল আমীন, ফারহা দিবা ও মোহাম্মদ হোসেন। জামিনে আছেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) হারুন অর রশিদ। অপর ১৫ আসামি প্রথম থেকেই পলাতক। এ মামলায় গত বছরের ১১ নভেম্বর দুদক ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে আদালত রায়ের তারিখ ঠিক করেন।

২০১২ সালের ৩১ জুলাই রাজধানীর কলাবাগান থানায় মামলা দুটি করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ২০১৪ সালের ৪ মে একটি মামলায় ১৯ জনের এবং অপর মামলায় ৪৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়।

গ্রাহকদের সঙ্গে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ এবং বেআইনিভাবে অর্থ পাচারের অভিযোগে দায়ের করা অপর মামলায় ২০২২ সালের ১২ মে ডেসটিনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রফিকুল আমীনকে ১২ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এ ছাড়া সাবেক সেনাপ্রধান লে. জেনারেল (অব.) হারুন অর রশিদসহ ৪৫ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

এদিকে আইন ও বিধি লঙ্ঘন করে ডেসটিনি ট্রি প্ল্যান্টেশন লিমিটেডের শীর্ষ কর্মকর্তারা গাছ বিক্রির নামে প্রায় ২ হাজার ২৫৮ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন। এর মধ্যে ঋণপত্র (এলসি) হিসাবে ৫৬ কোটি ১৯ লাখ ১৯ হাজার ৪০ টাকা এবং সরাসরি পাচার করেছেন আরও ২ লাখ ৬ হাজার মার্কিন ডলার। 

মুক্তি পেয়ে বৈশাখী টিভি কার্যালয়ে রফিকুল আমীন

এদিকে এক যুগ কারাগারে থাকার পর মুক্তি পেয়েছেন ডেসটিনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রফিকুল আমীন। গতকাল কারা উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি প্রিজন্স-ঢাকা বিভাগ) জাহাঙ্গীর কবির এমন তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় রফিকুল আমীন কারাগার থেকে বেরিয়ে যান। কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে বৈশাখী টেলিভিশনের কার্যালয়ে যান প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক রফিকুল আমিন। কার্যালয়ে গেলে টেলিভিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাকে অভ্যর্থনা জানান। 

সাংবাদিক মানিক সাহা হত্যাকাণ্ড পূনঃতদন্তে বিশেষ কমিটি গঠনের দাবি

প্রকাশ: ১৫ জানুয়ারি ২০২৫, ০৫:১৬ পিএম
আপডেট: ১৫ জানুয়ারি ২০২৫, ০৫:১৭ পিএম
সাংবাদিক মানিক সাহা হত্যাকাণ্ড পূনঃতদন্তে বিশেষ কমিটি গঠনের দাবি
জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সাংবাদিক মানিক সাহার সুহৃদের পক্ষ থেকে আয়োজিত মানববন্ধন ও সমাবেশ। ছবি: সংগৃহীত

একুশে পদকপ্রাপ্ত নির্ভীক সাংবাদিক মানিক সাহা হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের চিহ্নিত করতে বিশেষ কমিটি গঠনের দাবি জানিয়েছেন সাংবাদিক ও রাজনৈতিক নেতারা। তারা বলেছেন, একের পর এক সাংবাদিক হত্যাকাণ্ড ও নির্যাতনের ঘটনায় স্বাধীন সাংবাদিকতা হুমকির মুখে পড়েছে। অথচ সাংবাদিক হত্যা ও নির্যাতনের পরিকল্পনাকারী, পৃষ্ঠপোষক, অর্থদাতাসহ অন্যান্যরা ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছে।

বুধবার (১৫ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সাংবাদিক মানিক সাহার সুহৃদের পক্ষ থেকে আয়োজিত মানববন্ধন ও সমাবেশে এ সব কথা বলেন তারা।

সাংবাদিক মানিক সাহা খুনের মামলার পুনঃতদন্ত ও সুষ্ঠু বিচার দাবি করে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি সাবেক সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, মানিক সাহা নিজেও জানতেন, তিনি যেভাবে সত্যের সৈনিক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তার ওপর আক্রমণ আসবে। তবে তিনি কখনোই মৃত্যুর ভয়ে ভীত ছিলেন না। যারা মানিক সাহার মতো সাংবাদিকদের হত্যা করে তারা সত্যের শত্রু। তিনি আরও বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গত ১৬ বছরের সকল গুম-খুনের বিচারের ঘোষণা দিয়েছে। আমরা অবশ্যই এই উদ্যোগের সঙ্গে একমত। তবে শুধু ১৬ বছরের করলেই হবে না। এর আগের সরকারের আমলের সকল হত্যা ও অপরাধেরও বিচার করতে হবে।

মানিক সাহা হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পকারীদের উন্মোচন করতে সরকারের নীতি-নির্ধারকদের হস্তক্ষেপ দাবি করেন সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স। তিনি বলেন, মানিক সাহা আমৃত্যু জনমুখী সাংবাদিকতা করেছেন, মুক্তিযুদ্ধ ও সমতার পক্ষে আপোষহীন ছিলেন। অথচ তার হত্যাকাণ্ড মামলার বিচারের নামে প্রহসন করা হয়েছে। ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার স্বার্থে চাঞ্চল্যকর ওই মামলার পূনঃতদন্ত হতে হবে।

বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের কোষাধ্যক্ষ খায়রুজ্জামান কামাল বলেন, সাংবাদিক হত্যার কোন বিচার হবে না, এমনই অলিখিত নিয়ম চালু হয়েছে। শুধু মানিক সাহা নয়, সাগর-রুনিসহ অন্যান্য সাংবাদিক হত্যা ও নির্যাতনের বিচার হয়নি। এখনো সাংবাদিকরা নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। যে কারণে সুস্থ্য সাংবাদিকতা বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। সকল সাংবাদিক হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবিতে জোরদার আন্দোলন গড়ে তোলার ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।

সাংবাদিক হত্যাকাণ্ডের বিচারে বিশেষ কমিটি গঠনের আহ্বান জানিয়ে গণতান্ত্রিক আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক হাসান তারিক চৌধুরী সোহেল বলেন, আইন অন্যায্য হলে সুষ্ঠু বিচার অসম্ভব। মানিক সাহাসহ অনান্য সাংবাদিক হত্যাকাণ্ডের বিচারের পেছনে আইনের সীবাবদ্ধতা ও সঠিক প্রয়োগের অভাবই দায়ী। বর্বর ওই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করতে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

সিনিয়র সাংবাদিক আশীষ কুমার দে’র সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তৃতা করেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের কোষাধ্যক্ষ সাবেক নির্বাহী সদস্য রফিকুল ইসলাম সবুজ, সাংস্কৃতিক সংগঠক পুলক রাহা, বাপার যুগ্ম সম্পাদক মো. নূর আলম শেখ, সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক নিখিল চন্দ্র ভদ্র, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সাংস্কৃতিক সম্পাদক সাকিলা পারভীন, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক প্রচার-প্রকাশনা সম্পাদক সুশান্ত সাহা ও সাবেক কল্যাণ সম্পাদক তানভীর আহমেদ, হকার্স নেতা সেকান্দার হায়াৎ, সাংবাদিক সমীরণ রায় প্রমুখ।

উল্লেখ্য, ২০০৪ সালের ১৫ জানুয়ারি দুপুরে খুলনা প্রেস ক্লাবের সামনে দুর্বৃত্তদের বোমা হামলায় মানিক সাহা নিহত হন। সমাবেশের শুরুতে তার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়।

শফিকুল ইসলাম/এমএ/