ঢাকা ২৪ আষাঢ় ১৪৩২, মঙ্গলবার, ০৮ জুলাই ২০২৫
English
মঙ্গলবার, ০৮ জুলাই ২০২৫, ২৪ আষাঢ় ১৪৩২

সাংবাদিকদের কন্ঠরোধে ৩২টি আইন, সুরক্ষায় নেই একটিও: কাদের গনি চৌধুরী

প্রকাশ: ১৩ মে ২০২৫, ১১:০২ পিএম
আপডেট: ১৩ মে ২০২৫, ১১:০৩ পিএম
সাংবাদিকদের কন্ঠরোধে ৩২টি আইন, সুরক্ষায় নেই একটিও: কাদের গনি চৌধুরী
ছবি: সংগৃহীত

বিএফইউজে মহাসচিব ও বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সদস্য সচিব কাদের গনি চৌধুরী বলেছেন, সাংবাদিকদের জন্য একটি নিরাপদ ও স্বাধীন পরিবেশ তৈরি করা অত্যন্ত জরুরি, যাতে তারা নিরপেক্ষভাবে সংবাদ সংগ্রহ ও প্রচার করতে পারেন। তিনি বলেন, গণমাধ্যমের কন্ঠরোধে দেশে ৩২টি আইন থাকলেও সাংবাদিকদের সুরক্ষায় কোনো আইন নেই।

তিনি বলেন, প্রতিটি দিন দুটি সূর্য উদিত হয়, একটি হচ্ছে প্রভাত সূর্য অন্যটি হচ্ছে সংবাদ। সূর্যের আলোতে আমরা দেখি আর সংবাদ মাধ্যম আমাদের বিশ্ব দেখায় বা জানায়।

সাংবাদিকদের এ নেতা বলেন, একজন সাংবাদিকের কাজ সমাজের প্রকৃত চিত্র তুলে ধরা। সেজন্য গণমাধ্যমকে সমাজের দর্পণ বলা হয়। সাংবাদিক বলা হয় সমাজের ওয়াচডগ। এই দর্পণে প্রতিবিম্বিত হয় সমাজের প্রতিচিত্র। অন্যায়, অনিয়ম, নিগ্রহ, শোষণ-বঞ্চনা ও অধিকার হরণের বিরুদ্ধে একজন সাংবাদিককে সোচ্চার থাকতে হয় সবসময়। চোখ রাঙানোকে তোয়াক্কা না করে নির্ভীক ও নিরলসভাবে কাজ করতে হয়। প্রচলিত সমাজ ব্যবস্থার চিত্র প্রত্যক্ষ করতে হয়। মানুষের সমস্যার কথা তুলে ধরার দায়িত্ব পালন করতে হয়। অনেক বাধা-বিপত্তির মধ্যে তাদের দিন যায়। ক্ষমতাধরদের রক্ত চক্ষু উপেক্ষা করে সাহসিকতার সঙ্গে এগিয়ে যেতে হয়।

মঙ্গলবার (১৩ মে) সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জে অনলাইন নিউজ পোর্টাল ‘নিউজ নারায়নগঞ্জ’ এর প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত সুধী সম্মেলনে তিনি এসব বলেন।

নিউজ নারায়ণগঞ্জের সম্পাদক শাহজান শামীমের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন এডিসি আলমগীর হোসাই, মাহমুদুর রহমান সুমন, সাবেক সংসদ গিয়াস উদ্দিন, সাবেক এমপি আবুল কালাম, অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন, মোরসালিন বাবলা, মোস্তাফিজুর রহমান দিপু ভূঁইয়া, মাহবুব আলম শাহ প্রমুখ।

কাদের গনি চৌধুরী বলেন, সাংবাদিকদের হতে হবে সাহসি। কিন্তু রাষ্ট্রের সহযোগিতা না পেয়ে সাহসি সাংবাদিকতা ও অনুসন্ধানী সাংবাদিক অনেকটা বিলীন হতে চলেছে।

