ঢাকা ৫ চৈত্র ১৪৩১, বুধবার, ১৯ মার্চ ২০২৫
English

শাবিপ্রবি প্রেস ক্লাবের সভাপতি রবিন, সম্পাদক শুভ

প্রকাশ: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১১:০০ এএম
আপডেট: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১১:০১ এএম
শাবিপ্রবি প্রেস ক্লাবের সভাপতি রবিন, সম্পাদক শুভ
শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাবের ২০তম কার্যনির্বাহী পরিষদের সভাপতি জুবায়েদুল হক রবিন ও সাধারণ সম্পাদক নাঈম আহমদ শুভ।

সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) কর্মরত সাংবাদিকদের সংগঠন শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস ক্লাবের ২০তম কার্যনির্বাহী পরিষদ গঠিত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৭ফেব্রুয়ারি) বেলা ৩টায় শাবিপ্রবি প্রেসক্লাব কার্যালয়ে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ ইকবাল।

কমিটিতে সভাপতি হিসেবে দৈনিক যুগান্তরের প্রতিনিধি জুবায়েদুল হক রবিন এবং সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দৈনিক মানবজমিনের প্রতিনিধি নাঈম আহমদ শুভ নির্বাচিত হয়েছেন। কমিটিতে নির্বাচিত অন্য সদস্যরা হলেন সহসভাপতি আদনান হৃদয়, যুগ্ম সম্পাদক আব্দুর রহিম কবীর, কোষাধ্যক্ষ সাগর হাসান শুভ্র ও দপ্তর সম্পাদক নুর আলম।

এ ছাড়া কার্যকরী সদস্য-১, কার্যকরী সদস্য-২, কার্যকরী সদস্য-৩ হিসেবে যথাক্রমে সৈকত মাহাবুব, মো. মোফাজ্জল হক ও সাগর হোসেন জাহিদ নির্বাচিত হন।

ফলাফল ঘোষণার সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এম সরওয়ারউদ্দিন চৌধুরী, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. সাজেদুল করিম, নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, অধ্যাপক ড. আব্দুল হামিদ, ছাত্র উপদেশ ও নির্দেশনা পরিচালক অধ্যাপক ড. এছাক মিয়া, প্রক্টর অধ্যাপক মোখলেছুর রহমান, শাবিপ্রবি প্রেসক্লাবের সদ্য সাবেক সভাপতি নুরুল ইসলাম রুদ্রসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন। 

ফিরে পেল ‘যায়যায়দিন’ পত্রিকার ডিক্লারেশন

প্রকাশ: ১৮ মার্চ ২০২৫, ০২:৪৪ পিএম
আপডেট: ১৮ মার্চ ২০২৫, ০২:৪৫ পিএম
ফিরে পেল ‘যায়যায়দিন’ পত্রিকার ডিক্লারেশন
যায়যায়দিন

দৈনিক ‘যায়যায়দিন’ পত্রিকার ডিক্লারেশন ফিরে পেলেন বর্ষীয়ান সাংবাদিক শফিক রেহমান।

মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) ঢাকা জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও জেলা প্রশাসক তানভীর আহমেদের সই করা অফিস আদেশে এ তথ্য জানানো হয়।  

ঢাকা জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট (প্রকাশনা ও ছাপাখানা শাখা) নুসরাত নওশীন এসব তথ্য জানিয়েছেন।

এর আগে প্রকাশের ক্ষেত্রে নিয়ম লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে পত্রিকাটির সাবেক সম্পাদক শফিক রেহমানের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে জাতীয় এই দৈনিকের ডিক্লরেশন বাতিল করে সরকার।

দৈনিক যায়যায়দিন পত্রিকাটি প্রকাশের জন্য যে অনুমোদিত প্রেস রয়েছে সেখান থেকে ছাপা হচ্ছে না, কিন্তু প্রিন্টার্স লাইনে মিথ্যা তথ্য দেওয়া হচ্ছে– এমন অভিযোগ এনেছিলেন শফিক রেহমান।

