ঢাকা ৩ আষাঢ় ১৪৩২, মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫
English

বিএনপির ওপর ভিসানীতি প্রয়োগ করলে খুশি হব : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

প্রকাশ: ২৭ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৮:১০ পিএম
আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৮:৩১ এএম
বিএনপির ওপর ভিসানীতি প্রয়োগ করলে খুশি হব : পররাষ্ট্রমন্ত্রী
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের উদ্দেশে কথা বলছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। ছবি : সংগৃহীত

‘পশ্চিমারা আমাদের সঙ্গে আছে। কারণ আমরা গণতন্ত্র চাই, শান্তি ও স্থিতিশীলতা চাই। বরং আমাদের উল্টো দল নির্বাচন বর্জন করেছে। তাই তাদের ওপর ভিসানীতি প্রয়োগ করলে খুশি হব।’ 

বুধবার (২৭ ডিসেম্বর) বিএনপির প্রতি ইঙ্গিত করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। 

নির্বাচন নিয়ে পশ্চিমাদের দিক থেকে কোনো চাপ অনুভব করছেন কি না- এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘প্রেশার ফিল করি না। আপনারা মিডিয়ারা প্রেশার বানিয়েছেন। আমরা নিজেরা প্রেশার ফিল করি যাতে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে পারি।’ 

মোমেন বলেন, ‘ভারত, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) আমাদের বন্ধু। তারা সবাই আমাদের উন্নয়ন অংশীদার। এটি আজকে নতুন নয়। যেদিন আমরা স্বাধীনতা পেলাম তারপর থেকে আমেরিকা সাপোর্ট দিয়েছে। যদিও তারা ৭১ সালে পাকিস্তানকে সাপোর্ট করেছিল। ভারত শুরু থেকে এখনো সাহায্য করে। ইইউ আমাদের বিগ মার্চেন্ট। তারা পছন্দ না করলে আমাদের পণ্য কিনত না।’ 

পশ্চিমাদের সঙ্গে কোনো টানাপোড়েন নেই দাবি করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ‘কারণ আমরা কমিটেড যে আমরা গণতন্ত্র নষ্ট করতে চাই না। গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে চাই। বরং ২৮ অক্টোবরের পর বিদেশিরা দেখল তারা সন্ত্রাসী দল। তারা মুখে বলে এক, করে আরেক।’

ঢাকায় পাকিস্তানের নতুন হাইকমিশনার ইমরান হায়দার

প্রকাশ: ১৭ জুন ২০২৫, ১০:৩২ পিএম
ঢাকায় পাকিস্তানের নতুন হাইকমিশনার ইমরান হায়দার
ঢাকায় নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার ইমরান হায়দার

ঢাকায় নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার সৈয়দ আহমেদ মারুফকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। ঢাকায় দায়িত্ব পালনের প্রায় দেড় বছরের মাথায় তাকে ইসলামাবাদে ফিরিয়ে নেওয়া হয়। ঢাকায় তার স্থলাভিষিক্ত হবেন মায়ানমারে নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার ইমরান হায়দার। 

ঢাকার পাকিস্তান হাইকমিশন এরই মধ্যে ইমরান হায়দারের নিয়োগের বিষয়টি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অবহিত করেছে বলে সূত্র নিশ্চিত করে।  

এদিকে পাকিস্তানের জং পত্রিকার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার সৈয়দ মারুফকে পাকিস্তানে ফেরত আনা হয়েছে। তিনি বর্তমানে পাকিস্তানেই আছেন।

পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম দ্য ডেইলি স্পোকসম্যানের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে নতুন হাইকমিশনার হিসেবে ইমরান হায়দারকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

সৈয়দ আহমেদ মারুফ ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে বাংলাদেশে পাকিস্তানের হাইকমিশনার হিসেবে যোগ দেন। গত মে মাসে হঠাৎ দুই সপ্তাহের ছুটিতে তিনি ঢাকা ছাড়েন। তখন এ নিয়ে নানা গুঞ্জন তৈরি হয়। 

বাংলাদেশ ছাড়ার আগে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে পাঠানো চিঠিতে ঢাকার পাকিস্তান হাইকমিশন জানায়, ছুটি শেষ করে ঢাকায় আবার পাকিস্তানের হাইকমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন সৈয়দ মারুফ। 

 

তেহরানে বসবাসরত বাংলাদেশিদের নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হবে: পররাষ্ট্রসচিব

