ঢাকা ৪ বৈশাখ ১৪৩২, বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫
English
বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ৪ বৈশাখ ১৪৩২

সাংবাদিকদের জন্য নিরাপদ ও স্বাধীন পরিবেশ জরুরি: কাদের গনি চৌধুরী

প্রকাশ: ০৮ মার্চ ২০২৫, ০৭:৩২ পিএম
আপডেট: ০৮ মার্চ ২০২৫, ০৭:৫৩ পিএম
সাংবাদিকদের জন্য নিরাপদ ও স্বাধীন পরিবেশ জরুরি: কাদের গনি চৌধুরী
সাংবাদিক ইউনিয়ন বগুড়ার বার্ষিক সাধারণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরী বলেছেন, স্বাধীন সাংবাদিকতা গণতন্ত্রের মূল স্তম্ভ হলেও, এটি এখন বহুমাত্রিক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, আইনি ও ক্ষমতামূখী সাংবাদিকতা সাংবাদিকদের স্বাধীনভাবে কাজ করার ক্ষেত্রে বড্ড অন্তরায় সৃষ্টি করছে। সাংবাদিকদের জন্য একটি নিরাপদ ও স্বাধীন পরিবেশ তৈরি করা অত্যন্ত জরুরি। তিনি বলেন, সাংবাদিকদের সুরক্ষায় কোনো আইন নেই। এই যখন অবস্থা, তখন সাংবাদিকদের একটি অংশ সেলফ সেন্সরশিপে চলে গিয়ে নিজেকে আত্মরক্ষার চেষ্টা করছে। আমাদের প্রশ্ন হলো, সাংবাদিকতা কি অপরাধ? জনস্বার্থে তথ্য অনুসন্ধান এবং তা প্রকাশ করতে গিয়ে কেন সাংবাদিকেরা ‘অপরাধী’ হিসেবে চিহ্নিত হবেন?’

শনিবার (৮ মার্চ) বিকেলে সাংবাদিক ইউনিয়ন বগুড়ার বার্ষিক সাধারণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব বলেন। 

সাংবাদিক ইউনিয়ন বগুড়ার সভাপতি গণেশ দাসের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক এসএম সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিএফইউজের সহকারি মহাসচিব ড. সাদিকুল ইসলাম স্বপন, বিএফইউজে নির্বাহী পরিষদ সদস্য মির্জা সেলিম রেজা, বগুড়া প্রেস ক্লাবের আহ্বায়ক ওয়াসিকুর রহমান বেচাল, সদস্য সচিব সবুর শাহ লোটাস, আবদুল ওয়াদুদ, মমিনুর রশিদ শাইন, আবদুর রহিম, সৈয়দ ফজলে রাব্বি ডলার, মতিউল ইসলাম সাদি, মাহফুজ মন্ডল মোস্তফা মোগল। 

কাদের গনি চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে গণমাধ্যমের সামনে যে কয়েকটি চ্যালেঞ্জ, তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে এ পেশার স্বাধীনতা।গণমাধ্যমের স্বাধীনতা না থাকলে সত্য তুলে ধরা যায় না। আর সত্য লিখা না গেলে বিশ্বাসযোগ্যতা থাকে না। বিশ্বাসযোগ্যতা না থাকলে পাঠক বা দর্শক প্রত্যাখ্যান করে।

