
২০২৩ সালে বাংলাদেশ থেকে রেকর্ড ১৩ লাখ মানুষ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কাজের জন্য গিয়েছেন। এই সংখ্যা গত বছরের তুলনায় ১৫ শতাংশ বেশি। যদিও জনশক্তি রপ্তানিতে রেকর্ড হলেও এর সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাড়েনি রেমিট্যান্স। জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) পরিসংখ্যান সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
জানা গেছে, ২০২৩ সালে বিশ্বের ১৩৭টি দেশে বাংলাদেশের ১৩ লাখ কর্মীর কর্মসংস্থান হয়েছে। আগের বছর এ সংখ্যা ছিল ১১ লাখ ৩৫ হাজার।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই অর্জনের পেছনে অন্যতম কারণ হলো সৌদি আরবে দক্ষ বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগে কোটা বাড়ানো এবং মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার আবার খুলে দেওয়া।
তবে জনশক্তি রপ্তানিতে রেকর্ড হলেও রেমিট্যান্সপ্রবাহ তেমন বাড়েনি। ১৫ শতাংশ জনশক্তি রপ্তানি বেশি হলেও রেমিট্যান্স বেড়েছে মাত্র ৩ শতাংশ। ২০২২ সালে রেমিট্যান্স এসেছিল ২১ দশমিক ২৯ শতাংশ, ২০২৩ সালে তা ৩ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ২১ দশমিক ৯২ শতাংশ। গত দুই বছরে প্রণোদনা ৫ শতাংশ থাকা সত্ত্বেও রেমিট্যান্স ২২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের নিচেই রয়েছে।
জানা যায়, জনশক্তি রপ্তানিতে সৌদি আরবের পরই এবার মালয়েশিয়ার অবস্থান। অথচ এ বাজারটি চার বছর ধরে বন্ধ ছিল। দেশটিতে গত বছর ম্যানুফ্যাকচারিং, নির্মাণ, পরিষেবা, বৃক্ষরোপণ, কৃষি, খনি এবং গৃহস্থালি কাজে বাংলাদেশের প্রায় সাড়ে তিন লাখ শ্রমিক কর্মরত।
অন্যদিকে বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য সৌদি আরব ২৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৪০ শতাংশ করেছে। দেশটি বিভিন্ন সেক্টরে গত বছর প্রায় পাঁচ লাখ বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগ দিয়েছে।
গত বছর মধ্যপ্রাচ্যের গন্তব্যের পাশাপাশি ইতালি ও যুক্তরাজ্যের মতো অপ্রচলিত বাজারগুলোতেও জনশক্তি রপ্তানি বেড়েছে। শুধু ইতালিই কৃষি, আতিথেয়তা ও ম্যানুফ্যাকচারিংয়ের মতো খাতে ১৬ হাজার ৯২৬ জন বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগ দিয়েছে।
একই অবস্থা যুক্তরাজ্যের ক্ষেত্রেও। দেশটি গত বছর বাংলাদেশ থেকে ১০ হাজার ৪৩৭ জন কর্মী নিয়োগ দিয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়া নিয়োগ দিয়েছে প্রায় পাঁচ হাজার বাংলাদেশিকে। সিঙ্গাপুরে নিয়োগ দিয়েছে ৫৩ হাজার বাংলাদেশি।
বিএমইটির পরিসংখ্যান বলছে, অপ্রচলিত বাজারগুলোতে জনশক্তি রপ্তানি গত বছর বেড়েছে ২২ শতাংশ। এ ছাড়া অদক্ষ কর্মীদের অভিবাসনও বেড়েছে। এটি বাংলাদেশের মোট বিদেশি কর্মসংস্থানের ৫০ শতাংশ, যেখানে দক্ষ কর্মীর হার ২৫ শতাংশ।