তিনি বলেন, কথায় কথায় সাংবাদিককে হত্যা করা হয়, নিগৃহীত করা হয়, ভয় দেখানো হয়। সাংবাদিকদের কণ্ঠ রোধ করতে, কাজ ব্যাহত করতে অহরহ দমন-পীড়ন চালানো হয়। পুলিশ লেলিয়ে দেওয়া, রাজনৈতিক নেতাদের হুমকি, দুর্নীতিগ্রস্ত আমলাদের অত্যাচার, প্রভাবশালী ব্যবসায়ীদের আক্রমণ-এ সবকিছু সাংবাদিকদের সহ্য করে সামনে এগিয়ে যেতে হয়। তার ওপর রয়েছে নিপীড়নমূলক আইন। নানারকম হয়রানি এড়িয়ে যেতে সাংবাদিকরা যখন সেলফ সেন্সরশিপের আশ্রয় নেন, তখন গণমাধ্যম আর স্বাধীন থাকে না। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সাংবাদিকরা প্রভাবশালী মহলের চাপে পড়ে সেলফ সেন্সরশিপ অবলম্বন করেন। অনেক সময় চাকরি হারানোর ভয়ে অফিসের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যাদের যোগাযোগ বেশি, তাদের বিষয়গুলো এড়িয়ে যান। এভাবে সত্যনিষ্ঠ সাংবাদিকতা মারা পড়ছে।

বিশেষ করে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট নামক গণমাধ্যমের স্বাধীনতা বিরোধী আইনের সদ্য বিলুপ্ত ৫৭ ধারায় দায়ের করা মামলায় হয়রানির শিকার হয়েছেন এমন সাংবাদিকরা মামলা হওয়ার পর নানা সময়ে জটিল বিষয়গুলোতে প্রতিবেদন প্রস্তুত করতে গেলে আগে নিজের বিপদ এড়ানোর কথা ভাবেন বার বার। ফলে অনেক সময় অনেক তথ্য জেনেও চুপ করে থাকেন। কেননা, বিপদে পড়লে অফিস বা সাংবাদিক নেতাদের কাছ থেকে খুব বেশি সমর্থন পাওয়া যায় না।

কাদের গনি চৌধুরী বলেন, রাষ্ট্র তথা প্রজাতন্ত্রের সুশাসন নিশ্চিত করতে সংবাদমাধ্যম পাহারাদারের ভূমিকা পালন করে। রাষ্ট্রের কল্যাণমূলক ও জনগুরুত্বপূর্ণ সর্বোপরি সুশাসন যেমন সংবাদমাধ্যমে উঠে আসে ঠিক তেননি সংবাদমাধ্যম সরকারের গঠনমূলক সমালোচনা করে রাষ্ট্রকে উন্নয়নের দিকে ধাবিত করে। এদিক থেকে সংবাদমাধ্যমকে রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ বলা হয় । রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ হিসেবে সংবাদপত্রকে সর্বপ্রথম নির্দেশ করেন ব্রিটিশ পার্লামেন্টারিয়ান এডমন্ড বার্ক। তিনি ১৭৮৭ সালে হাইজ অব কমন্সের সংসদীয় বিতর্ক পর্বে প্রত্যয়টি প্রথম ব্যবহার করেন।

তিনি বলেন, বিগত দিনগুলির অভিজ্ঞতায় আমরা দেখতে পেয়েছি যে- সমাজের নানা অসংগতি গণমাধ্যমে প্রকাশিত না হলে তার প্রতিকার করার জন্য রাষ্ট্রের শাসন বিভাগ এগিয়ে আসে না। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কোনো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হবার পরে প্রশাসনের নজরে আসে। কালেরকন্ঠ পত্রিকায় সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা বেনজির আহমেদের কার্যকলাপের অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশিত হবার পরে শাসন বিভাগের টনক নড়েছিল এবং সেটা দেশের টক অব দ্যা কান্ট্রিতে পরিণত হয়েছিল। অতএব বুঝাই যাচ্ছে গণমাধ্যম ও সাংবাদিকতা রাষ্ট্রের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।

সাংবাদিকদের এনেতা বলেন, সাংবাদিক কোনো দলের না, কারও স্বার্থের না, এমনকি দলমতের ঊর্ধ্বে থেকে সঠিক ও নিরপেক্ষ সংবাদ পরিবেশন করবেন-এটাই প্রকৃত সাংবাদিকের কাজ।

 

সাংবাদিকদের মিলনমেলায় রঙিন ছিল ডিএসইসির ফ্যামিলি ডে

প্রকাশ: ০৮ জুলাই ২০২৫, ১২:৫৯ পিএম
সাংবাদিকদের মিলনমেলায় রঙিন ছিল ডিএসইসির ফ্যামিলি ডে
ছবি: সংগৃহীত