কাদের গনি আরও বলেন, সাংবাদিকদের বিবেকের মাধ্যমে পরিচালিত হতে হবে। অপসাংবাদিকতা, হলুদ সাংবাদিকতা ,তথ্য সন্ত্রাস পরিহার করে সত্যনিষ্ঠ সাংবাদিকতা করতে হবে। সঠিক তথ্য জেনে নিয়ে সংবাদ প্রকাশ না করলে মানুষ বিভ্রান্ত হয়, সংবাদ মাধ্যমের প্রতি মানুষ আস্থা হারিয়ে ফেলে। সাংবাদিকদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জগুলোর একটি হলো সাধারণ মানুষের আস্থা অর্জন করা। আজকের তথ্য-প্রযুক্তির যুগে ভুয়া খবর বা প্রোপাগান্ডা খুব সহজেই ছড়িয়ে পড়ে। ফলে অনেকেই প্রকৃত সাংবাদিকতা এবং ভুয়া সংবাদ বিভ্রান্তিতে পড়েন। বিশেষ করে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্বার্থে অনেক সংবাদমাধ্যম পক্ষপাতদুষ্ট সংবাদ প্রকাশ করে, যা সাধারণ মানুষের মধ্যে স্বাধীন সাংবাদিকতার প্রতি আস্থা কমিয়ে দেয়। এমন পরিস্থিতিতে সাংবাদিকরা অনেক সময় নিজেদের কাজের যথার্থতা প্রমাণে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হন। গুজব, মিথ্যা আর চেক অ্যান্ড ব্যালান্স ছাড়া সোশ্যাল মিডিয়ার তথ্য সমাজ তথা রাষ্ট্রে বিশৃঙ্খলা বাড়াচ্ছে। তাই সাংবাদিকদের আরও সচেতন হতে হবে।

বিএফইউজে মহাসচিব বলেন, সাংবাদিকদের মধ্যে বিভক্তির কারণে ভয়ভীতি মাথায় রেখে সাংবাদিকদের কাজ করতে হচ্ছে। তিনি বলেন, বিভাজনের কারণে সাংবাদিকরা এই ভয়-ভীতি থেকে নিজেদের বের করতে পারেন না। আগে ইউনিয়ন যখন একটা ছিল। চাকরি গেলে বা কোনো চাপের মুখে পড়লে বা প্রতিষ্ঠান পাওনা না দিলে, মালিকদের সঙ্গে দেন দরবারের জন্য, বা অধিকার নিশ্চিত করতে গেলে তার পাশে নেতারা আছেন, এই ভরসাটুকু পেলে পরিস্থিতি অন্যরকম হয়ে যেতো। এখন অনৈক্যের কারণে ইউনিয়ন সেভাবে ভূমিকা রাখতে পারছে না। তাই সংকট উত্তরণের জন্য ঐক্যের কোনো বিকল্প নেই।

সাংবাদিকদের এ নেতা বলেন, ‘আমরা-ওরা’, এসব বিভাজন আগের সাংবাদিকতায় ছিল না। ইদানিং এটা বড্ড বেড়ে গেছে। এক বলয়ের সাংবাদিকরা অন্য বলয়ের সঙ্গে এক টেবিলে বসেও না। ইদানীং সাংবাদিকদের প্রথমেই একটি জার্সি গায়ে দিতে হয়। অর্থাৎ তুমি সরকারি দলের কিংবা বিরোধী দলের এ রকম কিছু একটা হতে হবে। খুব কম সাংবাদিকই আজকে সাহস করে বলতে পারছেন- ‘আমি কোনো রাজনৈতিক দলের পৃষ্ঠপোষক নই, আমার গায়ে কোনো জার্সি নেই, আমি কেবল দেশের সংবাদমাধ্যম প্রতিনিধি’। আগেও সাংবাদিকরা রাজনৈতিক মতাদর্শ লালন করতেন, কিন্তু সাংবাদিক হিসেবে থাকতেন পুরো নিরপেক্ষ। এখন সাংবাদিকদের কেউ কেউ দলদাসের ভূমিকায় অবতীর্ণ।

তিনি বলেন, নিজেদের কারণে অনেক ক্ষেত্রে সাংবাদিকরা মর্যাদা হারাচ্ছেন। যখন কোনো একজন ব্যক্তি কোনো প্রতিষ্ঠানে কাজ করছেন, তিনি তখন সে প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী। কিন্তু যখন কোনো সাংবাদিক কোনো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত হন, তখন তিনি ওই প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী নন। তিনি ওই প্রতিষ্ঠানে মিডিয়ার প্রতিনিধি। আমরা যেন সাংবাদিক থাকি, কর্মচারী হয়ে না যাই। আগে সাংবাদিকরা কাউকে স্যার বলতো না, তোষামোদী করতো না। এখন এই তোষামোদী বেড়ে গেছে। মালিক পক্ষ ও সম্পাদকদের স্যার বলতে বলতে এখন ফেনা তুলে ফেলেন সাংবাদিকরা। অর্থাৎ আমরা মিডিয়া প্রতিনিধি না থেকে কর্মচারী হয়ে যাচ্ছি। সাংবাদিকের কাজ সত্যকে খুঁজে বের করা এবং সে সত্যকে রক্ষা করা। সত্য না থাকলে আস্থা থাকে না; আর আস্থার অভাব হলে গণতন্ত্র থাকে না। ক্ষমতাশালীদের  অপকর্মগুলো সাংবাদিকরা তুলে না ধরলে এসব অপকর্মের লাগাম টানার কাজটি করবেন কী করে। তাহলে তো অপকর্ম বাড়তেই থাকবে। সমাজ ভেঙ্গে পড়বে।