এর পরিপ্রেক্ষিতে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়াসহ প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেওয়ার পর এবং অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় যায়যায়দিন পত্রিকার প্রকাশক ও মুদ্রাকর সাঈদ হোসেন চৌধুরীর নামে যে ঘোষণাপত্র ছিল তা বাতিল করা হয়।

জোবাইদা/ 

খবরের কাগজের চট্টগ্রাম অফিসে সংবাদপত্র বিক্রেতাদের নিয়ে ইফতার

প্রকাশ: ১৭ মার্চ ২০২৫, ০৯:৩২ এএম
আপডেট: ১৭ মার্চ ২০২৫, ১০:০১ এএম
খবরের কাগজের চট্টগ্রাম অফিসে সংবাদপত্র বিক্রেতাদের নিয়ে ইফতার
খবরের কাগজের চট্টগ্রাম অফিসে ইফতার করলেন সংবাদপত্র বিক্রেতারা। ছবি: খবরের কাগজ

দৈনিক খবরের কাগজ চট্টগ্রাম অফিসের উদ্যোগে শহরে স্টলে সংবাদপত্র বিক্রেতাদের সম্মানে ইফতারের আয়োজন করা হয়েছে। রবিবার (১৬ মার্চ) নগরের কাজীর দেউড়ি এলাকায় পত্রিকার নিজস্ব অফিসে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। 

এ সময় খবরের কাগজের ব্যুরোপ্রধান এস এম ইফতেখারুল ইসলাম বলেন, ‘দৈনিক খবরের কাগজ মুক্তচিন্তার একটি স্বাধীন দৈনিক। আমাদের পত্রিকার প্রতিষ্ঠালগ্নের স্লোগানও এটি। বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক মোস্তফা কামাল পত্রিকাটির সম্পাদক। তার দক্ষ নেতৃত্বে এ পত্রিকাটি শুরু থেকেই নিরপেক্ষ ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনের মাধ্যমে পাঠকের মন জয় করে আসছে। পত্রিকাটির কাগজ, ছাপা, লেখা ও মান অনেক সমৃদ্ধ। পাশাপাশি পত্রিকায় ‘চট্টগ্রামের খবর’ নামে প্রতিদিন আধা পৃষ্ঠার আলাদা বিভাগ রয়েছে।’ 

ব্যুরোপ্রধান আরও বলেন, ‘চট্টগ্রামের পত্রিকা বিক্রেতা এবং আমরা একই পরিবারের সদস্য। পত্রিকাটি পাঠকের হাতে তুলে দিতে বিক্রেতাদের যথেষ্ট ভূমিকা রয়েছে। এ জন্য আপনাদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। পত্রিকাটি এগিয়ে নিতে আপনাদের আরও সহযোগিতা চাই।’ এ সময় উপস্থিত পত্রিকা বিক্রেতারা সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন। 

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম হকার্স ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো. ওসমান গণি, স্টল দোকানদারদের মধ্যে ছিলেন, নগরের আন্দরকিল্লা এলাকার মো. মনসুর, বহদ্দারহাট এলাকার লিটন দে ও মোরশেদ, চেরাগী পাহাড় এলাকার গণি, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এলাকার মো. মান্নান, লালদীঘি এলাকার মো. ওসমান, নেভী হসপিটাল গেট এলাকার মো. কাদের, আগ্রাবাদ এলাকার কালাম, চকবাজার এলাকার জাভেদ, জিইসি মোড় এলাকার রাজীব দে প্রমুখ।

ধর্ষণ-নির্যাতন করে নারীর অগ্রযাত্রা দমিয়ে রাখা যাবে না: নাসিমুন আরা হক মিনু

প্রকাশ: ১৬ মার্চ ২০২৫, ১০:২৪ পিএম
আপডেট: ১৭ মার্চ ২০২৫, ১০:০২ এএম
ধর্ষণ-নির্যাতন করে নারীর অগ্রযাত্রা দমিয়ে রাখা যাবে না: নাসিমুন আরা হক মিনু
বাংলাদেশ নারী সাংবাদিক কেন্দ্রের ২৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী এবং নারী দিবস উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও সদস্যরা। ছবি: সংগৃহীত