বর্ণাঢ্য আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল ঢাকা সাব-এডিটরস কাউন্সিলের (ডিএসইসি) বহুল প্রতীক্ষিত বার্ষিক আয়োজন ফ্যামিলি ডে ২০২৫।

রবিবার (৬ জুলাই) রাজধানীর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে দিনব্যাপী এ অনুষ্ঠানটি উৎসবমুখর পরিবেশে সম্পন্ন হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ঢাকা বিভাগের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. বেলাল হোসেন।

ডিএসইসি সভাপতি মুকতাদির অনিকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানের শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন সাধারণ সম্পাদক জাওহার ইকবাল খান এবং ফ্যামিলি ডে’র আহ্বায়ক, সংগঠনের ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক নাহিদ হাসান।

সকালের নাস্তা দিয়ে শুরু হওয়া এ আয়োজনে দিনব্যাপী ডিএসইসি সদস্য ও তাদের পরিবারের সরব উপস্থিতিতে মিলনমেলায় পরিণত হয় অনুষ্ঠান। মধ্যাহ্নভোজ, মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক পরিবেশনা এবং আকর্ষণীয় র‌্যাফেল ড্র অনুষ্ঠানে বাড়তি মাত্রা যোগ করে।

র‌্যাফেল ড্রতে প্রথম পুরস্কার হিসেবে গ্লোবালইডির সৌজন্যে একটি মোটরসাইকেল। দ্বিতীয় পুরস্কার ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের সৌজন্যে ঢাকা-ব্যাংকক-ঢাকা কাপল এয়ার টিকিট।

এ ছাড়াও ছিল ঢাকা-কক্সবাজার-ঢাকা এয়ার টিকিট এবং প্রবাসীর হেলিকপ্টারের সৌজন্যে ঢাকা শহর ভ্রমণের হেলিকপ্টার রাইডের টিকিট।

পুরস্কার বিজয়ীদের হাতে প্রথম পুরস্কার তুলে দেন প্রধান অতিথি নজরুল ইসলাম আজাদ। দ্বিতীয় পুরস্কারটি তুলে দেন অধ্যাপক ড. মো. বেলাল হোসেন।

অনুষ্ঠানে সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে যুক্ত ছিল দেশের খ্যাতনামা বিশ্ববিদ্যালয় ও কর্পোরেট ব্র্যান্ডসমূহ।

তাদের মধ্যে ছিল গ্রিস্টার, মমতাজ হারবাল, আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, উত্তরা ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজি, ইউনিভার্সাল মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, আরএকে সিরামিকস, বায়োফার্মা, ইগলু আইসক্রিম এবং খন্দকার টি।

ডিএসইসি কর্তৃপক্ষ জানায়, এই আয়োজন শুধু বিনোদনের উপলক্ষ নয়, বরং এটি সাংবাদিকদের মধ্যে পারস্পরিক সৌহার্দ্য, পারিবারিক বন্ধন ও সহমর্মিতা বৃদ্ধির একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ হিসেবে বিবেচিত।

অমিয়/

সাংবাদিক মোস্তফা মামুনের বাবা আর নেই

প্রকাশ: ০৫ জুলাই ২০২৫, ০৬:০৬ পিএম
আপডেট: ০৫ জুলাই ২০২৫, ০৬:১৭ পিএম
সাংবাদিক মোস্তফা মামুনের বাবা আর নেই
বীর মুক্তিযোদ্ধা ও অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মোহাম্মদ আব্দুল হান্নান। ছবি: খবরের কাগজ

সিনিয়র সাংবাদিক মোস্তফা মামুনের বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা ও অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মোহাম্মদ আব্দুল হান্নান ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তার বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর। তিনি দুই ছেলে, স্ত্রী ও অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

মোহাম্মদ আব্দুল হান্নান শনিবার (৫ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১টায় মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার নিজ বাড়িতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তার নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে আজ বাদ মাগরিব কুলাউড়া শহরে এবং রাত ১০টায় কুলাউড়ার ফরিদপুর গ্রামে। জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।

আবদুল্লাহ আল মামুন/

 

সাতক্ষীরা প্রেস ক্লাবে সাংবাদিকদের ওপর হামলা, সভাপতিসহ আহত ৩০

প্রকাশ: ৩০ জুন ২০২৫, ০১:৫৭ পিএম
আপডেট: ৩০ জুন ২০২৫, ০২:০১ পিএম
সাতক্ষীরা প্রেস ক্লাবে সাংবাদিকদের ওপর হামলা, সভাপতিসহ আহত ৩০
সাংবাদিকদের ওপর হামলা করছে বহিরাগতরা। ছবি: খবরের কাগজ