সাংবাদিকদের বেতন-ভাতা সম্পর্কে কাদের গণি বলেন, এত প্রতিবন্ধকতার মধ্যেও সাংবাদিকরা দমে যেতে পারেন না। সাংবাদিকদের মোটা বেতন নেই, ঈদ-পূজোয় বোনাসের নিশ্চয়তা নেই, অবসরের পর নিশ্চিন্ত জীবনযাপনের মতো পেনশন নেই, ক্যালেন্ডারে লাল কালি দিয়ে দাগিয়ে দেওয়া ছুটি তো নেই-ই। কয়েকটা দিন ছুটি নিয়ে পরিবারকে নিয়ে একটু ঘুরে বেড়ানোরও কোনো সুযোগ নেই। উৎসবের দিনেও সংবাদ সংগ্রহে কিংবা প্রচার-প্রকাশে ব্যস্ত থাকতে হয়। তারপরও নিরলসভাবে কাজ করে যান সাংবাদিকরা।

তিনি বলেন, ইতিহাসের ছত্রে ছত্রে যেখানেই রাষ্ট্রের দমন-পীড়ন কিংবা অত্যাচার হয়েছে, সেখানেই চিন্তাশীল মানুষদের প্রতিরোধ এসেছে। সাংবাদিকরা এ চিন্তাশীলদের বার্তা পৌঁছে দিয়েছেন সমাজের বুকে। তাই তাদের কাজে থাকে সুন্দর আর সত্য সৃষ্টির গভীর উন্মাদনা। পাশাপাশি প্রতিদিন নতুন কিছু জানার, জানাবার, নতুন কিছু শেখার এবং অন্য কিছু করার ভীষণ রকম তাগিদও আছে সাংবাদিকতায়। সে তাগিদেই সব ঝুঁকি, সব কষ্ট এড়িয়ে দুঃসাহস দেখাতে পারেন সাংবাদিকরা। সত্য অনুসন্ধানে পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে তাদের অদম্য মানসিকতার সব চাহিদা। এজন্য সাংবাদিকদের বলা হয়, সমাজের ওয়াচডগ।

মাহফুজ

একুশে টেলিভিশনের রজতজয়ন্তী ১৪ এপ্রিল

প্রকাশ: ১৩ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:২৭ পিএম
একুশে টেলিভিশনের রজতজয়ন্তী ১৪ এপ্রিল
একুশে টেলিভিশন (ইটিভি)

আগামীকাল ১৪ এপ্রিল পহেলা বৈশাখ ও দেশের সংবাদভিত্তিক প্রথম বেসরকারি টিভি চ্যানেল একুশে টেলিভিশনের (ইটিভি) ২৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী (রজতজয়ন্তী)।

রজতজয়ন্তী উপলক্ষে ইটিভিতে তিন দিনব্যাপী বিশেষ অনুষ্ঠান ছাড়াও ১৪ এপ্রিল সারাদিন কারওয়ান বাজারের পেট্রোবাংলার সামনে দিনব্যাপী মেলা, কনসার্টসহ দেশজ সংস্কৃতির আয়োজন করা হয়েছে। আয়োজন করা হয়েছে বর্ণিল র‍্যালির।