দেশে দিন দিন নারী ও শিশু নিপীড়নের ঘটনা বাড়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ নারী সাংবাদিক কেন্দ্রের (বিএনএসকে) সভাপতি নাসিমুন আরা হক মিনু। ধর্ষণ ও নির্যাতন করে নারীর অগ্রযাত্রাকে দমিয়ে রাখা যাবে না বলে মন্তব্য করেন তিনি। নারীর প্রতি যেকোনো ধরনের নিপীড়নের বিরুদ্ধে সমাজের সর্বস্তরে প্রতিবাদ গড়ে তোলার আহ্বানও জানান তিনি। 

রবিবার (১৬ মার্চ) বিকেলে ঢাকার পুরানা পল্টনের ইআরএফ মিলনায়তনে বাংলাদেশ নারী সাংবাদিক কেন্দ্রের ২৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী এবং নারী দিবস উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

এসময় মাগুরায় ৮ বছরের শিশু আছিয়ার মৃত্যুসহ সব ধরনের নারী নির্যাতনের ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান বিএনএসকে’র সভাপতি নাসিমুন আরা হক মিনু। তিনি বলেন, সমাজের নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি, মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন, নারীকে মানুষ হিসেবে মনে না করার হীন মানসিকতা- এমন হাজারো কারণে এখনো নারীরা অনেক ক্ষেত্রে পিছিয়ে রয়েছে। একই সঙ্গে সাংবাদিকতায় নারীদের সংখ্যা বাড়লেও তা আশানুরূপ নয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

সংগঠনের সহ-সভাপতি মুনিমা সুলতানার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আলোচনায় অংশ নেন বাংলাদেশ নারী সাংবাদিক কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক শাহনাজ সিদ্দীকি সোমা, ইকোনোমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) সভাপতি দৌলত আকতার মালা, একাত্তর টিভির বিশেষ প্রতিনিধি শাহনাজ শারমিন ও ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাদিয়া শারমিন। এসময় কেন্দ্রের কোষাধ্যক্ষ আখতার জাহান মালিক, সাংগঠনিক সম্পাদক শাহনাজ পারভীন এলিস, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক দিলরুবা খানম, দপ্তর সম্পাদক আহমেদ মুশফিক নাজনীন, প্রশিক্ষণ সম্পাদক নাসরিন শওকত, কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যগণ ছিলেন।

আলোচনা সভা শেষে বাংলাদেশ নারী সাংবাদিক কেন্দ্রের ২৪তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে কেক কাটা ও ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হয়।

এলিস/মাহফুজ

দৈনিক যায়যায়দিনের ডিক্লারেশন বাতিলের নিন্দা ও প্রতিবাদ ডিইউজের

প্রকাশ: ১২ মার্চ ২০২৫, ০৮:৪৭ পিএম
আপডেট: ১২ মার্চ ২০২৫, ০৮:৫১ পিএম
দৈনিক যায়যায়দিনের ডিক্লারেশন বাতিলের নিন্দা ও প্রতিবাদ ডিইউজের
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের লোগো

দৈনিক যায়যায়দিন পত্রিকার ডিক্লারেশন বাতিলের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে)।

বুধবার (১২ মার্চ) ডিইউজে সভাপতি মো. শহিদুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক খুরশীদ আলম এক বিবৃতিতে এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বলেন, যায়যায়দিনের ডিক্লারেশন বাতিলের মধ্যদিয়ে গণমাধ্যমের দুশমন বিগত ফ্যাসিস্টের পদাঙ্ক অনুসরণ করছে ড. ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকার।

তারা বলেন, ডিইউজে সবসময় সংবাদপত্র ও মত প্রকাশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে। তাই সংবাদপত্রবিরোধী বা এর প্রকাশনা বন্ধের মতো কোনো নিষ্ঠুর তৎপরতাকে ইউনিয়ন বরদাশত করে না।