সাতক্ষীরা প্রেস ক্লাবের নেতৃত্ব নিয়ে চলমান বিরোধের জেরে ক্লাবের সভাপতি আবুল কাশেমসহ সাংবাদিকদের ওপর অতর্কিত হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ৩০ সাংবাদিক আহত হয়েছেন।

সোমবার (৩০ জুন) সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সামনে এ ঘটনা ঘটে। 

অভিযোগ উঠেছে, ক্লাবের কথিত সভাপতি আওয়ামী দোসর আবু সাঈদ ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল বারীর নেতৃত্বে আল ইমরান ও অমিত ঘোষ বাপ্পাসহ ভাড়াটে মাদকাসক্তরা এই হামলা চালায়।

এই হামলায় ইন্ডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের সাংবাদিক ও প্রেসক্লাবের সভাপতি আবুল কাশেম, ভোরের আকাশের সাংবাদিক আমিনুর রহমান, ডিবিসি নিউজের সাংবাদিক বেলাল হোসেন, অনির্বানের সোহরাব হোসেনসহ অন্তত ৩০ সাংবাদিক গুরুতর আহত হয়েছেন।

হামলার শিকার সাতক্ষীরা প্রেস ক্লাবের সভাপতি আবুল কাশেম বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণভাবে প্রেস ক্লাবে একটি সভা করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। ঠিক সেই মুহূর্তে আবু সাঈদ ও আব্দুল বারীর নেতৃত্বে আলিপুর থেকে আনা ভাড়াটে মাদকাসক্তরা আমাদের ওপর পরিকল্পিতভাবে হামলা করে। তাদের হামলায় আমাদের অন্তত ৩০ জন সাংবাদিক ও সদস্য আহত হয়েছেন।’ 

তিনি আরও অভিযোগ করেন, আবু সাঈদ ও আব্দুল বারী দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে প্রেস  ক্লাব দখল করে রেখেছেন এবং তাদের মতের বিরুদ্ধে গেলেই এভাবে হামলা ও নির্যাতন চালানো হয়।

এই ন্যাক্কারজনক হামলার ঘটনায় সাতক্ষীরার সাংবাদিক মহলে তীব্র ক্ষোভ ও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। সাংবাদিকরা অবিলম্বে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানিয়েছেন।

ঘটনার পর থেকে প্রেস ক্লাব এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

নাজমুল শাহাদাৎ/সুমন

গণমাধ্যমের মানোন্নয়নে বিবিসি মিডিয়া অ্যাকশন ও বিজেসির মধ্যে সমঝোতা চুক্তি

প্রকাশ: ২৯ জুন ২০২৫, ০৫:৫৫ পিএম
গণমাধ্যমের মানোন্নয়নে বিবিসি মিডিয়া অ্যাকশন ও বিজেসির মধ্যে সমঝোতা চুক্তি

বাংলাদেশে দায়িত্বশীল ও টেকসই সম্প্রচার মাধ্যমের বিকাশে একসঙ্গে কাজ করতে বিবিসি মিডিয়া অ্যাকশন ও ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টার (বিজেসি)-এর মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।

সম্প্রতি (গত ২৬ জুন) ঢাকায় দুই প্রতিষ্ঠানের মধ্যে একটি অংশীদারিত্বমূলক সমঝোতা স্মারক (MoU) স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন বিবিসি মিডিয়া অ্যাকশন বাংলাদেশ-এর কান্ট্রি ডিরেক্টর মো. আল মামুন এবং বিজেসি‘র ট্রাস্ট্রি বোর্ডের চেয়ারম্যান রেজওয়ানুল হক।

এই চুক্তির আলোকে প্রাতিষ্ঠানিক দক্ষতা বৃদ্ধি, সাংবাদিকদের পেশাগত মানোন্নয়ন, বাস্তবায়নযোগ্য নীতিমালা প্রণয়ন এবং জনস্বার্থমূলক সাংবাদিকতার প্রসারে বিবিসি মিডিয়া অ্যাকশন সহায়তা করবে। এ ছাড়া সাংবাদিকদের সুরক্ষা, বিশেষ করে নারী সাংবাদিকদের নিরাপত্তা ও সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে একযোগে কাজ করতে ঐকমত্য হয়েছে বিজেসি।