রবিবার (১৩ এপ্রিল) এক সংবাদ সম্মেলনে একুশে টেলিভিশনের চেয়ারম্যান ও সিইও আব্দুস সালাম বলেন, ‘২০০০ সালের ১৪ এপ্রিল একুশের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু। ২০০২ সালে ইটিভি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। দীর্ঘ ৫ বছর সংগ্রাম করে আমরা ফের অন-এয়ারে আসি ২০০৭ সালে। এরপর আবারও স্বৈরশাসকের রোষানলে পড়ে একুশে টেলিভিশন।’ 

তিনি বলেন, ‘গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর সবার ভালোবাসা ও একুশের কর্মীদের অনুরোধে আমি আমার প্রতিষ্ঠানে আবার ফিরে আসি। ফিরে পাই একুশে টেলিভিশন।’

তিনি আরও বলেন, ‘একুশে টেলিভিশন ইতোমধ্যে আবারও তার বস্তুনিষ্ঠতা ও বৈচিত্র্য ফিরিয়ে আনছে সংবাদে এবং অনুষ্ঠানে। টকশো, অনুসন্ধান, বিনোদনে নতুন নতুন চমক দিচ্ছে। সামনে আরও নতুন পরিকল্পনা আছে সময়ের সঙ্গে এগিয়ে যাওয়ার জন্য।’

সালমান/

দুষ্কৃতকারীদের হামলায় আহত খবরের কাগজের প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১০ এপ্রিল ২০২৫, ১০:৪৮ এএম
আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০২৫, ১০:৫২ এএম
দুষ্কৃতকারীদের হামলায় আহত খবরের কাগজের প্রতিবেদক
খবরের কাগজ পত্রিকার ভাঙচুর করা গাড়ি। ছবি: খবরের কাগজ

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে খবরের কাগজের ডিজিটাল টিমের সদস্যদের ওপর হামলা করেছে একদল দুষ্কৃতকারী। এতে আহত হয়েছেন প্রতিবেদক মো. রাকিব আলী এবং গাড়িচালক মোহাম্মদ রিপন মীর। এ সময় ভাঙচুর করা হয় তাদের বহনকারী গাড়িটি। 

বুধবার (৮ এপ্রিল) সন্ধ্যায় এফডিসি গেটের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

সংবাদ সংগ্রহ শেষে খবরের কাগজের ডিজিটাল টিমের প্রতিবেদক ও ক্যামেরাপারসন যখন গাড়ির দিকে যাচ্ছিলেন, ঠিক তখনই তাদের ওপর চড়াও হয় দুষ্কৃতকারীরা। তার আগে কারওয়ান বাজার রেললাইনের কাছে দুষ্কৃতকারীরা এক বৃদ্ধাকে ছুরিকাঘাত করছিল। এ অবস্থায় ক্যামেরা দেখে দুষ্কৃতকারীরা খবরের কাগজের ডিজিটাল টিমের সদস্যদের ওপর হামলা চালায় এবং ক্যামেরা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। 

এ সময় দুষ্কৃতকারীরা খবরের কাগজের প্রতিবেদক মো. রাকিব আলীর ওপর চড়াও হয়। তাকে রক্ষার চেষ্টা করলে গাড়িচালক মোহাম্মদ রিপন মীর ছুরিকাঘাত ও মারধরের শিকার হন। দুষ্কৃতকারীরা খবরের কাগজের গাড়ি ভাঙচুর করে। স্থানীয় লোকজন ঘটনাস্থলে জড়ো হলে দুষ্কৃতকারীরা পালিয়ে যায়। বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানানো হয়েছে।

সত্য প্রকাশই হোক গণমাধ্যমের একমাত্র অঙ্গিকার: কাদের গনি চৌধুরী

প্রকাশ: ০৬ এপ্রিল ২০২৫, ০৭:০৫ পিএম
সত্য প্রকাশই হোক গণমাধ্যমের একমাত্র অঙ্গিকার: কাদের গনি চৌধুরী
কক্সবাজার প্রেস ক্লাবে আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরী বলেছেন, সত্য প্রকাশই হোক গণমাধ্যমের একমাত্র অঙ্গীকার। তিনি বলেন, গত ১৬ বছর গণমাধ্যম সত্য প্রকাশ করতে পারেনি। এখন ফ্যাসিবাদের পতন হয়েছে, সত্য লিখতে আর বাধা নেই। এখন দরকার আমাদের মন-মানসিকতার পরিবর্তন।