বিবৃতিতে বলা হয়, সরকার প্রধানসহ উপদেষ্টারা একদিকে বলছেন, অন্তর্বর্তী সরকার কোনো পত্রিকা বন্ধ বা গণমাধ্যমের ওপর কোনো চাপ প্রয়োগ করবে না। অন্যদিকে বিশেষ মহলকে সন্তুষ্ট করার জন্য ন্যক্কারজনকভাবে পবিত্র রমজান মাসে ঈদের পূর্ব মুহূর্তে যায়যায়দিন পত্রিকাটির ডিক্লারেশন বাতিল করে কয়েকশ সাংবাদিক-কর্মচারীর জীবন জীবিকাকে অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিয়েছে। সরকারের এহেন অমানবিক কর্মকাণ্ড ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারকেও হার মানিয়েছে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, যায়যায়দিন পত্রিকার প্রধান কার্যালয় বেদখল হওয়ার পর জেলা প্রশাসন কার্যালয়কে অবহিত করে প্রেস পরিবর্তন করা হয় এবং যথারীতি পত্রিকার প্রকাশনা অব্যাহত রাখা হয়। এরই মধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ উচ্চ আদালতের শরণাপন্ন হলে আদালত তিন মাসের জন্য স্থিতাবস্থা বজায় রাখার নির্দেশ দেয়। কিন্তু জেলা প্রশাসন উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অমান্য করার মতো চরম দৃষ্টতা দেখিয়েছে। 

ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন অবিলম্বে যায়যায়দিন পত্রিকার ডিক্লারেশন বাতিলের আদেশ প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে। অন্যথায় সাংবাদিক সমাজ রাজপথে নামতে বাধ্য হবে বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।

মাহফুজ/

সাংবাদিকদের জন্য নিরাপদ ও স্বাধীন পরিবেশ জরুরি: কাদের গনি চৌধুরী

প্রকাশ: ০৮ মার্চ ২০২৫, ০৭:৩২ পিএম
আপডেট: ০৮ মার্চ ২০২৫, ০৭:৫৩ পিএম
সাংবাদিকদের জন্য নিরাপদ ও স্বাধীন পরিবেশ জরুরি: কাদের গনি চৌধুরী
সাংবাদিক ইউনিয়ন বগুড়ার বার্ষিক সাধারণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরী বলেছেন, স্বাধীন সাংবাদিকতা গণতন্ত্রের মূল স্তম্ভ হলেও, এটি এখন বহুমাত্রিক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, আইনি ও ক্ষমতামূখী সাংবাদিকতা সাংবাদিকদের স্বাধীনভাবে কাজ করার ক্ষেত্রে বড্ড অন্তরায় সৃষ্টি করছে। সাংবাদিকদের জন্য একটি নিরাপদ ও স্বাধীন পরিবেশ তৈরি করা অত্যন্ত জরুরি। তিনি বলেন, সাংবাদিকদের সুরক্ষায় কোনো আইন নেই। এই যখন অবস্থা, তখন সাংবাদিকদের একটি অংশ সেলফ সেন্সরশিপে চলে গিয়ে নিজেকে আত্মরক্ষার চেষ্টা করছে। আমাদের প্রশ্ন হলো, সাংবাদিকতা কি অপরাধ? জনস্বার্থে তথ্য অনুসন্ধান এবং তা প্রকাশ করতে গিয়ে কেন সাংবাদিকেরা ‘অপরাধী’ হিসেবে চিহ্নিত হবেন?’

শনিবার (৮ মার্চ) বিকেলে সাংবাদিক ইউনিয়ন বগুড়ার বার্ষিক সাধারণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব বলেন। 

সাংবাদিক ইউনিয়ন বগুড়ার সভাপতি গণেশ দাসের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক এসএম সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিএফইউজের সহকারি মহাসচিব ড. সাদিকুল ইসলাম স্বপন, বিএফইউজে নির্বাহী পরিষদ সদস্য মির্জা সেলিম রেজা, বগুড়া প্রেস ক্লাবের আহ্বায়ক ওয়াসিকুর রহমান বেচাল, সদস্য সচিব সবুর শাহ লোটাস, আবদুল ওয়াদুদ, মমিনুর রশিদ শাইন, আবদুর রহিম, সৈয়দ ফজলে রাব্বি ডলার, মতিউল ইসলাম সাদি, মাহফুজ মন্ডল মোস্তফা মোগল। 