প্রকাশ: ১৭ জুন ২০২৫, ০৭:২৬ পিএম
তেহরানে বসবাসরত বাংলাদেশিদের নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হবে: পররাষ্ট্রসচিব
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রসচিব রুহুল আলম সিদ্দিকী। ছবি: খবরের কাগজ

তেহরানে বসবাসরত বাংলাদেশিদের নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রসচিব রুহুল আলম সিদ্দিকী। 

মঙ্গলবার (১৭ জুন) ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধ পরিস্থিতি এবং প্রবাসী বাংলাদেশিদের নিরাপত্তা বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে একথা বলেন তিনি। 

রুহুল আলম সিদ্দিকী বলেন, ‘ইরানের তেহরানে প্রায় ৪০০ বাংলাদেশি অবস্থান করছেন। এদের মধ্যে প্রায় ১০০ বাংলাদেশি তেহরানে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। একই সঙ্গে, কূটনীতিকসহ দূতাবাসের ৪০ জনকে নিরাপদ স্থানে স্থানান্তরের কাজ চলছে।’ 

তিনি বলেন, ‘তেহরানে বাংলাদশিরা নিরাপদ স্থানে যেতে চান। ইতোমধ্যেই ১০০ জন আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। তেহরানের ৪০০ নাগরিককে সরিয়ে নেওয়া হবে। তারপর তাদের নিরাপদে দেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে।’

ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রসচিব বলেন, ‘তেহরানে বাংলাদেশি নাগরিক ও দূতাবাসের কর্মকর্তারা হুমকির মধ্যে আছেন। তেহরান দূতাবাসের রাষ্ট্রদূতের বাসভবন ইতোমধ্যেই স্থানান্তর করা হয়েছে।’ 

গত শুক্রবার (১৩ জুন) ভোরে ইসরায়েল ইরানের বিভিন্ন স্থানে সামরিক হামলা শুরু করে। এরপর থেকে দুই দেশের মধ্যে হামলা-পাল্টা হামলা চলছে। যা পঞ্চম দিনে গড়িয়েছে।

ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধের মধ্যে ইরানে বসবাসরত বাংলাদেশি নাগরিক এবং তাদের স্বজনদের জরুরি যোগাযোগের জন্য হটলাইন (+৯৮৯৯০৮৫৭৭৭৩৬৮, +৯৮৯১২২০৬৫৭৪৫) চালু করেছে সরকার।

সালমান/

সেনানিবাসে রাসায়নিক অস্ত্র কনভেনশনের সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত

প্রকাশ: ১৭ জুন ২০২৫, ০৫:৫২ পিএম
আপডেট: ১৭ জুন ২০২৫, ০৬:৫৪ পিএম
সেনানিবাসে রাসায়নিক অস্ত্র কনভেনশনের সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত
রাসায়নিক অস্ত্র কনভেনশন বাংলাদেশ জাতীয় কর্তৃপক্ষের (বিএনএসিডব্লিউসি) সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত। ছবি: আইএসপিআর

ঢাকা সেনানিবাসে রাসায়নিক অস্ত্র কনভেনশন বাংলাদেশ জাতীয় কর্তৃপক্ষের (বিএনএসিডব্লিউসি) ২৪তম সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৭ জুন) সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের (এএফডি) মাল্টিপারপাস হলে বিএনএসিডব্লিউসির ওই সভা আয়োজন করা হয়।

এতে সভাপতিত্ব করেন বিএনএসিডব্লিউসির চেয়ারম্যান ও এএফডির প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার (পিএসও) লেফটেন্যান্ট জেনারেল এস এম কামরুল হাসান।

আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, সংস্থা এবং বাহিনীগুলো থেকে বিএনএসিডব্লিউসির মোট ৪৩ জন উচ্চপদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তা ওই সভায় অংশ নেন। এতে বাংলাদেশে রাসায়নিক অস্ত্র কনভেনশন ও রাসায়নিক অস্ত্র (নিষিদ্ধকরণ) আইন, ২০০৬-এর বিধিবিধান কার্যকরভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ২৩তম সাধারণ সভায় নেওয়া সিদ্ধান্তগুলোর বাস্তবায়নের অগ্রগতি পর্যালোচনা করা হয়। পাশাপাশি দেশের সার্বিক রাসায়নিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা সুসংহতকরণ ও রাসায়নিক দুর্ঘটনা মোকাবিলায় কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।