রবিবার (৬ এপ্রিল) দুপুরে কক্সবাজার প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক ইউনিয়ন কক্সবাজারের আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব বলেন।

সাংবাদিক কামাল হোসেন আজাদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওবায়দুর রহমান শাহীন। বক্তব্য রাখেন সিনিয়র সাংবাদিক নুরুল ইসলাম হেলালি, এসএম আমিনুল হক চৌধুরী, আতাহার ইকবাল, মমতাজ উদ্দিন বাহারি, আবু সিদ্দিক ওসমানি, শামসুল হক শারক ও এম আর মাহবুব। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন এসএম জাফর।

কাদের গনি চৌধুরী বলেন, সাংবাদিকতা হচ্ছে সত্যের আরাধনা। তাই সাংবাদিকতা হতে হয় শতভাগ সত্য। সত্য ও মিথ্যার সংমিশ্রণে সাংবাদিকতা হয় না। একশতে একশ না পেলে যেমন দেশপ্রেমিক হওয়া যায় না, তেমনি শতভাগ সত্য না হলে নিউজ হয় না।

আমাদের মনে রাখতে হবে, সাংবাদিকের দায়িত্ব হচ্ছে সত্য উদঘাটন ও সত্যের বিকাশ ঘটানো। একজন সাংবাদিককে আত্ম সচেতনতার মাধ্যমে পেশার দায়িত্ব ও নির্দেশনা মেনে চলা আবশ্যক। তবেই দেশ ও দেশের মানুষের সেবা নিশ্চিত হবে। সাংবাদিকতার সঙ্গে যারা যুক্ত—প্রতিবেদক থেকে সম্পাদক—তাদের অবশ্যই কতগুলো মৌলিক দায়িত্ব আছে, যেগুলো এড়িয়ে গিয়ে সাংবাদিকতা করা সম্ভব নয়; অন্যার্থে সাংবাদিকতার নীতিমালার ভিত্তিগত কিছু বিষয় আছে, যা সর্বজনীন এবং দায়িত্বনির্বিশেষে সবার জন্য প্রযোজ্য। সাংবাদিকতার প্রথম বাধ্যবাধকতা বা দায়িত্ব হচ্ছে সত্যের প্রতি। বিল কোভাচ ও টম রোসেন্টিয়েল দ্য এলিমেন্টস অব জার্নালিজম গ্রন্থে একে বলেছেন ‘আ প্র্যাকটিক্যাল অ্যান্ড ফাংশনাল ফর্ম অব ট্রুথ’—বাস্তব এবং কার্যকর সত্য। এ সত্যের ভিত্তি হচ্ছে পেশাদারিভাবে তথ্য-উপাত্ত ও ঘটনার বিবরণ সংগ্রহ এবং তা যাচাই করা। সাংবাদিকতা আসলে কেবল তথ্য-উপাত্ত ও ঘটনার বিবরণ সংগ্রহের পেশা নয়; এটির ভিত্তি হচ্ছে তথ্য যাচাই করাও। ইংরেজিতে যাকে বলে ভেরিফিকেশন, একে আমরা সত্য প্রতিপাদন বলে বর্ণনা করতে পারি।

কাদের গনি চৌধুরী বলেন, সত্য প্রকাশ করতে গিয়ে সাংবাদিকদের চাকরির ঝুঁকি, জীবনের ঝুঁকিসহ নানা ঝুঁকি নিতে হয়। সাংবাদিকরা এই ঝুঁকি না নিলে সত্য প্রতিষ্ঠিত হবে কীভাবে? অসহায় আত্নসমর্পণ সাংবাদিকদের মানায় না। বিগত সরকারের সময় আমাদের সাংবাদিকদের বিরাট অংশকে আমরা অসহায় আত্মসমর্পণ করতে দেখেছি সেল্ফ সেন্সরশিপের মাধ্যমে। মনে রাখবেন সত্য প্রকাশে বাধা ও বিপদের সম্মুখীন হলেও সমাজের সাধারণ মানুষ সাংবাদিকদের পাশে এসে দাঁড়ায়।