প্রায় ১৮শ সদস্যের সম্প্রচার সাংবাদিকদের সংগঠন বিজেসি শুরু থেকেই সম্প্রচার সাংবাদিকদের কল্যাণ ও সংবাদক্ষেত্রে পেশাদারিত্বমূলক পরিবেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করে চলছে। দুই প্রতিষ্ঠানের মধ্যে কারিগরি ও কৌশলগত সহযোগিতার এই চুক্তি বাংলাদেশের গণমাধ্যমকে আরও টেকসই এবং জনস্বার্থে অবদান রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়েছে।

এলিস/সুমন/

গবেষণায় তথ্য ভুয়া সংবাদ প্রকাশ করে প্রত্যাহারের শীর্ষে ৩ পত্রিকা

প্রকাশ: ২৯ জুন ২০২৫, ০১:২৫ পিএম
ভুয়া সংবাদ প্রকাশ করে প্রত্যাহারের শীর্ষে ৩ পত্রিকা
ছবি: সংগৃহীত

গুজবের ভিত্তিতে সংবাদ প্রকাশ করে পরে তা ভুয়া (ফেইক) হওয়ায় প্রত্যাহার করে নেওয়ার তালিকায় শীর্ষস্থানে রয়েছে এমন কিছু সংবাদমাধ্যমের নাম প্রকাশ করেছে এক গবেষণা। এই গবেষণায় দেখা গেছে নিউজ প্রকাশ করে ভুয়া হওয়ায় প্রত্যাহার করে নেওয়ার তালিকায় শীর্ষস্থানে রয়েছে দৈনিক প্রথম আলো। এই তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে দৈনিক কালবেলা এবং তৃতীয় স্থানে দৈনিক ইত্তেফাক।

শনিবার (২৮ জুন) সকালে প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ (পিআইবি) আয়োজিত সেমিনারে এক গবেষণা প্রবন্ধে এই তথ্য তুলে ধরা হয়।

তাছাড়া যথাক্রমে রয়েছে- দৈনিক যুগান্তর, ডেইলি স্টার, ঢাকা পোস্ট, বাংলা ট্রিবিউন, বিডিনিউজ, দৈনিক কালের কণ্ঠ, যমুনা টিভি, বিবিসি বাংলা, চ্যানেল২৪বিডি, সময় নিউজ, জাগো নিউজ২৪, বাংলানিউজ২৪, দৈনিক জনকণ্ঠ, ঢাকা ট্রিবিউন, টিবিএস, দৈনিক দেশ রূপান্তর, দৈনিক ইনকিলাব, আইটিভি (ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভি), সময়ের কণ্ঠস্বর, একাত্তর টিভি, এনটিভি ওয়েব, যায়যায়দিন, আমাদের সময়, সময়ের আলো, বিডি প্রতিদিন।

এই গবেষণাটি করেন বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের গবেষণা ও উন্নয়নের মাধ্যমে তথ্যপ্রযুক্তিতে বাংলা ভাষা সমৃদ্ধকরণ (ইবিএলআইসিটি) প্রকল্পের পরামর্শক মামুন অর রশীদ। 

তার গবেষণার শিরোনাম ছিল ‘বাংলাদেশের গণমাধ্যমের সাম্প্রতিক অপতথ্যের গতি-প্রকৃতি’।

গবেষণায় ফ্যাক্টচেক সাইট থেকে নেওয়া ছয় মাসের স্ক্র্যাপ ডেটা, মূলধারার গণমাধ্যমের ৬৯৪টি পৃথক ডেডলিংকসহ ৫টি পদ্ধতির কথা উল্লেখ করা হয়।

এতে বলা হয়, গেল বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার বিপ্লবের পর দেশের গণমাধ্যমে ভুয়া খবর প্রকাশের প্রবণতা বেড়েছে। এই প্রবণতা এতটাই বেড়েছে যে, মূলধারার শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যমেও ভুয়া খবরের ছড়াছড়ি। গণমাধ্যমগুলো সত্য ও বস্তুনিষ্ঠ খবর প্রকাশের চেয়ে ভাইরাল হওয়ার দিকেই মনোযোগ বেশি দিচ্ছে। এ ধরনের খবর গণমাধ্যমে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে প্রচার করা হচ্ছে। 

গবেষণা প্রবন্ধে বলা হয়, ভাইরাল নিউজের বাণিজ্যিক ও আর্থিক মূল্য বিবেচনায় এমনটা করা হচ্ছে।