কাদের গনি চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে গণমাধ্যমের সামনে যে কয়েকটি চ্যালেঞ্জ, তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে এ পেশার স্বাধীনতা।গণমাধ্যমের স্বাধীনতা না থাকলে সত্য তুলে ধরা যায় না। আর সত্য লিখা না গেলে বিশ্বাসযোগ্যতা থাকে না। বিশ্বাসযোগ্যতা না থাকলে পাঠক বা দর্শক প্রত্যাখ্যান করে।

কাদের গনি আরও বলেন, সাংবাদিকদের বিবেকের মাধ্যমে পরিচালিত হতে হবে। অপসাংবাদিকতা, হলুদ সাংবাদিকতা ,তথ্য সন্ত্রাস পরিহার করে সত্যনিষ্ঠ সাংবাদিকতা করতে হবে। সঠিক তথ্য জেনে নিয়ে সংবাদ প্রকাশ না করলে মানুষ বিভ্রান্ত হয়, সংবাদ মাধ্যমের প্রতি মানুষ আস্থা হারিয়ে ফেলে। সাংবাদিকদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জগুলোর একটি হলো সাধারণ মানুষের আস্থা অর্জন করা। আজকের তথ্য-প্রযুক্তির যুগে ভুয়া খবর বা প্রোপাগান্ডা খুব সহজেই ছড়িয়ে পড়ে। ফলে অনেকেই প্রকৃত সাংবাদিকতা এবং ভুয়া সংবাদ বিভ্রান্তিতে পড়েন। বিশেষ করে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্বার্থে অনেক সংবাদমাধ্যম পক্ষপাতদুষ্ট সংবাদ প্রকাশ করে, যা সাধারণ মানুষের মধ্যে স্বাধীন সাংবাদিকতার প্রতি আস্থা কমিয়ে দেয়। এমন পরিস্থিতিতে সাংবাদিকরা অনেক সময় নিজেদের কাজের যথার্থতা প্রমাণে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হন। গুজব, মিথ্যা আর চেক অ্যান্ড ব্যালান্স ছাড়া সোশ্যাল মিডিয়ার তথ্য সমাজ তথা রাষ্ট্রে বিশৃঙ্খলা বাড়াচ্ছে। তাই সাংবাদিকদের আরও সচেতন হতে হবে।

বিএফইউজে মহাসচিব বলেন, সাংবাদিকদের মধ্যে বিভক্তির কারণে ভয়ভীতি মাথায় রেখে সাংবাদিকদের কাজ করতে হচ্ছে। তিনি বলেন, বিভাজনের কারণে সাংবাদিকরা এই ভয়-ভীতি থেকে নিজেদের বের করতে পারেন না। আগে ইউনিয়ন যখন একটা ছিল। চাকরি গেলে বা কোনো চাপের মুখে পড়লে বা প্রতিষ্ঠান পাওনা না দিলে, মালিকদের সঙ্গে দেন দরবারের জন্য, বা অধিকার নিশ্চিত করতে গেলে তার পাশে নেতারা আছেন, এই ভরসাটুকু পেলে পরিস্থিতি অন্যরকম হয়ে যেতো। এখন অনৈক্যের কারণে ইউনিয়ন সেভাবে ভূমিকা রাখতে পারছে না। তাই সংকট উত্তরণের জন্য ঐক্যের কোনো বিকল্প নেই।

সাংবাদিকদের এ নেতা বলেন, ‘আমরা-ওরা’, এসব বিভাজন আগের সাংবাদিকতায় ছিল না। ইদানিং এটা বড্ড বেড়ে গেছে। এক বলয়ের সাংবাদিকরা অন্য বলয়ের সঙ্গে এক টেবিলে বসেও না। ইদানীং সাংবাদিকদের প্রথমেই একটি জার্সি গায়ে দিতে হয়। অর্থাৎ তুমি সরকারি দলের কিংবা বিরোধী দলের এ রকম কিছু একটা হতে হবে। খুব কম সাংবাদিকই আজকে সাহস করে বলতে পারছেন- ‘আমি কোনো রাজনৈতিক দলের পৃষ্ঠপোষক নই, আমার গায়ে কোনো জার্সি নেই, আমি কেবল দেশের সংবাদমাধ্যম প্রতিনিধি’। আগেও সাংবাদিকরা রাজনৈতিক মতাদর্শ লালন করতেন, কিন্তু সাংবাদিক হিসেবে থাকতেন পুরো নিরপেক্ষ। এখন সাংবাদিকদের কেউ কেউ দলদাসের ভূমিকায় অবতীর্ণ।