সাংবাদিকদের এ নেতা বলেন, জীবনে কোনো ক্ষেত্রে মিথ্যার সঙ্গে আপস করা চলবে না।তাহলে সাংবাদিকতা হবে না। সত্যের তরে দৈত্যের সঙ্গে লড়াই করাই সাংবাদিকতা। সত্য প্রকাশই হতে হবে গণমাধ্যমের একমাত্র অঙ্গীকার।

কাদের গনি চৌধুরী বলেন,সাংবাদিকতা হচ্ছে সবচেয়ে জীবন্তু ও আধুনিক পেশা। বুদ্ধিবৃত্তিক পেশা, সাংবাদিকতা কখনই মূর্খজনের পেশা নয়, পেশা হিসেবেই সাংবাদিকতা বুদ্ধিদীপ্ত মানুষের পেশা। যে মানুষ অতীতকে ধারণ করে বর্তমানের সঙ্গে তা মিলিয়ে ভবিষ্যতের নির্দেশনা দিতে না পারেন, ভাষায়-ব্যাখ্যায়-উপস্থাপনায় যিনি মেধার ছোঁয়া না বুলাতে পারেন, তিনি আর যা-ই হোন সাংবাদিক হতে পারেন না। কিছু মৌলিক কাঠামোই সাংবাদিকতাকে আধুনিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক পেশার শক্ত ভিত্তি দিয়েছে। সাংবাদিকতাকে দাঁড়াতে হয় এই মৌলিক ভিত্তির ওপর।। একটি সমাজে মত প্রকাশের স্বাধীনতাটি যদি নিশ্চিত না থাকে, সমাজটি যদি চিন্তা ওবিবেকের জন্য খোলা প্রান্তর অবারিত করতে না পারে, সেই সমাজে স্বাধীন বা মুক্ত সাংবাদিকতা বিকশিত হতে পারে না। সাহসী ও  বুদ্ধিবৃত্তিক সাংবাদিকতার ভিতও দৃঢ় হয় না।

তিনি বলেন, আমরা গণমাধ্যমের স্বাধীনতার কথা বলি কিন্তু নৈতিকতা ও দায়িত্বশীলতার কথা বলি না। আজকাল প্রায়শই সংবাদ মাধ্যম বা গণমাধ্যমের স্বাধীনতার সঙ্গে দায়িত্বশীলতা ও নৈতিকতার বিষয়টি উচ্চারিত হয় জোরেসোরে।

সংবাদ মাধ্যমের প্রথাগত দায়িত্বটি মানুষকে তথ্য জানানো, সেই তথ্য জানানোর মধ্য দিয়েই মানুষকে শিক্ষিত ও সচেতন করে তোলা, তথ্য এবং আলোচনার মাধ্যমে বিনোদন দেওয়া এবং সময়ের প্রয়োজনে মানুষকে উদ্দীপ্ত করে তোলা।

সাংবাদিক নেতাদের বিবৃতি নোয়াবের সিদ্ধান্ত সাংবাদিকদের সঙ্গে চরম নিষ্ঠুরতা

প্রকাশ: ২৭ মার্চ ২০২৫, ১১:০৪ এএম
নোয়াবের সিদ্ধান্ত সাংবাদিকদের সঙ্গে চরম নিষ্ঠুরতা
ঈদুল ফিতরের ছুটির বিষয়ে নোয়াবের সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ সাংবাদিক সংগঠনগুলো। ছবি: সংগৃহীত

আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ‘নিউজপেপার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (নোয়াব) সংবাদপত্রে তিন দিন বন্ধ ঘোষণার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন না করায় তীব্র ক্ষোভ ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে), ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে), ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ), ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) ও ঢাকা সাব এডিটরস কাউন্সিল (ডিএসইসি)।