আইএসপিআর জানিয়েছে, দেশে তফসিলভুক্ত রাসায়নিক দ্রব্য সংক্রান্ত সব ধরনের কার্যক্রম ও তফসিল বর্হিভূত স্বতন্ত্র জৈব রাসায়নিক দ্রব্য উৎপাদন যথাযথভাবে পর্যবেক্ষণের লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিএনএসিডব্লিউসির সঙ্গে অনলাইনে নিবন্ধনের বিষয়ে গুরুত্বারোপ করা হয়। তফসিলভুক্ত রাসায়নিক দ্রব্য আমদানির ক্ষেত্রে ন্যাশনাল সিঙ্গেল উইন্ডোর মাধ্যমে জাতীয় কর্তৃপক্ষের অনাপত্তিপত্র গ্রহণের বিষয়ে সভায় আলোচনা করা হয়। এ ছাড়া চট্টগ্রাম বন্দরে দীর্ঘমেয়াদে মজুদ করা রাসায়নিক দ্রব্যগুলো ধ্বংসকরাসহ অন্য বন্দরগুলোতে রাসায়নিক দ্রব্যের নিরাপত্তা ব্যবস্থা সুসংহত করাসহ নানা প্রয়োজনীয় বিষয়ে সভায় আলোচনা হয়েছে। 

আলমগীর/সালমান/

ইসরায়েলকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী রাষ্ট্র ঘোষণা করতে হবে: গোলাম মোস্তফা

প্রকাশ: ১৭ জুন ২০২৫, ০৪:০৯ পিএম
আপডেট: ১৭ জুন ২০২৫, ০৪:১৫ পিএম
ইসরায়েলকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী রাষ্ট্র ঘোষণা করতে হবে: গোলাম মোস্তফা
ভিসিসি চেয়ারপারসন মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা ভুইয়া। ছবি: সংগৃহীত

ইসরায়েলকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন ভয়েস অব কনসাস সিটিজেনের (ভিসিসি) চেয়ারপারসন মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা ভুইয়া। 

গত শুক্রবার ভোররাতে ইরানে ইসরায়েলি হামলা থেকে শুরু করে চলমান পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা প্রকাশ করে এবং তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে মঙ্গলবার (১৭ জুন) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ মন্তব্য করেন তিনি।

গোলাম মোস্তফা ভুইয়া বলেন, ‘সব ধরনের আন্তর্জাতিক আইন ও নিয়ম-নীতি লঙ্ঘন করে ইসরায়েল ইরানে হামলা চালিয়েছে, যা বিশ্বশান্তির জন্য হুমকি। ইসরায়েলের সন্ত্রাসী নীতির কারণেই তাদেরকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা করতে হবে। অনতিবিলম্বে ইরানে হামলা ও গাজায় গণহত্যা বন্ধে ইসরায়েলকে বাধ্য করতে মুসলিম বিশ্বকে কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘মার্কিন সাম্রাজ্যবাদী শক্তির মদদেই ইরানে ইসরায়েলের বেপরোয়া সামরিক হামলা। ইসরায়েল আন্তর্জাতিক বিধিবিধানকে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে মধ্যপ্রাচ্যে সন্ত্রাসী রাষ্ট্র হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। ইরানে সামরিক হামলা ও গাজায় ধারাবাহিক গণহত্যা ইসরায়েলের চূড়ান্ত ঔদ্ধত্যমূলক অপরাধের নগ্ন বহিঃপ্রকাশ।’

গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘এই হামলার মধ্য দিয়ে অবৈধ রাষ্ট্র ইসরায়েল তার সন্ত্রাসী রূপের আবারও বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছে। এই হামলা গোটা মধ্যপ্রাচ্য ও বিশ্বকে বড় ধরনের ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে। ইসরায়েলের এহেন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বন্ধে জাতিসংঘসহ বিশ্ব সম্প্রদায়কে সোচ্চার হতে হবে। আগ্রাসী ইসরায়েলের ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণের তীব্র জবাব দিতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ইসরায়েলের এই বেপরোয়া আগ্রাসী তৎপরতার পেছনে রয়েছে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদ। প্রকৃতপক্ষে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদী শক্তি সামরিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক মদদের কারণেই গোটা মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েল আগ্রাসী সন্ত্রাসী রাষ্ট্র হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। এর লক্ষ্য হচ্ছে আরব দুনিয়ার বিভক্তির সুযোগ নিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে অপ্রতিরোধ্য সামরিক শক্তি হিসেবে নিজেদের নিরঙ্কুশ কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করা।’