সেমিনারে মামুন অর রশীদ বলেন, ‘এটি আমার নিজস্ব গবেষণাকর্ম। গত জানুয়ারি থেকে চলতি জুন মাস নাগাদ গবেষণায় এসব চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। গবেষণাকর্মটি জার্নালে প্রকাশের জন্য আরো তথ্য হালনাগাদ করা হচ্ছে।’

সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব শঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, ‘আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ব্যাপক মিথ্যা তথ্য ছড়ানো হতে পারে। এক দল কিংবা দলের প্রার্থী অপর দল কিংবা দলের প্রার্থীর বিরুদ্ধে নানা অপতথ্য ছড়াতে পারে। বানোয়াট ও চাঞ্চল্যকর তথ্য মানুষ বেশি পছন্দ করে। ৫ আগস্টের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আওয়ামী লীগের উপস্থিতি অনেকটাই বেড়েছে।’

তিনি বলেন, ‘বর্তমানে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের ক্ষেত্রে সত্যের চেয়ে ভাইরাল হওয়ার দিকেই মনোযোগ বেশি। এ ধরনের খবর গণমাধ্যমে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে প্রচার করা হয়। ভাইরাল নিউজের বাণিজ্যিক ও আর্থিক মূল্য আছে বলে সেটা করা হচ্ছে। এই চিন্তাধারা থেকে বের হওয়া না গেলে দেশের গণমাধ্যমগুলো বিশ্বাসযোগ্যতা হারাবে। সংকটের মধ্যে পড়বে গোটা জাতি। মূলধারার গণমাধ্যম বিশ্বাসযোগ্যতা হারালে সে জায়গাটা নেবেন কনটেন্ট মেকার বা ব্লগাররা। তারা বিকল্প গণমাধ্যম হিসেবে দাঁড়িয়ে যাবেন।’

এ সংকট মোকাবিলায় গণমাধ্যম মালিক ও ম্যানেজমেন্টকে ডিজিটাল ভেরিফিকেশন এবং ফ্যাক্ট চেকিংয়ে বিনিয়োগের পরামর্শ দেন তিনি।

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ পড়েন বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের গবেষণা ও উন্নয়নের মাধ্যমে তথ্যপ্রযুক্তিতে বাংলা ভাষা সমৃদ্ধকরণ (ইবিএলআইসিটি) প্রকল্পের পরামর্শক মামুন অর রশীদ।

প্রবন্ধের ওপর মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন বিভিন্ন গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব।

সেমিনারটি সঞ্চালনা করেন পিআইবির জ্যেষ্ঠ গবেষণা কর্মকর্তা গোলাম মোর্শেদ।

এতে বক্তব্য রাখেন আমার দেশ পত্রিকার চিফ রিপোর্টার বাছির জামাল, প্রথমা প্রকাশনার প্রধান সমন্বয়কারী মশিউল আলম, একাত্তর টিভির সিওও শফিক আহমেদ, যুগান্তরের নগর সম্পাদক মিজান মালিক, যমুনা টিভির মাহফুজ মিশু প্রমুখ।

সংবাদমাধ্যমে অপতথ্য মোকাবিলায় গণমাধ্যমকর্মীদের প্রয়োজনীয় দক্ষতা বৃদ্ধি, প্রশিক্ষণ ও প্রযুক্তিগত বিনিয়োগের বিষয়গুলোকে তুলে ধরা হয়।

সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন পিআইবির মহাপরিচালক ফারুক ওয়াসিফ। সূচনা বক্তব্যে বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের ১৫ বছরের সাংবাদিকতার চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘গত ১৫ বছরে দায়িত্বশীল সাংবাদিকতার ক্ষীণ ধারা ছিল। রাষ্ট্র নিজে মিথ্যার কারখানায় পরিণত হয়েছিল এবং সংবাদমাধ্যম হয়ে দাঁড়িয়েছিল তার ফেরিওয়ালা। গ্রেপ্তার, নির্যাতন, গুমের ঘটনা ঘটানোর জন্য শিকারি সাংবাদিকতা করা হয়েছিল এবং বিবিএস থেকে মিথ্যা তথ্য ছড়ানো হতো। অপতথ্যকে শুধু ফ্যাক্টচেক দিয়ে মোকাবিলা করা সম্ভব নয়। এটাকে সামাজিক আন্দোলনে রূপ দিতে হবে।’