তিনি বলেন, নিজেদের কারণে অনেক ক্ষেত্রে সাংবাদিকরা মর্যাদা হারাচ্ছেন। যখন কোনো একজন ব্যক্তি কোনো প্রতিষ্ঠানে কাজ করছেন, তিনি তখন সে প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী। কিন্তু যখন কোনো সাংবাদিক কোনো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত হন, তখন তিনি ওই প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী নন। তিনি ওই প্রতিষ্ঠানে মিডিয়ার প্রতিনিধি। আমরা যেন সাংবাদিক থাকি, কর্মচারী হয়ে না যাই। আগে সাংবাদিকরা কাউকে স্যার বলতো না, তোষামোদী করতো না। এখন এই তোষামোদী বেড়ে গেছে। মালিক পক্ষ ও সম্পাদকদের স্যার বলতে বলতে এখন ফেনা তুলে ফেলেন সাংবাদিকরা। অর্থাৎ আমরা মিডিয়া প্রতিনিধি না থেকে কর্মচারী হয়ে যাচ্ছি। সাংবাদিকের কাজ সত্যকে খুঁজে বের করা এবং সে সত্যকে রক্ষা করা। সত্য না থাকলে আস্থা থাকে না; আর আস্থার অভাব হলে গণতন্ত্র থাকে না। ক্ষমতাশালীদের  অপকর্মগুলো সাংবাদিকরা তুলে না ধরলে এসব অপকর্মের লাগাম টানার কাজটি করবেন কী করে। তাহলে তো অপকর্ম বাড়তেই থাকবে। সমাজ ভেঙ্গে পড়বে।

সাংবাদিকদের বেতন-ভাতা সম্পর্কে কাদের গণি বলেন, এত প্রতিবন্ধকতার মধ্যেও সাংবাদিকরা দমে যেতে পারেন না। সাংবাদিকদের মোটা বেতন নেই, ঈদ-পূজোয় বোনাসের নিশ্চয়তা নেই, অবসরের পর নিশ্চিন্ত জীবনযাপনের মতো পেনশন নেই, ক্যালেন্ডারে লাল কালি দিয়ে দাগিয়ে দেওয়া ছুটি তো নেই-ই। কয়েকটা দিন ছুটি নিয়ে পরিবারকে নিয়ে একটু ঘুরে বেড়ানোরও কোনো সুযোগ নেই। উৎসবের দিনেও সংবাদ সংগ্রহে কিংবা প্রচার-প্রকাশে ব্যস্ত থাকতে হয়। তারপরও নিরলসভাবে কাজ করে যান সাংবাদিকরা।

তিনি বলেন, ইতিহাসের ছত্রে ছত্রে যেখানেই রাষ্ট্রের দমন-পীড়ন কিংবা অত্যাচার হয়েছে, সেখানেই চিন্তাশীল মানুষদের প্রতিরোধ এসেছে। সাংবাদিকরা এ চিন্তাশীলদের বার্তা পৌঁছে দিয়েছেন সমাজের বুকে। তাই তাদের কাজে থাকে সুন্দর আর সত্য সৃষ্টির গভীর উন্মাদনা। পাশাপাশি প্রতিদিন নতুন কিছু জানার, জানাবার, নতুন কিছু শেখার এবং অন্য কিছু করার ভীষণ রকম তাগিদও আছে সাংবাদিকতায়। সে তাগিদেই সব ঝুঁকি, সব কষ্ট এড়িয়ে দুঃসাহস দেখাতে পারেন সাংবাদিকরা। সত্য অনুসন্ধানে পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে তাদের অদম্য মানসিকতার সব চাহিদা। এজন্য সাংবাদিকদের বলা হয়, সমাজের ওয়াচডগ।

মাহফুজ