সালমান/

দুদকের দৃষ্টিতে টিউলিপের পরিচয় একজন অভিযুক্ত

প্রকাশ: ১৭ জুন ২০২৫, ০১:৫৫ পিএম
আপডেট: ১৭ জুন ২০২৫, ০২:০৮ পিএম
দুদকের দৃষ্টিতে টিউলিপের পরিচয় একজন অভিযুক্ত
টিউলিপ সিদ্দিক

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন বলেছেন, ‘ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগনি টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে তিনটি মামলার বিচার চলছে, আরেকটি তদন্তাধীন। গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, ২০১৩ সালে দেশের একটি মাছের খামার থেকে তিনি ৯ লাখ টাকা আয় করেন। ইনকাম ট্যাক্সে হঠাৎ করেই ১০ থেকে ৩০ ভরি স্বর্ণ বেড়ে যাওয়াসহ বিভিন্ন অসংগতি পাওয়া গেছে। তিনি যতই বলুক না কেন তিনি ব্রিটিশ, আমরা উপযুক্ত কাগজপত্র পেয়েছি যে, তিনি বাংলাদেশি। এখন অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে নিজের সুবিধার জন্য কখনো ব্রিটিশ, কখনো বাংলাদেশি বলে পরিচয় দিচ্ছেন। তবে, দুদকের দৃষ্টিতে তিনি শুধুই একজন অভিযুক্ত। আমরা আমাদের নাগরিকের বিরুদ্ধে বিদ্যমান আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিচ্ছি।’ 

সোমবার ( ১৬ জুন) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন দুদক চেয়ারম্যান। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘টিউলিপ নিজেকে নির্দোষ দাবি করলে মন্ত্রিত্ব ছাড়লেন কেন? তার আইনজীবী দুদকে চিঠি লিখলেন কেন? আমরা তার আইনজীবীকে জানিয়েছি, আমাদের আইনের বিধান অনুযায়ী তাকে (টিউলিপ) আমাদের আদালতে মোকাবিলা করতে হবে।’

দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘টিউলিপ যদিও প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চেয়েছিলেন, প্রধান উপদেষ্টা তাকে দেননি এবং কেন সেটা হয়নি তার যথাযথ ব্যাখ্যা প্রধান উপদেষ্টা দিয়েছেন। আমাদের দেশের আইন অনুযায়ী, একজন অভিযুক্ত ব্যক্তির সঙ্গে এমন সাক্ষাতের সুযোগ নেই।’

যুক্তরাজ্যে আরও সম্পদ জব্দের চেষ্টা: মোহাম্মদ আবদুল মোমেন বলেন, ‘সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান জাভেদের ভাই আনিসুজ্জামান চৌধুরী রনি এবং এনআরবিসি কমার্শিয়াল ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আদনান ইমামের সম্পত্তি জব্দ করতে বাংলাদেশের আদালতের আদেশসহ প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাপ্ত মিউচ্যুয়াল লিগ্যাল অ্যাসিস্ট্যান্স রিকোয়েস্টের (এমএলএআর) মাধ্যমে প্রয়োজনীয় তথ্য লন্ডনে পাঠানো হয়েছে।’

দুদক চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ও আমার লন্ডন সফর আগেই নির্ধারিত ছিল। একই সময়ে প্রধান উপদেষ্টার সফরও সেখানে ছিল। কাজেই আমাদের যাওয়াটা একসঙ্গে হয়েছে। কিন্তু প্রোগ্রামটা আলাদা ছিল। আমরা (গভর্নর ও দুদক চেয়ারম্যান) আগেই ঠিক করেছিলাম যে, লন্ডনে জাতীয় অপরাধ সংস্থা (ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সি-এনসিএ) এবং আন্তর্জাতিক দুর্নীতি দমন সংস্থার (ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্টি-করাপশন কো-অর্ডিনেশন সেন্টার) সঙ্গে আমাদের বৈঠক হবে। আমরা বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থ ও সম্পদের একটি প্রাথমিক তালিকা এবং আদালতের আদেশ সংযুক্ত করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দিয়েছি। আমি বলতেই পারি, এনসিএ খুবই কার্যকরভাবে কাজ করেছে। সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান জাভেদের পাচার করা টাকায় কেনা অনেক সম্পদ তারা জব্দ করতে আমাদের সহায়তা করেছে। এনসিএর এই বন্ধুসুলভ সহযোগিতার জন্য আমরা তাদের ধন্যবাদ জানিয়েছি। আমরা লন্ডনে উপস্থিত থাকার সময়ই সম্পদ জব্দের আদেশ জারি হয়। বিভিন্ন দেশে জাভেদের ৫৮০টি বাড়ির খোঁজ আমরা পেয়েছি। এর মধ্যে ৩৪৩টি যুক্তরাজ্যে, ২২৮টি সংযুক্ত আরব আমিরাতে এবং ৯টি যুক্তরাষ্ট্রে। 