বুধবার (২৬ মার্চ) বিএফইউজের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওবায়দুর রহমান শাহীন, মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরী, ডিইউজে সভাপতি মো. শহিদুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক খুরশীদ আলম, রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি আবু সালেহ আকন, সাধারণ সম্পাদক মাইনুল আহসান সোহেল, ইআরএফের সভাপতি দৌলত আখতার মালা, সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম এবং ডিএসইসির সভাপতি মোক্তাদির অনীক ও সাধারণ সম্পাদক জাওহার ইকবাল খান এক যুক্ত বিবৃতি দিয়েছেন। এতে সাংবাদিকদের সংগঠনগুলো নোয়াবের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করে ঈদের ছুটি বৃদ্ধির দাবি জানান। কিন্তু নোয়াব এখনো সিদ্ধান্ত পরিবর্তন না করায় ও সাংবাদিকদের দাবি আমলে না নেওয়ায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ এবং নিন্দা জানানো হয়েছে। 

এর আগে নোয়াবের ঘোষণা অনুযায়ী ৩০ ও ৩১ মার্চ এবং ১ এপ্রিল ছুটি থাকবে। তবে চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ঈদুল ফিতর ১ এপ্রিল হলে সে ক্ষেত্রে পরদিন ২ এপ্রিল সংবাদপত্র বন্ধ থাকবে।

নোয়াবের এমন সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে তারা বলেন, এবার ঈদে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দীর্ঘ ছুটি পাচ্ছেন। ঈদে টানা পাঁচ দিন সরকারি ছুটির সঙ্গে এবার আগে-পরে মিলছে স্বাধীনতা দিবস, শবেকদর ও সাপ্তাহিক ছুটি। সবকিছু মিলিয়ে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মার্চের শেষ সপ্তাহ ও এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহ যাবে ছুটির মধ্যে। অথচ সংবাদকর্মীদের কথা বিবেচনায় না নিয়ে নোয়াবের মাত্র ৩ দিনের ছুটি ঘোষণা চরম নিষ্ঠুরতা ছাড়া কিছু নয়। আমরা নোয়াবের এমন সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং ছুটি বৃদ্ধির দাবি করছি। কারণ, সারা জাতি যখন বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াই করছে তখন নোয়াব গণমাধ্যমকর্মীদের নতুন কর বৈষম্যের দিকে ঠেলে দেওয়া অমানবিক নিষ্ঠুরতা বৈ কিছু নয়। সাংবাদিক সমাজের যৌক্তিক দাবিকে আমলে নিয়ে ছুটি বৃদ্ধির পুনঃদাবি জানান সাংবাদিক নেতারা।

ক্র্যাব সদস্যদের মাঝে ঈদসামগ্রী বিতরণ

প্রকাশ: ২৫ মার্চ ২০২৫, ১০:৫৭ পিএম
ক্র্যাব সদস্যদের মাঝে ঈদসামগ্রী বিতরণ
ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স এসোসিয়েশন (ক্র্যাব) সদস্যদের মাঝে ঈদ উপহারসামগ্রী বিতরণ শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) সেগুনবাগিচায় ক্র্যাব মিলনায়তনে আনুষ্ঠানিকভাবে এর বিতরণ কার্যক্রম শুরু হয়। 

নাবিল গ্রুপের সহযোগিতায় বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স এসোসিয়েশনের (ক্র্যাব) সকল সদস্যকে এই উপহার দেওয়া হয়েছে।

 বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স এসোসিয়েশন (ক্র্যাব) সভাপতি মির্জা মেহেদী তমাল বিতরণ অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন। ক্র্যাব সাধারণ সম্পাদক এম এম বাদশাহ্’র সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে নাবিল গ্রুপের পক্ষে বক্তব্য দেন হেড অব অ্যাডমিন মেজর (অব.) মো. পরামুদ্দিন হোসেন। তিনি উপস্থিত সদস্যদের হাতে ঈদসামগ্রী তুলে দেন।

এ সময় ক্র্যাব কার্যনির্বাহী কমিটির যুগ্ম সম্পাদক নিয়াজ আহমেদ লাবু, কল্যাণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান, ক্র্যাবের সিনিয়র সদস্য বেলায়েত হোসেন, বিকাশ নারায়ন দত্ত ও দীপক চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।

শেখ জাহাঙ্গীর/মাহফুজ