বাংলাদেশের থাকা বাদ দিয়ে শুধু যুক্তরাজ্যের ৩৪৩টি বাড়ির আনুমানিক মূল্য প্রায় ৭৩.১৫ মিলিয়ন পাউন্ড, অর্থাৎ বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১০২৫ কোটি টাকা। এনসিএ ইতোমধ্যে এই সম্পদ ফ্রিজ করেছে। এ ছাড়া তার প্রায় ২৫ লাখ ডলারের সমপরিমাণ ব্যাংক আমানত (প্রায় ৩৫ কোটি টাকা) ফ্রিজ করা হয়েছে। যুক্তরাজ্য ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র, সিঙ্গাপুর, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ বিভিন্ন দেশে ‘মিউচুয়াল লিগ্যাল অ্যাসিস্ট্যান্স রিকোয়েস্ট’ পাঠানো হয়েছে। আমাদের সৌভাগ্য যে, যুক্তরাজ্য প্রথমে সাড়া দিয়েছে। লন্ডন সফরের সময় ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্টি-করাপশন কো-অর্ডিনেশন সেন্টার অন্যান্য সংস্থার সঙ্গে বৈঠকে একটি ‘আন্তর্জাতিক সহযোগিতার কাঠামো’ তৈরি করার চেষ্টা চলছে। এ ধরনের অনুসন্ধান ও আইনি ব্যবস্থায় বাংলাদেশ এখনো অভিজ্ঞ নয়, তাই এনসিএ আমাদের প্রশিক্ষণ দেবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। ইতোমধ্যে একজন বিদেশি প্রশিক্ষক আমাদের সঙ্গে কাজ শুরু করছেন। বাংলাদেশ ব্যাংকও এই উদ্যোগে যুক্ত হয়েছে। গভর্নর নিজে লন্ডনে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। তিনি বিষয়টি নিয়ে পৃথক সাক্ষাৎকারও দিয়েছেন। এখানে একটা সূক্ষ্ম বিষয় রয়েছে- জব্দকৃত সম্পদ বাংলাদেশে ফেরত আনতে হলে আমাদের দাবি যথাযথভাবে প্রমাণ করতে হবে। আমাদের আদালতের আদেশের পাশাপাশি এনসিএর সহযোগিতায় যুক্তরাজ্যের আদালতেও একইভাবে প্রমাণ করতে হবে। এরপর সেসব অর্থ-সম্পদ আনার প্রক্রিয়া শুরু করা সম্ভব।’ 

মোহাম্মদ আবদুল মোমেন বলেন, ‘যারা অর্থ পাচার করেছে, তাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে অর্থ ফেরত আনার একটি প্রক্রিয়া নিয়ে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন জায়গায় আলোচনা হয়েছে। দুদকের পক্ষ থেকে আমরা শুধু বলতে চাই, দুদকের যেসব মামলা রয়েছে, তার কোনোটিই আপস বা মীমাংসাযোগ্য নয়। যেহেতু দুদকের মামলা ফৌজদারি প্রকৃতির, সেগুলোর নিষ্পত্তি আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সম্ভব নয়। তবে গভর্নর যে দেওয়ানি মামলার কথা বলেছেন, তা আমাদের আওতাভুক্ত নয়। আমরা দুদকের বিধিবদ্ধ আইনের আওতায় থেকে যতটুকু করণীয়, তা করে যাচ্ছি।’
আরেক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘পলাতক আসামিদের ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে ১৯৭৪ সালের আসামি প্রত্যর্পণ আইন এবং বাংলাদেশের সঙ্গে বিভিন্ন দেশের দ্বিপক্ষীয় চুক্তির আওতায় ফেরানোর বিষয়ে সরকার চেষ্টা করছে। এ ক্ষেত্রে ইউনাইটেড নেশনস কনভেনশন অ্যাগেইনস্ট করাপশন (ইউএনসিএসি) এবং ইউনাইটেড নেশনস কনভেনশন অ্যাগেইনস্ট ট্রান্সন্যাশনাল অর্গানাইজড ক্রাইমের (ইউএনটিওসি) আওতায় আনার প্রচেষ্টা রয়েছে।’